স্বপ্না রেজা
সময়গুলো গোছানো না। চিন্তার দরজা-জানালা, তাও বন্ধ। বাইরে অনিশ্চয়তার দমকা হাওয়া। কী করব, কী বলব কিংবা কী করা দরকার, বলা দরকার ওসব এখন আর চলে না, অচল মুদ্রা। যাকে একদিন সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেছি, সে-ই এখন বড় বিশ্বাসঘাতক। যিনি সত্য কথা বলার মস্ত দাবিদার ছিলেন, সে-ই এখন দেখি প্রচণ্ড মিথ্যাবাদী। সমাজ সংসারের মাটি খুঁড়লে কেবল বিষাক্ত বস্তু বেরিয়ে আসে, যা মানুষের সাধারণ চিন্তার বাইরে। মানুষের সৌন্দর্য বিনাশ করার এক অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শৈশবে বুঝতাম, চোর মানেই গ্রিল কেটে ঘরের সবকিছু নিয়ে চলে যায় এমন একজন ব্যক্তি। ধরা খেলে উত্তমমধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো। কখনোবা ন্যাড়া করে দেওয়া, নাকে খত দিয়ে প্রতিজ্ঞা করানো, জীবনে সে যেন আর চুরি না করে। তখন চুরির ধরন ছিল গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া। ডাকাতিটাও হতো সেই রকম সংঘবদ্ধভাবে। কিন্তু গলা কেটে, পেটে ছুরি মেরে, গলা টিপে, ধর্ষণ করে চুরি-ডাকাতি হতে দেখিনি, মানে দেখা যেত না। দিন দিন মানুষের ভেতর ভয়ংকর রকম লোভ-লালসা বেড়েছে। আর এই লোভ-লালসা মেটাতে গিয়ে তারা দুর্ধর্ষ, হিংস্র হয়ে উঠছে। একজন অতিসাধারণ শ্রমজীবী ব্যক্তি বলছিলেন, চুরি আর গ্রিল কেটে হয় না। জমির ফসল কেটে হয় না। এখন চুরি হয় ব্যাংক, মানুষ যে খাবার খায় সেই খাবার, নীতি-আদর্শ চুরি হয়, চিকিৎসাসেবায় চুরি হয়। নদীর বালু, পাথর চুরি হয়। মাটি, গাছ চুরি হয়। এমনকি দেশ চুরি করবার পাঁয়তারাও নাকি চলে! সেটা কেমন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমরাই তো এর ভালোমন্দ বুঝি। অন্য দেশকে বুঝতে দেবার কারণ কী? মস্ত ষড়যন্ত্র থাকে এর মধ্যে। দেশ একাত্তরে স্বাধীন হইছে ঠিকই, কিন্তু দেশটাকে জনগণের ভাবতে পারল না কেউই। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকার জন্য, বসার জন্য কত কী-ই না করল, এখনো করে। দেশটাকে নিজের দলের ভাবে।’
ছেঁচড়া চোরের অস্তিত্ব কিন্তু অনেক দিন ধরে আর দেখা যায় না। চোর ও চুরির ধরন বদলেছে। শিক্ষিত, আধুনিক চোর-ডাকাতে ভরপুর বাংলাদেশ। এরা স্যুট-টাই পরে, দামি গাড়িতে চড়ে, পাঁচ তারকা হোটেলে আহার করে। অবসর উপভোগ করে বিদেশ ভ্রমণে। মজার বিষয়, রাষ্ট্রের অনেক প্রতিষ্ঠান এদের কুর্নিশ করে চলে। বন্ধুত্ব করে। শোনা কথা, এদের চাঁদায় রাজনৈতিক সংগঠনগুলো বেঁচে থাকে। সম্ভবত সেই কারণে একদিন এরাও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে ভুল করে না। তারপর রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। প্রকৃত রাজনীতিবিদদের স্বপ্নটাও এভাবে চুরি হয়ে যায়।
লক্ষণীয় যে নৈতিক মূল্যবোধ শব্দটা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। অব্যবহৃত হওয়ার কারণে হয়তোবা বিলুপ্ত হতে বসেছে। নগদে স্বার্থ উদ্ধারে কমবেশি সবাই ব্যতিব্যস্ত। ওখানে নৈতিকতার জায়গা হয় না। যদি কেউ টের পায় যে একজন মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে, ব্যস শুরু হয়ে গেল তার অসহায়ত্বকে পুঁজি করে নিজেকে লাভবান করার উন্মাদনা, চক্রান্ত। সমাজে যে মানবতার প্রচলন তাতে আছে কৃত্রিমতার প্রলেপ এবং ভয়ংকর স্বার্থপরতার আস্তরণ। যেমন, দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে বা ভাগ্য পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন বা করে আসছেন, একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে যে কাজ করনেওয়ালাদের যে গতিতে ভাগ্য ও অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, দরিদ্র মানুষের সেই গতিতে ভাগ্য ও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দরিদ্র মানুষ টাকা চিনতে পেরেছে, নাড়াচাড়া করতে শিখেছে ঠিকই, খেয়েপরে চলতে পারছে হয়তোবা, কিন্তু লক্ষণীয়ভাবে তাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। কারণ সমাজ তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে একটা শ্রেণির মানুষকে নগদে লাভবান হতে সব সময় উৎসাহিত করেছে, করে আসছে।
বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য নিয়ে এখন অন্য রকম খেলা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এমনিতেই সংস্কৃতিমনা। প্রকৃতির মাঝে দরাজ গলায় গান গেয়ে ওঠা, প্রকৃতির সৌন্দর্যকে সুর আর ছন্দে কণ্ঠে ধারণ করা, জীবনের নানান স্বপ্ন, হতাশাকে মুদ্রা ও অভিব্যক্তিতে প্রকাশে নেচে ওঠা সে তো বাংলা ও বাঙালির মধুর ঐতিহ্য। গ্রামগঞ্জে পালা, যাত্রা, পুতুলনাচ, পিঠা উৎসব আরও কত কী নিয়ে মানুষের কাছে মানুষ পৌঁছে যায়। সব আয়োজনের মাঝে ব্যবচ্ছেদ টানার আভাস পাওয়া যায়। সম্প্রতি ধর্মীয় সংগঠনের কে যেন বলল, মেয়েরা কেবল মেয়েদের সামনে নাচতে পারবে। মেয়েরা মেয়েদের নাচ দেখবে, পুরুষ দেখবে না। যখন গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের নারীরা পুরুষদের পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, মেয়েরা খেলাধুলায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছিনিয়ে এনে বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে দিচ্ছে, মেধা ও শিক্ষায় যখন অনেক নারী অনেক পুরুষের চেয়ে এগিয়ে, সেই ক্ষেত্রে মেয়েরা কেবল মেয়েদের সামনে নাচতে পারবে, এমন ফতোয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? কোনো এক ইনসাফ শিরোনামের অনুষ্ঠানে নারীর অধিকার বিষয়ে বলা হলো, সমাজে নারীর অধিকার হলো দুটি—এক. স্বামীর সেবা; দুই. সন্তান লালনপালন। যাঁরা এসব কথা বলছেন তাঁরা দেশ পরিচালনায় আসবার কথা নিশ্চয়ই ভাবতে শুরু করেছেন। প্রশ্ন, তাঁরা কি দেশের সার্বিক উন্নয়নে নারীর অবদান ও অবস্থান জানেন? নিশ্চয়ই জানেন না। আরেকটা প্রশ্ন, পুরুষের নাচইবা কারা দেখবে? পুরুষ দেখবে? বুঝি না, এ ধরনের চিন্তাভাবনার কথা কী করে প্রকাশ পায় একটা আধুনিক সভ্য সমাজে। যখন ফতোয়া মার্কা কথা বলা হয়, তখনই আমাদের নারীরা কোনো না কোনো আন্তর্জাতিক সম্মান নিয়ে আসে। ওটা তখন হয় সমুচিত একটা জবাব।
ঘুষ, দুর্নীতি বহুদিনের এক সামাজিক ব্যাধি। ভেবেছিলাম, চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এসব অরাজকতার পরিসমাপ্তি হবে, ‘সংস্কার’ হবে অনিয়মের। শোনা যায়, যাঁরা অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ নির্লোভ থাকতে পারেননি। ঘুষ, দুর্নীতি আর তদবির লাগামহীন হয়েছে। একজন বলছিল, ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। সমন্বয়কদের কাছ থেকে নাকি তদবিরের তালিকা যায় মন্ত্রণালয়ে। বৈষম্যবিরোধীরা ক্ষমতায় আসীন হতে রাজনৈতিক দলও গঠন করেছেন। একজন ছাত্র বলছিলেন, আগে দেশ গড়ব, তারপর পড়াশোনা শুরু করব।
তাঁকে প্রশ্ন করার সুযোগ হলো না, শিক্ষা অর্জন না করে কীভাবে দেশ গড়বে।
ইদানীং শুনলাম, একজন সমন্বয়ক বলছেন, উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট হবে না। বেশ কানে লাগল কথাটা। শুরু হয়ে গেছে তবে? ভালো লক্ষণ নয়। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের তামাশা কিন্তু গোটা জাতি মেনে নেবে না। যদি না সেই তামাশায় জনগণ ও দেশের কোনো ক্ষতি হয়। কী একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে সবার চিন্তাভাবনায়। কী হবে আদতে?
সত্যি বলছি, মানুষ খুঁজে পাই না—যে আশ্বস্ত করবে, অভয় দেবে, পথ দেখাবে।
সময়গুলো গোছানো না। চিন্তার দরজা-জানালা, তাও বন্ধ। বাইরে অনিশ্চয়তার দমকা হাওয়া। কী করব, কী বলব কিংবা কী করা দরকার, বলা দরকার ওসব এখন আর চলে না, অচল মুদ্রা। যাকে একদিন সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করেছি, সে-ই এখন বড় বিশ্বাসঘাতক। যিনি সত্য কথা বলার মস্ত দাবিদার ছিলেন, সে-ই এখন দেখি প্রচণ্ড মিথ্যাবাদী। সমাজ সংসারের মাটি খুঁড়লে কেবল বিষাক্ত বস্তু বেরিয়ে আসে, যা মানুষের সাধারণ চিন্তার বাইরে। মানুষের সৌন্দর্য বিনাশ করার এক অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
শৈশবে বুঝতাম, চোর মানেই গ্রিল কেটে ঘরের সবকিছু নিয়ে চলে যায় এমন একজন ব্যক্তি। ধরা খেলে উত্তমমধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হতো। কখনোবা ন্যাড়া করে দেওয়া, নাকে খত দিয়ে প্রতিজ্ঞা করানো, জীবনে সে যেন আর চুরি না করে। তখন চুরির ধরন ছিল গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া। ডাকাতিটাও হতো সেই রকম সংঘবদ্ধভাবে। কিন্তু গলা কেটে, পেটে ছুরি মেরে, গলা টিপে, ধর্ষণ করে চুরি-ডাকাতি হতে দেখিনি, মানে দেখা যেত না। দিন দিন মানুষের ভেতর ভয়ংকর রকম লোভ-লালসা বেড়েছে। আর এই লোভ-লালসা মেটাতে গিয়ে তারা দুর্ধর্ষ, হিংস্র হয়ে উঠছে। একজন অতিসাধারণ শ্রমজীবী ব্যক্তি বলছিলেন, চুরি আর গ্রিল কেটে হয় না। জমির ফসল কেটে হয় না। এখন চুরি হয় ব্যাংক, মানুষ যে খাবার খায় সেই খাবার, নীতি-আদর্শ চুরি হয়, চিকিৎসাসেবায় চুরি হয়। নদীর বালু, পাথর চুরি হয়। মাটি, গাছ চুরি হয়। এমনকি দেশ চুরি করবার পাঁয়তারাও নাকি চলে! সেটা কেমন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ, আমরাই তো এর ভালোমন্দ বুঝি। অন্য দেশকে বুঝতে দেবার কারণ কী? মস্ত ষড়যন্ত্র থাকে এর মধ্যে। দেশ একাত্তরে স্বাধীন হইছে ঠিকই, কিন্তু দেশটাকে জনগণের ভাবতে পারল না কেউই। রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় থাকার জন্য, বসার জন্য কত কী-ই না করল, এখনো করে। দেশটাকে নিজের দলের ভাবে।’
ছেঁচড়া চোরের অস্তিত্ব কিন্তু অনেক দিন ধরে আর দেখা যায় না। চোর ও চুরির ধরন বদলেছে। শিক্ষিত, আধুনিক চোর-ডাকাতে ভরপুর বাংলাদেশ। এরা স্যুট-টাই পরে, দামি গাড়িতে চড়ে, পাঁচ তারকা হোটেলে আহার করে। অবসর উপভোগ করে বিদেশ ভ্রমণে। মজার বিষয়, রাষ্ট্রের অনেক প্রতিষ্ঠান এদের কুর্নিশ করে চলে। বন্ধুত্ব করে। শোনা কথা, এদের চাঁদায় রাজনৈতিক সংগঠনগুলো বেঁচে থাকে। সম্ভবত সেই কারণে একদিন এরাও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে ভুল করে না। তারপর রাষ্ট্র পরিচালনার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। প্রকৃত রাজনীতিবিদদের স্বপ্নটাও এভাবে চুরি হয়ে যায়।
লক্ষণীয় যে নৈতিক মূল্যবোধ শব্দটা আর খুঁজে পাওয়া যায় না। অব্যবহৃত হওয়ার কারণে হয়তোবা বিলুপ্ত হতে বসেছে। নগদে স্বার্থ উদ্ধারে কমবেশি সবাই ব্যতিব্যস্ত। ওখানে নৈতিকতার জায়গা হয় না। যদি কেউ টের পায় যে একজন মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে, ব্যস শুরু হয়ে গেল তার অসহায়ত্বকে পুঁজি করে নিজেকে লাভবান করার উন্মাদনা, চক্রান্ত। সমাজে যে মানবতার প্রচলন তাতে আছে কৃত্রিমতার প্রলেপ এবং ভয়ংকর স্বার্থপরতার আস্তরণ। যেমন, দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে বা ভাগ্য পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন বা করে আসছেন, একটু খেয়াল করলে দেখা যাবে যে কাজ করনেওয়ালাদের যে গতিতে ভাগ্য ও অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, দরিদ্র মানুষের সেই গতিতে ভাগ্য ও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দরিদ্র মানুষ টাকা চিনতে পেরেছে, নাড়াচাড়া করতে শিখেছে ঠিকই, খেয়েপরে চলতে পারছে হয়তোবা, কিন্তু লক্ষণীয়ভাবে তাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। কারণ সমাজ তাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে একটা শ্রেণির মানুষকে নগদে লাভবান হতে সব সময় উৎসাহিত করেছে, করে আসছে।
বাংলাদেশের শিল্প, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য নিয়ে এখন অন্য রকম খেলা শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এমনিতেই সংস্কৃতিমনা। প্রকৃতির মাঝে দরাজ গলায় গান গেয়ে ওঠা, প্রকৃতির সৌন্দর্যকে সুর আর ছন্দে কণ্ঠে ধারণ করা, জীবনের নানান স্বপ্ন, হতাশাকে মুদ্রা ও অভিব্যক্তিতে প্রকাশে নেচে ওঠা সে তো বাংলা ও বাঙালির মধুর ঐতিহ্য। গ্রামগঞ্জে পালা, যাত্রা, পুতুলনাচ, পিঠা উৎসব আরও কত কী নিয়ে মানুষের কাছে মানুষ পৌঁছে যায়। সব আয়োজনের মাঝে ব্যবচ্ছেদ টানার আভাস পাওয়া যায়। সম্প্রতি ধর্মীয় সংগঠনের কে যেন বলল, মেয়েরা কেবল মেয়েদের সামনে নাচতে পারবে। মেয়েরা মেয়েদের নাচ দেখবে, পুরুষ দেখবে না। যখন গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের নারীরা পুরুষদের পাশাপাশি দেশের সার্বিক উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে, মেয়েরা খেলাধুলায় আন্তর্জাতিক পুরস্কার ছিনিয়ে এনে বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে দিচ্ছে, মেধা ও শিক্ষায় যখন অনেক নারী অনেক পুরুষের চেয়ে এগিয়ে, সেই ক্ষেত্রে মেয়েরা কেবল মেয়েদের সামনে নাচতে পারবে, এমন ফতোয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? কোনো এক ইনসাফ শিরোনামের অনুষ্ঠানে নারীর অধিকার বিষয়ে বলা হলো, সমাজে নারীর অধিকার হলো দুটি—এক. স্বামীর সেবা; দুই. সন্তান লালনপালন। যাঁরা এসব কথা বলছেন তাঁরা দেশ পরিচালনায় আসবার কথা নিশ্চয়ই ভাবতে শুরু করেছেন। প্রশ্ন, তাঁরা কি দেশের সার্বিক উন্নয়নে নারীর অবদান ও অবস্থান জানেন? নিশ্চয়ই জানেন না। আরেকটা প্রশ্ন, পুরুষের নাচইবা কারা দেখবে? পুরুষ দেখবে? বুঝি না, এ ধরনের চিন্তাভাবনার কথা কী করে প্রকাশ পায় একটা আধুনিক সভ্য সমাজে। যখন ফতোয়া মার্কা কথা বলা হয়, তখনই আমাদের নারীরা কোনো না কোনো আন্তর্জাতিক সম্মান নিয়ে আসে। ওটা তখন হয় সমুচিত একটা জবাব।
ঘুষ, দুর্নীতি বহুদিনের এক সামাজিক ব্যাধি। ভেবেছিলাম, চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এসব অরাজকতার পরিসমাপ্তি হবে, ‘সংস্কার’ হবে অনিয়মের। শোনা যায়, যাঁরা অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ নির্লোভ থাকতে পারেননি। ঘুষ, দুর্নীতি আর তদবির লাগামহীন হয়েছে। একজন বলছিল, ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। সমন্বয়কদের কাছ থেকে নাকি তদবিরের তালিকা যায় মন্ত্রণালয়ে। বৈষম্যবিরোধীরা ক্ষমতায় আসীন হতে রাজনৈতিক দলও গঠন করেছেন। একজন ছাত্র বলছিলেন, আগে দেশ গড়ব, তারপর পড়াশোনা শুরু করব।
তাঁকে প্রশ্ন করার সুযোগ হলো না, শিক্ষা অর্জন না করে কীভাবে দেশ গড়বে।
ইদানীং শুনলাম, একজন সমন্বয়ক বলছেন, উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট হবে না। বেশ কানে লাগল কথাটা। শুরু হয়ে গেছে তবে? ভালো লক্ষণ নয়। মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের তামাশা কিন্তু গোটা জাতি মেনে নেবে না। যদি না সেই তামাশায় জনগণ ও দেশের কোনো ক্ষতি হয়। কী একটা অবস্থা দাঁড়িয়েছে সবার চিন্তাভাবনায়। কী হবে আদতে?
সত্যি বলছি, মানুষ খুঁজে পাই না—যে আশ্বস্ত করবে, অভয় দেবে, পথ দেখাবে।
ফিওদর দস্তয়েফ্স্কি জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন জেন-জি আর নতুন ডানপন্থীদের মধ্যে—এ কথা বলা হলে অনেকেই ভ্রু কুঁচকে তাকাবেন আপনার দিকে। কিন্তু একটু ব্যাখ্যা করলেই তাঁরা বুঝে যাবেন, কিছুই বাড়িয়ে বলছেন না আপনি।
৮ ঘণ্টা আগেশিল্পী এস এম সুলতান জীবনের মূল সুর-ছন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন বাংলার গ্রামীণ জীবন, কৃষক এবং কৃষিকাজের মধ্যে। ইউরোপ-আমেরিকা ঘুরে এসে খ্যাতির আকাঙ্ক্ষা ছেড়ে জন্মস্থান চিত্রার পাড়ে নড়াইলের মাছিমদিয়া গ্রামেই থিতু হয়ে আজীবন শিল্পসাধনা করে গেছেন। গ্রামের শিশুদের জন্য গড়ে তুলেছিলেন শিল্পশিক্ষার স্কুল। গ্রামের
৮ ঘণ্টা আগেএনসিপি দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ রেখেছেন এবং তাঁরা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথাও ভাবছেন। সে দলেরই আরেক নেতা সারজিস আলম বলেছেন, পৃথিবীতে সেফ এক্সিট নেওয়ার একটাই জায়গা, সেটা হচ্ছে
৮ ঘণ্টা আগেতিন বছর আগে শ্রীলঙ্কায় ঘটে যাওয়া ব্যাপক বিক্ষোভ, সরকার পতনের ঘটনা এখনো সবার মনে আছে। কেন সে বিক্ষোভ হয়েছিল, সেটাও অজানা নয় কারও। ২০২২ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দেশ ছেড়ে পলায়ন, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে তাঁর বিছানায় শুয়ে বিক্ষোভকারীদের ছবি তোলা...
১ দিন আগে