Ajker Patrika

জাতীয় নাগরিক পার্টির ঘোষণাপত্র

সেকেন্ড রিপাবলিকের লক্ষ্যে গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন কর্মীরা। ছবি: মেহেদী হাসান
জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন কর্মীরা। ছবি: মেহেদী হাসান

জুলাই অভ্যুত্থানের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এই ঘোষণাপত্রে সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠাকে অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের পর নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে চায় নতুন দলটি।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টি এই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করে।

ঘোষণাপত্রে বলা হয়, জুলাই ২০২৪ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে, আমরা বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এই মর্মে ঘোষণা করছি, আমরা হাজার বছরের ঐতিহাসিক পরিক্রমায় বঙ্গীয় বদ্বীপের জনগোষ্ঠী হিসেবে এক সমৃদ্ধ ও স্বকীয় সংস্কৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পত্তন ঘটে। তবে শোষণ ও বৈষম্য থেকে এ দেশের গণমানুষের মুক্তি মেলেনি। ফলে দীর্ঘ ২৩ বছরের সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। কিন্তু স্বাধীনতার পর দীর্ঘসময় ধরে বাংলাদেশের জনগণকে বারবার গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করতে হয়েছে।

১৯৯০ সালে ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে সামরিক স্বৈরাচারকে হটাতে হয়েছে। তথাপি, স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়েও আমরা গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে এমন একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করতে পারিনি। বরং বিগত ১৫ বছর দেশে একটি নিষ্ঠুর ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল, যেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থে বেপরোয়া ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। বিরোধী মতের কণ্ঠরোধ, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি ও অর্থ পাচারকে একটি রাষ্ট্রীয় সংস্কৃতিতে পরিণত করা হয়েছে।

জুলাই ২০২৪-এ ছাত্র-জনতা বিপুল আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি। জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল, যাতে করে জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি। এটি হবে একটি গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মঞ্চের সামনে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীদের ঢল। ছবি: মেহেদী হাসান
আজ শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মঞ্চের সামনে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীদের ঢল। ছবি: মেহেদী হাসান

আমরা মনে করি, জুলাই ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থান আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াই সূচনা করেছে। একটি গণতান্ত্রিক নতুন সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদেরকে সাংবিধানিক স্বৈরতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনার অবসান ঘটাতে হবে। সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন আমাদের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষ্য। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। ভেঙে পড়া রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় গড়ে তোলা ও তাদের গণতান্ত্রিক চরিত্র রক্ষা করা হবে আমাদের রাজনীতির অগ্রাধিকার। এর মধ্য দিয়েই কেবল আমরা একটি পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হতে পারব।

আমরা এমন একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ চাই, যেখানে সমাজে ও রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বিভেদের বদলে ঐক্য, প্রতিশোধের বদলে ন্যায়বিচার এবং পরিবারতন্ত্রের বদলে মেধা ও যোগ্যতার মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত হবে। আমাদের রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না।

আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বরকে মূলধারায় তুলে আনা হবে। আমাদের রিপাবলিকে সাধারণ মানুষ, একমাত্র সাধারণ মানুষই হবে ক্ষমতার সর্বময় উৎস। তাদের সকল ধরনের গণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকারের শক্তিশালী সুরক্ষাই হবে আমাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র। আমরা ঐতিহ্য, সামাজিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষার মাধ্যমে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণ করতে চাই। আমাদের রিপাবলিক সকল নাগরিককে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও ক্ষমতার অপব্যবহার থেকে শক্তিশালী সুরক্ষা প্রদান করবে। আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিকে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর কোনো অংশকেই অপরায়ন করা হবে না। বরং রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে সমান গুরুত্ব প্রদান ও সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মঞ্চের সামনে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীদের ঢল। ছবি: মেহেদী হাসান
আজ শুক্রবার রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির’ আত্মপ্রকাশকে কেন্দ্র করে মঞ্চের সামনে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীদের ঢল। ছবি: মেহেদী হাসান

অর্থনীতিতে, আমরা কৃষি-সেবা-উৎপাদন খাতের যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে এমন একটি জাতীয় অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই, যেটি হবে স্বনির্ভর, আয়-বৈষম্যহীন। আমাদের অর্থনীতিতে সম্পদ একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে পুঞ্জীভূত হবে না, বরং সম্পদের সুষম পুনর্বণ্টন হবে আমাদের অর্থনীতির মূলমন্ত্র। আমরা বেসরকারি খাতের সিন্ডিকেট ও গোষ্ঠীস্বার্থ নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ভোক্তা ও জনস্বার্থ সংরক্ষণ করব। অর্থনৈতিক অগ্রগতির মাধ্যমে এই অঞ্চলের একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব নিশ্চিত করব এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি খাতে জোর দিয়ে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে একটি টেকসই, আধুনিক অর্থনীতি গড়ে তোলা হবে।

পরিশেষে, আমরা একটি ন্যায্যতা ও সমতাপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের সংকল্প আবারও পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জুলাই ২০২৪ গণ-অভ্যুত্থান কেবল একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেই বিজয় নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণেরও শপথ। চলুন আমরা একসঙ্গে, হাতে হাত রেখে, এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি যেখানে প্রতিটি নাগরিকের কণ্ঠস্বর প্রতিধ্বনিত হবে, যেখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, মানুষের অধিকারের সংগ্রামই হবে রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য। যেখানে সাম্য ও মানবিক মর্যাদা হবে রাষ্ট্রের ভিত্তি। এখনই সময়—নতুন স্বপ্ন দেখার, নতুন পথচলার, এবং একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার!

তাই আসুন, প্রত্যেকে যার-যার অবস্থান থেকে শপথ করি। ঐক্যবদ্ধ হই। এবং আমাদের কাঙ্ক্ষিত সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে দৃঢ়চিত্তে এগিয়ে যাই। আমাদের দেশ, আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ—আমাদের সেকেন্ড রিপাবলিক অধরা কোনো স্বপ্ন নয়, এটি আমাদের প্রতিজ্ঞা!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ও নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতেই বিএনপির প্রার্থীকে গুলি: মির্জা ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৫৫
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

জনসংযোগকালে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বুধবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুষ্কৃতকারীরা আবারও দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টিসহ নৈরাজ্যের মাধ্যমে ফায়দা হাসিলের অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে। দুষ্কৃতকারীদের নির্মম হামলায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহসহ আরও একাধিক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধের ঘটনা সেই অপতৎপরতারই নির্মম বহিঃপ্রকাশ।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতেই এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তাই এসব দুষ্কৃতকারীকে কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দলমত-নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ওত পেতে থাকা দুষ্কৃতকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে।

বিএনপির মহাসচিব বিবৃতিতে এরশাদ উল্লাহসহ গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানান এবং গুলিতে আহত ব্যক্তিদের আশু সুস্থতা কামনা করেন।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত এরশাদ উল্লাহ জনসংযোগকালে বুধবার বিকেলে দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়ে স্থানীয় এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তথ্যমতে, এ সময় আরও একাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে আমজনতার তারেককে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২২: ০৫
আমজনতা দলের সদস্যসচিব তারেক রহমানকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
আমজনতা দলের সদস্যসচিব তারেক রহমানকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা

আমজনতার দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন না পাওয়ায় কমিশনের সামনে আমরণ অনশনে বসা দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।

ইসির সামনে সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ বুধবার রাত ৮টার দিকে তাঁকে স্যালাইন দেওয়া হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে দলটির নেতা-কর্মীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে আগারগাঁওয়ে ইসির প্রধান ফটকের সামনে বসে আমরণ অনশনের ডাক দেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের পদত্যাগ চাওয়া মুনতাসিরকে এনসিপি থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩১
মুনতাসির মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
মুনতাসির মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত

সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় কেন্দ্রীয় সংগঠক মুনতাসির মাহমুদকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান এনসিপির দপ্তর সেলের সদস্য সাদিয়া ফারজানা দিনা।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১২ অক্টোবর এনসিপি/কেন্দ্র/শোকজ/২০২৫-২০২৬/১৪ স্মারকে আপনাকে (মুনতাসির মাহমুদ) সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয় এবং আপনাকে কেন স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হবে না তার লিখিত ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়।

ওই নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ১৪ অক্টোবর মুনতাসির মাহমুদ লিখিত জবাব প্রদান করেন। ওই জবাব পর্যালোচনা করে তাঁর প্রদত্ত ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং পূর্বোক্ত ঘটনায় শৃঙ্খলা কমিটির কার্যক্রম চলমান অবস্থায় তাঁকে সতর্ক করা সত্ত্বেও বারবার সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্দেশক্রমে তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।

উল্লেখ্য, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে একদল লোক নিয়ে সম্প্রতি মগবাজারে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকে বিক্ষোভ করেন মুনতাসির মাহমুদ। তিনি সংস্থাটিতে উপপরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। সেদিনই মুনতাসিরকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইদিন রেড ক্রিসেন্টের চাকরিও হারান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে সবাইকে কাজ করতে হবে, নেতা-কর্মীদের নজরুল ইসলাম খান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে আজ বুধবার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ছবি: ফোকাস বাংলা
রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে আজ বুধবার আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ছবি: ফোকাস বাংলা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) ভবনে আজ বুধবার জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ‘শহীদ জিয়া: শ্রমিক জাগরণ, উৎপাদন ও উন্নয়ন শীর্ষক’ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে যাঁদের মনোনীত করা হবে, তাঁদের বিজয়ী করার জন্য সবাই মিলে কাজ করতে হবে। ৩১ দফা যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বলা আছে। শ্রমিকদের কথা বিশেষ করে বলা আছে। আমরা যদি এই পরিবর্তন আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারি, তাহলে আমাদের আকাঙ্ক্ষার অনেক কিছুই পূরণ হবে।’

রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমান দেশের জন্য ‘যুগান্তকারী উন্নয়নের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন’-এ মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সেই ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে। শুধু ঢাকায় নয়; সারা দেশে সবাইকে সংগঠিতভাবে কাজ করতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, শিশুদের উন্নয়ন, কৃষি, শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সর্বস্তরের মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজ করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সবার জন্য উন্নয়ন—কিছু মানুষের জন্য নয়। কিন্তু আজ দেশে অসম উন্নয়ন চলছে। কেউ কোটি টাকার মালিক হচ্ছেন, আবার কেউ দিন দিন দরিদ্র হচ্ছেন—এটা শহীদ জিয়ার চাওয়া বাংলাদেশ নয়।’

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত