Ajker Patrika

এডিস মশা কাকে বেশি কামড়ায়— জানালেন গবেষকেরা

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২২, ২১: ২৮
এডিস মশা কাকে বেশি কামড়ায়— জানালেন গবেষকেরা

কালো মানুষকে মশা কামড়ায় বেশি, বি পজিটিভ রক্তের গ্রুপ যাদের তারাও নাকি মশাদের কাছে খুব লোভনীয় শিকার! এমন নানা মিথ প্রচলিত। তবে এটা অভিজ্ঞতালব্ধ সত্য যে, কিছু মানুষ মশাদের কাছে বেশি প্রিয়। এর স্বপক্ষে এবার বৈজ্ঞানিক প্রমাণও মিলল।

কী কারণে কোনো কোনো মানুষকে মশারা বেশি আক্রমণ করে এ নিয়ে নতুন একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সেল’ এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

গবেষণায় উঠে এসেছে, কিছু মানুষের ত্বক মশাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। এই বিষয়টি মানুষের শরীরের গন্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। গবেষকেরা এটিকে ‘মশক চুম্বক’ বলে অভিহিত করেছেন।

নিউইয়র্কের দ্য রকফেলার ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা বলছেন, যেসব মানুষের ত্বকে কার্বক্সিলিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি তাঁদের ত্বকের প্রতি স্ত্রী ‘এডিস ইজিপ্টি’ মশা শত গুন বেশি আকর্ষিত হয়। এই স্ত্রী অ্যাডিস এজিপ্টি মশা ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, পীতজ্বর, জিকার মতো রোগের জীবাণুর বাহক। মানুষের ত্বকের প্রতি মশার এই আকর্ষণের বিষয়টি খাদ্য বা অন্যান্য অভ্যাসের সঙ্গে পরিবর্তিত হয় না।

দ্য রকফেলার ইউনিভার্সিটির গবেষক লেসলি ভোশাল সায়েন্টিফিক আমেরিকানকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যদি আপনার ত্বকে কার্বক্সিলিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে তাহলে আপনি বেশিমাত্রায় মশার কামড় খাবেন। সারাজীবনই মশাকে আকৃষ্ট করার উপাদানগুলো ত্বকেই থেকে। তাই মশারা সবসময়ই ওই মানুষদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।’

লেসলি ভসহলে আরও বলেন, ‘কিছু মানুষকে মশা বেশি কামড়ানোর কারণ নিয়ে বিভিন্ন রকমের কল্পকাহিনী প্রচলিত আছে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত নয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৪ জন স্বেচ্ছাসেবক এই গবেষণায় অংশ নেন। দুই ভাবে তাঁদের ওপর গবেষণা চালানো হয়। প্রথমে স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে নায়লনের মোজা পরানো হয়। এতে মোজাগুলোতে শরীরের গন্ধ লেগে যায়। পরে মশা ধরার ফাঁদ পাতা হয়। সেই ফাঁদে মোজাগুলো টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এবার একটি বদ্ধ ঘরে ফাঁদগুলো রেখে কয়েক ডজন মশা ছেড়ে দেওয়া হয়। কোন ফাঁদে কতো মশা ধরা পড়লো সেটি গুনে দেখা হয়। এছাড়া একটি টিউবের দুপাশে দুজন স্বেচ্ছাসেবকের মোজার কিছু অংশ কেটে রাখা হয়। সেই টিউবে ছেড়ে দেওয়া হয় স্ত্রী এডিস মশা। পরে দেখা হয় মশাগুলো কোনো মোজার দিকে বেশি যাচ্ছে।

মারিয়া এলেইনা ডি ওবালদিয়া বলেন, ‘গবেষণায় দেখা যায়, মশাগুলো সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তখনই এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।’

মশাগুলো যেসব মোজার দিকে বেশি আকৃষ্ট হয়েছিল, দেখা গেছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটির ত্বকে উচ্চমাত্রার কার্বক্সিলিক অ্যাসিড রয়েছে। গবেষণাটি কয়েক মাস সময় নিয়ে করা। ট্রায়ালগুলো একাধিকবার করা হয়েছে। ফলে এতে ভুলে সম্ভাবনা নেই বললেই চলে—এমনটাই দাবি করছেন গবেষকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মহাকাশে বিশেষ চুলায় রান্নাবান্না, বারবিকিউ পার্টি করলেন চীনা নভোচারীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বারবিকিউ হাতে এক নভোচারী। ছবি: চায়না ডেইলি
বারবিকিউ হাতে এক নভোচারী। ছবি: চায়না ডেইলি

বারবিকিউ পার্টি চলছে এখন মহাকাশেও! তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে চীনের ছয়জন নভোচারী এই আয়োজন করেছেন। চীনের অ্যাস্ট্রোনট সেন্টার (এসিসি) প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, শেনঝো–২০ ও শেনঝো–২১ মিশনের নভোচারীরা একটি নতুন ধরনের ওভেন ব্যবহার করে রান্না করছেন, যা মহাকাশের মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশে ব্যবহারের উপযোগী প্রথম ওভেন হিসেবে ইতিহাস গড়েছে।

স্পেস ডট কম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ওভেন ব্যবহার করে নভোচারীরা ২৮ মিনিটে রোস্টেড চিকেন উইংস রান্না করতে সক্ষম হন। মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় তাপ সমভাবে ছড়ায় না বলে মহাকাশে রান্না করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

চীনা রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওভেনটি এমনভাবে নকশা করা হয়েছে যাতে এটি তিয়ানগং স্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো চাপ সৃষ্টি না করে এবং ধোঁয়াবিহীন ও স্থিতিশীল তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, নভোচারীরা বিশেষভাবে তৈরি একটি গ্রিল কেস-এ চিকেন উইংস নিয়ে স্পেস স্টেশনের দেয়ালের একটি ছোট কেবিন আকৃতির অংশে স্থাপন করছেন।

অ্যারোস্পেস নলেজ সাময়িকীর প্রধান সম্পাদক ওয়াং ইয়ানান চায়না ডেইলিকে বলেন, ‘পৃথিবীতে যেমন ওভেনের ভেতর বাতাস ঘুরে তাপ সঞ্চালন ঘটায়, মহাকাশে তা হয় না। কারণ সেখানে কনভেকশন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া অনুপস্থিত। তাই প্রকৌশলীদের এমন একটি বিশেষ পদ্ধতি বের করতে হয়েছে যাতে খাবার সমভাবে গরম হয় এবং রান্নার ধোঁয়াও নিরাপদভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। নভোচারীদের সুরক্ষাও নিশ্চিত থাকে।’

ওভেনটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও রাখা হয়েছে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৯০ ডিগ্রিতে। এর ফলে নভোচারীরা প্রসেসড ফুড গরম করার পাশাপাশি খাবার রান্নাও করতে পারছেন।

এর আগে ২০২০ সালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন (আইএসএস)-এ প্রথমবারের মতো মহাকাশে খাবার বেক করার একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল। ন্যানোরেকস ও জিরো জি কিচেন যৌথভাবে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ ওভেন ব্যবহার করে ওই পরীক্ষা চালায়। তখন পাঁচটি চকলেট চিপ কুকি বেক করা হয়। এটি ছিল মহাকাশে প্রথমবারের মতো কোনো খাবার বেক করার ঘটনা। পরবর্তীতে স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানে করে এর মধ্যে তিনটি কুকি পৃথিবীতে ফেরত আনা হয়।

গত ৩১ অক্টোবর তিয়ানগং স্পেস স্টেশনে পৌঁছান শেনঝো-২১ মিশনের তিন নভোচারী। তাঁরা সেখানে প্রায় ছয় মাসের জন্য অবস্থান করবেন। শেনঝো-২০ দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তাঁরা। শেনঝো-২০ এর সদস্যরা গত এপ্রিল থেকে স্টেশনে অবস্থান করছেন এবং আগামী ৫ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরে আসবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শনির চাঁদে ‘অসম্ভব’ ঘটনা: তেল-জল মিশে যায় সেখানে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৩৪
শনি গ্রহ ও পার্শ্ববর্তী উপগ্রহ। ছবি: ব্রিটানিকা
শনি গ্রহ ও পার্শ্ববর্তী উপগ্রহ। ছবি: ব্রিটানিকা

শনি গ্রহের বৃহত্তম এবং রহস্যময় উপগ্রহ টাইটান। চরম শীতল পরিবেশের এই উপগ্রহ রসায়ন শাস্ত্রের এক অতি মৌলিক নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বস্তু সাধারণত একে অপরের সঙ্গে মেশে না, যেমন পৃথিবীতে তেল ও পানি—টাইটানের তীব্র ঠান্ডায় (মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) দুটো একসঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারে।

সুইডেনের চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি এবং নাসার বিজ্ঞানীদের এই আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন চালমার্সের রসায়ন ও রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্টিন রাম।

সাধারণত পৃথিবীতে পোলার এবং নন-পোলার অণুগুলো একে অপরের সঙ্গে মেশে না। এটি ‘লাইক ডিসলভস লাইক’ নীতি নামে পরিচিত। পানির মতো পোলার অণুগুলোতে আধানের বণ্টন অসম থাকে, আর তেলের মতো নন-পোলার অণুগুলোতে আধান সুষম থাকে। এই ভিন্নতার কারণেই এরা একে অপরকে বিকর্ষণ করে এবং আলাদা স্তর তৈরি করে।

পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে দেখানো হয়েছে, টাইটানের চরম শীতল পরিস্থিতি এই নিয়মকে উল্টে দেয়। গবেষকেরা ল্যাবরেটরিতে টাইটানের পরিবেশ তৈরি করে পরীক্ষা করেন এবং দেখেন যে পোলার হাইড্রোজেন সায়ানাইড এবং নন-পোলার হাইড্রোকার্বন (যেমন মিথেন ও ইথেন) কঠিন রূপে একসঙ্গে ক্রিস্টালাইজড (স্ফটিক) হতে পারে।

অধ্যাপক রাম জানান, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ক্রিস্টালগুলোর মধ্যে আন্তঃআণবিক শক্তি অস্বাভাবিকভাবে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। এই শক্তির কারণেই নন-পোলার অণুগুলো ক্রিস্টাল কাঠামোর ভেতরে প্রবেশ করে একসঙ্গে থাকতে পারে। এই ঘটনা পৃথিবীতে প্রায় অসম্ভব।

অধ্যাপক রাম বলেন, ‘এই আবিষ্কার টাইটানের ভূতত্ত্ব এবং এর অদ্ভুত সব ল্যান্ডস্কেপ—যেমন হ্রদ, সমুদ্র এবং বালিয়াড়ি—বোঝার ক্ষেত্রে খুবই সহায়ক হবে।’

তিনি আরও মন্তব্য করেন, টাইটানের মতো চরম, প্রতিকূল পরিবেশে প্রাণের উৎপত্তির আগে রসায়ন কীভাবে কাজ করতে পারত, এই গবেষণা সেই বিষয়েও নতুন অন্তর্দৃষ্টি যোগ করবে। হাইড্রোজেন সায়ানাইডের এই ভূমিকা প্রাণ সৃষ্টির মৌলিক উপাদান, যেমন প্রোটিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং জেনেটিক কোডের জন্য প্রয়োজনীয় নিউক্লিওবেস অজৈবিকভাবে তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানবমস্তিষ্ক অনুকরণে বাড়বে এআইয়ের দক্ষতা, কমবে বিদ্যুৎ খরচ: গবেষণা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৩৪
মস্তিষ্কের নিউরনের কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত
মস্তিষ্কের নিউরনের কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে। ছবি: সংগৃহীত

মানুষের মস্তিষ্কের নেটওয়ার্ক অনুকরণ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) দক্ষতা বাড়ানোর একটি নতুন পদ্ধতি তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সারের গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, মস্তিষ্কের নিউরনগুলোর (স্নায়ুকোষের) সংযোগ যেভাবে তৈরি হয়, সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে এআই মডেলগুলো আরও ভালো কাজ করতে পারে।

নিউরোকম্পিউটিং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাটি।

গবেষণায় বলা হয়েছে, মানবমস্তিষ্কের ‘নিউরাল ওয়্যারিং’ পদ্ধতি অনুকরণ করে জেনারেটিভ এআই এবং চ্যাটজিপিটির মতো অন্যান্য আধুনিক এআই মডেলে ব্যবহৃত কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কগুলোর কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো যেতে পারে।

তাঁরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (টিএসএম)। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি নিউরন কেবল কাছের বা সম্পর্কিত নিউরনের সঙ্গে যুক্ত হয় যেভাবে মানুষের মস্তিষ্ক দক্ষতার সঙ্গে তথ্য সংগঠিত করে গুছিয়ে সংরক্ষণ করে।

গবেষণার নেতৃত্বে থাকা সিনিয়র লেকচারার ড. রোমান বাউয়ার বলেন, ‘খুব বেশি শক্তি না খরচ করেও বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব। এতে পারফরম্যান্সও কমে না। আমাদের গবেষণা তা ই বলছে।’

গবেষকেরা জানান, অপ্রয়োজনীয় বিপুলসংখ্যক সংযোগ বাদ দেয় এই মডেলটি। যার ফলে নির্ভুলতা বজায় রেখে এআই আরও দ্রুত ও টেকসইভাবে কাজ করতে পারে।

ড. বাউয়ার বলেন, ‘বর্তমানে বড় বড় এআই মডেলগুলো প্রশিক্ষণ দিতে ১০ লাখ কিলোওয়াট ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ লাগে। যে গতিতে এআই মডেল বাড়ছে, তাতে এই পদ্ধতি ভবিষ্যতের জন্য একেবারেই টেকসই ও নির্ভরযোগ্য নয়।’

