Ajker Patrika

আওয়ামী লীগের বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে একমত এনসিপি-গণসংহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলনের বৈঠক হয়। ছবি: সংগৃহীত
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলনের বৈঠক হয়। ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা। একই সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ এবং নির্বাচনের আগে সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন তাঁরা।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এনসিপি ও গণসংহতি আন্দোলনের বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন দুই দলের নেতারা।

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে দলটির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, আশরাফ উদ্দীন মাহাদী ও অনিক রায়, যুগ্ম সদস্যসচিব ফরিদুল হক ও মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান।

অন্যদিকে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির নেতৃত্বে দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার, হাসান মারুফ রুমি ও মনির উদ্দিন পাপ্পু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, দীপক রায়, ইমরাদ জুলকারনাইন ও তরিকুল সুজন এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অঞ্জন দাস বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি জানান, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ, সাংবিধানিক কমিশনের মাধ্যমে সাংবিধানিক পদে নিয়োগ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ, নারী আসন ও স্থানীয় সরকার প্রসঙ্গ, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, ক্ষমতার ভারসাম্য, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের আলোচনা হয়েছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘নতুন একটা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি হবে, বাংলাদেশ একটা গণতান্ত্রিক যাত্রায় হাঁটবে—এটা শহীদের স্বপ্ন ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা। সংস্কারের জন্য যে জন-আকাঙ্ক্ষা, তা দেশে ক্ষমতার ভারসাম্য ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে এবং সত্যিকার অর্থে জনগণের হাতে ক্ষমতা ন্যস্ত হবে। সেই জায়গাটা রাষ্ট্রকাঠামোগতভাবে কীভাবে তৈরি করা যাবে, সে বিষয়ে আমরা জোর দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগের বিচার ও সংস্কার প্রসঙ্গে সাকি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের যারা গত ১৫ বছরের গুম-খুন, হামলা-মামলা ও লুটপাটে যুক্ত এবং সর্বশেষ জুলাই-আগস্টে হত্যাকাণ্ডে যারা দায়ী, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের দায়টাকে আমরা বিচারের আওতায় আনা দেখতে চাই। আমরা চাই, সংস্কারে একটা ন্যূনতম ঐকমত্য দ্রুত তৈরি হোক। সেই সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়েও যাতে আমরা একটা ঐকমত্যে আসতে পারি। নির্বাচনের ঘোষিত সময়সীমার মধ্যে সংস্কারকাজটাকে যাতে আমরা সিগনিফিক্যান্টলি এগিয়ে নিতে পারি, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি যে বিচার, মৌলিক সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের কথা বলছে, তার অনেকগুলো অ্যাজেন্ডার সঙ্গেই গণসংহতি আন্দোলন একমত, কিছু জায়গায় দ্বিমতও রয়েছে। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আজকে আলোচনা হয়েছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ এবং নির্বাচনের আগে সংস্কার কীভাবে করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

নাহিদ আরও বলেন, ‘আমরা যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত, রাষ্ট্র পুনর্গঠন-সংস্কার ও সংবিধান সংস্কার বা নতুন সংবিধানের কথা বলছি, এই আলোচনাগুলো গণসংহতি আন্দোলন জনপরিসরে দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে। এখন যে রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রত্যাশা আমরা করি, সেগুলো আসলে গত ১৬ বছরে এসব আলোচনা ও তৎপরতার ধারাবাহিকতা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত