ফজলুল কবির
কথায় বলে রাজনীতির ময়দান। ময়দান বললে অবশ্য তর্ক-বিতর্কের ভূমিকে বোঝায়, যেখানে সভা হয়, বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়, আবার কোনো রাজনৈতিক অর্জন উদ্যাপনও হয়। এর থেকে ঢের বেশি দেশীয় হচ্ছে ‘মাঠ’। প্রায়ই বলা হয়—খেলা হবে রাজনীতির মাঠে। এই দেশে এক দল আরেক দলকে মাঠেই ‘দেখে নেওয়াটা’ একরকম রেওয়াজ বলা যায়। পুরো বিষয়টাই একটা টান টান উত্তেজনার ব্যাপার। কিন্তু এখন বিষয়টা একটু অন্য রকম।
বাংলাদেশে এখন আর রাজনীতির ময়দান নেই। আর মাঠ—বিগত এই দেশে রাজনীতির মাঠ বিষয়টা তো কবেই স্মৃতি হয়ে গেছে। পল্টন ময়দানের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতির ময়দানও এখন ইতিহাস। আর যেভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে, তাতে মাঠ বলে কোনো বস্তু তো আর রাজধানীতে নেই। ফলে কেন্দ্রে বসে একনাগাড়ে বিকেন্দ্রীকরণের গল্প বলা দেশে রাজনীতির মাঠ থাকবে কী করে। আর এ কারণেই রাজনীতি এখন আছে বিবৃতি ও বক্তৃতায়।
এ দেশের মানুষের ভাগ্য যে, বড় দুই দলের নেতারা এখনো পরস্পরকে নিয়ে দৈনিক নিয়ম করে কথা বলেন। না হলে মানুষ কবেই ভুলে যেত যে ‘রাজনীতি’ নামের একটা বস্তু আছে পৃথিবীতে। এই নেতৃবৃন্দকে প্রতিদিন শত সালাম ঠোকা একেবারে সময়ের দাবি। কারণ, তাঁরা না থাকলে কবেই দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল হতো যে, ‘রাজনীতি বা পলিটিকস বস্তুটি অন্য দেশের জিনিস। এই দেশে এটি হয় না, যেমন অনেক ফলই হয় না।’
প্রতিদিনই সকালটা জমিয়ে দেন বড় দুই দলের বড় দুই নেতা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কোনো একটা উপলক্ষ ধরে কথা শুরু করেন তাঁরা। তারপর অবধারিতভাবে তাঁরা শুরু করেন পরস্পরকে নিয়ে কথা বলা। নিশ্চয় তাঁরা ব্যক্তিজীবনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে থাকবেন, যেমন বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল অন্য অর্থে বন্ধু দলও বটে।
এই যেমন সর্বশেষ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বচসায় মেতেছেন দুই নেতা। একজন বলছেন মাহবুব তালুকদার মানসিকভাবে অসুস্থ। অন্যজন এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে আওয়ামী লীগের নেতাদেরই ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এখানেই থামেননি তাঁরা। আলোচনা অনেক দূর গড়িয়েছে। দুজনই দুই পক্ষের দৈনিক কার্যতালিকার একটা নমুনা হাজির করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আন্দোলনের ডাক দেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অথচ বিএনপি আমাদের চেয়ে ছয় ঘণ্টা পিছিয়ে আছে।
কারণ, আমাদের নেত্রী ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠেন। আর দুপুর ১২টার আগে বিএনপির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।’ মির্জা ফখরুলও পিছিয়ে থাকেননি। তিনিও বলেছেন, ‘এত কথা বলেন, ঘর থেকে তো কোনো দিন বের হতে দেখি না। কেউ গণভবনে, কেউ মন্ত্রীর বাসায়—সব ভার্চুয়াল যা কিছু করছেন।’
অথচ দুজনই কিন্তু ওই ভার্চুয়াল বক্তব্যই দিচ্ছেন। এটা অনেকটা করোনার কারণেও। কিন্তু করোনার আগেও কি ভিন্ন কিছু ছিল? শুধু এই দুই নেতা নন, দুই দলের অন্য নেতাদেরও এমনভাবেই নানা বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে রাজনীতি বিষয়টিকে টিকিয়ে রাখতে দেখা যাচ্ছে। নাকি তাঁরা নিজেদেরই টিকিয়ে রাখছেন? কে জানে।
মজার বিষয় হলো উভয় পক্ষই পরস্পরকে রাজনীতির মাঠে হাজির না থাকার জন্য খোঁচা দিচ্ছে। প্রশ্নটা হলো মাঠটা ঠিক কোথায়? তাঁরা ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখন থেকেই কথা বলছেন। এ ছাড়া অবশ্য অন্য কোনো উপায়ও নেই। কারণ, দেশে রাজনীতি বলতে চাক্ষুষ এই একটি জিনিসই হাজির আছে, যাও নাকি লুট হয়ে গেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। সে যাক, সারা দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচন চলছে এখন। এ অবস্থায় ‘নির্বাচন’ শব্দের মানহানি না করাই ভালো।
দেশে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, করোনা পরিস্থিতি ও এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয়, দীর্ঘ বন্ধে নাকাল শিক্ষা খাত, বেকার সংকট, কর্মসংস্থানে বিরাট বিপরীত টান ইত্যাদি নানা সংকট রয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে এই নিয়ে কিন্তু কারও কোনো জোরালো বক্তব্য নেই। আছে যা, তা হলো উপলক্ষ হিসেবে। আর এই উপলক্ষটি টানা হয় শুধু বিপরীত পক্ষকে আক্রমণের উদ্দেশে। সেখানে এই সংকটগুলোর কোনোটিই মুখ্য হয়ে দেখা দেয় না। বরং নির্বাচন অনেক বেশি মুখ্য হয়ে ওঠে। যদিও জাতীয় নির্বাচন এখনো বহু দূর। এক পক্ষের ভাব এমন যে, ‘এসব নিয়ে বিরোধীরা হইচই করে আমাকেই ক্ষমতা থেকে নামাতে।’ আর অন্য পক্ষের ভাবটা হলো—‘আগে তো ক্ষমতায় যাই, তারপর না সংকট সমাধান হবে।’ অর্থাৎ, সমীকরণে একমাত্র ক্ষমতাই সত্য, আর বাকি সব ধারণা কেবল।
অথচ প্রতিদিন বাল্যবিবাহের খবর ছুটে আসছে। বলা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। অথচ প্রতিদিন শিশু যৌন নিপীড়নের খবর ছুটে আসছে। বলা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা এসব করছে। অথচ প্রতিদিন বেকার মানুষের গল্প উঠে আসছে কোথাও না কোথাও। শিশু দারিদ্র্য বেড়েছে বলে খবর ছুটে আসছে। নারীদের অবস্থা আরও বেশি প্রান্তিক হচ্ছে প্রতিদিন, যার প্রমাণ নির্যাতনের পরিসংখ্যানে রয়েছে। অথচ শিক্ষা খাত এক দারুণ জোকারের খেলে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এসব নিয়ে কারও কিছু আসে-যায় না। এ নিয়ে সবাই ‘স্পিকটি নট’। অথচ রাজনীতি বা জননীতির মূলটি হওয়ার কথা এখানেই। কিন্তু আমাদের নেতারা একে অন্যকে নির্বাচনী খোঁচাখুঁচি দিয়ে টিকিয়ে রাখছেন। এ একধরনের মিথজীবিতা বলা যায়।
মিথজীবী এই রাজনীতি বিবদমান দলগুলোকে কল্পিত ময়দানে টিকিয়ে রাখে। এটি পরস্পরের প্রতি দায়িত্বও বলা যায়। কারণ, ময়দানটি না থাকলে তাঁরা থাকবেন কোথায়। মানুষের স্মৃতি থেকে যদি রাজনীতি শব্দটিই হারিয়ে যায়, তবে তো তাঁদের পায়ের তলায়ও মাটি থাকে না আর। তাঁদের ক্ষমতার যে উৎস ও বিস্তার, তার পুরোটাই তো এই মাটি আছে বলেই। তাই নিজেদের স্বার্থেই তাঁদের পরস্পরকে টিকিয়ে রাখতে হয়। এ ছাড়া তাঁদের আর গত্যন্তর নেই। কিন্তু মানুষের? ক্ষমতার সমীকরণে বন্দী হয়ে পড়া ‘নির্বাচন’, ‘অধিকার’ ও ‘রাজনীতি’ বা বলতে ভালো লাগা ‘জননীতি’-তে জনতার ভাগটি কই? এটি বুঝে নেওয়ার কোনো চেষ্টা কি আদৌ আছে?
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা।
কথায় বলে রাজনীতির ময়দান। ময়দান বললে অবশ্য তর্ক-বিতর্কের ভূমিকে বোঝায়, যেখানে সভা হয়, বড় বড় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়, আবার কোনো রাজনৈতিক অর্জন উদ্যাপনও হয়। এর থেকে ঢের বেশি দেশীয় হচ্ছে ‘মাঠ’। প্রায়ই বলা হয়—খেলা হবে রাজনীতির মাঠে। এই দেশে এক দল আরেক দলকে মাঠেই ‘দেখে নেওয়াটা’ একরকম রেওয়াজ বলা যায়। পুরো বিষয়টাই একটা টান টান উত্তেজনার ব্যাপার। কিন্তু এখন বিষয়টা একটু অন্য রকম।
বাংলাদেশে এখন আর রাজনীতির ময়দান নেই। আর মাঠ—বিগত এই দেশে রাজনীতির মাঠ বিষয়টা তো কবেই স্মৃতি হয়ে গেছে। পল্টন ময়দানের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতির ময়দানও এখন ইতিহাস। আর যেভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে, তাতে মাঠ বলে কোনো বস্তু তো আর রাজধানীতে নেই। ফলে কেন্দ্রে বসে একনাগাড়ে বিকেন্দ্রীকরণের গল্প বলা দেশে রাজনীতির মাঠ থাকবে কী করে। আর এ কারণেই রাজনীতি এখন আছে বিবৃতি ও বক্তৃতায়।
এ দেশের মানুষের ভাগ্য যে, বড় দুই দলের নেতারা এখনো পরস্পরকে নিয়ে দৈনিক নিয়ম করে কথা বলেন। না হলে মানুষ কবেই ভুলে যেত যে ‘রাজনীতি’ নামের একটা বস্তু আছে পৃথিবীতে। এই নেতৃবৃন্দকে প্রতিদিন শত সালাম ঠোকা একেবারে সময়ের দাবি। কারণ, তাঁরা না থাকলে কবেই দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ধারণা বদ্ধমূল হতো যে, ‘রাজনীতি বা পলিটিকস বস্তুটি অন্য দেশের জিনিস। এই দেশে এটি হয় না, যেমন অনেক ফলই হয় না।’
প্রতিদিনই সকালটা জমিয়ে দেন বড় দুই দলের বড় দুই নেতা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কোনো একটা উপলক্ষ ধরে কথা শুরু করেন তাঁরা। তারপর অবধারিতভাবে তাঁরা শুরু করেন পরস্পরকে নিয়ে কথা বলা। নিশ্চয় তাঁরা ব্যক্তিজীবনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে থাকবেন, যেমন বড় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দল অন্য অর্থে বন্ধু দলও বটে।
এই যেমন সর্বশেষ নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বচসায় মেতেছেন দুই নেতা। একজন বলছেন মাহবুব তালুকদার মানসিকভাবে অসুস্থ। অন্যজন এই মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে আওয়ামী লীগের নেতাদেরই ‘মানসিক রোগী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এখানেই থামেননি তাঁরা। আলোচনা অনেক দূর গড়িয়েছে। দুজনই দুই পক্ষের দৈনিক কার্যতালিকার একটা নমুনা হাজির করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আন্দোলনের ডাক দেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘অথচ বিএনপি আমাদের চেয়ে ছয় ঘণ্টা পিছিয়ে আছে।
কারণ, আমাদের নেত্রী ভোর ৫টায় ঘুম থেকে ওঠেন। আর দুপুর ১২টার আগে বিএনপির কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।’ মির্জা ফখরুলও পিছিয়ে থাকেননি। তিনিও বলেছেন, ‘এত কথা বলেন, ঘর থেকে তো কোনো দিন বের হতে দেখি না। কেউ গণভবনে, কেউ মন্ত্রীর বাসায়—সব ভার্চুয়াল যা কিছু করছেন।’
অথচ দুজনই কিন্তু ওই ভার্চুয়াল বক্তব্যই দিচ্ছেন। এটা অনেকটা করোনার কারণেও। কিন্তু করোনার আগেও কি ভিন্ন কিছু ছিল? শুধু এই দুই নেতা নন, দুই দলের অন্য নেতাদেরও এমনভাবেই নানা বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে রাজনীতি বিষয়টিকে টিকিয়ে রাখতে দেখা যাচ্ছে। নাকি তাঁরা নিজেদেরই টিকিয়ে রাখছেন? কে জানে।
মজার বিষয় হলো উভয় পক্ষই পরস্পরকে রাজনীতির মাঠে হাজির না থাকার জন্য খোঁচা দিচ্ছে। প্রশ্নটা হলো মাঠটা ঠিক কোথায়? তাঁরা ২০২৩ সালে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখন থেকেই কথা বলছেন। এ ছাড়া অবশ্য অন্য কোনো উপায়ও নেই। কারণ, দেশে রাজনীতি বলতে চাক্ষুষ এই একটি জিনিসই হাজির আছে, যাও নাকি লুট হয়ে গেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। সে যাক, সারা দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচন চলছে এখন। এ অবস্থায় ‘নির্বাচন’ শব্দের মানহানি না করাই ভালো।
দেশে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, করোনা পরিস্থিতি ও এর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয়, দীর্ঘ বন্ধে নাকাল শিক্ষা খাত, বেকার সংকট, কর্মসংস্থানে বিরাট বিপরীত টান ইত্যাদি নানা সংকট রয়েছে। মজার বিষয় হচ্ছে এই নিয়ে কিন্তু কারও কোনো জোরালো বক্তব্য নেই। আছে যা, তা হলো উপলক্ষ হিসেবে। আর এই উপলক্ষটি টানা হয় শুধু বিপরীত পক্ষকে আক্রমণের উদ্দেশে। সেখানে এই সংকটগুলোর কোনোটিই মুখ্য হয়ে দেখা দেয় না। বরং নির্বাচন অনেক বেশি মুখ্য হয়ে ওঠে। যদিও জাতীয় নির্বাচন এখনো বহু দূর। এক পক্ষের ভাব এমন যে, ‘এসব নিয়ে বিরোধীরা হইচই করে আমাকেই ক্ষমতা থেকে নামাতে।’ আর অন্য পক্ষের ভাবটা হলো—‘আগে তো ক্ষমতায় যাই, তারপর না সংকট সমাধান হবে।’ অর্থাৎ, সমীকরণে একমাত্র ক্ষমতাই সত্য, আর বাকি সব ধারণা কেবল।
অথচ প্রতিদিন বাল্যবিবাহের খবর ছুটে আসছে। বলা হচ্ছে সামাজিক নিরাপত্তার অভাব। অথচ প্রতিদিন শিশু যৌন নিপীড়নের খবর ছুটে আসছে। বলা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা এসব করছে। অথচ প্রতিদিন বেকার মানুষের গল্প উঠে আসছে কোথাও না কোথাও। শিশু দারিদ্র্য বেড়েছে বলে খবর ছুটে আসছে। নারীদের অবস্থা আরও বেশি প্রান্তিক হচ্ছে প্রতিদিন, যার প্রমাণ নির্যাতনের পরিসংখ্যানে রয়েছে। অথচ শিক্ষা খাত এক দারুণ জোকারের খেলে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এসব নিয়ে কারও কিছু আসে-যায় না। এ নিয়ে সবাই ‘স্পিকটি নট’। অথচ রাজনীতি বা জননীতির মূলটি হওয়ার কথা এখানেই। কিন্তু আমাদের নেতারা একে অন্যকে নির্বাচনী খোঁচাখুঁচি দিয়ে টিকিয়ে রাখছেন। এ একধরনের মিথজীবিতা বলা যায়।
মিথজীবী এই রাজনীতি বিবদমান দলগুলোকে কল্পিত ময়দানে টিকিয়ে রাখে। এটি পরস্পরের প্রতি দায়িত্বও বলা যায়। কারণ, ময়দানটি না থাকলে তাঁরা থাকবেন কোথায়। মানুষের স্মৃতি থেকে যদি রাজনীতি শব্দটিই হারিয়ে যায়, তবে তো তাঁদের পায়ের তলায়ও মাটি থাকে না আর। তাঁদের ক্ষমতার যে উৎস ও বিস্তার, তার পুরোটাই তো এই মাটি আছে বলেই। তাই নিজেদের স্বার্থেই তাঁদের পরস্পরকে টিকিয়ে রাখতে হয়। এ ছাড়া তাঁদের আর গত্যন্তর নেই। কিন্তু মানুষের? ক্ষমতার সমীকরণে বন্দী হয়ে পড়া ‘নির্বাচন’, ‘অধিকার’ ও ‘রাজনীতি’ বা বলতে ভালো লাগা ‘জননীতি’-তে জনতার ভাগটি কই? এটি বুঝে নেওয়ার কোনো চেষ্টা কি আদৌ আছে?
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা।
নেপাল ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কেবল ভৌগোলিক নয়, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বন্ধনে আবদ্ধ। উন্মুক্ত সীমান্ত, অভিন্ন হিন্দু ঐতিহ্য এবং ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও নেপালে ভারতবিরোধী মনোভাব একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল বাস্তবতা।
৭ ঘণ্টা আগেআগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না
২০ ঘণ্টা আগেআজ থেকে খুব বেশি দিন না, এই ধরেন, বারো-সাড়ে বারো শ বছর আগের কথা। হীরকরাজ্যে তখনো জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিদ্যা-শিক্ষার চর্চা হতো। রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ৩০০ বছর ধরে শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার), শ্যামদেশ (থাইল্যান্ড), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ
২০ ঘণ্টা আগে৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জীবনের প্রস্থান হয়েছে। তাঁর এই প্রস্থানের মধ্য দিয়ে তিন পুরুষের রাজনৈতিক ধারারও সমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর দাদা আবুল কাসেম ছিলেন তৎকালীন জাতীয় কংগ্রেসের পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ডের সদস্য। বাবা আবুল হাশিম ছিলেন মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার নেতা।
২০ ঘণ্টা আগে