এই পদ্ধতির একটি উন্নত সংস্করণও তৈরি করেছেন গবেষকেরা। এর নাম দিয়েছেন এনহ্যান্সড টপোগ্রাফিক্যাল স্পার্স ম্যাপিং (ইটিএসএম)। এটি ‘প্রুনিং’-এর মতো করে অপ্রয়োজনীয় সংযোগগুলো ছাঁটাই করে ফেলে। যার ফলে এআই আরও দক্ষ ও কার্যকর হয়ে ওঠে।

এটি মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে শেখার সময় ধীরে ধীরে নিজের স্নায়ু সংযোগগুলো পরিশুদ্ধ বা সাজিয়ে নেয়, তার মতোই।

গবেষকেরা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে দেখছেন যে এই পদ্ধতিতে ‘নিওরোমরফিক কম্পিউটার’ তৈরি করা যায় কি না, যেগুলো একদম মানুষের মস্তিষ্কের মতোভাবে চিন্তা ও কাজ করতে পারবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত নতুন রং ছাদের তাপমাত্রা কমাবে ৬ ডিগ্রি পর্যন্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
সহকর্মী মিঙ চিউ-এর সঙ্গে অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট
সহকর্মী মিঙ চিউ-এর সঙ্গে অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। ছবি: দ্য ইনডিপেনডেন্ট

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন এক ধরনের বিশেষ রং উদ্ভাবন করেছেন, যা ছাদের তাপমাত্রা আশপাশের বাতাসের চেয়েও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, এই রং বাতাস থেকে পানি সংগ্রহ করতেও সক্ষম—যা ঘরের ভেতরের তাপমাত্রা হ্রাসের পাশাপাশি জলের ঘাটতি মোকাবিলায়ও ভূমিকা রাখতে পারে।

বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও ঘন ঘন ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে। এই অবস্থায় ‘প্যাসিভ রেডিয়েটিভ কুলিং’ প্রযুক্তির এই নতুন রং গরমের সময় ঘরকে শীতল রাখার পথ করে দিয়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, এই গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিয়ারা নেতো। তিনি জানান, নতুন আবিষ্কৃত রঙের প্রলেপটি সূর্যের প্রায় ৯৬ শতাংশ বিকিরণ প্রতিফলিত করে। এর ফলে ছাদ সূর্যালোক শোষণ না করে ঠান্ডা থাকে। আর রংটির তাপ নির্গমন ক্ষমতাও খুব বেশি, তাই পরিষ্কার আকাশে এটি সহজেই বাতাসে তাপ ছড়িয়ে দিতে পারে।

নেতো বলেন, ‘রোদের মধ্যেও এই রং করা ছাদ আশপাশের বাতাসের চেয়ে শীতল থাকে।’

এই শীতল পৃষ্ঠে বাতাসের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশির তৈরি হয়। সাধারণত রাতে চার থেকে ছয় ঘণ্টা শিশির জমে, কিন্তু এই আবরণ ব্যবহার করলে তা আট থেকে দশ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

ছয় মাসের পরীক্ষায় গবেষকেরা এই প্রলেপটি সিডনি ন্যানোসায়েন্স হাবের ছাদে ব্যবহার করেন। তবে প্রলেপটির ওপর একটি অতিবেগুনি রশ্মি-প্রতিরোধী স্তর যোগ করা হয়, যা শিশিরবিন্দু সংগ্রহে সহায়তা করে। তাঁরা দেখেছেন, এই রঙের সাহায্যে বছরে প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় প্রতিদিন প্রতি বর্গমিটারে সর্বোচ্চ ৩৯০ মিলিলিটার পানি সংগ্রহ করা সম্ভব। অর্থাৎ ২০০ বর্গমিটার আকারের একটি ছাদে অনুকূল দিনে গড়ে প্রায় ৭০ লিটার পানি পাওয়া যেতে পারে।

অধ্যাপক নেতো বলেন, ‘এই প্রযুক্তি শহরাঞ্চলে গরমের প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। যেখানে ইনসুলেশন দুর্বল, সেখানে ছাদের তাপমাত্রা কমে গেলে ঘরের ভেতরের তাপও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।’

বর্তমানে গবেষকেরা রংটির বাণিজ্যিক সংস্করণ তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এটি ভালো মানের সাধারণ রঙের মতোই দামে পাওয়া যাবে।

ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেবাস্টিয়ান ফাউচ বলেছেন, ‘এই ধরনের কুল কোটিং প্রযুক্তি এক দশক ধরে উন্নয়নাধীন, কিন্তু এখনো ব্যাপকভাবে বাজারে আসেনি। সম্ভবত ২০৩০ সালের আগেই তা ঘটবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত