অরুণ কর্মকার, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না। ২ সেপ্টেম্বর সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই শঙ্কার কথা প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বরাতে সংবাদমাধ্যমে তাঁর যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে সে অনুযায়ী, ওই বৈঠকে তিনি বলেছেন, নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেই নির্বাচনে কোনো বিদেশি শক্তি যেন থাবা বসাতে না পারে, সে জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বাত্মক সমর্থন ও সহায়তা চেয়েছেন। তার মানে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো বিদেশি শক্তি থাবা বসাতে পারে এই আশঙ্কা তিনি করছেন।
এর আগের দিন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারে বাধা দেবে। বাংলাদেশের নতুন সত্তাকে গড়ে তুলতে তারা বাধা দেবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নির্বাচন বানচাল করার। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে, যাতে নির্বাচন না হয়। এগুলোর কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এ জন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার।’
সাত দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার বিষয়টি স্পষ্ট। এটাও স্পষ্ট যে এই আশঙ্কার কারণ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। অবশ্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে এই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের একটা অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক বিরাজমান। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই যেকোনো সরকারের শাসনামলে কোনো রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে এই ষড়যন্ত্রের কথা আমরা শুনতে পাই। সে যা-ই হোক, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দলগুলোর নেতারা কী বলেছেন সেদিকে আমরা একটু আলোকপাত করতে পারি।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই বৈঠকে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, তাঁর দল মনে করে অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণ, কর্মকাণ্ড, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তার অভাব এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এগুলো দূর না হলে এবং সরকারের কর্মকাণ্ডে দৃঢ়তা স্পষ্ট না হলে এই শঙ্কা কাটবে না। তিনি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। এসব কথার একটাই অর্থ দাঁড়ায়, তা হলো নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, তার কারণ সরকারের দুর্বলতা।
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা দেখছি না। দেশে সন্ত্রাসই যেখানে বন্ধ করতে পারে না, সেখানে ৩০০ আসনে নির্বাচনে জাল ভোট, ব্যালট বাক্স ছিনতাই কীভাবে বন্ধ করবে। (সরকার সম্পর্কে জনগণের মধ্যে) এই আস্থা আসেনি। তা ছাড়া নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও নেই।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তাতে রাষ্ট্র পুনর্গঠন যথার্থ হয়নি। সে কারণে নানা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে রাজনৈতিক মহলে একটা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে আরেকটি অদৃশ্য সরকার কাজ করছে, যারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুগত নয়। বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান আরও স্পষ্ট কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন যে একটি পক্ষ আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তুলে আনতে চায়। পরে তাদের ওপর ভর করে ক্ষমতা ফিরে পেতে চায়। প্রতিটি দল ভারতীয় ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। সচিবালয়ে আওয়ামী আমলাদের বহাল রেখে সুষ্ঠু ভোট হবে কি না তাও তাঁরা জানতে চেয়েছেন। আর সংবিধান ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে বলেছেন।
ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া সাতটি দলের অন্যতম নাগরিক ঐক্য। এই দলের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ওই ২ সেপ্টেম্বরেই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বলেন, ‘ওই রকম করে আপনার দৃঢ়তা দেখানোর তো কোনো দরকার নেই যে “নির্বাচন হবেই”। আরে আপনি বললেই তো হবে না। আপনি বললেই তো পাথর আটকাতে পারেন না, বালু আটকাতে পারেন না, ধর্ষণ আটকাতে পারেন না। কারণ আপনি যে সরকার চালান, সেই সরকার “সরকার” শব্দটাকেই মূলত ঠিক করে জানেন না। কারও ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই।’
এসব কথাবার্তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐতিহ্যগতভাবে যে ষড়যন্ত্র স্থান করে নিয়েছে, তা ছাড়া আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর শঙ্কার একটি বড় কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা। সরকার যে পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনা এবং সংস্কারপ্রক্রিয়া চালিয়ে এসেছে, তাতে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে অনতিক্রম্য দূরত্ব ও অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। সেই দূরত্ব ও অনৈক্যই হয়ে উঠেছে এখন গলার কাঁটা। একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের স্পষ্ট করেই বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার ছিল সংস্কার। জুলাই অভ্যুত্থান এবং জুলাই ঘোষণার অঙ্গীকারও সংস্কার। কিন্তু সংস্কার শেষ না করেই প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করে দিলেন। এটা তো নির্বাচনী ষড়যন্ত্র। সংস্কারবিহীন নির্বাচন দেশকে আবার সেই আওয়ামী শাসনের অন্ধকারে নিয়ে যাবে।
জামায়াতের আমির বলেছেন, সংস্কারের পাশাপাশি তাঁরা পিআর (সংখ্যানুপতিক নির্বাচন) পদ্ধতিকে যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গণভোট চান। তাঁদের দাবির মাধ্যমে এটা পূরণ হবে। এসব বিষয়ে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আছে এনসিপি এবং ইসলামী আন্দোলন। এ ছাড়া তাঁর বয়ানে ‘আমরা একটা জোট করতেছি, যেখানে বিএনপি থাকবে না। সেখানে বিএনপির বাইরের মেজর রাইট, কিছুটা লেফট, ইসলামিস্ট—সবাই থাকবে। আমরা সেই চেষ্টা করছি ইনশা আল্লাহ।’
এখন রাজনীতির সমীকরণ পৌঁছেছে মাইনাস বিএনপি এই জোট। এর সঙ্গে জাতীয় পার্টিকেও মাইনাস করা। আওয়ামী লীগ তো নির্বাচনে থাকতেই পারবে না। এই সমীকরণে নির্বাচন হয়তো ফেব্রুয়ারিতে হবে। কিন্তু তা কি গণভোট এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ছাড়া হবে কি না বা হতে পারবে কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না। ২ সেপ্টেম্বর সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই শঙ্কার কথা প্রকাশ করেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের বরাতে সংবাদমাধ্যমে তাঁর যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে সে অনুযায়ী, ওই বৈঠকে তিনি বলেছেন, নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেই নির্বাচনে কোনো বিদেশি শক্তি যেন থাবা বসাতে না পারে, সে জন্য তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বাত্মক সমর্থন ও সহায়তা চেয়েছেন। তার মানে, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে কোনো বিদেশি শক্তি থাবা বসাতে পারে এই আশঙ্কা তিনি করছেন।
এর আগের দিন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে তিনি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছাতে দিতে চায় না, তারা যত রকমভাবে পারে বাধা দেবে। বাংলাদেশের নতুন সত্তাকে গড়ে তুলতে তারা বাধা দেবে। তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে নির্বাচন বানচাল করার। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে, যাতে নির্বাচন না হয়। এগুলোর কিছু লক্ষণ এখন দেখা যাচ্ছে। সামনে আরও আসবে। এ জন্য আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের চেষ্টা হবে নির্বাচন করার।’
সাত দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কার বিষয়টি স্পষ্ট। এটাও স্পষ্ট যে এই আশঙ্কার কারণ দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। অবশ্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে এই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের একটা অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ক বিরাজমান। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই যেকোনো সরকারের শাসনামলে কোনো রাজনৈতিক সংকট দেখা দিলে এই ষড়যন্ত্রের কথা আমরা শুনতে পাই। সে যা-ই হোক, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দলগুলোর নেতারা কী বলেছেন সেদিকে আমরা একটু আলোকপাত করতে পারি।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ওই বৈঠকে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, তাঁর দল মনে করে অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণ, কর্মকাণ্ড, সিদ্ধান্ত গ্রহণে দৃঢ়তার অভাব এবং সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এগুলো দূর না হলে এবং সরকারের কর্মকাণ্ডে দৃঢ়তা স্পষ্ট না হলে এই শঙ্কা কাটবে না। তিনি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। এসব কথার একটাই অর্থ দাঁড়ায়, তা হলো নির্বাচন নিয়ে যে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে, তার কারণ সরকারের দুর্বলতা।
ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। দৃশ্যমান অগ্রগতি আমরা দেখছি না। দেশে সন্ত্রাসই যেখানে বন্ধ করতে পারে না, সেখানে ৩০০ আসনে নির্বাচনে জাল ভোট, ব্যালট বাক্স ছিনতাই কীভাবে বন্ধ করবে। (সরকার সম্পর্কে জনগণের মধ্যে) এই আস্থা আসেনি। তা ছাড়া নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও নেই।’
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, তাতে রাষ্ট্র পুনর্গঠন যথার্থ হয়নি। সে কারণে নানা সংকট তৈরি হচ্ছে। এতে রাজনৈতিক মহলে একটা অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে আরেকটি অদৃশ্য সরকার কাজ করছে, যারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি অনুগত নয়। বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান আরও স্পষ্ট কথা বলেছেন। তিনি বলেন, তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন যে একটি পক্ষ আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে তুলে আনতে চায়। পরে তাদের ওপর ভর করে ক্ষমতা ফিরে পেতে চায়। প্রতিটি দল ভারতীয় ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। সচিবালয়ে আওয়ামী আমলাদের বহাল রেখে সুষ্ঠু ভোট হবে কি না তাও তাঁরা জানতে চেয়েছেন। আর সংবিধান ও গণভোটের বিষয়ে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করতে বলেছেন।
ওই বৈঠকে অংশ নেওয়া সাতটি দলের অন্যতম নাগরিক ঐক্য। এই দলের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ওই ২ সেপ্টেম্বরেই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে বলেন, ‘ওই রকম করে আপনার দৃঢ়তা দেখানোর তো কোনো দরকার নেই যে “নির্বাচন হবেই”। আরে আপনি বললেই তো হবে না। আপনি বললেই তো পাথর আটকাতে পারেন না, বালু আটকাতে পারেন না, ধর্ষণ আটকাতে পারেন না। কারণ আপনি যে সরকার চালান, সেই সরকার “সরকার” শব্দটাকেই মূলত ঠিক করে জানেন না। কারও ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ নেই।’
এসব কথাবার্তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঐতিহ্যগতভাবে যে ষড়যন্ত্র স্থান করে নিয়েছে, তা ছাড়া আগামী নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর শঙ্কার একটি বড় কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা। সরকার যে পদ্ধতিতে দেশ পরিচালনা এবং সংস্কারপ্রক্রিয়া চালিয়ে এসেছে, তাতে জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে অনতিক্রম্য দূরত্ব ও অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। সেই দূরত্ব ও অনৈক্যই হয়ে উঠেছে এখন গলার কাঁটা। একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের স্পষ্ট করেই বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকার ছিল সংস্কার। জুলাই অভ্যুত্থান এবং জুলাই ঘোষণার অঙ্গীকারও সংস্কার। কিন্তু সংস্কার শেষ না করেই প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করে দিলেন। এটা তো নির্বাচনী ষড়যন্ত্র। সংস্কারবিহীন নির্বাচন দেশকে আবার সেই আওয়ামী শাসনের অন্ধকারে নিয়ে যাবে।
জামায়াতের আমির বলেছেন, সংস্কারের পাশাপাশি তাঁরা পিআর (সংখ্যানুপতিক নির্বাচন) পদ্ধতিকে যুক্ত করে সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গণভোট চান। তাঁদের দাবির মাধ্যমে এটা পূরণ হবে। এসব বিষয়ে জামায়াতের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আছে এনসিপি এবং ইসলামী আন্দোলন। এ ছাড়া তাঁর বয়ানে ‘আমরা একটা জোট করতেছি, যেখানে বিএনপি থাকবে না। সেখানে বিএনপির বাইরের মেজর রাইট, কিছুটা লেফট, ইসলামিস্ট—সবাই থাকবে। আমরা সেই চেষ্টা করছি ইনশা আল্লাহ।’
এখন রাজনীতির সমীকরণ পৌঁছেছে মাইনাস বিএনপি এই জোট। এর সঙ্গে জাতীয় পার্টিকেও মাইনাস করা। আওয়ামী লীগ তো নির্বাচনে থাকতেই পারবে না। এই সমীকরণে নির্বাচন হয়তো ফেব্রুয়ারিতে হবে। কিন্তু তা কি গণভোট এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান ছাড়া হবে কি না বা হতে পারবে কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।
আজ থেকে খুব বেশি দিন না, এই ধরেন, বারো-সাড়ে বারো শ বছর আগের কথা। হীরকরাজ্যে তখনো জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিদ্যা-শিক্ষার চর্চা হতো। রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ৩০০ বছর ধরে শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার), শ্যামদেশ (থাইল্যান্ড), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ
৬ ঘণ্টা আগে৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জীবনের প্রস্থান হয়েছে। তাঁর এই প্রস্থানের মধ্য দিয়ে তিন পুরুষের রাজনৈতিক ধারারও সমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর দাদা আবুল কাসেম ছিলেন তৎকালীন জাতীয় কংগ্রেসের পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ডের সদস্য। বাবা আবুল হাশিম ছিলেন মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার নেতা।
৬ ঘণ্টা আগেশিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শুধু পড়াশোনার জায়গা নয়, এটি শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশেরও জায়গা। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড একটি শিশুর পূর্ণাঙ্গ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধানের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে এই মৌলিক অধিকার বিঘ্নিত হয়, তখন তা
৬ ঘণ্টা আগেডাকসু নির্বাচন ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আজ সরগরম। একাধিক প্যানেল, অসংখ্য পোস্টার, ব্যানার ও স্লোগানে মুখরিত ক্যাম্পাস। দীর্ঘদিন অবহেলিত এই কেন্দ্রীয় সংসদকে শিক্ষার্থীরা আবার আলোচনায় টেনে এনেছেন, আবারও সামনে এসেছে জাতীয় রাজনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব। আসলে ডাকসুর নাম এলেই চোখে ভেসে ওঠে এর গৌরবোজ্জ্বল..
১ দিন আগে