Ajker Patrika

রাজনৈতিক পক্ষগুলোর বিবাদে জনপ্রত্যাশা পূরণ নিয়ে সংশয়

  • সংবিধানসহ রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কার কীভাবে হবে, তা নিয়ে তীব্র মতভেদ।
  • সরকারে থেকে নতুন দল গঠন নিয়ে হুঁশিয়ারি বিএনপির।
  • পরিস্থিতি সামাল দিতে সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নেই, মত বিশেষজ্ঞদের।
সাহিদুল ইসলাম চৌধুরীরেজা করিম, ঢাকা 
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে জনমনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দেয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ধীরে হলেও দেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে, এমন আশাবাদের কথা শোনা যায়। এতে দেড় দশকের ভোটের খরা কাটবে এবং সরাসরি ভোটে নির্বাচিতদের নিয়ে নতুন সরকার গঠন হলে দেশের অবস্থা ভালো হবে—এমন আশায় বুক বাঁধে মানুষ। তবে সরকারের দুর্বলতা ও রাজনৈতিক পক্ষগুলোর বিবাদের মধ্যে সেই আশা কতটা পূরণ হবে, সে বিষয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে।

শেখ হাসিনার সরকারের বিদায়ের পর থেকে সংবিধানসহ রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কার কীভাবে হবে, কারা করবে, সে বিষয়ে তীব্র মতভেদ প্রকাশ্যে আনছে রাজনৈতিক পক্ষগুলো। এই পক্ষগুলোর একটি জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আগামী শুক্রবার একটি নতুন দল মাঠে আনছে। দলের প্রধান হতে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন সরকারের প্রভাবশালী উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।

সরকারে থেকে দল গঠনের বিষয়ে বরাবরই হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে এ মুহূর্তে ভোটের মাঠের বড় শক্তিগুলোর একটি বিএনপি। নাহিদ সরকার ছাড়ার পর দলটির অনেক নেতা বলছেন, এ পদত্যাগ যথেষ্ট নয়।

নাহিদ পদত্যাগের পর তাঁকে পাশে নিয়ে তোলা ছবি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের ফেসবুক পোস্টের উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লিখেছেন একদিন তিনি (নাহিদ) দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। প্রেস সচিবের এই কথা যদি প্রধান উপদেষ্টারও কথা হয়ে থাকে, তাহলে নাহিদের পদত্যাগ যথেষ্ট নয়। এ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’

২৬ বছর বয়সের নাহিদকে অন্যতম তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক চিন্তাশক্তির অধিকারী অভিহিত করে শফিকুল আলম বলেন, তিনি আগামী কয়েক দশকে দেশের রাজনীতিতে বড় নেতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন।

বিএনপি নেতারা মনে করছেন, নাহিদ যে দলটির নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন, সেটির কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ‘পদত্যাগ করে’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে যাওয়ার পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে কোন নির্বাচন আগে হবে এবং ভবিষ্যতের আইনসভার সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হবেন, সে বিষয়ে মতভেদ দেখা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক কমিটি (জানাক) ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈছাআ) মধ্যে। বিএনপি কিছু সংস্কার করে সরাসরি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেতে বলছে সরকারকে। অন্য তিন সংগঠন বলছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য শেখ হাসিনার বিচার, তারপর গণপরিষদ নির্বাচন ও ভোটের আনুপাতিক হারে পরবর্তী আইনসভা গঠন করে সেখানে সংবিধান বদলানোর কথা।

ভোটের আগে আগে ঢাকাসহ সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় রয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির ও এর সমমনা সংগঠনগুলো। খুলনার কুয়েটসহ কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ হয়েছে তাদের মধ্যে।

রাজনৈতিক শক্তিগুলোর বিবাদে জড়ানো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বড় কারণ, এমনটা মনে করছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও। দেশে ‘অরাজক পরিস্থিতি’ বিরাজ করছে, এমনটা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গতকাল বলেন, ‘আমরা নিজেরা হানাহানির মধ্যে ব্যস্ত। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গারে ব্যস্ত। এটা একটা চমৎকার সুযোগ অপরাধীদের জন্য।’ সবাইকে সতর্ক করে গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজ না করতে পারেন, নিজেরা যদি কাদা ছোড়াছুড়ি করেন, মারামারি কাটাকাটি করেন, এই দেশ এবং জাতির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে।’

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শাসনকাঠামোর ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা দুর্বল হওয়াতে সবাই যার যার আকাঙ্ক্ষা মেটানোর জন্য নেমে পড়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, শাসনব্যবস্থার যে স্তম্ভগুলো, তার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। অনেক অপরাধীকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক অস্ত্র বেহাত হয়ে গেছে; সেগুলো আর ফিরিয়ে আনা যায়নি। এমন ব্যর্থতায় পরিস্থিতির অবনতি হওয়ারই কথা।

পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ দায়িত্ব দেওয়া ছিল, এমনটা উল্লেখ করে সাব্বীর আহমেদ বলেন, ‘তাঁরা কী করলেন? কতটা করলেন? যদি না করে থাকেন, কেন করলেন না, এমন প্রশ্ন তো জনমনে আছে।’

সরকারে থেকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে সাব্বীর আহমেদ বলেন, সরকারে থেকে দল গঠন করা নতুন কিছু নয়। যাঁরা অভিযোগটি করেছেন, তাঁদের দল কীভাবে এসেছে, সেটা তাঁরা নিজেরা খুঁজে দেখতে পারেন।

দল কীভাবে গঠন হলো, সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, এমন মন্তব্য করে অধ্যাপক সাব্বীর আহমেদ বলেন, কী উদ্দেশ্যে দলটি করা হচ্ছে, দলটির নেতাদের কথা ও কাজে মিল আছে কি না, এটা গুরুত্বপূর্ণ। কথা আর কাজে মিল না থাকায় অনেক দল হারিয়ে গেছে।

নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দেশ সংকটে থাকার ঝুঁকি আছে, এমনটা মনে করেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। তিনি বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।

সব বড় দলকে এ নির্বাচনে আসার সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন, এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো বড় দলকে স্বাভাবিক রাজনৈতিক অবস্থা থেকে দূরে ঠেলে দিলে তারা ভিন্ন পথ খুঁজবে। এটা ঠিক হবে না।

গত ৫ আগস্টের পরিবর্তন যে আশাবাদ জাগিয়েছিল, রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনেরা সতর্ক না হলে তার (আশাবাদ) বাস্তবায়ন মরীচিকায় পরিণত হওয়ার ঝুঁকি আছে, এমন হুঁশিয়ারিও জানিয়ে রাখলেন এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী।

অন্যদিকে, প্রতিবেশী ভারতসহ আশপাশের দেশগুলো এবং পশ্চিমা বিভিন্ন শক্তি বাংলাদেশের ওপর নজর রাখছে, এমনটা মনে করেন সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির।

‘পরিস্থিতি স্বস্তিকর মনে হচ্ছে না’, এমনটা উল্লেখ করে গতকাল আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘অপরাধ বাড়তে থাকলে বাইরের শক্তি যারা আছে, তাদের হাত দেওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। দেশের ভেতরেও তাদের লোক আছে।’

মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের প্রতি শুরু থেকেই মানুষের সমর্থন আছে, এটা উল্লেখ করে বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মানুষ আশা করে যে তিনি নেতৃত্ব দেবেন। প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কি (নেতৃত্ব) দিচ্ছেন না, নাকি দিতে চাচ্ছেন না।’

স্থানীয় রাজনীতিতে ধর্মীয় উগ্রবাদের প্রভাব বাড়ার ওপর পশ্চিমা বিশ্বের নজর আছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করা এই কূটনীতিক বলেন, মিসর ও তিউনিসিয়ায় ডানপন্থীদের উত্থানে ভালো কিছু হয়নি। এ বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারির সুযোগ নেই, প্রজ্ঞাপন হতে পারে: সালাহউদ্দিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৮
সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য কোনো আদেশ জারির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, সরকার চাইলে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা স্পেসিফিক কোনো প্রস্তাব দিইনি যে, আদেশ কে জারি করবে। আমরা একটা সাংবিধানিকতার মধ্যে আছি; সাংবিধানিকভাবে এ সরকার শপথ নিয়েছে; সবকিছু আইনানুগভাবে চলছে। এখন কোনো অধ্যাদেশ জারি করার ক্ষমতা এই সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির। যদি কোনো আদেশ জারি করতে হয়, সেই আদেশের মর্যাদা যদি আইনি হয়, সেই আদেশ জারি করার মতো কোনো সাংবিধানিক অবস্থা এখন বাংলাদেশে নেই। কারণ, প্রেসিডেন্টের অর্ডার জারি করার একটা বিধান একসময় ছিল, যত দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়নি, আপনারা সবাই জানেন, সে রকম পিও অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট অর্ডার নিয়ে তখন রাষ্ট্রটা চলত। সংবিধান গৃহীত হয়ে যাওয়ার পরে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারির আর কোনো বিধান রইল না, সেটা বিলুপ্ত হলো। এখন কী রকম আদেশ দেবে? সেই আদেশের মর্যাদা কি আইনি হবে? সেটা এখনো সরকার নির্ধারণ করেনি। একমাত্র অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা ছাড়া রাষ্ট্রপতির অন্য কোনোভাবে আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা এখন নেই। কিন্তু আদেশ জারি করার কোনো বিধান বর্তমান সংবিধানে নেই।

