সম্পাদকীয়
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) আবারও খবরে। না, নতুন কোনো আবিষ্কার বা গবেষণার সফলতায় নয়, বরং গবেষণার জন্য সংরক্ষিত মোরগ চুরির ঘটনায়। এবার সংখ্যাটি ১৩, আগেরবার ছিল ৩৮। তারও আগে নাকি গবেষণার জন্য আনা ১৮টি উটপাখিও হঠাৎ উধাও হয়ে যায়—কথিত আছে সেগুলো ‘গবেষণার গুণাগুণ যাচাই’ করতে পেটের ভেতর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মোরগ চুরির এই চলমান ধারায় মনে হয়, গবেষণার মূল কেন্দ্র এখন ল্যাব নয়, কিচেন। কারণ, যেখানে গবেষণার প্রাণীই হজম হয়ে যায়, সেখানে গবেষণার ফলাফলের খোঁজ রাখা বৃথা। মনে হয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি যেন রূপকথার এক ‘মাংস উৎপাদন ও সরবরাহ ইউনিট’, যার গবেষণা রিপোর্টের বদলে আসছে জিবে জল আনা পদগুলোর খালি হাড়।
প্রশ্ন উঠতেই পারে—এতবার চুরি হলো, কেন চোর ধরা পড়ল না? উত্তর খোঁজার আগে বোঝা দরকার, চোর বাইরে নয়, হয়তো ভেতরেই। একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে বারবার চুরি হওয়া মানে এর নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি—সবই প্রশ্নবিদ্ধ। তদন্ত কমিটি হয়েছে, তবে তার ফলাফল ঠিক গবেষণার মতোই অধরা। আগের কমিটির রিপোর্ট ‘আলোতে’ আসেনি, কারণ গবেষণার আলো হয়তো চুলার আগুনেই নিভে গেছে।
মোরগ চুরি হয়েছে, উটপাখিও উড়ে গেছে—এসব শোনা গেলে হেসে ফেলাই স্বাভাবিক। কিন্তু হাসির আড়ালে আছে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়, দুর্নীতি আর জবাবদিহিহীনতার গা-সওয়া সংস্কৃতি। এ যেন রাষ্ট্রীয় গবেষণাগারে ‘গবেষণার নামে গরু-ছাগল খাওয়ার এক প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তি’!
বিএলআরআইয়ের ডিজি বলছেন, ‘এগুলো থাক এখন। সব ঠিক হয়ে গেছে।’—ঠিক হয়ে গেছে মানে কী, মোরগগুলো চুলায় ঠিকঠাক বসেছে? আবার যিনি কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন, তিনি বলছেন ‘চাপের মধ্যে আছি’, তদন্ত কমিটি কী রিপোর্ট দেবে জানেন না। এত চাপ শুধু এক ব্যক্তির ওপর? বাকিরা নিশ্চিন্তে হজমের ‘ফলোআপ রিপোর্ট’ করছেন?
গবেষণার জন্য সরকারি অর্থে বিদেশ থেকে আনা প্রাণী যদি রান্নাঘরের মেনুতে জায়গা পায়, তাহলে এমন গবেষণার ফল জনগণকে জানিয়ে লাভ কী? বরং একে জাতীয় ‘খাদ্য গবেষণা কর্মসূচি’ হিসেবে ঘোষণা দিলে অন্তত জনগণ বুঝবে যে এসব খাওয়ার আয়োজনে গবেষণা কম, গোপন ভোজ বেশি।
মনে রাখতে হবে—একটা জাতির বিজ্ঞান ও গবেষণার প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে সে জাতির পেট ভরলেও মাথা খালি থেকে যায়। গবেষণার প্রাণী খেয়ে ফেললে পেট তো সয়, কিন্তু পিঠ সয় না—কারণ জনগণ জানে, পেটের বিচার একদিন ইতিহাসই করবে।
তাই বলি, গবেষণার নামে খাওয়াদাওয়া চললে গবেষণার মানের কী হাল হয়, তা বোঝা কঠিন নয়। দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যদি প্রতিনিয়ত মোরগ ও উটপাখির হদিস পেটে চলে যায়, তাহলে গবেষণার ভবিষ্যৎ কোথায়?
পেটের পিছে যারা লেগে থাকে, তারা ভবিষ্যতের বিজ্ঞান গড়তে পারে না। সুতরাং, মোরগ নয়, আগে দরকার কিছু ‘নির্ভরযোগ্য মানুষ’, যারা গবেষণাকে খাবারের বদলে জ্ঞানের খোরাক বানাবে।
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই) আবারও খবরে। না, নতুন কোনো আবিষ্কার বা গবেষণার সফলতায় নয়, বরং গবেষণার জন্য সংরক্ষিত মোরগ চুরির ঘটনায়। এবার সংখ্যাটি ১৩, আগেরবার ছিল ৩৮। তারও আগে নাকি গবেষণার জন্য আনা ১৮টি উটপাখিও হঠাৎ উধাও হয়ে যায়—কথিত আছে সেগুলো ‘গবেষণার গুণাগুণ যাচাই’ করতে পেটের ভেতর পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মোরগ চুরির এই চলমান ধারায় মনে হয়, গবেষণার মূল কেন্দ্র এখন ল্যাব নয়, কিচেন। কারণ, যেখানে গবেষণার প্রাণীই হজম হয়ে যায়, সেখানে গবেষণার ফলাফলের খোঁজ রাখা বৃথা। মনে হয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি যেন রূপকথার এক ‘মাংস উৎপাদন ও সরবরাহ ইউনিট’, যার গবেষণা রিপোর্টের বদলে আসছে জিবে জল আনা পদগুলোর খালি হাড়।
প্রশ্ন উঠতেই পারে—এতবার চুরি হলো, কেন চোর ধরা পড়ল না? উত্তর খোঁজার আগে বোঝা দরকার, চোর বাইরে নয়, হয়তো ভেতরেই। একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে বারবার চুরি হওয়া মানে এর নিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি—সবই প্রশ্নবিদ্ধ। তদন্ত কমিটি হয়েছে, তবে তার ফলাফল ঠিক গবেষণার মতোই অধরা। আগের কমিটির রিপোর্ট ‘আলোতে’ আসেনি, কারণ গবেষণার আলো হয়তো চুলার আগুনেই নিভে গেছে।
মোরগ চুরি হয়েছে, উটপাখিও উড়ে গেছে—এসব শোনা গেলে হেসে ফেলাই স্বাভাবিক। কিন্তু হাসির আড়ালে আছে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয়, দুর্নীতি আর জবাবদিহিহীনতার গা-সওয়া সংস্কৃতি। এ যেন রাষ্ট্রীয় গবেষণাগারে ‘গবেষণার নামে গরু-ছাগল খাওয়ার এক প্রাতিষ্ঠানিক চুক্তি’!
বিএলআরআইয়ের ডিজি বলছেন, ‘এগুলো থাক এখন। সব ঠিক হয়ে গেছে।’—ঠিক হয়ে গেছে মানে কী, মোরগগুলো চুলায় ঠিকঠাক বসেছে? আবার যিনি কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন, তিনি বলছেন ‘চাপের মধ্যে আছি’, তদন্ত কমিটি কী রিপোর্ট দেবে জানেন না। এত চাপ শুধু এক ব্যক্তির ওপর? বাকিরা নিশ্চিন্তে হজমের ‘ফলোআপ রিপোর্ট’ করছেন?
গবেষণার জন্য সরকারি অর্থে বিদেশ থেকে আনা প্রাণী যদি রান্নাঘরের মেনুতে জায়গা পায়, তাহলে এমন গবেষণার ফল জনগণকে জানিয়ে লাভ কী? বরং একে জাতীয় ‘খাদ্য গবেষণা কর্মসূচি’ হিসেবে ঘোষণা দিলে অন্তত জনগণ বুঝবে যে এসব খাওয়ার আয়োজনে গবেষণা কম, গোপন ভোজ বেশি।
মনে রাখতে হবে—একটা জাতির বিজ্ঞান ও গবেষণার প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে সে জাতির পেট ভরলেও মাথা খালি থেকে যায়। গবেষণার প্রাণী খেয়ে ফেললে পেট তো সয়, কিন্তু পিঠ সয় না—কারণ জনগণ জানে, পেটের বিচার একদিন ইতিহাসই করবে।
তাই বলি, গবেষণার নামে খাওয়াদাওয়া চললে গবেষণার মানের কী হাল হয়, তা বোঝা কঠিন নয়। দেশের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যদি প্রতিনিয়ত মোরগ ও উটপাখির হদিস পেটে চলে যায়, তাহলে গবেষণার ভবিষ্যৎ কোথায়?
পেটের পিছে যারা লেগে থাকে, তারা ভবিষ্যতের বিজ্ঞান গড়তে পারে না। সুতরাং, মোরগ নয়, আগে দরকার কিছু ‘নির্ভরযোগ্য মানুষ’, যারা গবেষণাকে খাবারের বদলে জ্ঞানের খোরাক বানাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সভা এখন অতীত বিষয়। ওই সভার পর দেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুই সমন্বয় হয়ে গেছে এবং এখনো হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি একটি দ্রুত অগ্রসরমাণ বিষয়। তার কয়েক দিনও এক জায়গায় অবস্থানের সুযোগ নেই।
১৯ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়—শুধু গবেষণায় নয়, মানবিক দায়বদ্ধতায়ও। যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেখিয়ে দিয়েছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেবল জ্ঞানচর্চার স্থান নয়; বরং তা ন্যায়, স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীল...
১৯ ঘণ্টা আগেএই জীবনে মানুষ হয়ে জন্মানো আর মানুষ হয়ে ওঠা—এই দুইয়ের মাঝে যে সংযোগ, তাকে যদি ‘ম্যাজিক রিয়্যালিজম’ বলি? কথাটির সহজ কোনো মানে কি করা যায়? জীবনের শুরুতে কিংবা বেড়ে উঠতে উঠতে কতটুকুইবা বুঝতে পারা যায়? বোঝাটুকুর জন্যই যে মনের বৃদ্ধি দরকার!
১৯ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে ক্রমান্বয়ে নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নদী হলো পরিবেশ, কৃষি, মৎস্য সম্পদ আহরণ, যোগাযোগব্যবস্থা ও সেচের অন্যতম মাধ্যম। সমাজ-সভ্যতার ক্রমবিকাশে নদীর ভূমিকা অনেক। কিন্তু দিন দিন বিভিন্ন কারণে নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীতে বর্জ্য ফেলে যখন নদীকে দূষিত করা হয়, তখন বোঝা যায় আমরা জাতি হিসেবে কতটুকু...
১৯ ঘণ্টা আগে