শিশুরা চোখ ঘষলেই মায়েরা বুঝে যান এখন তারা ক্লান্ত, ঘুমের সময় হয়ে গেছে! তবে শিশুদের এমন আচরণের আরও গভীর কারণ রয়েছে। শিশুদের চোখ ঘষার বিস্তৃত কারণ বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও চক্ষু বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড গেফেন অব মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. রেবেকা ডুডোভিটজ বলেন, আমরা কোলের শিশুকে জিজ্ঞেস করতে পারি না তারা কেন চোখ ঘষে। কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে জানি, মানুষ ক্লান্ত হলে চোখ ঘষে। অনেকেই মনে করেন, এটি শুধু অস্বস্তির অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত। চোখের পেশিগুলো ক্লান্ত হয়ে গেলে ও বিশ্রামের প্রয়োজন অনুভূত হলে এই অস্বস্তি তৈরি হয়।
সারা দিন ডেস্কে বসে থাকার পরে কাঁধ ম্যাসাজের প্রয়োজন হতে পারে। একইভাবে যেসব পেশি আপনার চোখকে নির্দিষ্ট জিনিসের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ (ফোকাস) করতে সাহায্য করে সেগুলো ঘষার পরও আরাম লাগে। আশপাশের পরিবেশের বিভিন্ন বস্তুর দিকে তাকিয়ে শিশুরা তাদের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করে। এর ফলে একপর্যায়ে ক্লান্তি বোধ করে।
বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখ শুকিয়ে যায়। শিশুরা মিনিটে খুব অল্প কয়েকবার পলক (মাত্র এক থেকে দুইবার) ফেলে। তাই তাদের চোখও শুকিয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
যেই তরলকে সাধারণত ‘চোখের পানি’ পানি বলা হয়, সেটি শুধু লবণাক্ত পানিই নয়। এতে থাকে শ্লেষ্মা, লবণাক্ত পানি। সেই সঙ্গে বাষ্পীভবন রোধ করার জন্য চোখের পাতার মেইবোমিয়ান গ্রন্থি (ক্ষুদ্র তৈল গ্রন্থি যা চোখের পাতার প্রান্তে থাকে) থেকে তেলও বের হয়ে চোখের পানিতে যুক্ত হয়।
সুতরাং সুস্থ চোখের পানিতে তিনটি স্তর থাকবে। তিন স্তরকে অবশ্যই চোখে বারবার উৎপন্ন হতে হবে এবং পলক ফেলে চোখের পৃষ্ঠের ওপরে ছড়িয়ে দিতে হয়। তা না হলে চোখ শুকিয়ে যাবে।
গভীর মনোযোগ দিয়ে কোনো কিছু দেখলে মানুষ যথেষ্ট পলক ফেলে না। আর যথেষ্ট পলক না ফেললে চোখের পানির এই তিন স্তর ভেঙে পড়ে ও কর্নিয়ার (চোখের বাইরের স্বচ্ছ অংশ যা আইরিশ পিউপিল বা তারারন্ধ্রকে ঢেকে রাখে) পৃষ্ঠ কোথাও কোথাও শুকিয়ে যায়। তাই পলক পড়ার কথা মনে করিয়ে দিতেই চোখ ঘষার এই প্রবণতা দেখা যায়।
আর্নল্ড বলেন, এটি অনেকটা শ্বাস–প্রশ্বাসের মতো। শ্বাস–প্রশ্বাসের হার সাধারণত স্বয়ংক্রিয় ও যথেষ্ট। যখন আমরা বিক্ষিপ্ত বা ক্লান্ত থাকি, তখন প্রায়শই বা গভীরভাবে শ্বাস নিই। তাই আমরা দীর্ঘশ্বাস ফেলি। বাচ্চাদের চোখ ঘষা চোখের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার দীর্ঘশ্বাসের মতো ঘটনাই হতে পারে।’
তবে অতিরিক্ত ঘষা চোখের জন্য ভালো নয়। অতিরিক্ত চোখ ঘষার ফলে দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হতে পারে।
ক্লান্তি বোধের সময় চোখ ঘষলে ভালো অনুভূত হওয়ার আরেকটি কারণ রয়েছে: চোখ ঘষলে এটি স্নায়ুতন্ত্রের ট্রাইজেমিনাল এবং ভ্যাগাস স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে রক্তচাপ হ্রাস করে। স্নায়ুগুলো যথাক্রমে মস্তিষ্ক থেকে চোখ এবং মস্তিষ্ক থেকে সারা শরীরে বিস্তৃত থাকে। এটি কিছু ব্যক্তির ২০ শতাংশের বেশি হৃৎস্পন্দন হ্রাস করতে পারে। এভাবে রক্তচাপের হ্রাস ঘটানোকে ‘অকুলোকার্ডিয়াক রিফ্লেক্স’ নামে পরিচিত।
তবে এই যুক্তির বিরোধিতা করে আর্নল্ড বলেন, ‘একটি শিশুর ধীর হৃৎস্পন্দনের সঙ্গে ভালো বোধ করার কোনো সুস্পষ্ট সম্পর্ক নেই। আসলে অকুলোকার্ডিয়াক রিফ্লেক্স স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। যেমন: ব্র্যাডিকার্ডিয়া (প্রতি মিনিটে ৬০ বিটের নিচে হৃৎস্পন্দন) ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (হঠাৎ করে হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া) মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।’
আর্নল্ড আরও বলেন, ‘অকুলোকার্ডিয়াক রিফ্লেক্স ঘটানোর উদ্দেশ্যেই শিশুরা চোখ ঘষে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু এটি অত্যধিক চোখ ঘষার ফলে হতে পারে।’
সম্ভবত শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো একই কারণে তাদের চোখ ঘষে। চোখ ক্লান্ত, শুকনো ও ঘুমের জন্য প্রস্তুত হলে শিশুরা এই আচরণ করে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স লাইভ
শিশুরা চোখ ঘষলেই মায়েরা বুঝে যান এখন তারা ক্লান্ত, ঘুমের সময় হয়ে গেছে! তবে শিশুদের এমন আচরণের আরও গভীর কারণ রয়েছে। শিশুদের চোখ ঘষার বিস্তৃত কারণ বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও চক্ষু বিশেষজ্ঞরা ব্যাখ্যা করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড গেফেন অব মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. রেবেকা ডুডোভিটজ বলেন, আমরা কোলের শিশুকে জিজ্ঞেস করতে পারি না তারা কেন চোখ ঘষে। কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে জানি, মানুষ ক্লান্ত হলে চোখ ঘষে। অনেকেই মনে করেন, এটি শুধু অস্বস্তির অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত। চোখের পেশিগুলো ক্লান্ত হয়ে গেলে ও বিশ্রামের প্রয়োজন অনুভূত হলে এই অস্বস্তি তৈরি হয়।
সারা দিন ডেস্কে বসে থাকার পরে কাঁধ ম্যাসাজের প্রয়োজন হতে পারে। একইভাবে যেসব পেশি আপনার চোখকে নির্দিষ্ট জিনিসের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ (ফোকাস) করতে সাহায্য করে সেগুলো ঘষার পরও আরাম লাগে। আশপাশের পরিবেশের বিভিন্ন বস্তুর দিকে তাকিয়ে শিশুরা তাদের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করে। এর ফলে একপর্যায়ে ক্লান্তি বোধ করে।
বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে চোখ শুকিয়ে যায়। শিশুরা মিনিটে খুব অল্প কয়েকবার পলক (মাত্র এক থেকে দুইবার) ফেলে। তাই তাদের চোখও শুকিয়ে গেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
যেই তরলকে সাধারণত ‘চোখের পানি’ পানি বলা হয়, সেটি শুধু লবণাক্ত পানিই নয়। এতে থাকে শ্লেষ্মা, লবণাক্ত পানি। সেই সঙ্গে বাষ্পীভবন রোধ করার জন্য চোখের পাতার মেইবোমিয়ান গ্রন্থি (ক্ষুদ্র তৈল গ্রন্থি যা চোখের পাতার প্রান্তে থাকে) থেকে তেলও বের হয়ে চোখের পানিতে যুক্ত হয়।
সুতরাং সুস্থ চোখের পানিতে তিনটি স্তর থাকবে। তিন স্তরকে অবশ্যই চোখে বারবার উৎপন্ন হতে হবে এবং পলক ফেলে চোখের পৃষ্ঠের ওপরে ছড়িয়ে দিতে হয়। তা না হলে চোখ শুকিয়ে যাবে।
গভীর মনোযোগ দিয়ে কোনো কিছু দেখলে মানুষ যথেষ্ট পলক ফেলে না। আর যথেষ্ট পলক না ফেললে চোখের পানির এই তিন স্তর ভেঙে পড়ে ও কর্নিয়ার (চোখের বাইরের স্বচ্ছ অংশ যা আইরিশ পিউপিল বা তারারন্ধ্রকে ঢেকে রাখে) পৃষ্ঠ কোথাও কোথাও শুকিয়ে যায়। তাই পলক পড়ার কথা মনে করিয়ে দিতেই চোখ ঘষার এই প্রবণতা দেখা যায়।
আর্নল্ড বলেন, এটি অনেকটা শ্বাস–প্রশ্বাসের মতো। শ্বাস–প্রশ্বাসের হার সাধারণত স্বয়ংক্রিয় ও যথেষ্ট। যখন আমরা বিক্ষিপ্ত বা ক্লান্ত থাকি, তখন প্রায়শই বা গভীরভাবে শ্বাস নিই। তাই আমরা দীর্ঘশ্বাস ফেলি। বাচ্চাদের চোখ ঘষা চোখের স্বাস্থ্যের সুরক্ষার দীর্ঘশ্বাসের মতো ঘটনাই হতে পারে।’
তবে অতিরিক্ত ঘষা চোখের জন্য ভালো নয়। অতিরিক্ত চোখ ঘষার ফলে দৃষ্টিশক্তির ক্ষতি হতে পারে।
ক্লান্তি বোধের সময় চোখ ঘষলে ভালো অনুভূত হওয়ার আরেকটি কারণ রয়েছে: চোখ ঘষলে এটি স্নায়ুতন্ত্রের ট্রাইজেমিনাল এবং ভ্যাগাস স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে রক্তচাপ হ্রাস করে। স্নায়ুগুলো যথাক্রমে মস্তিষ্ক থেকে চোখ এবং মস্তিষ্ক থেকে সারা শরীরে বিস্তৃত থাকে। এটি কিছু ব্যক্তির ২০ শতাংশের বেশি হৃৎস্পন্দন হ্রাস করতে পারে। এভাবে রক্তচাপের হ্রাস ঘটানোকে ‘অকুলোকার্ডিয়াক রিফ্লেক্স’ নামে পরিচিত।
তবে এই যুক্তির বিরোধিতা করে আর্নল্ড বলেন, ‘একটি শিশুর ধীর হৃৎস্পন্দনের সঙ্গে ভালো বোধ করার কোনো সুস্পষ্ট সম্পর্ক নেই। আসলে অকুলোকার্ডিয়াক রিফ্লেক্স স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। যেমন: ব্র্যাডিকার্ডিয়া (প্রতি মিনিটে ৬০ বিটের নিচে হৃৎস্পন্দন) ও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (হঠাৎ করে হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে যাওয়া) মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।’
আর্নল্ড আরও বলেন, ‘অকুলোকার্ডিয়াক রিফ্লেক্স ঘটানোর উদ্দেশ্যেই শিশুরা চোখ ঘষে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু এটি অত্যধিক চোখ ঘষার ফলে হতে পারে।’
সম্ভবত শিশুরা প্রাপ্তবয়স্কদের মতো একই কারণে তাদের চোখ ঘষে। চোখ ক্লান্ত, শুকনো ও ঘুমের জন্য প্রস্তুত হলে শিশুরা এই আচরণ করে।
তথ্যসূত্র: সায়েন্স লাইভ
গণিত, প্রকৌশল, জ্যোতির্বিদ্যা ও চিকিৎসাবিদ্যার মতো বিষয়ে উচ্চতর বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ছিল প্রাচীন মিসরীয়দের। তাঁরা তাত্ত্বিক জ্ঞানের চেয়ে ব্যবহারিক জ্ঞানকে বেশি প্রাধান্য দিতেন। অনেকের ধারণা, বিজ্ঞান আধুনিককালের আবিষ্কার, যার শিকড় প্রাচীন গ্রিক সভ্যতায়।
৪ ঘণ্টা আগেপ্রস্তর যুগে চীনের পূর্বাঞ্চলে সমাজের নেতৃত্বে ছিল নারী। সম্প্রতি প্রাপ্ত ডিএনএ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই অভূতপূর্ব তথ্য। প্রায় সাড়ে ৪ হাজার আগের কঙ্কালের জিনগত উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, সেই সময়কার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক এবং সমাজের সদস্যরা অন্তত ১০ প্রজন্ম ধরে মায়ের বংশ অনুসারে...
১ দিন আগেপ্রতি বছর নদী, সমুদ্র ও অন্য বিভিন্ন জলাশয় থেকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মাছ ধরা হয়। এদের বেশির ভাগই খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে এই বিপুল-সংখ্যক মাছ ধরার পরে তাদের যে পদ্ধতিতে মারা হয়, তা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাছকে পানি থেকে তোলার পর তারা গড়ে প্রায় ২২ মিনিট পর্যন্ত
৩ দিন আগেপৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক মরুভূমিগুলোর কেন্দ্রে অবস্থিত আরব অঞ্চল একসময় সবুজে মোড়ানো স্বর্গোদ্যান ছিল। মরুপ্রধান অঞ্চল হলেও পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাসে এই ভূমি নানা সময়ে আর্দ্র আবহাওয়ার দেখা পেয়েছে, আর তখনই সেখানে জন্ম নিয়েছে লেক-নদী, বনভূমি এবং জীববৈচিত্র্যের স্বর্গ। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে এমনটাই
৫ দিন আগে