Ajker Patrika

হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন তাঁর পারিবারিক সম্পত্তি: জবানবন্দিতে বদরুদ্দীন উমর

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
লেখক, গবেষক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর। ছবি: সংগৃহীত
লেখক, গবেষক ও রাজনীতিক বদরুদ্দীন উমর। ছবি: সংগৃহীত

সদ্য প্রয়াত লেখক ও গবেষক বদরুদ্দীন উমর বলেছেন, শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে এমনভাবে ব্যবহার করেছেন, যেন সেটি তার পারিবারিক সম্পত্তি। এই চেতনা একসময় কাজ করেছে—মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, আবেগে ভেসেছে। কিন্তু পরে দেখা গেছে, তার দমননীতি ও নির্যাতনের ফলে এই চেতনা ধরা পড়ে গেছে। এখন তিনি জনগণ থেকে শতভাগ বিচ্ছিন্ন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা বলেছেন বদরুদ্দীন উমর। প্রসিকিউশন সূত্র জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার আগেই রোববার সকালে মারা যান তিনি। তাঁর সাক্ষ্যের বিষয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম রোববার সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনের ১৯(২) ধারা অনুযায়ী কোনো সাক্ষী তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য দিয়ে মারা গেলে প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্রাইব্যুনাল তা গ্রহণ করতে পারেন।

বদরুদ্দীন উমর তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জবানবন্দিতে বলেছেন, শেখ হাসিনার শাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আড়ালে কর্তৃত্ববাদী শাসন আর লুটপাট। এই যে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলা হয়, সেটি নিয়ে আমি নিজেও নিশ্চিত না—এই কথাটি আসলে কী বোঝায়। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলে সবাই বলে যাচ্ছে, কিন্তু এই চেতনার প্রকৃত অর্থ কী, তা কখনো স্পষ্ট করা হয়নি। যদি চেতনা বলতে বোঝানো হয়, ১৯৭১ সালে মানুষ কী স্বপ্ন দেখেছিল, কী পেতে চেয়েছিল, তাহলে বলা যায়—সাধারণ মানুষের চেতনা আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চেতনার মধ্যে কোনো মিল ছিল না। সাধারণ মানুষ চেয়েছিল দু’বেলা খেতে, নিরাপদ জীবন, একটা সম্মানজনক চাকরি, আর একটু নিরাপত্তা। কিন্তু আওয়ামী লীগের লোকজন ভাবছিল, কীভাবে তারা সুযোগ নিয়ে সম্পদ বানাবে, ক্ষমতা কুক্ষিগত করবে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যারা বাস্তবে লড়াই করেছিল, তারা ছিল সাধারণ ছাত্র, কৃষক-শ্রমিকের সন্তান, মধ্যবিত্ত তরুণেরা। আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রী বা ছাত্রনেতাদের কারও যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা ছিল না। তাদের মধ্যে অনেকেই তখন পলায়নপর ছিল। তাহলে প্রশ্ন হলো—‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ বলতে কার চেতনার কথা বোঝানো হচ্ছে? শেখ হাসিনা যখন এটি উচ্চারণ করেন, তখন তিনি এমনভাবে বলেন যেন তাঁর চেতনা আর জনগণের চেতনা একই। কিন্তু বাস্তবে তাঁর ‘চেতনা’ জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখে না। বরং এটা এক ধরনের দলীয় রেটোরিক, যার মাধ্যমে তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি এই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক চর্চার কোনো সুযোগ দেননি। শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের বয়ানে শেখ মুজিবুর রহমানই মুক্তির একমাত্র পুরুষ, একমাত্র নেতা—এইরকম একটা ‘ঐতিহাসিক মিথ’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। অথচ বাস্তবতা হলো, ২৫ মার্চ ১৯৭১-এ শেখ মুজিব রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে পড়েন এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানে বন্দী ছিলেন এবং সেই নয় মাস যুদ্ধ সম্পর্কে প্রায় কিছুই জানতেন না।

বদরুদ্দীন উমর বলেন, যদি একটি সত্যিকারের নিরপেক্ষ নির্বাচন হতো, তাহলে আওয়ামী লীগ কয়টি আসন পেত তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। শেখ হাসিনা ‘চেতনা’ দিয়ে এক ধরনের রাজনৈতিক জমিদারি কায়েম করেছেন। মুক্তিযুদ্ধকে কংক্রিটাইজ বা বাস্তবায়িত করার কোনো চেষ্টা তিনি করেননি। তার জন্য এটি শুধু একটি রেটোরিকাল অস্ত্র। এত বেপরোয়া হয়ে তো বাংলাদেশে আর কাউকে এইভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। শেখ মুজিব বেপরোয়া ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার শাসন শৈলী ও শেখ হাসিনার শাসন শৈলীর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। কারণ হাজার হলেও, শেখ মুজিব জনগণের মধ্য থেকে উঠে এসেছিলেন, আন্দোলন-সংগ্রামের ভেতর দিয়ে রাজনীতিতে এসেছিলেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক পরিপক্বতা তাঁর ছিল। আর শেখ হাসিনা যেন ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’। তিনি শুধু শেখ মুজিবের কন্যা হওয়াতেই ক্ষমতায় এসেছেন। তাঁর নিজের কোনো রাজনৈতিক ভিত্তি বা ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ছিল না। তিনি ‘বাপের বেটি’ হিসেবে নেতৃত্বে এসেছেন, কিন্তু শেখ মুজিবের চিন্তা-চেতনার কিছুই তিনি ধারণ করেননি। বরং হাসিনা দেশের রাজনৈতিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করেছেন।

বদরুদ্দীন উমর আরও বলেন, যখন শেখ হাসিনা বলেন—তাঁর পিতা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তখন সেটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিকৃতি বলে মনে হয়। কিন্তু তাঁর শাসনামলে এই মিথ্যার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারেনি। যেসব তথাকথিত ‘বুদ্ধিজীবী’ তার শাসনামলে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, তারাই এই বিকৃত ইতিহাসের বাহক। তা ছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এমন একটা ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যেখানে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাঠ্যবই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিসিস পর্যন্ত এককভাবে উপস্থাপন করা হয়। স্কুলের পাঠ্যসূচি থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষা ও গবেষণায় শেখ মুজিবকে এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যেন তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র ইতিহাস। এই অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে কোনো গণতান্ত্রিক চর্চা—সে ইতিহাস হোক, মতামত হোক, গবেষণা হোক—সবই দমন করা হয়েছে। কেউ ভিন্ন কিছু বললে, তাঁর চাকরি যায়, উন্নতি বন্ধ হয়, হয়রানি হয়—কখনো কখনো জীবন পর্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। সব মিলিয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবের বর্ণনায় ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ একটি দলীয়, ক্ষমতাকেন্দ্রিক, একমুখী বয়ানে পরিণত হয়েছে—যা গণতন্ত্র, সত্য ও ইতিহাসের বিপরীতে দাঁড়িয়েছে।

সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের বিষয়ে বদরুদ্দীন উমর বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের আরেকটি দমনমূলক কৌশল ছিল সাম্প্রদায়িকতার বয়ানকে ব্যবহার করা। আওয়ামী লীগ সরাসরি ধর্মীয় বৈষম্যের রাজনীতি খুব বেশি করেনি বটে, কিন্তু ১৯৭২ সাল থেকেই হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, সম্পত্তি লুটপাট শুরু হয়েছে এবং এসব কাজ করেছে মূলত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরাই। জামায়াতে ইসলামীর বা বিএনপির লোকজন এভাবে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেনি, যতটা করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা। পাকিস্তানি আমলে যে ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’ ছিল, স্বাধীনতার পর সেটি বাতিল করা উচিত ছিল। কিন্তু তা না করে, আওয়ামী লীগ সরকার এটিকে ‘অর্পিত সম্পত্তি আইন’ নামে রূপান্তর করে বহাল রাখে। যার ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি লুটপাট অব্যাহত থাকে। ধর্মনিরপেক্ষতা দাবি করলেও অর্থনৈতিক স্তরে আওয়ামী লীগ ছিল চরম সাম্প্রদায়িক—হিন্দুদের অর্থ-সম্পদ দখল করাকে তারা একটি কাঠামোগত ও ব্যবস্থাগত প্রক্রিয়া হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে।

তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগ সাম্প্রদায়িকতা খুব বেশি ব্যবহার না করলেও, অর্থনৈতিক লুটপাটের হাতিয়ার হিসেবে এটি ব্যবহার করেছে। সমাজের প্রভাবশালী এলিট, সিভিল সোসাইটি, আমলাতন্ত্র, বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যবসায়ী মহল—সবাইকে দমন ও পুরস্কারের নীতিতে নিয়ন্ত্রণ করেছে। যারা সরকারের অনুগত তাঁদের দেওয়া হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। যারা বিরোধিতা করেছে, তাঁদের করা হয়েছে বরখাস্ত, বঞ্চিত, এমনকি কারাবন্দী। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসন এমন একপর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে দুর্নীতি সাংগঠনিক নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলীয় নেতা কর্মী ও পরিবারের সদস্যরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে—যার স্কেল ব্রিটিশ বা পাকিস্তান আমলেও দেখা যায়নি। এর ফলে প্রশাসন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনিক কাঠামো যে ধ্বংস হয়ে গেছে, তার প্রমাণ ২০২৪ সালে স্পষ্ট হয়ে গেছে। এমনকি আগস্টের শুরুতে সামরিক বাহিনী পর্যন্ত শেখ হাসিনার নির্দেশে গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়—কারণ তারা বুঝে গিয়েছিল যে, এই সরকারের দিন শেষ।

তিনি আরও বলেন, এখনো প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়, মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী মহলে আওয়ামী লীগের অনুগতরা রয়ে গেছে। তারা খোলাখুলি না বললেও নীরবভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তাদের কেউ কেউ ‘কোনো দল নিষিদ্ধ করা উচিত নয়’ বললেও বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগ এখন আর একটি সাধারণ রাজনৈতিক দল নয়। এটি একপ্রকার ভারতীয় স্ট্র্যাটেজিক এজেন্টের মতো কাজ করছে। শেখ হাসিনার সরকারের শাসন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভারতের স্বার্থরক্ষায় নিয়োজিত ছিল। শেখ মুজিব ভারতপন্থী হলেও তিনি ভারতের নির্দেশে চলতেন না। কিন্তু শেখ হাসিনার শাসনব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণভাবে ভারতের নকশায় নির্মিত। এই অবস্থায়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা রাজনৈতিক নীতির প্রশ্ন নয় বরং জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে পরিণত হয়েছে। এ দলটির কার্যক্রম বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বার্থের বিরুদ্ধে। এটি একটি ‘ভারত ঘেঁষা’ কাঠামোগত এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে, যার ফলে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সংসদ নির্বাচন: মনোনয়নের সংকেত পেয়ে প্রচারে বিএনপির প্রার্থীরা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী মনোনয়নের ঘোষণা এখনো দেয়নি বিএনপি। কিন্তু দলটির কিছু কিছু নেতা বলছেন, দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মনোনয়নের সবুজসংকেত তাঁরা পেয়ে গেছেন। এরপর নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগ ও প্রচারের কাজে নেমে পড়েছেন।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন সামনে রেখে কয়েক ধাপে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষে চলতি মাসে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে পারে বিএনপি। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেককেই চূড়ান্ত সুখবর দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান গতকাল শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রার্থী বাছাই অনেকটাই ঠিক করেছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। অনেক আসন আছে, যেখানে সমস্যা আছে, সেখানে কোন প্রার্থী দেওয়া যায়, তা নিয়ে তিনিই চিন্তা-ভাবনা করছেন। অনেকেই বলছেন, তাঁরা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা পেয়েছেন, আমরাও শুনছি। তবে ঠিক কতজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এমন সুখবর দিয়েছেন, তা বলতে পারছি না।’

দলীয় সূত্র বলছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে অন্তত ৭০ ভাগ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। লন্ডন থেকে ফোনে যোগাযোগ করে বেশ কিছু আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীকে জনসংযোগ করতে বলেছেন তারেক রহমান। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কবে নাগাদ বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের ঘোষণা দেবে, সে বিষয়ে এখনই সুনির্দিষ্ট করে বলছেন না দলের নীতিনির্ধারকেরা। তবে চলতি মাসেই সেটা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

এ বিষয়ে সেলিমা রহমান বলেন, সুনির্দিষ্ট করে দিন-ক্ষণ বলা যাচ্ছে না। তবে মনে হচ্ছে, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।

বিএনপি থেকে কারা প্রার্থী হচ্ছেন, সে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে দলটির ভেতর-বাইরে। দলটির সূত্রগুলো বলছে, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা প্রার্থী হচ্ছেন—এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে তাঁদের সবার জন্য একটি আসনই বরাদ্দ থাকবে, একাধিক আসনের সুযোগ নেই। অন্যদিকে দলের মধ্যম সারির নেতাদের মধ্যে সবদিক বিবেচনা করে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করেছেন তারেক রহমান। তাঁদের মধ্যে অনেককে ফোনে আশ্বস্তও করেছেন তিনি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর-১ আসনে মাসুদ অরুণ, বগুড়া-১ কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-২ মীর শাহ আলম, চাঁদপুর-১ সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন ও শরীয়তপুর-৩ মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপুর মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত।

এর মধ্যে তারেক রহমানের ফোনে মনোনয়নের নিশ্চয়তা পেয়ে ভোটের মাঠে কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন কাজী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে বিজয়ী হওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে বলেছেন। তাঁর নির্দেশমতো আমি এলাকায় প্রচারের কাজ শুরু করেছি।’

দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ভূমিকা রাখেন, এমন একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারেক রহমান মনোনয়নপ্রত্যাশী অনেকের সঙ্গেই কথা বলছেন। নির্বাচনী মাঠে তাঁদের কাজ করতে বলেছেন। এটাকেই বলা হচ্ছে ‘সবুজসংকেত’।

এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি শরিক দল ও সমমনা সংগঠনের সঙ্গেও আসন সমঝোতার আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। এই আলোচনার মধ্যে তারেক রহমানের কাছ থেকে সুখবর পেয়েছেন বলে দাবি করছেন ওই দলগুলোর অনেক নেতা। এরপর তাঁরা ভোটের মাঠে প্রচারে নেমেছেন।

শরিক দলগুলোর এমন নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ (ঢাকা-১৭), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ (ঢাকা-১৩), গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী (ঢাকা-৬), জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা (কিশোরগঞ্জ-৫), নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-৪), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ (কুমিল্লা-৭), বাংলাদেশ এলডিপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন সেলিম (লক্ষ্মীপুর-২), গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬) এবং ন্যাশলাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের (নড়াইল-২) নাম শোনা যাচ্ছে।

এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘আমি নির্বাচনী এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি। ’১৮-তে যেহেতু জোটের সঙ্গে ছিলাম, আশা করছি আমাকেই প্রার্থী করা হবে। আমি মনে করি, এলাকায় আমাকে পরাজিত করার মতো কোনো প্রার্থী নেই।’

এঁদের বাইরে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম তুলি ঢাকা-১৪ আসনে মনোনয়নের ব্যাপারে তারেক রহমানের কাছ থেকে সুখবর পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে সানজিদা ইসলাম গতকাল বলেন, ‘অফিশিয়াল ঘোষণার আগে এ বিষয়ে কিছু বলাটা ঠিক হবে না। অফিশিয়ালি সবার বিষয়ে যখন ঘোষণা আসবে, তখন এ বিষয়ে কথা বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কারণে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি তুলে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলটি। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার এই দাবিকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়েছে জামায়াত। দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম আজ শনিবার (১ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানান।

বিবৃতিতে আবদুল হালিম বলেন, ‘আজ পহেলা নভেম্বর দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ‘‘একাত্তরে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কারণে জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করতে হবে’’ মর্মে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা জাতীয় ঐক্যবিনষ্টকারী, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাঁর এ ধরনের মন্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়, তিনি কাউকে খুশি করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তার বক্তব্যে কর্তৃত্ববাদী ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুর ধ্বনিত হচ্ছে। আমি তাঁর এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ বা ‘একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততা’ সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ‘রাজনৈতিক হীনমন্যতা থেকেই বিভিন্ন সময়ে কেউ কেউ এমনটি করে থাকেন। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে দেশের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে জামায়াতকে টার্গেট করে এই ধরনের প্রপাগান্ডা চালানো হয়েছে। কিন্তু জাতি এখন এসব মিথ্যাচার সম্পর্কে সম্পূর্ণ সচেতন।’

জামায়াত নেতা আরও বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে আলালের এ ধরনের বিভাজনমূলক বক্তব্য জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী। আমি তাদের নিজেদের নেতৃবৃন্দের অতীত ভূমিকা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখার আহ্বান জানাচ্ছি। বর্তমানে যখন দেশের রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে জাতীয় ঐকমত্য ও পারস্পরিক সহনশীলতার প্রয়োজন, তখন তাঁর এই উসকানিমূলক মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী এবং জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি।’

আবদুল হালিম বলেন, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, যার নীতি ও আদর্শ ইসলামী মূল্যবোধ, ন্যায়নীতি ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত। জামায়াতে ইসলামী সর্বদা দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে আসছে। অতএব, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অগণতান্ত্রিক ও বিদ্বেষপ্রসূত।

ভবিষ্যতে জাতীয় ঐক্য ও ‘বিভাজন সৃষ্টিকারী’ এবং ‘বিদ্বেষপ্রসূত, বিভ্রান্তিকর ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেখ হাসিনাকে ফেরত দিন, দেশের আইনে বিচার হবে—ভারতের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা
সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভারত সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত দিন এবং তাঁকে দেশের আইনের মুখোমুখির ব্যবস্থা করে দিন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না, জনগণ সেটা মেনে নেবে না।

আজ শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ভারতে বসে শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করে সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভারতে বসে শেখ হাসিনা বিভিন্ন মিডিয়াকে বসে ইন্টারভিউ দিচ্ছেন। একবারের জন্য উনি অনুশোচনা করেনি...সেই মহিলা আজকে অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারতে বসে। আপনারা শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে দিন এবং দেশের যে আইন তা বিচারের মুখোমুখি করার ব্যবস্থা করে দিন। সব সময় বাংলাদেশের বিরোধিতা করবেন না, দেশের মানুষ সেটা মেনে নেবে না। আমরা সমস্ত চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিব।’

বিএনপি নির্বাচন পেছাচ্ছে—এমন অভিযোগ অস্বীকার করে মহাসচিব বলেন, ‘কোনো একটা দল বলে বিএনপি নাকি নির্বাচন পেছাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনীমুখী দল। প্রথম থেকেই আমরা নির্বাচনের কথা বলছি। গণ-অভ্যুত্থানের পরে তিন-চার মাসের মধ্যে আমরা নির্বাচন চাই, সেটাই বলেছিলাম। কেন বলেছিলাম? নির্বাচন হলে আজকে যে অপশক্তিগুলো মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে, সেই অপশক্তিগুলো মাথা তুলে দাঁড়ানোর কোনো সুযোগ পেত না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই যে জুলাই সনদ পাস করা হয়েছে, আমরা স্বাক্ষর করেছি। সেখানে বলা হয়েছে যে সব রাজনৈতিক দল, যেগুলোতে একমত সেগুলো সব সই হয়ে গেল, এমনকি যে সমস্ত বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হবে না, সেটাকে আপত্তি দিবে (নট অব ডিসেন্ট), সেটি লিপিবদ্ধ করা হবে এবং সেটা এখানে রাখা হবে। রাখা হয়েছে? আর এখন যেটা প্রস্তাব উত্থাপন করলেন প্রধান উপদেষ্টার কাছে, সেখানে নোট অব ডিসেন্টের কোনো কথায় নাই, বরং নতুন করে কিছু নিয়ে আসছে। এটা অন্যায়, এটা জনগণের সাথে, এটা একটা নিঃসন্দেহের প্রতারণামূলক কাজ।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের কথা পরিষ্কার, আমরা যেটাতে সই করেছি, সেটা অবশ্যই সেটার দায়দায়িত্বটা গ্রহণ করব, কিন্তু যেটাতে আমরা সই করিনি, সেটাতে আমাদের দায়দায়িত্ব গ্রহণ করব না।’

মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিভক্তি আনতে চাই না, কিন্তু অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কিছু কিছু শক্তি, কিছু কিছু মানুষ এখানে বিভক্তি আনতে চায়...বাংলাদেশ একটা স্বাধীন-সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র হয়েছে লড়াই করে, যুদ্ধের মধ্য দিয়ে, সেটাকে তারা অস্বীকার করতে চায়। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ১৯৭১ সালকে ভুলে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই। কারণ, ওটাই আমাদের জন্মের ঠিকানা। ’৭১ হচ্ছে আমাদের অস্তিত্বের কথা, আমাদের পরিচিতির কথা, আমাদের স্বতন্ত্র বা স্বাধীনের কথা।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি কারও নাম ধরে বলব না। কিন্তু একবার অতীতটা স্মরণ করে দেখুন, ১৯৭১ সালে আপনাদের কী ভূমিকা ছিল। সেদিন আপনারা মুক্তিযুদ্ধকে গোলমাল বলে আখ্যায়িত করেছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যুবদলের নয়নের চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট করা যাবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির একজন প্রার্থীর চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই একটা গণভোট আয়োজন করা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর পল্টনে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে তরুণ আলেমদের ভাবনা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বিএনপি বলছে গণভোট করতে নাকি অনেক টাকা খরচ হবে। ৫ আগস্টের পরে বিএনপির একটা আসনের প্রার্থীই যেই টাকা চাঁদাবাজি করেছে, সেই টাকা দিয়েই একটা গণভোট আয়োজন করা যাবে।’

এ সময় যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্পাদক রবিউল ইসলাম নয়নের নাম ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির (যুবদলের) ঢাকা মহানগরের যে একজন নেতা আছে, নয়ন। ও যে পরিমাণ টাকা চাঁদাবাজি করেছে, দুর্নীতি করেছে—ওই টাকা দিয়েও বাংলাদেশে একটা গণভোট হওয়া সম্ভব।’

বিএনপি নেতাদের কটাক্ষ করে নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘আমরা সিনিয়র নেতাদের এত দিন জমজমের পানি দিয়ে গোসল করিয়েছি, এখন তাদের বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে গোসল করাব। তাহলে তাদের মাথাটা খুলবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন আছে। তবে এই নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হবে।’

অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো দুই-তৃতীয়াংশ আসনের সুবিধা নিয়ে সংবিধান কাটাছেঁড়া করেছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপির এ নেতা। তিনি বলেন, ‘অতীতে ৪০ শতাংশ ভোটে নিয়ে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেয়েছে। এই ৪০ শতাংশ ভোটে দুই-তৃতীয়াংশ আসনের সুবিধা নিয়ে তারা সংবিধান কাটাছেঁড়া করেছে। এ জন্যই উচ্চকক্ষ প্রয়োজন।’

গণভোট নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বোঝাপড়া হচ্ছে বলে জানান নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে একটি বোঝাপড়া হচ্ছে—এমনটা আমরা শুনতে পাচ্ছি। বিএনপি নোট অব ডিসেন্টের বিষয় থেকে সরে আসবে, আর নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবি থেকে জামায়াত সরে আসবে—এই ধরনের একটি অভ্যন্তরীণ বোঝাপড়ার কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি।’

প্রধান উপদেষ্টাকে শহীদ মিনারে গিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষরের আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন। তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বলতে চাই, আপনি যদি জুলাই সনদের আদেশটা জারি করতে পারেন, তাহলে আপনি জনগণের সরকার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন। আপনাকে আমরা আহ্বান জানাব, শহীদ মিনারে গিয়ে সব রাজনীতির দল ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জুলাই সনদে বাস্তবায়নের আদেশ জারি করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১ হাজার টাকায় ৪ থ্রি-পিস দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে নারীদের ভিড়, বেকায়দায় শোরুম কর্তৃপক্ষ

একাত্তরের হত্যাযজ্ঞে সম্পৃক্ততার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন: জামায়াত

মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি: কানাডার প্রধানমন্ত্রী

একাত্তরে ধর্ষণ–গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: বিএনপি নেতা আলাল

আ.লীগ-জাপাকে ভোটের বাইরে রাখলে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাত হতে পারে: শামীম পাটোয়ারী

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত