Ajker Patrika

রাজধানী এখন চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্য

সম্পাদকীয়
রাজধানী এখন চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্য

ঢাকা এখন চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। যে যার মতো করে চাঁদাবাজি করে চলেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদিও বলছে তারা চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সক্রিয় রয়েছে, কিন্তু রাজধানীজুড়ে চাঁদাবাজির মানচিত্র পাল্টায়নি।

গত আগস্ট মাসে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী রাষ্ট্র গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখেছিল মানুষ, তা ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসছে। যাঁরা এই পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদের কর্মকাণ্ডে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ঘটছে না। বিগত সাত মাসে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। বরং গণ-অভ্যুত্থানের পর যাঁরা ক্ষমতার এসেছেন কিংবা ক্ষমতার কাছাকাছি রয়েছেন, তাঁদের কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগণের উদ্বেগ বাড়ছে। সংস্কার ও নির্বাচনের প্রশ্নটি এমন লেজেগোবরে অবস্থায় রয়েছে যে আদৌ কবে একটি নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে, তা নিয়ে সংশয় কাটছে না।

আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত একটি সংবাদে ঢাকায় চাঁদাবাজির যে প্যাটার্ন তুলে ধরা হয়েছে, তাতে সংগত কারণেই মনে হয়, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শীর্ষ সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দেওয়ায় তারা বা তাদের নাম করে অনেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। কেন জেলখানাগুলো থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তার কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা কি কারও কাছে আছে? দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে শুধু শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরই মুক্তি দেওয়া হয়নি, থানা লুট করে পুলিশের অস্ত্রও হাতিয়ে নিয়েছে অনেক সুযোগসন্ধানী। এই দুটো অস্বাভাবিক ব্যাপার রাজধানীবাসীকে স্বস্তি দিচ্ছে না।

রাজধানীর যেসব এলাকায় নির্মাণকাজ চলছে, সেসব এলাকায় আতঙ্কে আছে নির্মাণ-সংশ্লিষ্ট মানুষ। আবার একেবারে নিরীহ শিক্ষকও টেলিফোনে হুমকি পাচ্ছেন। যদি চাঁদা দেওয়া না হয়, তাহলে শিক্ষকের সন্তানদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে ভয়ের কথা হলো, থানা-পুলিশ-র‍্যাবকে জানালেও কোনো কাজ হবে না বলে সন্ত্রাসীরা বড় গলায় বলে বেড়াচ্ছে। তাদের ক্ষমতা এই থানা-পুলিশ-র‍্যাবের চেয়ে বড় কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে।

পুলিশ সূত্র বলছে, হুমকি দিয়ে পুরোনো কায়দায়ই চাঁদাবাজি চলছে, তবে হুমকির ধরনে পরিবর্তন এসেছে। কাকে কী বলে হুমকি দিলে কাজ হবে, দৃশ্যত সেটা নিয়ে ভেবেচিন্তে কাজ করছে সন্ত্রাসীরা। পুলিশের এই ‘আবিষ্কার’ নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য, কিন্তু তাদের কাছ থেকে যেটা সাধারণ জনগণের চাওয়া, তা হলো, সন্ত্রাসীদের এই ভাবনাচিন্তা যেন বাস্তবে রূপ নিতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা। দেশের জনগণের জানমাল রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার এ ব্যাপারে কতটা সক্রিয়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ভোররাতের সংবাদ সম্মেলন এবং তার পরের কয়েক দিনের কার্যক্রম যে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে কোনো অবদান রাখেনি, সেটা দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট হয়ে গেছে। ভয়ের আরও বড় কারণ হলো, জেল থেকে বেরিয়ে আসা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত বলে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এমনকি সদ্যগঠিত শিক্ষার্থীদের দলের সদস্যদের নামও পাওয়া যাচ্ছে চাঁদাবাজদের তালিকায়।

জনগণ তাহলে কোথায় যাবে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত