হোসাম আল-হামালাউয়ি
এ বছর প্রায় শেষের পথে। এদিকে আরবের সবচেয়ে জনবহুল দেশটি ধীরে ধীরে ঘুণে ধরা রাজনৈতিক শৃঙ্খলে এক স্থবির ম্যামথ হয়ে রয়ে গেছে। শাসকদের দেশে বৈধতা নেই। কেবল পশ্চিমা ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নগদ অর্থ দেশটিকে টিকিয়ে রেখেছে। এই দেশগুলো সব সময় মিসরে শাসকদের বিরুদ্ধে জনবিস্ফোরণের আশঙ্কায় থাকে।
প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসির বয়স এখন ৭০ বছর। বছরের শুরুতে তিনি একটি নির্বাচনী সার্কাসের মাধ্যমে নিজের মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়েছেন। আর তাঁর একমাত্র গুরুতর প্রতিদ্বন্দ্বী, সাবেক সংসদ সদস্য আহমেদ তানতাওয়িকে দ্রুতই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মিসরের সিক্রেট পুলিশ, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সারা বছর ধরে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে লেগেই ছিল। আর সাধারণ নাগরিকেরা মিথ্যা মামলার ঘূর্ণাবর্তে শুধুই ঘুরপাক খেতে থাকে। কারাগারের অবস্থাও ভয়ংকর। বন্দীরা বারবার নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে অনশন করেছেন। এই বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালিত কারাগার, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বিভিন্ন শাখা ও থানাগুলোয় ৫০ জনেরও বেশি বন্দী মারা গেছেন।
মূলধারার গণমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বা শাসনকর্তাদের সমালোচনা কার্যত অস্তিত্বহীন। বেশির ভাগ গণমাধ্যমের মালিক জেনারেল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (জিআইএস) দ্বারা তৈরি একটি কোম্পানি। তারাই খুঁটিনাটি সব দেখে।
মুষ্টিমেয় কয়েকটি অনলাইন মিডিয়া স্বাধীনভাবে নয়, কাজ করে কঠোর শর্তের মধ্যে। এখানে খবর বা মতামত সেন্সর করা হয় এবং মিডিয়া লাইসেন্স দিতে অস্বীকার করা হয়। আর টানা হয়রানি তো আছেই। মিসরের সাংবাদিক সিন্ডিকেটের মতে, এখন কমপক্ষে ২৪ জন সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী কারাগারে।
গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে রাজপথে প্রতিবাদ চোখে পড়ে না। সংঘাত শুরুর এক বছর পরে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে অংশ নেওয়ার জন্য এক শর বেশি লোককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা এখনো বন্দী।
সিরিয়া কি পথ দেখাচ্ছে?
রাজপথে ভিন্নমতের মানুষের আসাটা আটকে দেওয়া হয়েছে। তবু মাঝে মাঝে নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। এদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘাত বাড়ছে। বিশেষত মজুরি ও কাজের পরিবেশের পাশাপাশি আবাসন, উচ্ছেদ এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে।
২০১৩ সালের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসার পর থেকে সিসির সরকার মিসরের আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। নগরজীবনের সামরিকীকরণ এরই একটি অংশ। স্থপতি ওমনিয়া খলিলের ধারণা, ২০১৩ সাল থেকে শুধু গিজা ও কায়রোর প্রায় ১০ শতাংশ বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এই মাসের শুরুতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের নৃশংস শাসনের অবসানকে মিসরীয়রা আনন্দের সঙ্গে দেখেছিল। সিসির নৃশংস একনায়কত্বের অধীনে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ নিজ দেশে এটি কীভাবে কার্যকর হবে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে।
যাই হোক, মিসরে অবশ্যই এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা সিরিয়ার ঘটনাগুলো দেখছেন এবং চিন্তা করছেন যে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের মতোই সশস্ত্র বিদ্রোহই সিসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার একমাত্র উপায় কি না। বলা বাহুল্য, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের বিজয় মিসর ও অন্যত্র রাজনৈতিক ইসলামকে উৎসাহিত করবে।
সিরিয়ার ঘটনা নিয়ে সিসিও উদ্বিগ্ন। আসাদের পতনের প্রায় এক সপ্তাহ পরে তিনি আঞ্চলিক যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ বেসামরিক ও সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের মূল বিষয় ছিল সিরিয়া ও গাজা। একই দিনে সিসি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ এবং মিসরীয় রাষ্ট্রকে রক্ষা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দুটি জিনিস আছে আমি কখনো করিনি, এ জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। আমি কারও রক্তে হাত মাখিনি। কারও কাছ থেকে অর্থ নিইনি।’
সামরিক ব্যবসা
বেসামরিক ব্যবসা থেকে সামরিক বাহিনীকে বিদায় করার জন্য আন্তর্জাতিক দাতাদের এবং কখনো কখনো বিশিষ্ট বেসামরিক ব্যবসায়ীদের চাপ সত্ত্বেও তারা নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েই চলেছে। এটি মুক্তবাজারকে দুর্নীতির মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর দিকে ঘুরিয়ে দেয়। স্থানীয় ও বৈশ্বিক অংশীদারদের বাধ্য করে তাদের সঙ্গে আপস করতে।
২০২৪ সালে সিসি সামরিক করপোরেশনগুলোর বেসরকারীকরণ বা তাদের প্রভাব কমানোর সব চাপ এড়িয়ে গেছেন। উল্টো তাদের আরও একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সিসির সামরিক বাহিনীর ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো বিক্রিতে দেরি করার পেছনে একটা বড় কারণ রয়েছে। আর তা হলো, এই মুহূর্তে সিসির অনুগত সামরিক কর্মকর্তারা এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে সুখে আছেন। গদির দিকে নজর নেই।
এখন সরকার বলছে, তারা এসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি ‘কৌশলগত বিনিয়োগকারী’র কাছে বিক্রি
করবে। যদিও এই বিনিয়োগকারীদের পরিচয় বা তারা কত শতাংশ শেয়ার কিনবে—সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সংস্থাগুলো সম্পূর্ণ বেসরকারীকরণ করা হবে না—এটা নিশ্চিত হলেও এর কত শতাংশ শেয়ার বাজারে দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট নয়। সিসি যদি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কিছু নিয়ে যান, তবে অন্যদিক দিয়ে তা পুষিয়ে দেবেন। এর অর্থ হচ্ছে অন্যান্য খাতে আরও ছাড়, জমির বরাদ্দ বাড়ানো ইত্যাদি। সম্প্রতি শস্য আমদানির একচেটিয়া অধিকার দেওয়া হয়েছে সামরিক বাহিনীকে।
রাজনৈতিক মরুভূমি
সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) সহায়তা সিসির জন্য খুব দরকার। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি এটি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন। আর নেশনস ফিউচার পার্টি, যারা জনগণের কাছে সিসির সমর্থন জোগাড় করতে নেমেছিল, তারাও ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভোট কারচুপি সম্ভব হয়নি। প্রয়োজন পড়েছে নিছক গুন্ডামির। আর এই কেলেঙ্কারি শাসকের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে।
বিদেশি ঋণের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরতা দেশকে পতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মিসরে শ্রেণিবৈষম্য বাড়ছে। কায়রোর আঞ্চলিক প্রভাব এবং সফট পাওয়ারের সুনাম গেছে। পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয় বেড়েছে।
পূর্ববর্তী শাসনের অধীনে সক্রিয় আঞ্চলিক আধিপত্য থেকে সিসির মিসর এখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দাতাদের দ্বারা বিদেশি ঋণ, অনুদানের ওপর নির্ভরশীল। এরা মিসরকে ‘বড় হতে ব্যর্থ’ রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি নিতে চায় না। তারপরেও আগামী বছরগুলোতে মিসর তার ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মতো বিষয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক থাকবে। কারণ গাজা থেকে বহির্বিশ্বে যাওয়ার একমাত্র পথ রাফাহ ক্রসিং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ইসরায়েলকে তার সীমান্ত বরাবর ফিলাডেলফি করিডর থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে অক্ষম মিসর। তবে দুর্বল ফিলিস্তিনের সঙ্গে জোর দেখাতে পারবে। ফলে ট্রাম্পের মার্কিন প্রশাসনের কাছে আপসের মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।
(মিডিল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও সংক্ষেপিত)
এ বছর প্রায় শেষের পথে। এদিকে আরবের সবচেয়ে জনবহুল দেশটি ধীরে ধীরে ঘুণে ধরা রাজনৈতিক শৃঙ্খলে এক স্থবির ম্যামথ হয়ে রয়ে গেছে। শাসকদের দেশে বৈধতা নেই। কেবল পশ্চিমা ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর কাছ থেকে পাওয়া নগদ অর্থ দেশটিকে টিকিয়ে রেখেছে। এই দেশগুলো সব সময় মিসরে শাসকদের বিরুদ্ধে জনবিস্ফোরণের আশঙ্কায় থাকে।
প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসির বয়স এখন ৭০ বছর। বছরের শুরুতে তিনি একটি নির্বাচনী সার্কাসের মাধ্যমে নিজের মেয়াদ ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়েছেন। আর তাঁর একমাত্র গুরুতর প্রতিদ্বন্দ্বী, সাবেক সংসদ সদস্য আহমেদ তানতাওয়িকে দ্রুতই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মিসরের সিক্রেট পুলিশ, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সারা বছর ধরে ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে লেগেই ছিল। আর সাধারণ নাগরিকেরা মিথ্যা মামলার ঘূর্ণাবর্তে শুধুই ঘুরপাক খেতে থাকে। কারাগারের অবস্থাও ভয়ংকর। বন্দীরা বারবার নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে অনশন করেছেন। এই বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিচালিত কারাগার, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির বিভিন্ন শাখা ও থানাগুলোয় ৫০ জনেরও বেশি বন্দী মারা গেছেন।
মূলধারার গণমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট বা শাসনকর্তাদের সমালোচনা কার্যত অস্তিত্বহীন। বেশির ভাগ গণমাধ্যমের মালিক জেনারেল ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (জিআইএস) দ্বারা তৈরি একটি কোম্পানি। তারাই খুঁটিনাটি সব দেখে।
মুষ্টিমেয় কয়েকটি অনলাইন মিডিয়া স্বাধীনভাবে নয়, কাজ করে কঠোর শর্তের মধ্যে। এখানে খবর বা মতামত সেন্সর করা হয় এবং মিডিয়া লাইসেন্স দিতে অস্বীকার করা হয়। আর টানা হয়রানি তো আছেই। মিসরের সাংবাদিক সিন্ডিকেটের মতে, এখন কমপক্ষে ২৪ জন সাংবাদিক ও মিডিয়াকর্মী কারাগারে।
গাজায় সংঘাত শুরুর পর থেকে রাজপথে প্রতিবাদ চোখে পড়ে না। সংঘাত শুরুর এক বছর পরে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে অংশ নেওয়ার জন্য এক শর বেশি লোককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা এখনো বন্দী।
সিরিয়া কি পথ দেখাচ্ছে?
রাজপথে ভিন্নমতের মানুষের আসাটা আটকে দেওয়া হয়েছে। তবু মাঝে মাঝে নাগরিকদের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ দেখা যাচ্ছে। এদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘাত বাড়ছে। বিশেষত মজুরি ও কাজের পরিবেশের পাশাপাশি আবাসন, উচ্ছেদ এবং সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে।
২০১৩ সালের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসার পর থেকে সিসির সরকার মিসরের আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। নগরজীবনের সামরিকীকরণ এরই একটি অংশ। স্থপতি ওমনিয়া খলিলের ধারণা, ২০১৩ সাল থেকে শুধু গিজা ও কায়রোর প্রায় ১০ শতাংশ বাসিন্দাকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এই মাসের শুরুতে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের নৃশংস শাসনের অবসানকে মিসরীয়রা আনন্দের সঙ্গে দেখেছিল। সিসির নৃশংস একনায়কত্বের অধীনে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষ নিজ দেশে এটি কীভাবে কার্যকর হবে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে।
যাই হোক, মিসরে অবশ্যই এমন কিছু ব্যক্তি আছেন যাঁরা সিরিয়ার ঘটনাগুলো দেখছেন এবং চিন্তা করছেন যে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের মতোই সশস্ত্র বিদ্রোহই সিসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার একমাত্র উপায় কি না। বলা বাহুল্য, সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের বিজয় মিসর ও অন্যত্র রাজনৈতিক ইসলামকে উৎসাহিত করবে।
সিরিয়ার ঘটনা নিয়ে সিসিও উদ্বিগ্ন। আসাদের পতনের প্রায় এক সপ্তাহ পরে তিনি আঞ্চলিক যুদ্ধের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ বেসামরিক ও সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের মূল বিষয় ছিল সিরিয়া ও গাজা। একই দিনে সিসি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ এবং মিসরীয় রাষ্ট্রকে রক্ষা করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দুটি জিনিস আছে আমি কখনো করিনি, এ জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ। আমি কারও রক্তে হাত মাখিনি। কারও কাছ থেকে অর্থ নিইনি।’
সামরিক ব্যবসা
বেসামরিক ব্যবসা থেকে সামরিক বাহিনীকে বিদায় করার জন্য আন্তর্জাতিক দাতাদের এবং কখনো কখনো বিশিষ্ট বেসামরিক ব্যবসায়ীদের চাপ সত্ত্বেও তারা নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েই চলেছে। এটি মুক্তবাজারকে দুর্নীতির মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর দিকে ঘুরিয়ে দেয়। স্থানীয় ও বৈশ্বিক অংশীদারদের বাধ্য করে তাদের সঙ্গে আপস করতে।
২০২৪ সালে সিসি সামরিক করপোরেশনগুলোর বেসরকারীকরণ বা তাদের প্রভাব কমানোর সব চাপ এড়িয়ে গেছেন। উল্টো তাদের আরও একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সিসির সামরিক বাহিনীর ব্যবসায়িক সংস্থাগুলো বিক্রিতে দেরি করার পেছনে একটা বড় কারণ রয়েছে। আর তা হলো, এই মুহূর্তে সিসির অনুগত সামরিক কর্মকর্তারা এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে সুখে আছেন। গদির দিকে নজর নেই।
এখন সরকার বলছে, তারা এসব প্রতিষ্ঠান সরাসরি ‘কৌশলগত বিনিয়োগকারী’র কাছে বিক্রি
করবে। যদিও এই বিনিয়োগকারীদের পরিচয় বা তারা কত শতাংশ শেয়ার কিনবে—সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সংস্থাগুলো সম্পূর্ণ বেসরকারীকরণ করা হবে না—এটা নিশ্চিত হলেও এর কত শতাংশ শেয়ার বাজারে দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট নয়। সিসি যদি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কিছু নিয়ে যান, তবে অন্যদিক দিয়ে তা পুষিয়ে দেবেন। এর অর্থ হচ্ছে অন্যান্য খাতে আরও ছাড়, জমির বরাদ্দ বাড়ানো ইত্যাদি। সম্প্রতি শস্য আমদানির একচেটিয়া অধিকার দেওয়া হয়েছে সামরিক বাহিনীকে।
রাজনৈতিক মরুভূমি
সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) সহায়তা সিসির জন্য খুব দরকার। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিনি এটি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন। আর নেশনস ফিউচার পার্টি, যারা জনগণের কাছে সিসির সমর্থন জোগাড় করতে নেমেছিল, তারাও ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভোট কারচুপি সম্ভব হয়নি। প্রয়োজন পড়েছে নিছক গুন্ডামির। আর এই কেলেঙ্কারি শাসকের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে।
বিদেশি ঋণের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরতা দেশকে পতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। মিসরে শ্রেণিবৈষম্য বাড়ছে। কায়রোর আঞ্চলিক প্রভাব এবং সফট পাওয়ারের সুনাম গেছে। পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয় বেড়েছে।
পূর্ববর্তী শাসনের অধীনে সক্রিয় আঞ্চলিক আধিপত্য থেকে সিসির মিসর এখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক দাতাদের দ্বারা বিদেশি ঋণ, অনুদানের ওপর নির্ভরশীল। এরা মিসরকে ‘বড় হতে ব্যর্থ’ রাষ্ট্র হিসেবে দেখে। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি নিতে চায় না। তারপরেও আগামী বছরগুলোতে মিসর তার ভৌগোলিক নৈকট্যের কারণে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মতো বিষয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক থাকবে। কারণ গাজা থেকে বহির্বিশ্বে যাওয়ার একমাত্র পথ রাফাহ ক্রসিং তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ইসরায়েলকে তার সীমান্ত বরাবর ফিলাডেলফি করিডর থেকে সরে যেতে বাধ্য করতে অক্ষম মিসর। তবে দুর্বল ফিলিস্তিনের সঙ্গে জোর দেখাতে পারবে। ফলে ট্রাম্পের মার্কিন প্রশাসনের কাছে আপসের মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।
(মিডিল ইস্ট আইতে প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনূদিত ও সংক্ষেপিত)
নেদারল্যান্ডসের নাগরিক পিটার ভ্যান উইঙ্গারডেন ও মিনকে ভ্যান উইঙ্গারডেন। তাঁরা ২০১২ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে বিজনেস ট্রিপে গিয়েছিলেন। সেখানে হারিকেন স্যান্ডির মুখোমুখি হন। হারিকেন স্যান্ডি ম্যানহাটানকে প্লাবিত করে। সেখানকার বাসিন্দাদের বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়। ঝড়ের কারণে
২১ ঘণ্টা আগেআমাদের পুঁজিতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্রে শ্রমিকশ্রেণির প্রকৃত স্বার্থরক্ষার উপায় নেই। যেহেতু বিদ্যমান ব্যবস্থাটি হচ্ছে শ্রম-শোষণের এবং শ্রমিক-নিগ্রহের উর্বর ক্ষেত্র। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকশ্রেণির স্বার্থরক্ষা কিংবা সুরক্ষার উপায় নেই। শ্রমিকমাত্রই শ্রমবাজারে শ্রম বিনিয়োগ করবেন এবং বিনিময়ে পাবেন মজুরি।
২১ ঘণ্টা আগেদিন দিন আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে। মানসিক বিড়ম্বনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। ধারণাটা হয়তো এ রকম যে, মরতে যখন হবেই তখন আজই কী আর কালইবা কী! স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা যখন নেই, তখন অস্বাভাবিক মৃত্যু যেকোনো সময় হতেই পারে। তবে মৃত্যুর প্রস্তুতিটা সহজ নয়; বেশ কঠিন।
১ দিন আগেসাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া ও ইছামতী নদী থেকে চিংড়ির পোনা সংগ্রহের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। নদী থেকে এভাবে পোনা মাছ ধরা নিষিদ্ধ। কিন্তু তাদের দৈনিক আয় সামান্য হলেও বিকল্প কর্মসংস্থানের অভাবে তারা এ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। মৎস্য কর্মকর্তারা বিকল্প জীবিকার কথা বলে
১ দিন আগে