Ajker Patrika

নৌকার সমর্থকেরা প্রচুর জাল ভোট দিচ্ছে: ডলি সায়ন্তনী

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫: ২৬
নৌকার সমর্থকেরা প্রচুর জাল ভোট দিচ্ছে: ডলি সায়ন্তনী

পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনে বিভিন্ন কেন্দ্রে জোরপূর্বক নৌকায় ভোট নেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে নৌকার সমর্থকেরা প্রচুর জাল ভোট দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এ আসনে বিএনএমের প্রার্থী সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনী। 

আজ রোববার ভোট গ্রহণ শুরুর পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি নিজের ফেসবুক পেজে লাইভে এসে এ অভিযোগ করেন। 

ফেসবুক লাইভে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘সুজানগরের অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটারদের হাতে নৌকা প্রার্থীর ছবি ও প্রতীক সংবলিত কাগজ দেওয়া হচ্ছে। ভোটাররা সেই কাগজ হাতে কেন্দ্রে আসছেন। কেন্দ্র থেকে স্থানীয় গ্রামপ্রধানেরা তাঁদের নৌকায় ভোট দিতে বলছেন। একই সঙ্গে প্রকাশ্যে ব্যালট পেপার ভাঁজ করতে বলছেন। সুজানগরের মোহাম্মদীয়া দাখিল মাদ্রাসা, মানিকহাট, সুজানগর পৌর এলাকার অধিকাংশ এলাকায় নৌকার প্রার্থীর সমর্থকেরা জাল ভোট দিচ্ছে। জোর করে ভোট কেটে নিচ্ছে। নোঙ্গর মার্কার এজেন্ট বের করে দিচ্ছে।’ 

লাইভে ডলি সায়ন্তনী ‘এমন ভোট বন্ধ করতে’ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একই সঙ্গে যেসব কেন্দ্রে এভাবে ভোট নেওয়া হয়েছে সেই কেন্দ্রগুলো বন্ধের দাবি করেন। 

ফেসবুক লাইভের পরে যোগাযোগ করা হলে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘অধিকাংশ কেন্দ্রেই নৌকার পক্ষে জোরপূর্বক ভোট নেওয়া হচ্ছে। গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের একটি কেন্দ্রে সকাল ১০টার মধ্যেই ব্যালট বাক্স ভর্তি হয়ে গেছে। এভাবে চললে এটাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন বলা যায় না। আমরা এমন ভোট বন্ধ চাই। সব জায়গায় নৌকার লোকজন জাল ভোট দিচ্ছে। সব জায়গায় আমি গিয়ে নিজে হাতে ধরেছি।’ 

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আসনে নৌকার প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আহম্মেদ ফিরোজ কবির বলেন, ‘আন্দাজে এমন অভিযোগ দিলে চলবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিতে হবে। কোনো কেন্দ্রেই জোরপূর্বক ভোট নেওয়া হচ্ছে না। আর জোরপূর্বক ভোটের অভিযোগ করলে সেটা আমার দিকে নয়, প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ।’ 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তিনি (ডলি সায়ন্তনী) একটি কেন্দ্রের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট পাঠানো হয়েছে। কোনো প্রকার অনিয়ম হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শেখ মুজিবের রক্ষীবাহিনী ৩০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছিল: সালাহউদ্দিন আহমদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে’র ৫০ বছর উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে’র ৫০ বছর উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেখ মুজিবুর রহমান রক্ষীবাহিনী সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ৩০ হাজার তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার অন্তরে কখনোই বাকশালের বাইরে অন্য কোনো চেতনা ছিল না। শেখ মুজিব করেছিলেন সাহসিকতার সঙ্গে বাকশাল, সাংবিধানিকভাবে উন্মুক্তভাবে আর শেখ হাসিনা সেই বাকশাল এখানে বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন একদলীয় শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে। গণতান্ত্রিক মুখোশ ও ভোটের নামে প্রহসনের মাধ্যমে এই একদলীয় রাষ্ট্রব্যবস্থা শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিলেন।’

‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে’র ৫০ বছর উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ভবনের মাল্টিপারপাস হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

ইতিহাসের ব্যাখ্যা দিয়ে বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এই দেশের, এই ভূখণ্ডের মানুষ তাঁর (শেখ মুজিব) মাধ্যমেই এ দেশের মুক্তি চেয়েছিল, অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতান্ত্রিক মুক্তি। অথচ তিনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকারকে কবর দিয়েছেন, গণতন্ত্রকে কবর দিয়েছেন, এ দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজিয়েছেন। আওয়ামী লীগের জন্ম থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের রক্তে, চেতনায়, ডিএনএতে গণতন্ত্রের বীজ নাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দলগুলোর অবস্থান পরিষ্কার হওয়ার পর জোটের বিষয়ে বিবেচনা: নুরুল হক

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ০৪
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড বটতলি মোড়ে বক্তব্য দেন নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড বটতলি মোড়ে বক্তব্য দেন নুরুল হক নুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, দেশের পরিবর্তনের প্রশ্নে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাফিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান পরিষ্কার হওয়ার পরই বিবেচনা করা হবে গণঅধিকার পরিষদ কোনো জোটে যাবে কি না। আজ শনিবার (৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ড বটতলি মোড়ে ছোট যমুনা ব্রিজসংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নুরুল হক বলেন, ‘দেশে আর যেন কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার না হয়, সেই প্রচেষ্টার দল গণঅধিকার পরিষদ। পুলিশ বলেন, আর্মি বলেন, এমপি-মন্ত্রী বলেন সকলের বেতন দেওয়া হয় জনগণের ভ্যাট এবং ট্যাক্সের টাকায়। এই আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা প্রশাসন কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে যেন নতিস্বীকার না করে। রাজনৈতিক দলের হেলানো আঙুলে উঠে এবং না বসে। তারা যেন জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে আইনের মধ্যে থেকে কাজ করতে পারে। জনগণের প্রতি ইনসাফ প্রদর্শন করে। সেই লক্ষ্যে পুলিশের নিয়োগ এবং পদোন্নতির জন্য একটি স্বাধীন কমিশন করার প্রস্তাব করেছি।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলই সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় না। কারণ, তারা ভোটকেন্দ্র দখল করতে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের পৃষ্ঠপোষক করতে চায়। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য সকলে মিলেমিশে একটি ঐকমত্যের সরকার গঠনের চেষ্টায় আমরা আছি। কিন্তু আমরা চাইলেই হবে না। সব দল ও সকলে মিলেমিশে আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কোন দিকে পরিচালিত হবে, সেই ফয়সালা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৮
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মাতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মাতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ এবং জবাবদিহিমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কর্তব্য। অবশ্যই কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়। এ কারণে বিএনপি সরকারের প্রতি কোনো রকম চাপ প্রয়োগ করার পরিবর্তে ভিন্নমতের জায়গাগুলোতে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে।’

আজ শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

সম্মেলনে তারেক রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে মানুষের অধিকার, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য একটি বিশাল সুযোগ অপেক্ষমাণ। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের রাজপথের আন্দোলনের সঙ্গী কারও কারও ভূমিকা দেশে আপনার এবং আমার বহু মানুষের অধিকার এবং সুযোগকে বিনষ্ট করার হয়তো একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে। দেশ যদি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে, তাহলে পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তির পুনর্বাসনের পথ সুগম হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে ফ্যাসিবাদের রোষানলে থেকে বাঁচতে ফ্যাসিবাদবিরোধীদের কেউ কেউ যে উপায়ে গুপ্ত কৌশল অবলম্বন করেছিল, পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তিও বর্তমানে একইভাবে গুপ্ত কৌশল অবলম্বন করে দেশকে গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করে তুলছে কি না—সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান জানাতে চাই।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পরাজিত পলাতক শক্তি কোনো দলের আড়ালে গুপ্ত কৌশলে ভূমিকা রেখে যাতে দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার সুযোগ না পায়, গুপ্ত বাহিনীর সে অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় এবং বহাল রাখা। এ কারণেই বিএনপি ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সমঝোতা এবং সহযোগিতার দৃষ্টিভঙ্গি সমুন্নত রেখেছে।’

হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ক্ষমতায় নিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি স্লোগানে স্লোগানে বলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই ধানের শীষে ভোট চাই, হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ ভাই-ভাই ধানের শীষে ভোট চাই।’

হিন্দুসহ দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের অনেক দাবিদাওয়া আছে। বিএনপি এসব দাবির পক্ষে। তবে দাবি পূরণে তারেক রহমানকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এ লক্ষ্যে তারেক রহমানকে সহযোগিতা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ দেখতে চাই। সেই নিশ্চয়তাই তারেক রহমান দেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

কথায় কথায় রাস্তায় গেলে সংঘর্ষ হবে: আমীর খসরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

দেশের মানুষ সাংঘর্ষিক রাজনীতি দেখতে চায় না মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রতিবাদের অধিকার সবার আছে, তবে অন্যের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে।’ আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা’ নিয়ে ট্রেস কনসালট্যান্সি নামের একটি প্রতিষ্ঠান আয়োজিত সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ‘কথায় কথায় আপনি রাস্তায় যাবেন। এখন অন্য দল যদি তার প্রতিবাদে আবার রাস্তায় যায়, তাহলে কী হবে, সংঘর্ষ হবে না? বৃহত্তর দল বাংলাদেশে যদি রাস্তায় নামে এগুলোর প্রতিবাদে, সংঘর্ষ হবে। এ জন্য কি আমরা শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছি?’

আমীর খসরু আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে বিশ্বাস করতে হবে যে, যতটুকু ঐকমত্য হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে আবার নতুন ইস্যু সৃষ্টি করলে কিন্তু ঐকমত্যের শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে না। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও ঐকমত্য হতে হবে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার গত ১৭ বছরের শাসনে আমাদের মধ্যে একটা স্বৈরাচারী মনোভাব চলে আসছে। আমরা মনে করি যে আমার দফা, আমার দাবি, আমার চিন্তা না থাকলে এটাকে গ্রহণ করা যাবে না।’

গণভোট প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘এই সরকার সংবিধানের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত হয়েছে। সেই সংবিধানে গণভোটের কিছু নেই। যদি গণভোট করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশের বর্তমান সংবিধান অনুসারে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংসদে এসে সংসদে পাস করার পরে সেই বিষয়গুলো গণভোটে যেতে পারে।’

সংলাপে বিএনপির সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিবকে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু ওনারা বলেছেন, জামায়াতের আহ্বানে তাঁরা সাড়া দেবেন না। বিগত রেজিম কিন্তু এ ধরনের সুর সব সময় বাজাত যে ওমুকের সঙ্গে বসবে না। এই কালচার থেকে কি বের হতে পারি না? বিএনপি যদি আহ্বান করে, জামায়াত যাবে এবং অন্যদেরও আহ্বান জানাবে।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে হামিদুর রহমান বলেন, ‘অঙ্গীকার যুক্ত করে চার্টার হয়েছে। এর দুটি পার্ট। দ্বিতীয়টা হচ্ছে বাস্তবায়ন, যা স্বাক্ষরের সঙ্গে যুক্ত না। আমাদের সিদ্ধান্তে তা-ই ছিল। বাস্তবায়ন বিষয়টা আলাদা বিষয়। এর ওপর স্বাক্ষর হয়নি। এরপরই বিরোধ তৈরি হয়।’

গণভোট আগে চাওয়ার যুক্তি দেখিয়ে সাবেক সংসদ সদস্য হামিদুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে মানুষের মনোযোগ থাকে দল ও প্রার্থীর ওপর। নির্বাচনের কেন্দ্র দখল, ভোটকেন্দ্র স্থগিত হওয়া, আবার দুই ভোট একসঙ্গে হলে অনেক সময় লাগবে। এতে সব ভোটার হয়তো ভোটও দিতে পারবে না।’

সংলাপে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জুলাই সনদ নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে উল্লেখ করে বলেন, ‘এ ধরনের বিতর্ক পৃথিবীর অনেক জায়গায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে চলে। দ্বিমত থাকবে, তারপর ঐকমত্য হবে। দলগুলো সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে সরকার তার ওপরে অর্পিত দায়িত্ব অনুসারে একটা সিদ্ধান্ত দেবে।’

তিনি বলেন, ‘আলোচনা এখন হয়েছে, আবার নির্বাচনের পরও হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, সুশাসন চায় এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ চায়।’

নির্বাচন ঠিক সময়ে, একদম ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, ‘পুরো দেশে নির্বাচনী জোয়ার এসেছে, জনগণ একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার পাবে।’

বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক শাহাব এনাম খানের সঞ্চালনায় সংলাপে অন্যদের মধ্যে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। সংলাপে সভাপতিত্ব করেন ট্রেস কনসালট্যান্সির প্রধান নির্বাহী ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত