সাজিদ মোহন
কখনো একেবারে অন্যদিকে যায় মন। ভরদুপুর। সকালের হাট ভেঙে সবকিছু স্তব্ধ। দোকানিরাও একটি-দুটি ঝাঁপ ফেলে দিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন দোকান গোটানোর। স্তব্ধ হাটে হঠাৎ প্রাণ ফিরিয়ে আনলেন দুজন আগন্তুক। দুলাল আর সোহাগ। প্রথমজনের বয়স পঞ্চাশ, পরের জনের ত্রিশ। হাতে দুটি লাল বালতি ভরা মধু। সোহাগের দুই হাতে সবেমাত্র আগুন নেভানো শুকনো খড়। খড় থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে অল্প অল্প। তাঁরা যে ধোঁয়া দিয়ে একটু আগে মৌচাক থেকে মৌমাছি তাড়িয়ে মধু সংগ্রহ করে এনেছেন, সে ধোঁয়াই এখন ফাঁকা হাটের বিভিন্ন ‘খোপের’ ভেতর থেকে মানুষকে বের করে নিয়ে এনেছে মধুর কাছাকাছি। বরই ফুলের মধু। ৩ অক্টোবর, রোববার সকালে সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের দুটি বাড়ি থেকে দুটি মৌচাক ভেঙে স্থানীয় মুন্সিরহাটে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন তাঁরা।
দুলাল ও তাঁর শিষ্য সোহাগের বাড়ি সুদূর ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সাগর পাড়ি দিয়ে বছরে দুবার সন্দ্বীপে আসেন তাঁরা। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পাওয়া যায় বিষকাঠালি ফুলের মধু। কার্তিক- অগ্রহায়ণ মাসে পাওয়া যায় বরই ও বিভিন্ন কাঠ গাছের ফুলের মধু। স্থানীয় বাজারগুলোতে এ সময় ঘর ভাড়া করে থাকেন গুরু-শিষ্য। ২৬ বছর ধরে এ পেশায় আছেন দুলাল। সোহাগ যোগ দিয়েছেন বেশি দিন হয়নি।
আয়-রোজগার কেমন হয়—জানতে চাইলে দুলাল বলেন, ‘বরই ফুলের মধু এক কেজি আট শ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করি। গাছভেদে একটি গাছ থেকে ৪-৮ কেজি মধু পাওয়া যায়। যার গাছে মৌমাছি বাসা বানায়, সে পায় দুই ভাগের এক ভাগ মধু। বাকি দুই ভাগ আমাদের। এক মৌসুমে প্রায় ২-৩ লাখ টাকার মতো মধু বিক্রি হয়।’
জটলার ভেতর সাধ্যমতো মধু কিনে নিচ্ছিলেন অনেকেই। তাঁদেরই একজন স্থানীয় স্কুলশিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, বাজারে অনেক ধরনের মধু কিনতে পাওয়া যায়। ওসব মধু খাঁটি না ভেজাল, সেটা যাচাই করার কোনো সুযোগ থাকে না। এখানে নিজের চোখের সামনে গাছ থেকে পেড়ে আনা খাঁটি মধু কিনতে পারাটা সৌভাগ্যের ব্যাপার।
মধু বিক্রির ফাঁকে ফাঁকে খড়ের নিভে যাওয়া আগুনে ফুঁ দিয়ে ধোঁয়া দিচ্ছেন সোহাগ। ধোঁয়া এসে চোখে লাগছে, চোখ জ্বলছে। উড়ে উড়ে ছাই পড়ছে মধুর বালতিতে। ধোঁয়া ওড়ানোর কারণ জানতে চাইলে মৃদু হেসে চুপি চুপি সোহাগ জানান, ধোঁয়া দিই, যেন সবাই বিশ্বাস করে এই ধোঁয়া দিয়েই গাছ থেকে মধু নামিয়ে এনেছেন তাঁরা। তখন বেচা-বিক্রি ভালো হয়।
জীবিকা মধুনির্ভর হলেও জীবনটা মধুর নয় দুলালদের। ঘর-সংসার ফেলে মৌচাকের খোঁজে ছুটতে হয় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। উঁচু গাছের ডাল থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কখনো কখনো ঘটে দুর্ঘটনা। আর মৌমাছির বিষাক্ত হুল তো নিত্যদিনের সঙ্গী। শত প্রতিকূলতার পরেও জীবনকে মধুর করতে মধুর পেছনে ছুটে বেড়ান তাঁরা।
লেখক: শিশুসাহিত্যিক
কখনো একেবারে অন্যদিকে যায় মন। ভরদুপুর। সকালের হাট ভেঙে সবকিছু স্তব্ধ। দোকানিরাও একটি-দুটি ঝাঁপ ফেলে দিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন দোকান গোটানোর। স্তব্ধ হাটে হঠাৎ প্রাণ ফিরিয়ে আনলেন দুজন আগন্তুক। দুলাল আর সোহাগ। প্রথমজনের বয়স পঞ্চাশ, পরের জনের ত্রিশ। হাতে দুটি লাল বালতি ভরা মধু। সোহাগের দুই হাতে সবেমাত্র আগুন নেভানো শুকনো খড়। খড় থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে অল্প অল্প। তাঁরা যে ধোঁয়া দিয়ে একটু আগে মৌচাক থেকে মৌমাছি তাড়িয়ে মধু সংগ্রহ করে এনেছেন, সে ধোঁয়াই এখন ফাঁকা হাটের বিভিন্ন ‘খোপের’ ভেতর থেকে মানুষকে বের করে নিয়ে এনেছে মধুর কাছাকাছি। বরই ফুলের মধু। ৩ অক্টোবর, রোববার সকালে সন্দ্বীপ উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের দুটি বাড়ি থেকে দুটি মৌচাক ভেঙে স্থানীয় মুন্সিরহাটে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন তাঁরা।
দুলাল ও তাঁর শিষ্য সোহাগের বাড়ি সুদূর ব্রাহ্মণবাড়িয়া। সাগর পাড়ি দিয়ে বছরে দুবার সন্দ্বীপে আসেন তাঁরা। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পাওয়া যায় বিষকাঠালি ফুলের মধু। কার্তিক- অগ্রহায়ণ মাসে পাওয়া যায় বরই ও বিভিন্ন কাঠ গাছের ফুলের মধু। স্থানীয় বাজারগুলোতে এ সময় ঘর ভাড়া করে থাকেন গুরু-শিষ্য। ২৬ বছর ধরে এ পেশায় আছেন দুলাল। সোহাগ যোগ দিয়েছেন বেশি দিন হয়নি।
আয়-রোজগার কেমন হয়—জানতে চাইলে দুলাল বলেন, ‘বরই ফুলের মধু এক কেজি আট শ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি করি। গাছভেদে একটি গাছ থেকে ৪-৮ কেজি মধু পাওয়া যায়। যার গাছে মৌমাছি বাসা বানায়, সে পায় দুই ভাগের এক ভাগ মধু। বাকি দুই ভাগ আমাদের। এক মৌসুমে প্রায় ২-৩ লাখ টাকার মতো মধু বিক্রি হয়।’
জটলার ভেতর সাধ্যমতো মধু কিনে নিচ্ছিলেন অনেকেই। তাঁদেরই একজন স্থানীয় স্কুলশিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, বাজারে অনেক ধরনের মধু কিনতে পাওয়া যায়। ওসব মধু খাঁটি না ভেজাল, সেটা যাচাই করার কোনো সুযোগ থাকে না। এখানে নিজের চোখের সামনে গাছ থেকে পেড়ে আনা খাঁটি মধু কিনতে পারাটা সৌভাগ্যের ব্যাপার।
মধু বিক্রির ফাঁকে ফাঁকে খড়ের নিভে যাওয়া আগুনে ফুঁ দিয়ে ধোঁয়া দিচ্ছেন সোহাগ। ধোঁয়া এসে চোখে লাগছে, চোখ জ্বলছে। উড়ে উড়ে ছাই পড়ছে মধুর বালতিতে। ধোঁয়া ওড়ানোর কারণ জানতে চাইলে মৃদু হেসে চুপি চুপি সোহাগ জানান, ধোঁয়া দিই, যেন সবাই বিশ্বাস করে এই ধোঁয়া দিয়েই গাছ থেকে মধু নামিয়ে এনেছেন তাঁরা। তখন বেচা-বিক্রি ভালো হয়।
জীবিকা মধুনির্ভর হলেও জীবনটা মধুর নয় দুলালদের। ঘর-সংসার ফেলে মৌচাকের খোঁজে ছুটতে হয় এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়। উঁচু গাছের ডাল থেকে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে কখনো কখনো ঘটে দুর্ঘটনা। আর মৌমাছির বিষাক্ত হুল তো নিত্যদিনের সঙ্গী। শত প্রতিকূলতার পরেও জীবনকে মধুর করতে মধুর পেছনে ছুটে বেড়ান তাঁরা।
লেখক: শিশুসাহিত্যিক
নেপাল ও ভারতের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কেবল ভৌগোলিক নয়, হাজার বছরের সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বন্ধনে আবদ্ধ। উন্মুক্ত সীমান্ত, অভিন্ন হিন্দু ঐতিহ্য এবং ব্যাপক বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও নেপালে ভারতবিরোধী মনোভাব একটি দীর্ঘস্থায়ী এবং জটিল বাস্তবতা।
৭ ঘণ্টা আগেআগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা-সংশয় যা-ই বলি, এত দিন সে বিষয়টির পরিসর সীমিত ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বক্তব্য এবং সাধারণত নির্বাক থাকা দেশের আমজনতার মনোজগতে। কিন্তু এখন যখন সরকারপ্রধান নিজেই সেই শঙ্কার কথা ব্যক্ত করছেন, তখন বিষয়টি যে মোটেই অমূলক নয়, তা স্বীকার করতে কোনো দ্বিধা থাকতে পারে না
২০ ঘণ্টা আগেআজ থেকে খুব বেশি দিন না, এই ধরেন, বারো-সাড়ে বারো শ বছর আগের কথা। হীরকরাজ্যে তখনো জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিদ্যা-শিক্ষার চর্চা হতো। রীতিমতো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। ৩০০ বছর ধরে শুধু উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, বরং চীন, তিব্বত, ব্রহ্মদেশ (মিয়ানমার), শ্যামদেশ (থাইল্যান্ড), মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়াসহ
২০ ঘণ্টা আগে৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমরের জীবনের প্রস্থান হয়েছে। তাঁর এই প্রস্থানের মধ্য দিয়ে তিন পুরুষের রাজনৈতিক ধারারও সমাপ্তি ঘটেছে। তাঁর দাদা আবুল কাসেম ছিলেন তৎকালীন জাতীয় কংগ্রেসের পার্লামেন্টারিয়ান বোর্ডের সদস্য। বাবা আবুল হাশিম ছিলেন মুসলিম লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। আর তিনি ছিলেন কমিউনিস্ট ধারার নেতা।
২০ ঘণ্টা আগে