সম্পাদকীয়
খারাপ খবরের ভিড়ে হাঁপিয়ে ওঠা সমাজে যখন ইতিবাচক বা ভালো কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তখন রংপুরের কাউনিয়ার একটি বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠানের খবর পড়ে মন ভালো না হয়ে পারে না। শনিবার আজকের পত্রিকার ৭ নম্বর পৃষ্ঠায় খবরটি ছাপা হয়েছে। বিদায়ী শিক্ষক রেজাউল করিম ৩৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন, হেঁটে হেঁটে স্কুলে গেছেন, অসুস্থতাও তাঁকে দমাতে পারেনি। মানুষটি নিজের হাতে যে স্কুল গড়েছেন ১৯৮৯ সালে, সেই স্কুল থেকেই পেয়েছেন জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি—অগণিত মানুষের শ্রদ্ধা।
বিদায় অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম বলেছেন, ‘বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ছুটি নিইনি, সব সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রেখেছি।’ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাশেম বলেন, ‘রেজাউল করিম ছিলেন ছাত্র ও সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তাঁর ন্যায়নীতি ও আদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’ একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘স্যার ছিলেন ন্যায়-নীতিমান। অসুস্থ থাকলেও স্যার স্কুলে আসতেন। স্যারের দেওয়া শিক্ষা নিয়ে আজ আমরা নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত।’
এসব বক্তব্য কেবল স্মৃতিচারণা নয়, এগুলো এক নিষ্ঠাবান শিক্ষকের যথাযথ মূল্যায়ন। এমন একজন মানুষের বিদায়ের মুহূর্ত যখন স্থানীয় মানুষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মিলে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন, তখন তা কেবল বিদায় অনুষ্ঠান থাকে না, তা হয়ে ওঠে বিবেকবোধের পুনর্জাগরণ।
আমাদের সমাজে শিক্ষকতা আজ নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই পেশাটিকে ‘আধুনিক চাকরি’র মাপকাঠিতে বিচার করেন, কেউ কেউ অবমূল্যায়নের অভিযোগে পেশা বদলেও চলে যান। আবার অনেক শিক্ষকের পেশাগত মান নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়। কিন্তু রেজাউল করিমের মতো মানুষেরা দেখিয়ে দেন, এই পেশার মহত্ত্ব এখনো লুপ্ত হয়নি। সত্যিকার অর্থে শিক্ষক হলেই সমাজ তাঁকে মনে রাখে, শ্রদ্ধা করে, কাঁদে এবং ভালোবাসে।
বিদায় অনুষ্ঠানে তাঁকে কী উপহার দেওয়া হয়েছে, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা এটাই, উপচে পড়া শ্রদ্ধায় ভরে উঠেছিল গোটা স্কুলমাঠ। শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়েছে, চোখের পানি ফেলেছে, অঙ্কুরিত স্মৃতি ছড়িয়ে পড়েছে বাতাসে। কেউ হয়তো স্যারের হাতে লেখা একটা পুরোনো চিঠি আজও যত্নে রেখে দিয়েছে, কেউ হয়তো স্যারের মুখে শোনা একটি বাক্যকে বানিয়েছে নিজের জীবনের দর্শন।
এই মানুষটিই সত্যিকারের নায়ক। তিনি শহরের উঁচু অট্টালিকায় থাকেন না, টেলিভিশনে আলোচক হয়ে ওঠেননি; কিন্তু তাঁর প্রতিদিনকার হাঁটাচলা, উপদেশ, সাদামাটা জীবন আর নিরবচ্ছিন্ন নিষ্ঠাই তাঁকে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় পৌঁছে দিয়েছে।
আজ যখন আমাদের সমাজে আদর্শের অভাব, শৃঙ্খলার টানাপড়েন, দুর্নীতির ছায়া আর স্বার্থপর রাজনীতির দম্ভ, তখন রেজাউল করিমের গল্প যেন এক অনুপম ওষুধের মতো কাজ করে।
আমরা যদি প্রত্যন্ত কাউনিয়ার এই আয়োজন থেকে শিক্ষা নিতে পারি, তবে আমাদের দেশের প্রত্যেক শিক্ষকই একদিন এমন ভালোবাসায় সিক্ত হবেন। এই ভালোবাসা পুরো সমাজের শুদ্ধি, প্রত্যয়ের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
খারাপ খবরের ভিড়ে হাঁপিয়ে ওঠা সমাজে যখন ইতিবাচক বা ভালো কোনো সংবাদ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তখন রংপুরের কাউনিয়ার একটি বিদ্যালয়ে একজন শিক্ষকের বিদায় অনুষ্ঠানের খবর পড়ে মন ভালো না হয়ে পারে না। শনিবার আজকের পত্রিকার ৭ নম্বর পৃষ্ঠায় খবরটি ছাপা হয়েছে। বিদায়ী শিক্ষক রেজাউল করিম ৩৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন, হেঁটে হেঁটে স্কুলে গেছেন, অসুস্থতাও তাঁকে দমাতে পারেনি। মানুষটি নিজের হাতে যে স্কুল গড়েছেন ১৯৮৯ সালে, সেই স্কুল থেকেই পেয়েছেন জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি—অগণিত মানুষের শ্রদ্ধা।
বিদায় অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম বলেছেন, ‘বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ছুটি নিইনি, সব সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রেখেছি।’ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাশেম বলেন, ‘রেজাউল করিম ছিলেন ছাত্র ও সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয়। তাঁর ন্যায়নীতি ও আদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’ একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেছেন, ‘স্যার ছিলেন ন্যায়-নীতিমান। অসুস্থ থাকলেও স্যার স্কুলে আসতেন। স্যারের দেওয়া শিক্ষা নিয়ে আজ আমরা নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত।’
এসব বক্তব্য কেবল স্মৃতিচারণা নয়, এগুলো এক নিষ্ঠাবান শিক্ষকের যথাযথ মূল্যায়ন। এমন একজন মানুষের বিদায়ের মুহূর্ত যখন স্থানীয় মানুষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা মিলে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন, তখন তা কেবল বিদায় অনুষ্ঠান থাকে না, তা হয়ে ওঠে বিবেকবোধের পুনর্জাগরণ।
আমাদের সমাজে শিক্ষকতা আজ নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই পেশাটিকে ‘আধুনিক চাকরি’র মাপকাঠিতে বিচার করেন, কেউ কেউ অবমূল্যায়নের অভিযোগে পেশা বদলেও চলে যান। আবার অনেক শিক্ষকের পেশাগত মান নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়। কিন্তু রেজাউল করিমের মতো মানুষেরা দেখিয়ে দেন, এই পেশার মহত্ত্ব এখনো লুপ্ত হয়নি। সত্যিকার অর্থে শিক্ষক হলেই সমাজ তাঁকে মনে রাখে, শ্রদ্ধা করে, কাঁদে এবং ভালোবাসে।
বিদায় অনুষ্ঠানে তাঁকে কী উপহার দেওয়া হয়েছে, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা এটাই, উপচে পড়া শ্রদ্ধায় ভরে উঠেছিল গোটা স্কুলমাঠ। শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়েছে, চোখের পানি ফেলেছে, অঙ্কুরিত স্মৃতি ছড়িয়ে পড়েছে বাতাসে। কেউ হয়তো স্যারের হাতে লেখা একটা পুরোনো চিঠি আজও যত্নে রেখে দিয়েছে, কেউ হয়তো স্যারের মুখে শোনা একটি বাক্যকে বানিয়েছে নিজের জীবনের দর্শন।
এই মানুষটিই সত্যিকারের নায়ক। তিনি শহরের উঁচু অট্টালিকায় থাকেন না, টেলিভিশনে আলোচক হয়ে ওঠেননি; কিন্তু তাঁর প্রতিদিনকার হাঁটাচলা, উপদেশ, সাদামাটা জীবন আর নিরবচ্ছিন্ন নিষ্ঠাই তাঁকে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠায় পৌঁছে দিয়েছে।
আজ যখন আমাদের সমাজে আদর্শের অভাব, শৃঙ্খলার টানাপড়েন, দুর্নীতির ছায়া আর স্বার্থপর রাজনীতির দম্ভ, তখন রেজাউল করিমের গল্প যেন এক অনুপম ওষুধের মতো কাজ করে।
আমরা যদি প্রত্যন্ত কাউনিয়ার এই আয়োজন থেকে শিক্ষা নিতে পারি, তবে আমাদের দেশের প্রত্যেক শিক্ষকই একদিন এমন ভালোবাসায় সিক্ত হবেন। এই ভালোবাসা পুরো সমাজের শুদ্ধি, প্রত্যয়ের পথে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। গত বছর জুলাই-আগস্টে দেশে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের একনায়কতান্ত্রিক স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটে। তখন সাধারণ মানুষের মনে একধরনের ইতিবাচক প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছিল।
১১ ঘণ্টা আগেবর্ষাকাল এলেই যেন ঢাকায় জলাবদ্ধতা ভর করে বসে। জলাবদ্ধতা যখন এই শহরের ঘাড়ে চেপে বসে, তখন এই নগরের মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আজ এই শহরের এত সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো না যদি তারা অপরিকল্পিত নগরায়ণের দিকে না ঝুঁকত, যদি নদী কিংবা খালের স্থান দখল না করে কোনো স্থাপনা করার পরিকল্পনা করত।
১১ ঘণ্টা আগেটাঙ্গাইলের সখীপুর-কচুয়া-আড়াইপাড়া সড়কের যে করুণ অবস্থা, তা আসলে আমাদের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার অব্যবস্থাপনার এক করুণ প্রতিচ্ছবি। সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক—যেখানে প্রতিদিন স্কুলশিক্ষার্থী, রোগী, কৃষিপণ্যবাহী ট্রাক ও হাজারো সাধারণ মানুষ চলাচল করে।
১১ ঘণ্টা আগেজুলাই অভ্যুত্থানের এক বছর হয়ে গেল। ওই অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি ছিল। মূলত তারা ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিল। মূলত বাংলাদেশের মূল সমস্যা সেটাই যে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে একটি
১ দিন আগে