রাজীব হাসান
প্রথমেই মনে পড়ছে ২০০৭ বিশ্বকাপে জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে দিয়ে তাঁর মারা বাউন্ডারিটার কথা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তখনো তাঁর এক মাসও পূর্ণ হয়েছে কি হয়নি। ক্যারিয়ারেরই মাত্র পঞ্চম ম্যাচ ছিল। ৫৩ বলে ৫১ করা তামিম বড় ভূমিকা রেখেছিলেন ওই ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম অঘটনের জন্ম দিতে। জানিয়ে দিয়েছিলেন, সদ্য কৈশোর পেরোনো বুকে তাঁর সিংহ-সাহস।
মনে পড়ছে লর্ডসে তাঁর উড়ন্ত উদ্যাপনের কথা। লিখে দাও আমার নাম লর্ডসের অনার্স বোর্ডে...ছবিটা চোখে ভাসছে। তুমুল সমালোচনার মুখে এশিয়া কাপে টানা চার ফিফটি করে আঙুল গুনে দেখা উদ্যাপনটাও মনে পড়ছে। সব ছাপিয়ে মনে পড়ছে এশিয়া কাপেই ভাঙা আঙুল নিয়ে এক হাতে ব্যাট করতে নেমে যাওয়ার ছবিটা।
সমালোচনা তাঁর ক্যারিয়ারে ছায়াসঙ্গী হয়েই ছিল। একসময় না একসময় থামতেই হতো। তামিম ১৭ বছরের যাত্রার ইতি টেনে দিলেন বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস আগে। বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে কথাই বলতে পারছিলেন না। তাঁর মতো দৃঢ় ব্যক্তিত্বের মানুষটাও কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বারবার। খেলাটার সঙ্গে তাঁর কত আবেগ জড়িয়ে আছে তা বোঝাই যাচ্ছিল।
বললেন, শৈশবেই হারানো প্রয়াত বাবাকে গর্বিত করার জন্য খেলেছেন। বললেন, জানি না, বাবাকে কতটা গর্বিত করতে পেরেছি। ওই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল অলক্ষ্যে কোথাও দাঁড়িয়ে তাঁর বাবা তামিমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলছেন, ইউ মেড আস প্রাউড মাই সান।
তিন ধরনের ক্রিকেটেই সেঞ্চুরি করা বিরল ক্রিকেটারদের একজন তামিম একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানও করেছেন। যদিও যেকোনো এক ফরম্যাটে ১০ হাজার রান করার স্বপ্নটা অপূর্ণই থেকে গেল।
জীবন এ রকমই। কিছু স্বপ্ন পূরণ হবে, কিছু রয়ে যাবে অধরা। জীবন এ রকমই। কখনো আপনি সফল হবেন, কখনো ব্যর্থ। পারফরমারদের বেলায় এ তো আরও সত্যি। টেন্ডুলকার, কোহলিদেরও ক্যারিয়ারে বাজে সময় গেছে।
ক্রীড়া সাংবাদিকতা জীবনে যে একমাত্র খেলোয়াড়কে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল, তিনি তামিমই। আয়ারল্যান্ড সফরে ঝুম বৃষ্টির মধ্যে নিজে ছাতা হাতে অস্থায়ী প্রেসবক্স পর্যন্ত আমাকে এগিয়ে দেওয়ার মধ্যে তাঁর সৌজন্যবোধের ছবিও পেয়েছি।
তাঁকে ঘিরে সমালোচনা কখনো ব্যক্তিগত নির্লজ্জ আক্রমণে পরিণত হয় দেখে প্রথম আলোতে লিখেছিলাম: তামিম বলতেই পারেন হোয়াই অলওয়েজ মি! আজ তামিমও বললেন, খারাপ খেললে সমালোচনা করবেন। কিন্তু সেটা যেন ক্রিকেটের মধ্যেই থাকে। তামিমের ক্ষেত্রে তা সত্যিই হয়নি।
তবে আমার মনে হয়েছে, তামিমের অবসর নেওয়া ঠিকই আছে। মাথা উঁচু করে বিদায় নিতে পারলে ছবিটা সার্থক হতো। সবচেয়ে ভালো হতো, যদি মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারতেন। এ নিয়ে আফসোস করাও বিলাসিতা। আমাদের কোন লেজেন্ড ক্রিকেটারের বিদায় মাঠ থেকে হয়েছে বলতে পারেন?
তামিমকে লেজেন্ড বললাম আবেগকে দূরে সরিয়ে রেখেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমার কাছে তামিম স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর এক হাতে ব্যাটিং করার সেই ছবিটার জন্যই।
আদিওস আমিগো!
লেখক: সাবেক ক্রীড়া সাংবাদিক
প্রথমেই মনে পড়ছে ২০০৭ বিশ্বকাপে জহির খানকে ডাউন দ্য উইকেটে দিয়ে তাঁর মারা বাউন্ডারিটার কথা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তখনো তাঁর এক মাসও পূর্ণ হয়েছে কি হয়নি। ক্যারিয়ারেরই মাত্র পঞ্চম ম্যাচ ছিল। ৫৩ বলে ৫১ করা তামিম বড় ভূমিকা রেখেছিলেন ওই ম্যাচে ভারতকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম অঘটনের জন্ম দিতে। জানিয়ে দিয়েছিলেন, সদ্য কৈশোর পেরোনো বুকে তাঁর সিংহ-সাহস।
মনে পড়ছে লর্ডসে তাঁর উড়ন্ত উদ্যাপনের কথা। লিখে দাও আমার নাম লর্ডসের অনার্স বোর্ডে...ছবিটা চোখে ভাসছে। তুমুল সমালোচনার মুখে এশিয়া কাপে টানা চার ফিফটি করে আঙুল গুনে দেখা উদ্যাপনটাও মনে পড়ছে। সব ছাপিয়ে মনে পড়ছে এশিয়া কাপেই ভাঙা আঙুল নিয়ে এক হাতে ব্যাট করতে নেমে যাওয়ার ছবিটা।
সমালোচনা তাঁর ক্যারিয়ারে ছায়াসঙ্গী হয়েই ছিল। একসময় না একসময় থামতেই হতো। তামিম ১৭ বছরের যাত্রার ইতি টেনে দিলেন বিশ্বকাপের মাত্র তিন মাস আগে। বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে কথাই বলতে পারছিলেন না। তাঁর মতো দৃঢ় ব্যক্তিত্বের মানুষটাও কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বারবার। খেলাটার সঙ্গে তাঁর কত আবেগ জড়িয়ে আছে তা বোঝাই যাচ্ছিল।
বললেন, শৈশবেই হারানো প্রয়াত বাবাকে গর্বিত করার জন্য খেলেছেন। বললেন, জানি না, বাবাকে কতটা গর্বিত করতে পেরেছি। ওই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল অলক্ষ্যে কোথাও দাঁড়িয়ে তাঁর বাবা তামিমের মাথায় হাত বুলিয়ে বলছেন, ইউ মেড আস প্রাউড মাই সান।
তিন ধরনের ক্রিকেটেই সেঞ্চুরি করা বিরল ক্রিকেটারদের একজন তামিম একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৫ হাজার রানও করেছেন। যদিও যেকোনো এক ফরম্যাটে ১০ হাজার রান করার স্বপ্নটা অপূর্ণই থেকে গেল।
জীবন এ রকমই। কিছু স্বপ্ন পূরণ হবে, কিছু রয়ে যাবে অধরা। জীবন এ রকমই। কখনো আপনি সফল হবেন, কখনো ব্যর্থ। পারফরমারদের বেলায় এ তো আরও সত্যি। টেন্ডুলকার, কোহলিদেরও ক্যারিয়ারে বাজে সময় গেছে।
ক্রীড়া সাংবাদিকতা জীবনে যে একমাত্র খেলোয়াড়কে সাক্ষাৎকার নেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল, তিনি তামিমই। আয়ারল্যান্ড সফরে ঝুম বৃষ্টির মধ্যে নিজে ছাতা হাতে অস্থায়ী প্রেসবক্স পর্যন্ত আমাকে এগিয়ে দেওয়ার মধ্যে তাঁর সৌজন্যবোধের ছবিও পেয়েছি।
তাঁকে ঘিরে সমালোচনা কখনো ব্যক্তিগত নির্লজ্জ আক্রমণে পরিণত হয় দেখে প্রথম আলোতে লিখেছিলাম: তামিম বলতেই পারেন হোয়াই অলওয়েজ মি! আজ তামিমও বললেন, খারাপ খেললে সমালোচনা করবেন। কিন্তু সেটা যেন ক্রিকেটের মধ্যেই থাকে। তামিমের ক্ষেত্রে তা সত্যিই হয়নি।
তবে আমার মনে হয়েছে, তামিমের অবসর নেওয়া ঠিকই আছে। মাথা উঁচু করে বিদায় নিতে পারলে ছবিটা সার্থক হতো। সবচেয়ে ভালো হতো, যদি মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারতেন। এ নিয়ে আফসোস করাও বিলাসিতা। আমাদের কোন লেজেন্ড ক্রিকেটারের বিদায় মাঠ থেকে হয়েছে বলতে পারেন?
তামিমকে লেজেন্ড বললাম আবেগকে দূরে সরিয়ে রেখেই। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আমার কাছে তামিম স্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর এক হাতে ব্যাটিং করার সেই ছবিটার জন্যই।
আদিওস আমিগো!
লেখক: সাবেক ক্রীড়া সাংবাদিক
গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেট—বহু ক্লিশে এই কথাটা আবারও বলতে হচ্ছে ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্টের ফল দেখে। হেডিংলিতে ম্যাচের বেশির ভাগ সময় দাপট দেখিয়ে ভারত শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা হেরেছে ৫ উইকেটে। এমন জয়ের পর নিজের কাছেই অবিশ্বাস্য লাগছে বেন ডাকেটের কাছে।
১৯ মিনিট আগেএবারের ক্লাব বিশ্বকাপে শুধু গোল হজম করাই যেন অকল্যান্ড সিটির একমাত্র নিয়তি। তিন ম্যাচ খেলে হজম করেছে ১৭ গোল। অথচ এত এত গোল হজম করা অকল্যান্ডের কাছেই কিনা ধরা খেল বোকা জুনিয়র্স।
১ ঘণ্টা আগেঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়ে দিতে ‘ওস্তাদ’ এনামুল হক বিজয়। কিন্তু যখন বাংলাদেশের জার্সিতে খেলতে নামেন, তখন তাঁকে খুঁজেই পাওয়া যায় না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারছেন না।
২ ঘণ্টা আগেশ্রীলঙ্কা সিরিজে টস ভাগ্য কাজ করছে বাংলাদেশের পক্ষেই। সিরিজের দুই টেস্টেই টস জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। গলের মতো এবার কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাবে (এসএসসি) সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ।
২ ঘণ্টা আগে