‘কিন্তু যদি এখন কোনো প্রজ্ঞাপনকে আদেশ নামকরণ করতে চায় এবং সেটার আইনি মর্যাদা না থাকে, সেটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার প্রকাশ করতে পারে, গেজেট নোটিফিকেশন, সেটা আইন হবে না। এখন সরকার যদি আলোচনার আহ্বান জানায়, সে ক্ষেত্রে আলোচনার সুযোগ থাকতে পারে, রাজপথে তো নয়।’

এর আগে গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত জানাতেই এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়, জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত জুলাই সনদের বাইরে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে সনদে স্বাক্ষরকারী কোনো রাজনৈতিকের ওপর কোনো দায় বর্তাবে না অর্থাৎ পরিবর্তিত সনদ দলগুলো মানতে বাধ্য থাকবে না।

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫ ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই সনদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে বিভিন্ন দফায় কিছু নোট অব ডিসেন্ট আছে। সেই নোট অব ডিসেন্টগুলোর ক্ষেত্রে সনদে বলা আছে যে, দলগুলো যদি নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করে জনগণের ম্যান্ডেট পায়, নোট অব ডিসেন্টগুলো তারা সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে। এখানে আমরা এক শ ভাগ একমত, এখনো আমরা সেই জায়গায় আছি এবং আমরা স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে নেই। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সনদ বাস্তবায়নের উপায়সংক্রান্ত যে সুপারিশ দিয়েছে, তার মধ্যে নোট অব ডিসেন্ডের অংশগুলোর উল্লেখ নেই, একদম নেই। শুধু প্রস্তাবগুলোর ব্যাপারে ৪৮টা দফা দিয়ে তারা একটা তফসিল করেছে। সেই তফসিলে প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে গণভোটের প্রস্তাব করেছে।’

সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘গণভোটের বিষয়ে জাতীয় স্বার্থে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একই দিনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নেওয়ার জন্য জুলাই জাতীয় সনদের ওপরে আমরা রাজি হয়েছিলাম। সে জায়গায় আমরা আছি। এখন এই স্বাক্ষরিত সনদের বাইরে গিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য যে অযৌক্তিক ও নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে যে আন্দোলন করছে, সে ব্যাপারে তারা তাদের বক্তব্য দিতে পারে। কিন্তু সনদে স্বাক্ষরিত যে বিষয়গুলো আছে, তার বাইরে যদি সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নিতে যায়, তাহলে কোনো রাজনৈতিক দল, যারা সনদে স্বাক্ষর করেছে, তাদের ওপরে কোনো দায়দায়িত্ব বর্তায় না বা তারা মানতে বাধ্য নয়। এই মেসেজটা দেওয়ার জন্যই আজকে আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই: জামায়াত আমির

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩২
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘যারা জুলাই বিপ্লব মানবেন না, তাদের জন্য ২৬ সালে কোনো নির্বাচন নাই। ২৬-এ নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে। আর জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হলে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে। এই আইনি ভিত্তি ছাড়া নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

তিনি বলেন, ‘এ দেশের মুক্তিকামী মানুষের কথা একটাই, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো ভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে। গণভোটের ব্যাপারে সকল দল একমত। তাহলে তারিখ নিয়ে এই বায়নাবাজি কেন?’

পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টন মোড়ে সমাবেশে কথা বলছেন জামায়াত আমির। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই সনদের ভিত্তিতেই আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওই নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে তখন আর কোনো সংশয় সন্দেহ থাকবে না। আমরা চাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। এইটা নিয়ে কেউ ধূম্রজাল সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চালাবেন না। উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে ফেলবেন না।’

জামায়াত আমির আরও বলেন, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতের ভিত্তিতে একটা চার্টার তৈরি হয়েছে। এটি হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথা, সংখ্যাগরিষ্ঠ যা বলবে বাকিরা তাই মেনে নেবে। কিন্তু আমরা দেখলাম, কেউ কেউ তা মেনে নিতে রাজি নন। যদি আপনি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখান জাতীয় নির্বাচনে আপনি শ্রদ্ধা দেখাবেন কীভাবে? এই জায়গায় আসতে হবে।’

শফিকুর রহমান আরও বলেন, ‘সকল বায়না ভুলে যান। জুলাই শহীদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখান। জুলাইয়ে যারা লড়াই করেছে, এখনো কষ্ট করছে, মেহেরবানি করে তাদের বোঝার চেষ্টা করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য আগে গণভোট দিন: অন্তর্বর্তী সরকারকে গোলাম পরওয়ার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৯
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আপনারা অবিলম্বে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য আগে গণভোট দিন, তারপর ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করুন। জাতি আপনাদের সহযোগিতা করবে।’

রাজধানীর পল্টনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে পাঁচ দফা দাবি আদায়ে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর চলতি মাসেই গণভোট আয়োজন; ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত; ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা—এই পাঁচ দাবিতে আন্দোলন করছে জামায়াতে ইসলামী।

তাদের সঙ্গে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ইসলামপন্থী এই আট দল আজ পল্টনে সমাবেশের ডাক দেয়।

সমাবেশে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে প্রায় নয় মাস চেষ্টা করে সাংবিধানিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নানা সংস্কার নিয়ে আমরা যখন প্রায় একমত হয়েছি, তখন থেকে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের সূত্র ধরে আগামী ১৩ তারিখে শাটডাউনের নামে নতুন নাশকতার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’

ষড়যন্ত্রের সুযোগ বন্ধ করে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে জামায়াতের এ নেতা বলেন, দাবি উঠেছে এক দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচনের। তাহলে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টসহ যা যা সংশোধন হয়েছে, গণভোটের আইনি ভিত্তি যদি না হয়, তাহলে কিসের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন হবে?

গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দফায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের দাবি করেছিলাম। আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগের বিচারপ্রক্রিয়া যখন এগিয়ে যাচ্ছে, যখন এই নভেম্বরে মামলার রায় দেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তখনই ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশজুড়ে ককটেল, গাড়িতে আগুন দিয়ে নাশকতার ষড়যন্ত্র করছে।’

এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্দেশে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা শুনেছি, ঢাকায় হোটেলে-হোটেলে সন্ত্রাসীরা অবস্থান নিয়েছে। আপনারা অভিযান চালিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসরদের গ্রেপ্তার করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সংবিধান মতেই সব হলে নির্বাচন হবে ২০২৯ সালে: হামিদুর রহমান আযাদ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ৩৩
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। ছবি: সংগৃহীত

সংবিধানে গণভোট নেই যারা বলছেন তাঁদের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, সংবিধান মেনে সব করলে ছাব্বিশ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কোথাও লেখা নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ার কথা উনত্রিশ সালে।

আজ মঙ্গলবার পল্টন মোড়ে নির্বাচনের আগে গণভোটসহ ৫ দাবিতে আয়োজিত ৮ দলের গণসমাবেশে এ কথা বলেন হামিদুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুরা কেউ কেউ বলে—সংবিধানে গণভোট নাই। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের আমলে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে গণভোট বাতিল করেছিল শেখ হাসিনা। আজকে যারা বলে সংবিধানে এটা নাই, তারা কি হাসিনার সুরে কথা বলে না?’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যারা বলে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা—৫ বছর পরপর নির্বাচনের কথা সংবিধানে লেখা আছে। চব্বিশে যদি নির্বাচন হয়, তাহলে ছাব্বিশ সালে নির্বাচন হবে কোথায় লেখা আছে? সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হতে হবে উনত্রিশ সালে।’

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘এই সমাজকে যদি আরও শক্তিশালী করতে, নতুন বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু করতে হলে সংস্কারের প্রয়োজনে জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। নির্বাচনের আগে গণভোট দেওয়া ছাড়া জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’

বিএনপিকে উদ্দেশ করে এ জামায়াত নেতা বলেন, ‘আপনারা আবার নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চান, বাংলাদেশের জনগণ এই ষড়যন্ত্র বাংলার মাটিতে হতে দেবে না। সরকারকে বলতে চাই জুলাই সনদ আদেশ জারি করুন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

ঘুষ হিসেবে নেওয়া টাকা ভাগাভাগিতে ফাঁকি দেন না তিনি

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত