Ajker Patrika

যশোরে ভোটকেন্দ্রসহ শহরে ১০ ককটেল বিস্ফোরণ, আনসার সদস্য আহত

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১২: ৪৭
যশোরে ভোটকেন্দ্রসহ শহরে ১০ ককটেল বিস্ফোরণ, আনসার সদস্য আহত

যশোর-৩ (সদর) আসনে ভোটারদের আতঙ্কিত করতে ভোটকেন্দ্রসহ একাধিক স্থানে ১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ভোটের আগের দিন শনিবার রাত ১০টা থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত শহর ও শহরতলী বিভিন্ন এলাকার কেন্দ্রগুলোতে এ ঘটনাগুলো ঘটেছে। এসব ঘটনায় কেন্দ্রে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। 

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী টানা দুই বারের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র মোহিত কুমার নাথসহ ১০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর সঙ্গে এই আসনে লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।

স্থানীয়রা জানান, যশোর শহরের শংকরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ককটেল বোমা বিস্ফোরণ করেছে দুবৃর্ত্তরা। আজ রবিবার ভোট শুরু হওয়ার আধা ঘণ্টা আগে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। আহত আনসার সদস্য হলেন মণিরামপুর উপজেলার এড়েন্দা গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে মারুফ হোসেন (২২)।

শংকরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার আব্দুর রহিম বলেন, সকাল থেকে কেন্দ্রটি স্বাভাবিক ছিল। হঠাৎ করে ভোট শুরুর আধা ঘণ্টা আগে ককটেল বোমা বিস্ফোরণ করে দুবৃর্ত্তরা। এতে এক আনসার সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে দুবৃর্ত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু রয়েছে।’

শনিবার সন্ধ্যা রাত ৭টার দিকে যশোর শহরতলীর শংকরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে ককটেল বোমা বিস্ফোরণ করে দুর্বৃত্তরা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই এলাকার সরকারি এনএম খান প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের পেছনে পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। 

এ ছাড়া এদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর শহরের বকচর এল মার্কেটসংলগ্ন এলাকায় যশোর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহিত কুমার নাথের (ঈগল) কার্যালয়ের সামনে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় হাতেনাতে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। এর আগে নওয়াপাড়া ইউনিয়নে কিসমত নওয়াপাড়ার মেহগনিতলা কেন্দ্রে ককটেল নিক্ষেপ করে দুবৃর্ত্তরা। 

নির্ধারিত সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহণ। কনকনে শীত উপেক্ষা করে ভোর থেকেই কেন্দ্রে ভোটাররা উপস্থিত হন। তবে শহরের জিলা স্কুল, আব্দুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ, কালেক্টরেট স্কুলসহ পাঁচটি কেন্দ্রে ঘুরে ভোটার উপস্থিতি কম লক্ষ করা গেছে। এসব এলাকার কয়েকজন ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোট গ্রহণের আগের রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কমেছে। 

 আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে শহরের শংকরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের কোনো লাইন দেখা যায়নি। যাঁরা ভোট দিতে আসছেন, দ্রুত ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন। 

এই কেন্দ্রের ভোটার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো ভোট দেইনি। ভোটের আগের রাতে ও ভোটের দিন সকালে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে এলাকার ভোটাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই আসেনি ভোট দিতে। পরিবেশ ভালো হলে ভোটকেন্দ্রে যাব।’

এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার আব্দুর রহিম বলেন, ‘এই কেন্দ্রে ৪ হাজার ৪৩ জন ভোটার। ভোট গ্রহণের দুই ঘণ্টায় ১৬০টি ভোট পড়েছে।’

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনে ভোটযুদ্ধে  ৩২ জন প্রার্থী লড়ছেন। নৌকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র আট প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। ভোটে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে মূল লড়াইয়ের আভাস মিলছে। জেলায় ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রে ৫ হাজার ২১৭টি ভোটকক্ষে ২৩ লাখ ৩৯ হাজার ৫৫ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার হলেন ১১ লাখ ৭৬ হাজার ১০৫ জন, নারী ১১ লাখ ৬২ হাজার ৯৩৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার হলেন ১৫ জন।

২৭৫ কেন্দ্রে বিশেষ নজরদারি
যশোরে ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে নৌকার বিপক্ষে হেভিওয়েট আওয়ামী লীগের নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এসব আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্নভাবে শাসানো, হুমকি-ধমকি দেওয়া, এমনকি প্রাণনাশের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের পরিবেশে  উত্তাপ ছড়িয়েছে যশোরের পাঁচটি আসনেই। ফলে জেলার ছয়টি আসনের ৮২৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৭৫টিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশ, যা মোট কেন্দ্রের প্রায় ৩৫ শতাংশ। এসব কেন্দ্র বিশেষ নজরদারিতে রাখছে পুলিশ-প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা। সাধারণ ভোটকেন্দ্রের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে।

যশোরের পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়াদ্দার বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হলেও আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। নির্বাচনে নিরাপত্তা দিতে ২৫০০ পুলিশ সদস্য, ১০ হাজার আনসার সদস্য, ৪৫০ বিজিবি সদস্য, সেনাসদস্য, ম্যাজিস্ট্রেটসহ গোয়েন্দা বাহিনীর ১৬ হাজার সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। এ ছাড়া সাদা পোশাকে গোয়েন্দাবাহিনী কাজ করছে। নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো রয়েছে যশোরের সব কেন্দ্র।

যশোর পুলিশের এই শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্র দখল, ভোটকক্ষ দখল, ভোট কাটা, ভোটের পরিবেশ নষ্ট করা—এ ধরনের চিন্তা যদি কেউ করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ যদি নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের ছক করেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা বানানো সেই ইউএনও ওএসডি

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

নিজের চাচা-চাচিকে বাবা-মা সাজিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেনকে ওএসডি করেছে সরকার। আজ বুধবার তাঁকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

কামাল হোসেন তাঁর পিতা-মাতা মো. আবুল কাশেম ও মোছা. হাবীয়া খাতুনের পরিবর্তে নিজের চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আহসান হাবীব ও চাচি মোছা. সানোয়ারা খাতুনকে পিতা-মাতা দেখিয়ে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা নিতে জালিয়াতির অভিযোগে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দুদকের ঢাকা-১-এর সম্মিলিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. মনজুরুল ইসলাম মিন্টু বাদী হয়ে কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

কামাল হোসেনের প্রকৃত মা-বাবা কারা, তা নিশ্চিত হতে গত মঙ্গলবার ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরদিন ইউএনও কামাল হোসেনকে ওএসডি করা হলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জুলাই বিপ্লবীরা নতুন সংবিধান চাইলে সেটাই হতো সংবিধান: অ্যাটর্নি জেনারেল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লবীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে বলত, “আমরা ৭২-এর সংবিধান চাই না, আমরা নতুন সংবিধান রচনা করতে চাই”—তাহলে সেটাই হতো সংবিধান। কিন্তু তাদের মধ্যে বিভেদ থাকলে হবে না। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানিতে আজ বুধবার এসব কথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান এই আইন কর্মকর্তা।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বিভাগে অষ্টম দিনের মতো এ বিষয়ে শুনানি হয়।

এদিন আরও শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আনীক আর হক এবং বিএনপি-সমর্থিত আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘হাকিম নড়ে তো হুকুম নড়ে না। খায়রুল হক সাহেবরা হুকুম নড়ায়ে দিয়েছেন সংক্ষিপ্ত রায় এবং পূর্ণাঙ্গ রায়ের মধ্য দিয়ে; যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড। সংবিধান একটা অরগানিক ডকুমেন্ট। এটা বিভিন্ন রকমভাবে উপস্থাপিত হয়। কোরআন কিংবা বাইবেল—কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। সংবিধান পরিবর্তনযোগ্য। আজকে সংবিধানের অ্যামেন্ডমেন্টে (সংশোধন) যদি বলে দেন, তত্ত্বাবধায়কে ফিরে গেলাম, সেটাই যে অ্যাবসোলিউট (যথাযথ) হবে—তাও না। এটাও জনগণের চাহিদা অনুসারে হবে। জনগণ যদি মনে করে, এটাতে তার ভোটাধিকার নিশ্চিত হচ্ছে না, জনগণ ইচ্ছা করলে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে পারবে।’

মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মনে করি, ওই (তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল) রায় থাকা উচিত না। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রায়টা লেখা হয়েছে একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য। এই রায় দুটি গ্রাউন্ডে বাতিল হবে। সাতজন মিলে ঘোষণা করলেন, আগামী দুটি সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। সেখানে উনারা ডেভিয়েট (বিচ্যুত) করে পূর্ণাঙ্গ যে রায় দিলেন, তা ওপেন ঘোষণা রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ঘোষিত রায় পরিবর্তন করার জন্য রিভিউ করতে হবে। রিভিউ যেকোনো পক্ষ করতে পারে। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়েও করতে পারেন। খায়রুল হক সেই পথে না গিয়ে যে পথে হেঁটেছেন, তা আইনের ব্যত্যয়। রিভিউ না করে উনি রায় পরিবর্তন করেছেন। এটা দণ্ডবিধির ২১৯ ধারা অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। উনি পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে জানতেন, এ ধরনের পরিবর্তন করা আইনে সম্ভব নয়। তারপরও উনি সেটা করেছেন।’

আসাদুজ্জামান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাংলাদেশে আসার পরে যেভাবে দেশের গণতন্ত্র উন্নত হয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপের পরে সেই সুযোগ হয়নি। এই ব্যবস্থা বাতিল করার পর হত্যা, গুম, রাতের বেলায় ভোট দেওয়া, মিথ্যা মামলায় মানুষকে কারাগারে পাঠানো—এ ধরনের রাজনীতি শুরু হয়। ৭০ লাখের মতো মানুষ গায়েবি মামলায় আসামি হয়। সেই কারণে এটা ২১৯ ধারার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিচারকদের পারিতোষিক ও ছুটিসংক্রান্ত আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের পারিতোষিক, ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকারসংক্রান্ত আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে। ১৩ জনের পক্ষে এ রিট করা হয়েছে বলে আজ বুধবার জানিয়েছেন তাঁদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

রিটকারীরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন, আবদুল্লাহ সাদিক, মো. মিজানুল হক, আব্দুল ওয়াদুদ, রহিম উল্লাহ, আমিনুল ইসলাম শাকিল, ঢাকার জেলা জজ আদালতের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ, শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাব্বির রহমান, মাহমুদুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া, রাফিউল সাব্বির, শামিম সাহিদি ও হাবিবুর রহমান আল হাসান।

রিট আবেদনে বলা হয়, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ। সংবিধানের ৯৪(৪) ও ১৪৭(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের আর্থিক স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা সংবিধান প্রদত্ত অধিকার। তবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২১ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন, ২০২৩ অনুযায়ী বিচারকদের বেতন, পেনশন ও বিশেষাধিকার এমনভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা বাস্তবে তাঁদের আর্থিক স্বাধীনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে।

আবেদনে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতি ও বিচারকদের বেতনকাঠামো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের আর্থিক অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় নিম্ন স্তরে রয়েছে। এই অসামঞ্জস্য শুধু আর্থিক নয়, বরং বিচার বিভাগের মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের মানের প্রতি সাংঘর্ষিক।

রিটে আরও বলা হয়, সংবিধানে প্রদত্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতার বিভাজনের নীতিকে উপেক্ষা করে সংসদ তার সাংবিধানিক ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে উক্ত আইন দুটি প্রণয়ন করেছে। এর ফলে বিচারপতিদের জন্য এক অন্যায্য ও বৈষম্যমূলক বেতনকাঠামো সৃষ্টি হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিআরআইয়ের অর্থ আত্মসাৎ: জয়, পুতুলসহ ৮ জনের নামে মামলা করবে দুদক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ছবি: সংগৃহীত
সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। ছবি: সংগৃহীত

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) কর জালিয়াতি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অনৈতিক অর্থ সুবিধা নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির ট্রাস্টি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব আহমেদ ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৮ জনের নামে মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পুতুল সিআরআইয়ের ট্রাস্টি ও ভাইস চেয়ারম্যান।

দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে মামলাটি অনুমোদনের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি জানান, জনকল্যাণের নামে গঠিত এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কমিশন থেকে মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

অন্য যে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, তাঁরা হলেন সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি (শেখ রেহানার ছেলে), নসরুল হামিদ বিপু (সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী), নির্বাহী পরিচালক শাব্বির বিন শামস, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর আপিল) রওশন আরা আক্তার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩-১৪ থেকে ২০২৩-২৪ কর বর্ষ পর্যন্ত সিআরআই ২৩টি কোম্পানির কাছ থেকে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে নেয়। এ ছাড়া একই সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অনুদান হিসেবে ১০০ কোটি ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৪৮৬ টাকা নেয়। বৈধ ব্যয় বাদে হিসাব অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাবে ৭০ কোটি ৮০ লাখ ৪২ হাজার ৩৯০ টাকা স্থিতি থাকার কথা। কিন্তু পাওয়া গেছে ৫৫ কোটি ১১ লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ টাকা। অর্থাৎ ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ৫৯ হাজার ৫২১ টাকা কম; যা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরে নিবন্ধিত না থাকা সত্ত্বেও সিআরআই কর সুবিধা লাভের জন্য চাপ প্রয়োগ, প্রতিষ্ঠানটি সুনির্দিষ্ট এসআরও জারি করিয়ে সরকার থেকে কর মওকুফের সুযোগ নিয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি জনকল্যাণের নামে প্রাপ্ত তহবিলকে নিজের সুবিধার্থে ব্যবহার করেছে এবং বহু কোটি টাকা অবৈধভাবে আয় ও আত্মসাৎ করেছে।

দুদক বলছে, অভিযুক্তরা ২৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪৩৯ কোটি ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৪৮০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন এবং আয়কর পরিশোধ না করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত