Ajker Patrika

অভিনন্দন এবং

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৬: ০৮
অভিনন্দন এবং

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন। সেঞ্চুরির ছড়াছড়ি আর রান–বন্যায় মনে হয়েছে অনায়াসেই এই টেস্টের বাধা পার হয়েছে বাংলাদেশ। এই জয় নিশ্চয়ই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে উজ্জীবিত করবে। জয় নিয়ে আমরা সবাই খুশি। টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের ধারাবাহিক ব্যর্থতার মধ্যে হঠাৎ হঠাৎ এ ধরনের সাফল্য উঁকি দেয়। এখনো টেস্ট ক্রিকেট মানেই হঠাৎ করে ভেঙে পড়া। তাই এই বড় জয়টি নিয়ে কথা বলার সময়ও আমরা কিছুটা সতর্ক থাকব। আমরা টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছি ২১ বছর আগে। এরপর নানাভাবে টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি–টোয়েন্টিতে কখনো সাফল্য, কখনো ব্যর্থতা চেপে ধরেছে আমাদের। প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে। ক্রিকেট অবকাঠামো তৈরির জন্য যা যা দরকার ছিল, তার সবকিছুই আমরা ঠিকভাবে অনুসরণ করেছি–এমন নয়। ফলে বড় বড় অর্জনও কোনো ধারাবাহিকতার ফল কি না, তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়।

আমাদের পাইপলাইনে কয়জন প্রতিশ্রুতিশীল খেলোয়াড় আছেন? তারা কি ঠিকভাবে পৃষ্ঠপোষণা পাচ্ছেন? ক্রিকেটে নানা ধরনের প্রযুক্তির যুক্ততা ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখাচ্ছে বটে, কিন্তু প্রত্যাশিত ফল কি পাওয়া যাচ্ছে? হঠাৎ করেই একঝাঁক তুমুল দক্ষ ক্রিকেটার জায়গা করে নিয়েছিল জাতীয় দলে। মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক—বহুদিন ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সম্মানের জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। মাশরাফি বিদায় নিয়েছেন। মাহমুদউল্লাহও টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন, সাকিব, তামিম, মুশফিকও তাঁদের ক্যারিয়ারের চূড়ায় অবস্থান করছেন। তারপর? নতুন খেলোয়াড়েরা কোথায়, যাঁদের ওপর নির্ভর করা যায়?

আমাদের ক্রিকেটের একটা বড় সমস্যা হলো, বোর্ড কর্মকর্তাদের সঙ্গে খেলোয়াড়দের সম্পর্ক সব সময় উষ্ণ থাকে না। দুদিককার বন্ধন পোক্ত না হলে একক কৃতিত্বের মাধ্যমে কোনো বড় ঘটনা হয়তো ঘটিয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু দলীয়ভাবে তার প্রতিফলন থাকে না। এর সঙ্গে যদি ঘরোয়া ক্রিকেটে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থা, অথবা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, তাহলে একটি সম্ভাবনাময় স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। জাতীয় দল নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মনে প্রত্যাশা অনেক। মাঠভর্তি দর্শক কিংবা টেলিভিশনের সামনে জড়ো হওয়া ভক্তরা প্রচণ্ড ভালোবাসা দিয়ে, সমর্থন দিয়ে দলকে উজ্জীবিত রাখেন। কিন্তু দল যদি নির্দিষ্ট ছন্দে না চলে, তাহলে তার ছায়া ভক্তদের মধ্যেও পড়ে। হতাশা আর ব্যর্থতা নিয়ে কোনো দল এগিয়ে যেতে পারে না।

ক্রিকেটে সবটা মিলে যে ঐক্যবদ্ধ ছন্দময় হৃৎম্পন্দনের জন্ম হওয়ার কথা ছিল, সেটা কখনো কখনো আমাদের খেলায় টের পাওয়া গেলেও কখনো কখনো তা হারিয়েও যায়। যদি সেই হৃৎস্পন্দন সব সময়ের জন্য জাতীয় দলের সারথী হয়, তাহলে যে আনন্দের জন্ম হবে, সেটা যে কোনো একটি বড় বিজয়ের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। তখন আমরা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই বিশাল জয়কে আরও একটু নির্ভার হয়ে উদ্‌যাপন করতে পারব। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত