Ajker Patrika

লর্ডসের ফাইনালের আগে ভারতের প্রসঙ্গ কেন টানলেন অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার

ক্রীড়া ডেস্ক    
কামিন্সের নেতৃত্বে ভারতকে কাঁদিয়ে দুইবার আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ছবি: ক্রিকইনফো
কামিন্সের নেতৃত্বে ভারতকে কাঁদিয়ে দুইবার আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ছবি: ক্রিকইনফো

আইসিসি ইভেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভ্যাস অস্ট্রেলিয়ার অনেক দিনের। ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ— একমাত্র দল হিসেবে আইসিসির সব টুর্নামেন্ট জিতে চক্রপূরণ করেছে অজিরা। এবার অস্ট্রেলিয়া আরও একটি শিরোপা জয়ের কাছাকাছি রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া তাদের আইসিসি ইভেন্টের বেশির ভাগ শিরোপা জিতেছে ম্যাথু হেইডেন, রিকি পন্টিং, অ্যাডাম গিলক্রিস্টদের তারকা ক্রিকেটারদের নিয়ে। হেইডেন-পন্টিংদের পর ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরাও পেয়েছেন মেজর টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ। সময়ের পরিক্রমায় ভারতীয় ক্রিকেট দল এখন স্বর্ণযুগ পার করছে। এক সময় যে দলটি শিরোপার জন্য হাপিত্যেশ করত, সেই ভারত ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৫ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতে ফেলল সাড়ে ৮ মাসের ব্যবধানে।

ভারতের সামনে ২০২৩-২৫ চক্রের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার সুবর্ণ সুযোগ ছিল। তবে নিজেদের ভুলে সেই সুযোগ খুইয়েছে দলটি। লর্ডসে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা। শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে মুখোমুখি হওয়ার আগে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান দীর্ঘ সাক্ষাৎকার নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া টেস্ট অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের। গার্ডিয়ানকে অজি অধিনায়ক বলেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভারতকে চাইবেন। ইংল্যান্ড ঘরের মাঠে খুব শক্তিশালী। নিউজিল্যান্ড ফাইনালে ওঠে প্রায়ই। মাঝেমধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকাও আইসিসি ইভেন্টে খেলে। টেস্টে তাদের খুব একটা দেখা যায় না। তবে এটা ভালো। অস্ট্রেলিয়া-ভারত ফাইনালের চেয়ে আলাদা হবে।’

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দেবেন টেম্বা বাভুমা। তিনি খেলেছেন ৬৩ টেস্ট। ফাইনালের দলে থাকা বাভুমার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা কেবল রাবাদার। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে রাবাদা খেলেছেন ৭০ ম্যাচ। কেশব মহারাজ ও এইডেন মার্করামের ৫৭ ও ৪৫ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অন্যান্য ক্রিকেটারদের খুব একটা টেস্ট ম্যাচের অভিজ্ঞতা নেই। ফাইনালের আগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে কামিন্স বলেন, ‘বলা আসলে কঠিন। কারণ, অনেক অপরিচিত আছে। তাদের বিপক্ষে বেশি খেলিনি। কিন্তু ফাইনালে খেলতে বিশেষ কিছু করতে হবে আপনাকে।’

ইংল্যান্ডে প্রথাগত স্পিন ট্র্যাক না হলেও মহারাজ তাঁর ঘূর্ণিজাদুতে প্রতিপক্ষ ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দিতে পারেন। রাবাদার পাশাপাশি লুঙ্গি এনগিদি, মার্কো ইয়ানসেন, উইয়ান মুলডারের মতো পেসাররা দারুণ কার্যকরী হতে পারেন। ইয়ানসেন, মুলডার ব্যাটিংয়েও অবদান রাখতে পারেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের তাই সমীহ করছেন কামিন্স। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক বলেন, ‘তাদের বোলিং সব সময়ই ভালো। এখনো ভিন্ন কিছু দেখা যাচ্ছে না। কেশব মহারাজ দুর্দান্ত স্পিনার। অনেক দারুণ পেসার আছে। তারা প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে।’

২০১১-এর নভেম্বরে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টেস্টে অভিষেক হয় কামিন্সের। ১৮ বছর বয়সী কামিন্স তাঁর আগেই টেস্টের স্বাদ পেয়েছিলেন। কেপটাউনে যে টেস্টে শুধুমাত্র ফিল্ডার ছিলেন, সেই ম্যাচের এক ইনিংসে অজিরা গুটিয়ে যায় ৪৭ রানে। সেটা দেখে কিছুটা হলেও ঘাবড়ে গিয়েছিলেন কামিন্স। ১৪ বছরের পুরোনো স্মৃতিচারণ করে অস্ট্রেলিয়ার এই ক্রিকেটার বলেন, ‘ড্রেসিংরুমে এটাই ছিল টেস্ট ক্রিকেটের আসল স্বাদ। যদিও খেলিনি, কিন্তু খুব নার্ভাস ছিলাম।দুই ওভার ফিল্ডিং করেছি। একটা বল আঘাত করে আমার দিকে। তখন আমার বয়স ছিল ১৮ বছর। ভাবছিলাম, ওয়াও। এই অবস্থার মধ্যে আমি আছি।’

২০১৯-২১, ২০২১-২৩—টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুই চক্রে ফাইনালে উঠলেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ভারত। প্রথম দুই আসরে ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণের টুর্নামেন্টে শিরোপা জেতে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। যেখানে ২০২৩-এর জুনে লন্ডনের ওভালে কামিন্সের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতে ভারতকে কাঁদিয়ে। একই বছরের নভেম্বরে ভারতকে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে অজিরা। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে লক্ষাধিক ভক্ত-সমর্থক তো বটেই, পুরো ভারত শোকে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কামিন্সের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার অসাধারণ পারফরম্যান্সে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত