Ajker Patrika

মানুষ জেগে উঠেছে, তারা অধিকার ফেরত চায়: মির্জা ফখরুল

সাখাওয়াত ফাহাদ, ফরিদপুর থেকে
মানুষ জেগে উঠেছে, তারা অধিকার ফেরত চায়: মির্জা ফখরুল

নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ফরিদপুরে গণসমাবেশ করেছে বিএনপি। আজ শনিবার কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে এ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিত হন। 

নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন, গুম ও খুনের প্রতিবাদ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, লোডশেডিং বন্ধ, দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সব মামলা প্রত্যাহারসহ নানা দাবিতে এ গণসমাবেশের আয়োজন করে দলটি। 

সমাবেশে আগত বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত তিন দিন ধরে যে লড়াই আপনারা করেছেন তা হচ্ছে বেঁচে থাকার, ভাত-ভোটের অধিকার আদায়ের লড়াই। আমাদের স্বাধীনতার পতাকা রক্ষার লড়াই। আমাদের অস্তিত্বের লড়াই।’ 

আওয়ামী লীগ দেশের সকল ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘এরা নির্বাচিত সরকার নয়। এরা জোর করে খুন, গুম, পিস্তল দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, তারা তাদের অধিকার ফেরত চায়।’ 

মির্জা ফখরুল বলেন, সংবিধানের কথা বলে মানুষের ভোটের অধিকার আর কুক্ষিগত করে রাখা যাবে না। সংবিধানেতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান ছিল। তখন মানুষ ভোট দিতে পারত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানুষের মনের দাবি। মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। যতক্ষণ নিরপেক্ষ সরকার দেওয়া না হবে ততক্ষণ কোনো নির্বাচন হবে না।’ 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনলে ঘোড়াও হাসবে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বলেছেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান করতে আওয়ামী লীগ নাকি সংগ্রাম করছে। এ কথা শুনলে ঘোড়াও হাসবে। ভূতের মুখে রাম নাম। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে চিবিয়ে খেয়ে ফেলল, তারা নাকি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। ফরিদপুরের জনসভা বন্ধ করতে কত কিছু করা হলো, বরিশালে ট্রলার থেকে পিটিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এখন তারা গুলি করে মানুষ মারছে। এত ভয় কেন? কারণ জনগণের কাছ থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।’ 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সরকার এতই ভয় পেয়েছে যে জলে-স্থলে, আকাশে-বাতাসে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। সকল কিছু বন্ধ করেও কোনো লাভ হয় নাই।’ 

কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে বিএনপির গণসমাবেশফরিদপুরে বিএনপির সমাবেশের সমন্বয়কারী ও দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম বলেন, ‘যতই বাধা আসুক না কেন গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্র যেদিন মুক্ত হবে সেদিন আমাদের সবার মুক্তি হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমান এসে দেশের নেতৃত্ব দেবে। আজকের সমাবেশ প্রমাণ করেছে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের কোন ঘাঁটি নেই, ফরিদপুরের প্রতিটি বালুকণা এখন বিএনপির দখলে।’ 

বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ফরিদপুর শহরে সকাল থেকেই ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ছিল অতিরিক্ত পুলিশ। এর মধ্যেই শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বের হয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মিছিল। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট, মার্কেট ছিল পুরোপুরি বন্ধ। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও চলেছে রিকশা, মাহেন্দ্র। এ সময় দোকানপাট বন্ধ থাকায় বিপাকে পরে স্থানীয় সাধারণ মানুষ। 

ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন—বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান উমর (বীর উত্তম), ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ঈসা, জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত