হেডি ল্যামার, একজন অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান অভিনেত্রী এবং প্রথিতযশা উদ্ভাবক। আজকের ওয়াই-ফাই, জিপিএস ও ব্লুটুথ প্রযুক্তির পথপ্রদর্শক তিনি। স্যামসন অ্যান্ড ডেলিলাহ ও হোয়াইট কার্গোর মতো চলচ্চিত্রে দর্শক মাতিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
সাধারণ মানুষ তাঁর ‘স্বাভাবিক সৌন্দর্য’ নিয়েই বহুদিন মুগ্ধ থেকেছে। কিন্তু অভিনেত্রীর উদ্ভাবনী প্রতিভা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল উপেক্ষিত।
ল্যামারের আসল নাম হেডউইগ ইভা কিসলার। ১৯১৪ সালের ৯ নভেম্বর অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার একটি সচ্ছল ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম। ব্যাংকার বাবার একমাত্র সন্তান। বাবা ছিলেন দারুণ কৌতূহলী মানুষ। ফলে কন্যার প্রতিভা তিনি ঠিকই টের পেয়েছিলেন। সব সময় খোলা চোখে বিশ্ব দেখতে অনুপ্রাণিত করেছেন। মেয়েকে নিয়ে প্রায়ই দীর্ঘ পথ হাঁটতে বেরিয়ে পড়তেন।
ছাপাখানা থেকে রাস্তার গাড়িসহ বিভিন্ন মেশিনের ভেতরের ক্রিয়াকৌশল নিয়ে মেয়ের সঙ্গে আলোচনা করতেন। এই আলাপগুলো ল্যামারের চিন্তা গঠনে সহায়তা করেছে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে কৌতূহলবশে মিউজিক বক্স খুলে আবার সফলভাবে সংযোজন করেছিলেন ল্যামার।
ল্যামারের মা ছিলেন কনসার্ট পিয়ানোবাদক। মেয়েকে শিল্পকলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই ব্যালে ও পিয়ানো দুই পাঠই পেয়েছিলেন।
১৬ বছর বয়সে পরিচালক ম্যাক্স রেইনহার্ড ল্যামারকে অভিনেত্রী হিসেবে আবিষ্কার করেন। বলতে গেলে এরপরই ল্যামারের সৌন্দর্যের দিকে সবার নজর লেগে যায়। চাপা পড়ে যায় তাঁর ভেতরের উজ্জ্বল উৎসুক মন।
বার্লিনে রেইনহার্ডের কাছে অভিনয়ে পাঠ নেন ল্যামার। ১৯৩০ সালে ‘গেল্ড আউফ ডার’ (মানি অন দ্য স্ট্রিট) নামে একটি জার্মান চলচ্চিত্রে প্রথম ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য ১৯৩২ সালে বিতর্কিত চলচ্চিত্র ‘এক্সট্যাসি’তে অভিনয়ের আগে অভিনেত্রী হিসেবে তেমন পরিচিতি পাননি।
অস্ট্রিয়ার যুদ্ধাস্ত্রের ডিলার ফ্রিটজ ম্যান্ডল ছিলেন ল্যামারের ভক্ত। ১৯৩৩ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। তবে বেশি দিন টেকেনি। অভিনয়ের জন্যই বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন ল্যামার। কারণ ক্রমেই তিনি ম্যান্ডলের পুতুল হয়ে উঠছিলেন। স্বামীর ব্যবসায়ী বন্ধুদের মনোরঞ্জনের দায়িত্ব তাঁর জীবন বিষিয়ে তুলেছিল। ১৯৩৭ সালে লন্ডনে পালিয়ে ম্যান্ডলের হাত থেকে রক্ষা পান তিনি। তবে সেই সঙ্গে যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ডিনারের টেবিলে কথোপকথন থেকে অনেক কিছুই শিখেছিলেন এবং জেনেছিলেন।
লন্ডনে থাকাকালীন ল্যামারের ভাগ্য খুলে যায়। বিখ্যাত এমজিএম স্টুডিওর লুই বি. মায়ারের সঙ্গে পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সুবাদে হলিউডে যাত্রার পথ সুগম হয়। কমনীয়তা, সৌন্দর্য আর উচ্চারণ দিয়ে আমেরিকান দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন তিনি।
হলিউডে ব্যবসায়ী ও পাইলট হাওয়ার্ড হিউজের মতো বহু বিচিত্র লোকের সঙ্গে ল্যামারের পরিচয় হয়। ল্যামার ও হিউজ ডেটিং করেছিলেন বটে, কিন্তু ল্যামারের মূল আগ্রহ ছিল উদ্ভাবনে। হলিউড তাঁর বিজ্ঞানী মনকে বোতলে ভরে রেখেছিল। হিউজ ল্যামারকে তাঁর আগ্রহের পথে হাঁটতে সহযোগিতা করেন। সেটে ট্রেলারে ব্যবহারের জন্য কয়েকটি সরঞ্জাম দিয়েছিলেন হিউজ। ল্যামার বাড়িতেই কাজ শুরু করেন। হিউজ তাঁকে তাঁর উড়োজাহাজ কারখানায় নিয়ে যান। তাঁকে দেখান কীভাবে উড়োজাহাজ তৈরি করা হয়। পুরো প্রক্রিয়ার পেছনে কাজ করা বিজ্ঞানীদের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেন।
ল্যামার উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন হিউজের কারণেই। মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি করার জন্য হিউজ দ্রুতগতির উড়োজাহাজ তৈরি করতে চাইছিলেন। ল্যামার মাছ ও পাখির বই কেনেন। এ দুই প্রজাতির মধ্যে দ্রুতগতির জাতটির গঠন নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেন। দ্রুততম মাছের পাখনা এবং দ্রুততম পাখির ডানার গঠনের সমন্বয় করে হিউজের উড়োজাহাজের জন্য নতুন ডানার নকশা করেন ল্যামার। হিউজকে নকশাটি দেখালে তিনি ল্যামারকে বলেন, ‘তুমি একটা জিনিয়াস!’
নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রতি ল্যামারের ছিল অদম্য আকর্ষণ। তিনি একটি উন্নত স্টপলাইট এবং এমন একটি ট্যাবলেট তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা কোকাকোলার মতো সোডা তৈরি করতে ব্যবহার করা যাবে। যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, ঠিক তখনই ল্যামারের প্রতিভার আসল চমক দেখা যায়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবনটি এই সময়ই করেন তিনি।
১৯৪০ সালে একটি ডিনার পার্টিতে জর্জ অ্যান্থিলের সঙ্গে দেখা হয় ল্যামারের। অ্যান্থিল ছিলেন এক অসাধারণ ব্যক্তি। দুজনে মিলে যুদ্ধে লক্ষ্যবস্তু বরাবর টর্পেডোকে গাইড করার জন্য একটি অসাধারণ যোগাযোগপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। সিস্টেমটিতে রেডিও তরঙ্গগুলোর মধ্যে ‘ফ্রিকোয়েন্সি হপিং’ বা প্লবতার বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগানো হয়েছে। ট্রান্সমিটার ও রিসিভার উভয়ই একসঙ্গে নতুন ফ্রিকোয়েন্সিতে হপিং করে। এটি করলে রেডিও তরঙ্গে ইন্টারসেপশন রোধ করা যায়। ফলে টর্পেডো কোনো বাধা ছাড়া লক্ষ্যবস্তু খুঁজে পায়।
এই উদ্ভাবনের পর ল্যামার ও অ্যান্থিল পেটেন্ট ও সামরিক সহায়তা চেয়েছিলেন। ১৯৪২ সালের আগস্টে মার্কিন পেটেন্ট পান। কিন্তু নৌবাহিনী নতুন সিস্টেম বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে।
ল্যামার তখন উদ্ভাবন ছেড়ে আশ্রয়দাতা দেশের জন্য যুদ্ধের বন্ড বিক্রি করতে তাঁর সেলিব্রিটি ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করেন। ১৯৫৩ সালের এপ্রিলে মার্কিন নাগরিক হন তিনি।
এক পয়সাও রয়্যালটি পাওয়ার আগেই ল্যামারের পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। যদিও ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রের রয়্যালটি তিনি পেয়েছেন। কিন্তু ল্যামারের উদ্ভাবনী প্রতিভা এখনো সাধারণের মধ্যে স্বীকৃতি পায়নি।
ল্যামার তাঁর উদ্ভাবনের জন্য ১৯৯৭ সালের আগে কোনো পুরস্কার পাননি। ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন ওই বছর যৌথভাবে ল্যামার ও অ্যান্থিলকে পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। ল্যামারও প্রথম নারী হিসেবে ইনভেনশন কনভেনশনের ‘বুলবি গনাস স্পিরিট অব অ্যাচিভমেন্ট’ অ্যাওয়ার্ড পান।
২০০০ সালে মারা যান ল্যামার। ফ্রিকোয়েন্সি হপিং প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য ২০১৪ সালে ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয় তাঁর নাম। এই কৃতিত্বের জন্য ল্যামারকে বলা হয় ‘মাদার অব ওয়াই-ফাই’। জিপিএস, ব্লুটুথ এবং অন্যান্য বেতার যোগাযোগপ্রযুক্তির পথপ্রদর্শকও মানা হয় এই নারীকেই।
হেডি ল্যামার, একজন অস্ট্রিয়ান-আমেরিকান অভিনেত্রী এবং প্রথিতযশা উদ্ভাবক। আজকের ওয়াই-ফাই, জিপিএস ও ব্লুটুথ প্রযুক্তির পথপ্রদর্শক তিনি। স্যামসন অ্যান্ড ডেলিলাহ ও হোয়াইট কার্গোর মতো চলচ্চিত্রে দর্শক মাতিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
সাধারণ মানুষ তাঁর ‘স্বাভাবিক সৌন্দর্য’ নিয়েই বহুদিন মুগ্ধ থেকেছে। কিন্তু অভিনেত্রীর উদ্ভাবনী প্রতিভা দীর্ঘদিন ধরেই ছিল উপেক্ষিত।
ল্যামারের আসল নাম হেডউইগ ইভা কিসলার। ১৯১৪ সালের ৯ নভেম্বর অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার একটি সচ্ছল ইহুদি পরিবারে তাঁর জন্ম। ব্যাংকার বাবার একমাত্র সন্তান। বাবা ছিলেন দারুণ কৌতূহলী মানুষ। ফলে কন্যার প্রতিভা তিনি ঠিকই টের পেয়েছিলেন। সব সময় খোলা চোখে বিশ্ব দেখতে অনুপ্রাণিত করেছেন। মেয়েকে নিয়ে প্রায়ই দীর্ঘ পথ হাঁটতে বেরিয়ে পড়তেন।
ছাপাখানা থেকে রাস্তার গাড়িসহ বিভিন্ন মেশিনের ভেতরের ক্রিয়াকৌশল নিয়ে মেয়ের সঙ্গে আলোচনা করতেন। এই আলাপগুলো ল্যামারের চিন্তা গঠনে সহায়তা করেছে। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে কৌতূহলবশে মিউজিক বক্স খুলে আবার সফলভাবে সংযোজন করেছিলেন ল্যামার।
ল্যামারের মা ছিলেন কনসার্ট পিয়ানোবাদক। মেয়েকে শিল্পকলার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই ব্যালে ও পিয়ানো দুই পাঠই পেয়েছিলেন।
১৬ বছর বয়সে পরিচালক ম্যাক্স রেইনহার্ড ল্যামারকে অভিনেত্রী হিসেবে আবিষ্কার করেন। বলতে গেলে এরপরই ল্যামারের সৌন্দর্যের দিকে সবার নজর লেগে যায়। চাপা পড়ে যায় তাঁর ভেতরের উজ্জ্বল উৎসুক মন।
বার্লিনে রেইনহার্ডের কাছে অভিনয়ে পাঠ নেন ল্যামার। ১৯৩০ সালে ‘গেল্ড আউফ ডার’ (মানি অন দ্য স্ট্রিট) নামে একটি জার্মান চলচ্চিত্রে প্রথম ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য ১৯৩২ সালে বিতর্কিত চলচ্চিত্র ‘এক্সট্যাসি’তে অভিনয়ের আগে অভিনেত্রী হিসেবে তেমন পরিচিতি পাননি।
অস্ট্রিয়ার যুদ্ধাস্ত্রের ডিলার ফ্রিটজ ম্যান্ডল ছিলেন ল্যামারের ভক্ত। ১৯৩৩ সালে তাঁরা বিয়ে করেন। তবে বেশি দিন টেকেনি। অভিনয়ের জন্যই বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন ল্যামার। কারণ ক্রমেই তিনি ম্যান্ডলের পুতুল হয়ে উঠছিলেন। স্বামীর ব্যবসায়ী বন্ধুদের মনোরঞ্জনের দায়িত্ব তাঁর জীবন বিষিয়ে তুলেছিল। ১৯৩৭ সালে লন্ডনে পালিয়ে ম্যান্ডলের হাত থেকে রক্ষা পান তিনি। তবে সেই সঙ্গে যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ডিনারের টেবিলে কথোপকথন থেকে অনেক কিছুই শিখেছিলেন এবং জেনেছিলেন।
লন্ডনে থাকাকালীন ল্যামারের ভাগ্য খুলে যায়। বিখ্যাত এমজিএম স্টুডিওর লুই বি. মায়ারের সঙ্গে পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সুবাদে হলিউডে যাত্রার পথ সুগম হয়। কমনীয়তা, সৌন্দর্য আর উচ্চারণ দিয়ে আমেরিকান দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন তিনি।
হলিউডে ব্যবসায়ী ও পাইলট হাওয়ার্ড হিউজের মতো বহু বিচিত্র লোকের সঙ্গে ল্যামারের পরিচয় হয়। ল্যামার ও হিউজ ডেটিং করেছিলেন বটে, কিন্তু ল্যামারের মূল আগ্রহ ছিল উদ্ভাবনে। হলিউড তাঁর বিজ্ঞানী মনকে বোতলে ভরে রেখেছিল। হিউজ ল্যামারকে তাঁর আগ্রহের পথে হাঁটতে সহযোগিতা করেন। সেটে ট্রেলারে ব্যবহারের জন্য কয়েকটি সরঞ্জাম দিয়েছিলেন হিউজ। ল্যামার বাড়িতেই কাজ শুরু করেন। হিউজ তাঁকে তাঁর উড়োজাহাজ কারখানায় নিয়ে যান। তাঁকে দেখান কীভাবে উড়োজাহাজ তৈরি করা হয়। পুরো প্রক্রিয়ার পেছনে কাজ করা বিজ্ঞানীদের সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দেন।
ল্যামার উদ্ভাবনে মনোনিবেশ করার জন্য অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন হিউজের কারণেই। মার্কিন সেনাবাহিনীর কাছে বিক্রি করার জন্য হিউজ দ্রুতগতির উড়োজাহাজ তৈরি করতে চাইছিলেন। ল্যামার মাছ ও পাখির বই কেনেন। এ দুই প্রজাতির মধ্যে দ্রুতগতির জাতটির গঠন নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করেন। দ্রুততম মাছের পাখনা এবং দ্রুততম পাখির ডানার গঠনের সমন্বয় করে হিউজের উড়োজাহাজের জন্য নতুন ডানার নকশা করেন ল্যামার। হিউজকে নকশাটি দেখালে তিনি ল্যামারকে বলেন, ‘তুমি একটা জিনিয়াস!’
নতুন নতুন উদ্ভাবনের প্রতি ল্যামারের ছিল অদম্য আকর্ষণ। তিনি একটি উন্নত স্টপলাইট এবং এমন একটি ট্যাবলেট তৈরি করতে চেয়েছিলেন, যা কোকাকোলার মতো সোডা তৈরি করতে ব্যবহার করা যাবে। যাই হোক, যুক্তরাষ্ট্র যখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, ঠিক তখনই ল্যামারের প্রতিভার আসল চমক দেখা যায়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবনটি এই সময়ই করেন তিনি।
১৯৪০ সালে একটি ডিনার পার্টিতে জর্জ অ্যান্থিলের সঙ্গে দেখা হয় ল্যামারের। অ্যান্থিল ছিলেন এক অসাধারণ ব্যক্তি। দুজনে মিলে যুদ্ধে লক্ষ্যবস্তু বরাবর টর্পেডোকে গাইড করার জন্য একটি অসাধারণ যোগাযোগপ্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন। সিস্টেমটিতে রেডিও তরঙ্গগুলোর মধ্যে ‘ফ্রিকোয়েন্সি হপিং’ বা প্লবতার বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগানো হয়েছে। ট্রান্সমিটার ও রিসিভার উভয়ই একসঙ্গে নতুন ফ্রিকোয়েন্সিতে হপিং করে। এটি করলে রেডিও তরঙ্গে ইন্টারসেপশন রোধ করা যায়। ফলে টর্পেডো কোনো বাধা ছাড়া লক্ষ্যবস্তু খুঁজে পায়।
এই উদ্ভাবনের পর ল্যামার ও অ্যান্থিল পেটেন্ট ও সামরিক সহায়তা চেয়েছিলেন। ১৯৪২ সালের আগস্টে মার্কিন পেটেন্ট পান। কিন্তু নৌবাহিনী নতুন সিস্টেম বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে।
ল্যামার তখন উদ্ভাবন ছেড়ে আশ্রয়দাতা দেশের জন্য যুদ্ধের বন্ড বিক্রি করতে তাঁর সেলিব্রিটি ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করেন। ১৯৫৩ সালের এপ্রিলে মার্কিন নাগরিক হন তিনি।
এক পয়সাও রয়্যালটি পাওয়ার আগেই ল্যামারের পেটেন্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। যদিও ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রের রয়্যালটি তিনি পেয়েছেন। কিন্তু ল্যামারের উদ্ভাবনী প্রতিভা এখনো সাধারণের মধ্যে স্বীকৃতি পায়নি।
ল্যামার তাঁর উদ্ভাবনের জন্য ১৯৯৭ সালের আগে কোনো পুরস্কার পাননি। ইলেকট্রনিক ফ্রন্টিয়ার ফাউন্ডেশন ওই বছর যৌথভাবে ল্যামার ও অ্যান্থিলকে পাইওনিয়ার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। ল্যামারও প্রথম নারী হিসেবে ইনভেনশন কনভেনশনের ‘বুলবি গনাস স্পিরিট অব অ্যাচিভমেন্ট’ অ্যাওয়ার্ড পান।
২০০০ সালে মারা যান ল্যামার। ফ্রিকোয়েন্সি হপিং প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য ২০১৪ সালে ন্যাশনাল ইনভেন্টরস হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হয় তাঁর নাম। এই কৃতিত্বের জন্য ল্যামারকে বলা হয় ‘মাদার অব ওয়াই-ফাই’। জিপিএস, ব্লুটুথ এবং অন্যান্য বেতার যোগাযোগপ্রযুক্তির পথপ্রদর্শকও মানা হয় এই নারীকেই।
মহাকাশ গবেষণায় নতুন এক চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে যা সৌরজগৎ সম্পর্কে আমাদের ধারণা আবারও বদলে দিতে পারে। আন্তর্জাতিক গবেষকদলের দাবি, সৌরজগতের একেবারে প্রান্তে লুকিয়ে আছে রহস্যময় নবম গ্রহ ‘প্ল্যানেট নাইন’ বা ‘প্ল্যানেট এক্স’।
১০ ঘণ্টা আগেপৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ নিয়ে মানুষের আগ্রহের অন্ত নেই। সাধারণ মানুষেরই যেখানে আগ্রহ সীমাহীন, সেখানে যেসব গবেষক চাঁদ নিয়ে কাজ করছেন তাদের আগ্রহ কেমন হতে পারে? এবার বিজ্ঞানীদের সেই আগ্রহ মেটাতেই চাঁদের মাটিতে ইন্টারন্যাশনাল লুনার রিসার্চ স্টেশন বা আন্তর্জাতিক চন্দ্র গবেষণাকেন্দ্র (আইএলআরএস) গড়তে
১ দিন আগেসাধারণত গাছের চাহিদা বুঝতে নিজের অভিজ্ঞতা এবং অনুমানের ওপর নির্ভর করেন কৃষকেরা। তবে ভবিষ্যতে গাছও জানাতে পারবে তার প্রয়োজনের কথা। কখন তার পানির প্রয়োজন বা কীটের আক্রমণ হয়েছে, তা সে নিজেই কৃষককে জানিয়ে দেবে।
১ দিন আগেআপনি কি কখনো ভেবে দেখেছেন—কেন কুকুর, বিড়াল বা গরিলার মতো আপনার সারা শরীর ঘন লোমে ঢাকা নয়? মানুষই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী নয় যাদের লোম পাতলা। হাতি, গন্ডার এবং নেংটি ইঁদুরের গায়েও খুব কম লোম থাকে। তিমি এবং ডলফিনের মতো কিছু সামুদ্রিক স্তন্যপায়ীর ক্ষেত্রেও এটা সত্যি।
৩ দিন আগে