কয়েক ছত্র
রুশা চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী
জীবনের প্রথম বোল বাংলা ভাষাতেই ফুটেছিল! তারপর প্রথম প্রজাপতির ডানা মেলা, ফরিংয়ের ডানায় উড়োজাহাজের সুর খুঁজে পাওয়া, মায়ের নামে লেবুর ঘ্রাণ, অজস্র উড়ে আসা চিঠির ফাঁকে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মুখের হাসি...!
এই ভাষাতেই ‘লালন’ মরে গিয়েও ফিরে আসে অন্য প্রজন্মের হাত ধরে ‘কবীর’ নাম নিয়ে আমাদের কাছে...অমরত্বের প্রত্যাশায় তার দাবিদাওয়া নয়নতারার রংয়ে মিশে যায়।
রাস্তার পাশে অকথ্য ভাষার ফোয়ারা
ছুটিয়ে ঝগড়া করে আবার এই ভাষাতেই শিশুর মুখে চুমু খায় কোমেলা। রোজ রাতে তাস পিটিয়ে বাড়ি ফিরে পরদিন ছেলেমেয়েদের অঙ্কের ভুল ধরে এই ভাষাতেই বকুনি দেয় পাশের বাড়ির সাহানার বর।
পৃথিবীর মধুরতম কথাগুলো এই ভাষাতেই লিখে রেখে গিয়েছিলেন সেই চিরকালের তরুণ রবীন্দ্রনাথ। তাঁকে দোষারোপ করে, এড়াতে চেয়ে, বলয় ভাঙতে চেয়ে আবার তাঁরই স্নেহছায়ায় স্বপ্নজাল বুনেছিলেন পঞ্চকবি। সাগরদাঁড়ি নদীর তীরে আজও মেঘনাদের জন্য বিলাপ করেন একাকী পিতা...সেই ‘আ-মরি বাংলা ভাষা’তেই।
ধূসর নগরীতে যখন হিজল ফুল ঝরে পড়ে, ঘাই হরিণের চোখে নির্জনতার ডাক...জীবনের আনন্দ খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া বাংলা ভাষায় আলোর ফুল ফোটানো মানুষটি কোনো এক গোপন ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
মাঝে মাঝেই চায়ের কাপে ঝড় ওঠে...এক প্রজন্ম আরেক প্রজন্মের পিঠ চাপড়ানোর বদলে মুখোশ খুলে দিতে চায়! চাঁদাবাজির ভয়, মশার ভয়, ছিনতাইয়ের ভয়, অভিশাপের ভয়, নিজে যা নই তা-ই প্রমাণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা—সবটাই এই প্রাণের ভাষাতেই ঘটে যায়। ভার্চুয়ালি পাশে আছি, ভালোবাসি, লুকিয়ে হলেও সঙ্গেই থাকি, আমি সবটা সামনেই বলি, স্ক্রিনশটে প্রমাণ ধরে রাখি...বাংলা-বাংলা আর বাংলা—পুরোটাই বাংলা ভাষায়।
বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যি দেওয়ার পরেও এই ভাষাতেই অনেক মানুষ বিচ্ছেদ ঘটায়; কেউ গর্জায়, কেউ বর্ষায়, ভয় দেখায়, দাঙ্গা বাধায়, অভিসন্ধি করে, কেউ কেউ সান্ত্বনা দেয়...তারপর এক দিনের জন্য সাদাকালো আর আমাদের ফেব্রুয়ারি...সবটাই এই বাংলা ভাষায়।
মুখপোড়া জীবনটার ওপর রাগ করে ছিপছিপে কিছু বাক্যবাণে তাকে বিদ্ধ করে ফেলে তারপর ভীষণ অভিমানী হয়ে জীবন বিলিয়ে দেওয়া বা হতাশায় মুষড়ে পড়া, বইমেলায় উল্টাপাল্টা দেখে বোকা লোকগুলোকে গালাগালি—এই বাংলা ভাষাতেই। আবোলতাবোল কথার মাঝে, আনন্দ,
প্রেম, উচ্ছ্বাস, উল্লাসে নিজের সমস্তটা উজাড় করে দিতে শুধু এই বাংলা ভাষার জন্য জীবনটাকেও বাজি ধরে ফেলতে পেরেছিল তাই এই দেশের আমজনতা।
বর্ণমালাকে চিরকাল দুঃখিনী বানিয়ে রাখার আশ্চর্য শৌখিনতা বা ফ্যান্টাসি নিয়ে আমাদের ব্যস্ত ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হয়ে এল। যা পেলাম না তার কথা থাক, না পাওয়া দিয়ে জীবন সাজানোও এক চিরকালের বাঙালিয়ানা হয়তো। এই ভাঙচুর-মারমুখী উদ্ভ্রান্ত সময়ে দিগ্ভ্রান্ত না হয়ে আজলা ভরে কিছু পলাশ ফুল তো পেলাম, হিরণ্ময় আলোয় মোড়ানো অসময়ের বৃষ্টিও ছিল তাতে। বইমেলার পাশ দিয়ে উড়াল ট্রেনে যেতে যেতে বর্ণমালার অক্ষরগুলোকে একবার অন্তত সুখী হতে দেখছিলাম কি?
থাকুক এইসব প্রশ্ন আজ না পাওয়া উত্তর হয়ে, হিসাবের খাতা মেলাতে সামনে হালখাতার দিনও আসবে একদিন। আজ বোকার মতো একটু আনন্দ নিয়েই বলে যাই, ‘জয় হোক আমাদের প্রাণের বাংলা ভাষার।’
বোকার মতো কেন বললাম? এই প্রশ্নের উত্তর মাথায় আসছে না, সে আছে প্রাণের ভেতরে।
জীবনের প্রথম বোল বাংলা ভাষাতেই ফুটেছিল! তারপর প্রথম প্রজাপতির ডানা মেলা, ফরিংয়ের ডানায় উড়োজাহাজের সুর খুঁজে পাওয়া, মায়ের নামে লেবুর ঘ্রাণ, অজস্র উড়ে আসা চিঠির ফাঁকে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মুখের হাসি...!
এই ভাষাতেই ‘লালন’ মরে গিয়েও ফিরে আসে অন্য প্রজন্মের হাত ধরে ‘কবীর’ নাম নিয়ে আমাদের কাছে...অমরত্বের প্রত্যাশায় তার দাবিদাওয়া নয়নতারার রংয়ে মিশে যায়।
রাস্তার পাশে অকথ্য ভাষার ফোয়ারা
ছুটিয়ে ঝগড়া করে আবার এই ভাষাতেই শিশুর মুখে চুমু খায় কোমেলা। রোজ রাতে তাস পিটিয়ে বাড়ি ফিরে পরদিন ছেলেমেয়েদের অঙ্কের ভুল ধরে এই ভাষাতেই বকুনি দেয় পাশের বাড়ির সাহানার বর।
পৃথিবীর মধুরতম কথাগুলো এই ভাষাতেই লিখে রেখে গিয়েছিলেন সেই চিরকালের তরুণ রবীন্দ্রনাথ। তাঁকে দোষারোপ করে, এড়াতে চেয়ে, বলয় ভাঙতে চেয়ে আবার তাঁরই স্নেহছায়ায় স্বপ্নজাল বুনেছিলেন পঞ্চকবি। সাগরদাঁড়ি নদীর তীরে আজও মেঘনাদের জন্য বিলাপ করেন একাকী পিতা...সেই ‘আ-মরি বাংলা ভাষা’তেই।
ধূসর নগরীতে যখন হিজল ফুল ঝরে পড়ে, ঘাই হরিণের চোখে নির্জনতার ডাক...জীবনের আনন্দ খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া বাংলা ভাষায় আলোর ফুল ফোটানো মানুষটি কোনো এক গোপন ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকেন।
মাঝে মাঝেই চায়ের কাপে ঝড় ওঠে...এক প্রজন্ম আরেক প্রজন্মের পিঠ চাপড়ানোর বদলে মুখোশ খুলে দিতে চায়! চাঁদাবাজির ভয়, মশার ভয়, ছিনতাইয়ের ভয়, অভিশাপের ভয়, নিজে যা নই তা-ই প্রমাণের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা—সবটাই এই প্রাণের ভাষাতেই ঘটে যায়। ভার্চুয়ালি পাশে আছি, ভালোবাসি, লুকিয়ে হলেও সঙ্গেই থাকি, আমি সবটা সামনেই বলি, স্ক্রিনশটে প্রমাণ ধরে রাখি...বাংলা-বাংলা আর বাংলা—পুরোটাই বাংলা ভাষায়।
বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যি দেওয়ার পরেও এই ভাষাতেই অনেক মানুষ বিচ্ছেদ ঘটায়; কেউ গর্জায়, কেউ বর্ষায়, ভয় দেখায়, দাঙ্গা বাধায়, অভিসন্ধি করে, কেউ কেউ সান্ত্বনা দেয়...তারপর এক দিনের জন্য সাদাকালো আর আমাদের ফেব্রুয়ারি...সবটাই এই বাংলা ভাষায়।
মুখপোড়া জীবনটার ওপর রাগ করে ছিপছিপে কিছু বাক্যবাণে তাকে বিদ্ধ করে ফেলে তারপর ভীষণ অভিমানী হয়ে জীবন বিলিয়ে দেওয়া বা হতাশায় মুষড়ে পড়া, বইমেলায় উল্টাপাল্টা দেখে বোকা লোকগুলোকে গালাগালি—এই বাংলা ভাষাতেই। আবোলতাবোল কথার মাঝে, আনন্দ,
প্রেম, উচ্ছ্বাস, উল্লাসে নিজের সমস্তটা উজাড় করে দিতে শুধু এই বাংলা ভাষার জন্য জীবনটাকেও বাজি ধরে ফেলতে পেরেছিল তাই এই দেশের আমজনতা।
বর্ণমালাকে চিরকাল দুঃখিনী বানিয়ে রাখার আশ্চর্য শৌখিনতা বা ফ্যান্টাসি নিয়ে আমাদের ব্যস্ত ফেব্রুয়ারি মাস শেষ হয়ে এল। যা পেলাম না তার কথা থাক, না পাওয়া দিয়ে জীবন সাজানোও এক চিরকালের বাঙালিয়ানা হয়তো। এই ভাঙচুর-মারমুখী উদ্ভ্রান্ত সময়ে দিগ্ভ্রান্ত না হয়ে আজলা ভরে কিছু পলাশ ফুল তো পেলাম, হিরণ্ময় আলোয় মোড়ানো অসময়ের বৃষ্টিও ছিল তাতে। বইমেলার পাশ দিয়ে উড়াল ট্রেনে যেতে যেতে বর্ণমালার অক্ষরগুলোকে একবার অন্তত সুখী হতে দেখছিলাম কি?
থাকুক এইসব প্রশ্ন আজ না পাওয়া উত্তর হয়ে, হিসাবের খাতা মেলাতে সামনে হালখাতার দিনও আসবে একদিন। আজ বোকার মতো একটু আনন্দ নিয়েই বলে যাই, ‘জয় হোক আমাদের প্রাণের বাংলা ভাষার।’
বোকার মতো কেন বললাম? এই প্রশ্নের উত্তর মাথায় আসছে না, সে আছে প্রাণের ভেতরে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে লন্ডনে অনুষ্ঠিত সভা এখন অতীত বিষয়। ওই সভার পর দেশের রাজনীতিতে অনেক কিছুই সমন্বয় হয়ে গেছে এবং এখনো হয়ে যাচ্ছে। রাজনীতি একটি দ্রুত অগ্রসরমাণ বিষয়। তার কয়েক দিনও এক জায়গায় অবস্থানের সুযোগ নেই।
১৯ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়—শুধু গবেষণায় নয়, মানবিক দায়বদ্ধতায়ও। যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেখিয়ে দিয়েছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেবল জ্ঞানচর্চার স্থান নয়; বরং তা ন্যায়, স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীল...
১৯ ঘণ্টা আগেএই জীবনে মানুষ হয়ে জন্মানো আর মানুষ হয়ে ওঠা—এই দুইয়ের মাঝে যে সংযোগ, তাকে যদি ‘ম্যাজিক রিয়্যালিজম’ বলি? কথাটির সহজ কোনো মানে কি করা যায়? জীবনের শুরুতে কিংবা বেড়ে উঠতে উঠতে কতটুকুইবা বুঝতে পারা যায়? বোঝাটুকুর জন্যই যে মনের বৃদ্ধি দরকার!
১৯ ঘণ্টা আগেআমাদের দেশে ক্রমান্বয়ে নদী হারিয়ে যাচ্ছে। নদী হলো পরিবেশ, কৃষি, মৎস্য সম্পদ আহরণ, যোগাযোগব্যবস্থা ও সেচের অন্যতম মাধ্যম। সমাজ-সভ্যতার ক্রমবিকাশে নদীর ভূমিকা অনেক। কিন্তু দিন দিন বিভিন্ন কারণে নদী দখল হয়ে যাচ্ছে। নদীতে বর্জ্য ফেলে যখন নদীকে দূষিত করা হয়, তখন বোঝা যায় আমরা জাতি হিসেবে কতটুকু...
১৯ ঘণ্টা আগে