Ajker Patrika

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কি হবে

সম্পাদকীয়
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কি হবে

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে বিপুল ভোটে প্রস্তাব পাস হয়েছে। সেই প্রস্তাব উত্থাপন করেছে সৌদি আরব ও ফ্রান্স। গত শুক্রবার নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত এ ভোটাভুটিতে ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১৪২টি দেশ সমর্থন দেয়। বিরোধিতা করেছে মাত্র ১০টি দেশ এবং ১২টি দেশ ভোটদানে বিরত থেকেছে। তারপরেও শঙ্কা থেকে যায়, আদৌ কি ফিলিস্তিন স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে? কারণ, এর আগেও কয়েক ধাপে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। বহু দেশের স্বীকৃতি সত্ত্বেও ফিলিস্তিনে নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন কখনোই থামেনি। এমনকি বর্তমানে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল সৃষ্ট চলমান অবরোধ সেখানে দুর্ভিক্ষ রূপ লাভ করেছে। ওষুধ, খাদ্য ও জরুরি সহায়তা সেখানে পৌঁছানো একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

দীর্ঘদিন ধরেই চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্বিধাবিভক্ত ছিল। এমনকি ইউরোপের অনেক দেশ, যারা এত দিন দ্বিধায় ছিল, তারাও এই প্রস্তাবের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। এই প্রস্তাবের মূল দিক হলো, এটি কেবল ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানায়নি, বরং ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের দ্বন্দ্ব নিরসনে ‘বাস্তবসম্মত, সময় নির্ধারিত ও অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বলেছে। একই সঙ্গে হামাসের হামলা এবং গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন—উভয়েরই নিন্দা জানিয়েছে।

তবে কথা হলো, জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস হলেও ইসরায়েল যদি নমনীয় না হয়, তাহলে কোনো দিনই ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাবে না। সে জন্য ইসরায়েল এবং তার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে। যুগের পর যুগ এ রকম একটি বৈশ্বিক সংকট চলতে পারে না। এই বৈশ্বিক সংকট জিইয়ে রেখেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। তবে আশার কথা হলো, এর আগে ইউরোপের অনেক প্রভাবশালী রাষ্ট্র ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারত না। এবার ইউরোপের অনেক রাষ্ট্র সেই ভয় ভেঙে বেরিয়ে এসেছে। এটা বড় ধরনের আশাবাদের ব্যাপার।

তবে পূর্বের ঘটনা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, শুধু জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দিলেই ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সমস্যার সমাধান হবে না। এ জন্য দীর্ঘ মেয়াদে ফিলিস্তিনকে আরও উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে। আবার তাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, যেমন গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ এবং পশ্চিম তীরে ফাতাহর নিয়ন্ত্রণের কারণে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্য এখনো দুর্বল। সেটা তাদেরই সমাধান করতে হবে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এটি ভুল সময়ে ভুল পদক্ষেপ। তাদের এই বিরোধিতা শান্তি আলোচনার পরিবেশকে নষ্ট করতে পারে।

ফিলিস্তিন সংকট কোনো ধর্মীয় সংকট নয়, এটি একটি দখলদারি ও আগ্রাসনের ইতিহাস। ইহুদি জনগণের জন্য একটি নিরাপদ রাষ্ট্রের প্রয়োজন থাকলেও ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা বড় অন্যায়। একবিংশ শতাব্দীতে এসে আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত সেই ভুল শোধরানোর। শুধু প্রতীকী স্বীকৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ‘সন্ত্রাসী খেল’ ফাঁস করে দিলেন জঙ্গিগোষ্ঠী জইশের সদস্য

বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে আসিফ নজরুলের পুরোনো ফেসবুক পোস্ট নতুন করে ভাইরাল করলেন হাসনাত

বাংলাদেশসহ ৫ প্রতিবেশীকেই নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে করছে ভারত

‘সোহরাব-রুস্তম’ সিনেমায় ইলিয়াস কাঞ্চনের নায়িকার জীবনের করুণ অবসান!

৫ ইসলামি ব্যাংকে বসছে প্রশাসক, একীভূতকরণে লাগবে দুই বছর: বাংলাদেশ ব্যাংক

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত