Ajker Patrika

শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের, রাজনীতিবিদেরাই দায়ী: মির্জা ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ৫৮
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং এর জন্য রাজনীতিবিদেরা দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ সোমবার সকালে ‘বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমা’ নামের শিক্ষাবিষয়ক ম্যাগাজিনের আয়োজনে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা হলে এ সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপরে খুব কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপির এ শীর্ষ নেতা। তিনি বলেন, শুধু অতি মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য উচ্চশিক্ষা রাখা উচিত আর সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের বেশির ভাগের জন্য ভোকেশনাল অ্যান্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং ব্যবস্থা করতে পারলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বিএ বা এমএ পাস করার পর ছাত্রছাত্রীরা কাজ পান না, কারণ, এই ডিগ্রিগুলো চাকরি দিতে পারে না। কিন্তু যদি কেউ বিএসসি পাস করতেন বা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা নিতে পারতেন, তবে তাঁর চাকরি কেউ আটকাতে পারত না। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা, ইনস্টিটিউট বা ভোকেশনাল সেন্টারগুলোর অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, রাজনীতিবিদেরাই একটি দেশের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করেন। একজন রাজনৈতিক নেতা যেমন জাতিকে উচ্চ শিখরে নিয়ে যান বা পথ তৈরি করেন, আবার কেউ নিচে নিয়ে যান বা পথ নষ্ট করেন। দেখার বিষয় কে জ্ঞানে গরিমায় রাজনীতিকে সমৃদ্ধ করতে চায় আর কে কেবল নিজের স্বার্থে রাজনীতিকে ব্যবহার করতে চায়। গণ-অভ্যুত্থানের পরে দেশকে সুন্দর করে গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, কিন্তু রাজনীতিবিদদের বিভাজনে সেটি নষ্ট হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাজনীতিতে নামার সময় একে ‘নোংরা প্রফেশন’ বলেছিলেন। তাঁর উদাহরণ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনীতিতে ‘নোংরা’ বা ‘ডার্ট’ থেকেই বারাক ওবামা ফুল ফোটাতে চেয়েছিলেন। রাজনীতিতে সৌন্দর্য, সততা ও স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্য না থাকলে তা কখনোই সুন্দর হবে না। যাঁরা ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য রাজনীতি করেছেন ও মানুষের ঘৃণা ছাড়া কিছু সৃষ্টি করতে পারেননি, তাঁরা আজ দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।

ফখরুল ইসলাম আলমগীরের রাজনীতিতে আসার কারণ হিসেবে পারিবারিকভাবে রাজনীতিতে থাকা ও ছাত্রজীবনে অত্যন্ত উঁচু দরের রাজনীতিবিদদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সৌভাগ্যের কথা জানান।

এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ দিয়েছেন যাঁরা, সেসব শিক্ষার্থীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সংবর্ধিতদের উদ্দেশে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের তরুণদের সামনে একটি বিশাল পৃথিবী এবং একটি সম্ভাবনাময় স্বপ্নকে বাস্তবিত করার সুযোগ রয়েছে। একটি সুন্দর স্বপ্ন তৈরি হওয়া এবং দিগন্তে একটি নতুন সূর্য উঠুক, সেই সম্ভাবনা দেখতে চাই। স্বপ্ন ছাড়া কেউ কোথাও পৌঁছাতে পারে না।

নিজেকে তৈরি করে পৃথিবীর প্রতিযোগিতার সঙ্গে টিকতে না পারলে নিক্ষিপ্ত হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পৃথিবী এখন প্রতিযোগিতা পূর্ণ। যদি টিকতে না পারো, তবে নিক্ষিপ্ত হয়ে যেতে হবে। মানুষের যদি ডিটারমিনেশন থাকে, লক্ষ্য স্থির থাকে এবং মেধা নির্দিষ্ট করা যায়, তবে নিশ্চয়ই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আজকের তরুণ প্রজন্ম তাদের হাতের ছোট ডিভাইসের মাধ্যমে গোটা পৃথিবীকে পেয়ে যায়। এটি সুনির্দিষ্টভাবে মঙ্গল বা মানবকল্যাণের জন্য ব্যবহার করাটা জরুরি, ধ্বংসের জন্য নয়। সবাই মিলে যদি মানবকল্যাণে ও একটি সুন্দর পৃথিবীর জন্য কাজ করা যায়, তবেই আমরা সেটাকে সুন্দর করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতা ঘোষণা করে জাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। সাড়ে তিন-চার বছরের অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছিলেন এবং নতুন পথে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।

বর্তমানের গার্মেন্টস শিল্প, বিদেশে শ্রমিকদের রেমিট্যান্স ও কৃষির উন্নয়ন—এসব কিছুর শুরু জিয়াউর রহমানের হাত দিয়ে শুরু হয়েছে বলে জানান ফখরুল।

সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক রাশেদা বেগম হীরার সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ড্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যাপক সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য মোশারফ হোসেন পুস্তি, অ্যাডভোকেট ড. জমিরুল আকতার, প্রকৌশলী মো. কবীর হোসেন, ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক মো. শফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিক্রমার প্রধান সম্পাদক হারুন অর রশীদ এবং উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সাঈদ আহমেদ। গেস্ট অব অনার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান।

অনুষ্ঠান শেষে জিপিএ-৫ কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন অতিথিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোট চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ফ্ল্যাটের ভেতর অন্তঃকোন্দলে এনসিপির মোতালেবকে গুলি, মাদক ও গুলির খোসা উদ্ধার: পুলিশ

বেনজীরের ফ্ল্যাট থেকে জব্দ ২৪৬ ধরনের মালামাল প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে

খুলনায় এনসিপি নেতা গুলিবিদ্ধের ঘটনায় তরুণী আটক

এবার দিল্লি ও আগরতলায় ভিসা কার্যক্রম ‘সাময়িক বন্ধ’ করল বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