Ajker Patrika

যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ মে ২০২৩, ১৮: ৪৭
যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না: প্রধানমন্ত্রী

বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কেনাকাটায় কোনো দেশ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে তাদের কাছ থেকে সরকার কিছু কিনবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার গণভবনে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমাদের অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রীকে বলে দিয়েছি, কেনাকাটার ক্ষেত্রে যারা আমাদের ওপর স্যাংশান দেবে, আমরা তাদের কাছ থেকে কোনো কিছু কিনব না।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ, এইটা-ওইটা শুনতে হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমাদের দেশের কিছু মানুষই বাংলাদেশের বদনাম করে।’

বাংলাদেশের কেনাকাটার ওপর এখনো কোনো দেশের আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার খবর নেই। তবে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ঋণ পরিশোধ নিয়ে সম্প্রতি এক জটিলতা তৈরি হয়েছে।

ডলার সংকটের কারণে সরকার রুবল বা চীনা মুদ্রা ইউয়ানের মাধ্যমে দায় শোধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু দুবারে নেওয়া দুটি উদ্যোগেই বাগড়া দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। 

গত ১২ এপ্রিল রাশিয়ার জ্বালানি খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের কয়েকটি সহযোগী সংস্থাসহ মোট ১২০টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এই নিষেধাজ্ঞার কথা তুলে ধরে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস পরদিনই এক কূটনৈতিক পত্রে (নোট ভারবাল) ‘নিষেধাজ্ঞা এড়াতে’ ‘তৃতীয় দেশের মাধ্যমে’ রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণের টাকা লেনদেনে আপত্তি জানায়।

গত ২৫ এপ্রিল জাপান সফর দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর টানা দেশের সফর শুরু হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে গত ৯ মে তিনি দেশে ফিরে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সফরে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এবং কোভিড-১৯ মহামারিকালেও বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার প্রশংসা করেন জর্জিয়েভা।

শেখ হাসিনা বলেন, সব বাধা-বিপত্তি মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে ‘বাংলাদেশে বর্তমান সরকারের মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন’ বলে মত দেন আইএমএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে অভিহিত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য হ্রাসে ‘বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্যের’ প্রশংসা করেন। দারিদ্র্য নিরসন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সূচকে ‘বাংলাদেশের সাফল্য অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের জন্য শিক্ষণীয়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন ডেভিড মালপাস। উন্নয়ন অভিযাত্রায় বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও তিনি ব্যক্ত করেন।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি অনুষ্ঠানে বলেছি, বাংলাদেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সুযোগ এবং খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতার ইঙ্গিত দেয়। বাংলাদেশ কখনই ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি বা তথাকথিত ঋণের ফাঁদে পড়েনি। ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশের জন্ম হয়, তখন অনেক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞই দেশের ভবিষ্যৎ নিবো সন্দিহান ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের প্রচেষ্টায় আমাদের জনগণ বিশ্বকে দেখিয়েছে যে, দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে কঠিন চ্যালেঞ্জকেও অতিক্রম করা সম্ভব।’

আঞ্চলিক বাণিজ্য ও কানেকটিভিটি, দুর্যাগ প্রস্তুতি এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ২২৫ কোটি ডলারের পাঁচটি ঋণচুক্তির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাক্ষাৎকালে আমি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিশ্বব্যাংককে পাশে থাকার আহ্বান জানাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত