আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয় হওয়া আবসারকেই করা হয় দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমডি। পেশায় প্রকৌশলী আবসারের অন্য পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এবং রাজশাহী-২ আসনের তিনবারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বোনের ছেলে।
আলোচিত-বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কেনাকাটার দায়িত্বে ছিলেন কাজী আবসার। পরিবেশবাদীসহ বিশেষজ্ঞ মহলের অনেকের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় অর্ধেক ক্ষমতায় উৎপাদন করে যাচ্ছে এ কেন্দ্রটি। এনডব্লিউপিসিএলের এমডি হয়ে বিদেশি ঠিকাদারের টাকায় চীন ও সিঙ্গাপুরে সপরিবারে প্রমোদ ভ্রমণ করা ও অবৈধভাবে স্ত্রীকে কোম্পানির পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আবসারের বিরুদ্ধে। এসব ভূমিকার জন্য জবাবদিহি তথা সাজার মুখোমুখি না করে অন্তর্বর্তী সরকার আবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কাজী আবসারকে দ্বিতীয় মেয়াদে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং কোম্পানিটির প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিমন্ত্রীর সুনজরে থাকা ব্যক্তির এ ‘সৌভাগ্য’ কীভাবে হয়, তা তাঁরা বুঝে উঠছেন না।
তৃতীয় হয়েও মন্ত্রীর ধমকে নিয়োগ: বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছিলেন যথাক্রমে মো. মাসুদুল ইসলাম, প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলাম এবং কাজী আবসার উদ্দীন। এর মধ্যে এনডব্লিউপিসিএল বোর্ড প্রথমে মো. মাসুদুল ইসলামকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে কোম্পানির চাকরিবিধির শর্তে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রকৌশলীরা মাসুদুল ইসলাম প্রকৌশলী না হওয়ায় তাঁকে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। তখন দ্বিতীয় হওয়া প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলামের নাম এলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তা বাতিল করে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ সচিব প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় যিনি হয়েছেন তিনি যেহেতু প্রকৌশলী তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নসরুল হামিদ এ সময় বিদ্যুৎ সচিবকে আক্ষরিক অর্থে ধমক দিয়ে আবসারকে নিয়োগ দিতে বলেন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় আবসার তৃতীয় হলেও অন্য দুজনের বদলে তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেয়ে বেপরোয়া আচরণ
এনডব্লিউপিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৭ মে এমডি হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন। কোম্পানির খরচে নিজের জন্য একটি ও পরিবারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ি নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি গাড়িরই জ্বালানি ব্যয়, চালকের বেতন ও মেরামতের অর্থ নিতেন তিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডব্লিউপিসিএলের মালিকানাধীন খুলনার রূপসার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ (চীন) ও আনসালদো এনারজিয়ার (ইতালি) কনসোর্টিয়ামের অর্থে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর চীন ভ্রমণে যান আবসার। অজুহাত হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে ‘ম্যানেজমেন্ট মিটিং’য়ের নামে সরকারি আদেশ (জিও) নেন। অথচ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিজের নামে জিও নিলেও আবসার ঠিকাদারের অর্থে চীন ভ্রমণ করেন সপরিবারে। এরপর সরকারকে না জানিয়ে সবাই মিলে চীন থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সে ভ্রমণের অর্থও দিয়েছিল বিদেশি ঠিকাদারদের ওই কনসোর্টিয়াম।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কাজী আবসার উদ্দীনকে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিতর্কিত রামপালে ভূমিকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীদের তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের খুব কাছেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্ধারিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি কাগজে-কলমে কারিগরিভাবে জাতীয় গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম হলেও উৎপাদন শুরুর পর থেকে একবারের জন্যও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। এর দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের টিউব ফেটে যায়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এ চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই টিউব ফেটে কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। সে ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এর পেছনে গুনতে হয় দিনে কয়েক কোটি টাকা।
শুরুতে একজন ভারতীয় যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কেন্দ্রের এমডি ছিলেন। এরপর এমডির দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দীন। তাঁর আগে তিনি কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা থাকার সময় কেন্দ্রে কী মান ও ধরনের যন্ত্রপাতি বসছে, তা দেখার দায়িত্ব ছিল আবসারের। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের পরও ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁকে বানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির এমডি।
পরামর্শক হিসেবেও স্বার্থোদ্ধার
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো বা নিম্নমানের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আবসার বিগত সরকারকে টের পেতে দেননি। তবে বারবার কেন্দ্রটির সমস্যা দেখে একসময় সরকারের আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে এটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে ভাবনা থেকে সরকার কতটা বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন নিশ্চিতভাবে সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শক হিসেবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি যাওয়ার পর আবসার উদ্দীন মাসিক ৮ লাখ টাকা বেতনে এই ফিশনারের ‘অলিখিত পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করতেন। সরকার রামপালের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য ঠিকাদারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেই পরামর্শক নিয়োগ দিলে আবসার আরও একদফা সুযোগ পেয়ে যান। তখন ফিশনারের মাধ্যমে রামপাল কেন্দ্রের উৎপাদন ১২৬৪ মেগাওয়াট দেখিয়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ফিশনারের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে পুরোদমে চালু হলে বয়লারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, অথচ এ পর্যন্ত সমস্যাটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নজরদারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সরকার বিদ্যুৎ খাত যে ধসিয়ে দিয়েছে, এ ঘটনাটি তার একটি উদাহরণ। যাঁর থাকার কথা কারাগারে, তিনি এখন ফের ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। মৌলিক পরিবর্তন না হলে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয় হওয়া আবসারকেই করা হয় দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমডি। পেশায় প্রকৌশলী আবসারের অন্য পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এবং রাজশাহী-২ আসনের তিনবারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বোনের ছেলে।
আলোচিত-বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কেনাকাটার দায়িত্বে ছিলেন কাজী আবসার। পরিবেশবাদীসহ বিশেষজ্ঞ মহলের অনেকের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় অর্ধেক ক্ষমতায় উৎপাদন করে যাচ্ছে এ কেন্দ্রটি। এনডব্লিউপিসিএলের এমডি হয়ে বিদেশি ঠিকাদারের টাকায় চীন ও সিঙ্গাপুরে সপরিবারে প্রমোদ ভ্রমণ করা ও অবৈধভাবে স্ত্রীকে কোম্পানির পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আবসারের বিরুদ্ধে। এসব ভূমিকার জন্য জবাবদিহি তথা সাজার মুখোমুখি না করে অন্তর্বর্তী সরকার আবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কাজী আবসারকে দ্বিতীয় মেয়াদে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং কোম্পানিটির প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিমন্ত্রীর সুনজরে থাকা ব্যক্তির এ ‘সৌভাগ্য’ কীভাবে হয়, তা তাঁরা বুঝে উঠছেন না।
তৃতীয় হয়েও মন্ত্রীর ধমকে নিয়োগ: বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছিলেন যথাক্রমে মো. মাসুদুল ইসলাম, প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলাম এবং কাজী আবসার উদ্দীন। এর মধ্যে এনডব্লিউপিসিএল বোর্ড প্রথমে মো. মাসুদুল ইসলামকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে কোম্পানির চাকরিবিধির শর্তে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রকৌশলীরা মাসুদুল ইসলাম প্রকৌশলী না হওয়ায় তাঁকে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। তখন দ্বিতীয় হওয়া প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলামের নাম এলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তা বাতিল করে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ সচিব প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় যিনি হয়েছেন তিনি যেহেতু প্রকৌশলী তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নসরুল হামিদ এ সময় বিদ্যুৎ সচিবকে আক্ষরিক অর্থে ধমক দিয়ে আবসারকে নিয়োগ দিতে বলেন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় আবসার তৃতীয় হলেও অন্য দুজনের বদলে তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেয়ে বেপরোয়া আচরণ
এনডব্লিউপিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৭ মে এমডি হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন। কোম্পানির খরচে নিজের জন্য একটি ও পরিবারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ি নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি গাড়িরই জ্বালানি ব্যয়, চালকের বেতন ও মেরামতের অর্থ নিতেন তিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডব্লিউপিসিএলের মালিকানাধীন খুলনার রূপসার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ (চীন) ও আনসালদো এনারজিয়ার (ইতালি) কনসোর্টিয়ামের অর্থে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর চীন ভ্রমণে যান আবসার। অজুহাত হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে ‘ম্যানেজমেন্ট মিটিং’য়ের নামে সরকারি আদেশ (জিও) নেন। অথচ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিজের নামে জিও নিলেও আবসার ঠিকাদারের অর্থে চীন ভ্রমণ করেন সপরিবারে। এরপর সরকারকে না জানিয়ে সবাই মিলে চীন থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সে ভ্রমণের অর্থও দিয়েছিল বিদেশি ঠিকাদারদের ওই কনসোর্টিয়াম।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কাজী আবসার উদ্দীনকে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিতর্কিত রামপালে ভূমিকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীদের তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের খুব কাছেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্ধারিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি কাগজে-কলমে কারিগরিভাবে জাতীয় গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম হলেও উৎপাদন শুরুর পর থেকে একবারের জন্যও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। এর দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের টিউব ফেটে যায়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এ চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই টিউব ফেটে কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। সে ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এর পেছনে গুনতে হয় দিনে কয়েক কোটি টাকা।
শুরুতে একজন ভারতীয় যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কেন্দ্রের এমডি ছিলেন। এরপর এমডির দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দীন। তাঁর আগে তিনি কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা থাকার সময় কেন্দ্রে কী মান ও ধরনের যন্ত্রপাতি বসছে, তা দেখার দায়িত্ব ছিল আবসারের। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের পরও ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁকে বানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির এমডি।
পরামর্শক হিসেবেও স্বার্থোদ্ধার
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো বা নিম্নমানের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আবসার বিগত সরকারকে টের পেতে দেননি। তবে বারবার কেন্দ্রটির সমস্যা দেখে একসময় সরকারের আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে এটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে ভাবনা থেকে সরকার কতটা বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন নিশ্চিতভাবে সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শক হিসেবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি যাওয়ার পর আবসার উদ্দীন মাসিক ৮ লাখ টাকা বেতনে এই ফিশনারের ‘অলিখিত পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করতেন। সরকার রামপালের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য ঠিকাদারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেই পরামর্শক নিয়োগ দিলে আবসার আরও একদফা সুযোগ পেয়ে যান। তখন ফিশনারের মাধ্যমে রামপাল কেন্দ্রের উৎপাদন ১২৬৪ মেগাওয়াট দেখিয়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ফিশনারের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে পুরোদমে চালু হলে বয়লারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, অথচ এ পর্যন্ত সমস্যাটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নজরদারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সরকার বিদ্যুৎ খাত যে ধসিয়ে দিয়েছে, এ ঘটনাটি তার একটি উদাহরণ। যাঁর থাকার কথা কারাগারে, তিনি এখন ফের ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। মৌলিক পরিবর্তন না হলে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
আরিফুজ্জামান তুহিন, ঢাকা

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয় হওয়া আবসারকেই করা হয় দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমডি। পেশায় প্রকৌশলী আবসারের অন্য পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এবং রাজশাহী-২ আসনের তিনবারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বোনের ছেলে।
আলোচিত-বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কেনাকাটার দায়িত্বে ছিলেন কাজী আবসার। পরিবেশবাদীসহ বিশেষজ্ঞ মহলের অনেকের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় অর্ধেক ক্ষমতায় উৎপাদন করে যাচ্ছে এ কেন্দ্রটি। এনডব্লিউপিসিএলের এমডি হয়ে বিদেশি ঠিকাদারের টাকায় চীন ও সিঙ্গাপুরে সপরিবারে প্রমোদ ভ্রমণ করা ও অবৈধভাবে স্ত্রীকে কোম্পানির পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আবসারের বিরুদ্ধে। এসব ভূমিকার জন্য জবাবদিহি তথা সাজার মুখোমুখি না করে অন্তর্বর্তী সরকার আবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কাজী আবসারকে দ্বিতীয় মেয়াদে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং কোম্পানিটির প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিমন্ত্রীর সুনজরে থাকা ব্যক্তির এ ‘সৌভাগ্য’ কীভাবে হয়, তা তাঁরা বুঝে উঠছেন না।
তৃতীয় হয়েও মন্ত্রীর ধমকে নিয়োগ: বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছিলেন যথাক্রমে মো. মাসুদুল ইসলাম, প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলাম এবং কাজী আবসার উদ্দীন। এর মধ্যে এনডব্লিউপিসিএল বোর্ড প্রথমে মো. মাসুদুল ইসলামকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে কোম্পানির চাকরিবিধির শর্তে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রকৌশলীরা মাসুদুল ইসলাম প্রকৌশলী না হওয়ায় তাঁকে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। তখন দ্বিতীয় হওয়া প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলামের নাম এলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তা বাতিল করে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ সচিব প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় যিনি হয়েছেন তিনি যেহেতু প্রকৌশলী তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নসরুল হামিদ এ সময় বিদ্যুৎ সচিবকে আক্ষরিক অর্থে ধমক দিয়ে আবসারকে নিয়োগ দিতে বলেন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় আবসার তৃতীয় হলেও অন্য দুজনের বদলে তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেয়ে বেপরোয়া আচরণ
এনডব্লিউপিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৭ মে এমডি হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন। কোম্পানির খরচে নিজের জন্য একটি ও পরিবারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ি নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি গাড়িরই জ্বালানি ব্যয়, চালকের বেতন ও মেরামতের অর্থ নিতেন তিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডব্লিউপিসিএলের মালিকানাধীন খুলনার রূপসার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ (চীন) ও আনসালদো এনারজিয়ার (ইতালি) কনসোর্টিয়ামের অর্থে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর চীন ভ্রমণে যান আবসার। অজুহাত হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে ‘ম্যানেজমেন্ট মিটিং’য়ের নামে সরকারি আদেশ (জিও) নেন। অথচ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিজের নামে জিও নিলেও আবসার ঠিকাদারের অর্থে চীন ভ্রমণ করেন সপরিবারে। এরপর সরকারকে না জানিয়ে সবাই মিলে চীন থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সে ভ্রমণের অর্থও দিয়েছিল বিদেশি ঠিকাদারদের ওই কনসোর্টিয়াম।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কাজী আবসার উদ্দীনকে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিতর্কিত রামপালে ভূমিকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীদের তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের খুব কাছেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্ধারিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি কাগজে-কলমে কারিগরিভাবে জাতীয় গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম হলেও উৎপাদন শুরুর পর থেকে একবারের জন্যও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। এর দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের টিউব ফেটে যায়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এ চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই টিউব ফেটে কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। সে ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এর পেছনে গুনতে হয় দিনে কয়েক কোটি টাকা।
শুরুতে একজন ভারতীয় যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কেন্দ্রের এমডি ছিলেন। এরপর এমডির দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দীন। তাঁর আগে তিনি কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা থাকার সময় কেন্দ্রে কী মান ও ধরনের যন্ত্রপাতি বসছে, তা দেখার দায়িত্ব ছিল আবসারের। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের পরও ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁকে বানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির এমডি।
পরামর্শক হিসেবেও স্বার্থোদ্ধার
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো বা নিম্নমানের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আবসার বিগত সরকারকে টের পেতে দেননি। তবে বারবার কেন্দ্রটির সমস্যা দেখে একসময় সরকারের আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে এটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে ভাবনা থেকে সরকার কতটা বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন নিশ্চিতভাবে সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শক হিসেবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি যাওয়ার পর আবসার উদ্দীন মাসিক ৮ লাখ টাকা বেতনে এই ফিশনারের ‘অলিখিত পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করতেন। সরকার রামপালের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য ঠিকাদারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেই পরামর্শক নিয়োগ দিলে আবসার আরও একদফা সুযোগ পেয়ে যান। তখন ফিশনারের মাধ্যমে রামপাল কেন্দ্রের উৎপাদন ১২৬৪ মেগাওয়াট দেখিয়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ফিশনারের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে পুরোদমে চালু হলে বয়লারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, অথচ এ পর্যন্ত সমস্যাটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নজরদারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সরকার বিদ্যুৎ খাত যে ধসিয়ে দিয়েছে, এ ঘটনাটি তার একটি উদাহরণ। যাঁর থাকার কথা কারাগারে, তিনি এখন ফের ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। মৌলিক পরিবর্তন না হলে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয় হওয়া আবসারকেই করা হয় দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমডি। পেশায় প্রকৌশলী আবসারের অন্য পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা এবং রাজশাহী-২ আসনের তিনবারের নৌকা প্রতীকের সংসদ সদস্য ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশার বোনের ছেলে।
আলোচিত-বিতর্কিত রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল কেনাকাটার দায়িত্বে ছিলেন কাজী আবসার। পরিবেশবাদীসহ বিশেষজ্ঞ মহলের অনেকের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে নির্মাণের পর অধিকাংশ সময় অর্ধেক ক্ষমতায় উৎপাদন করে যাচ্ছে এ কেন্দ্রটি। এনডব্লিউপিসিএলের এমডি হয়ে বিদেশি ঠিকাদারের টাকায় চীন ও সিঙ্গাপুরে সপরিবারে প্রমোদ ভ্রমণ করা ও অবৈধভাবে স্ত্রীকে কোম্পানির পাজেরো গাড়ি ব্যবহার করতে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে আবসারের বিরুদ্ধে। এসব ভূমিকার জন্য জবাবদিহি তথা সাজার মুখোমুখি না করে অন্তর্বর্তী সরকার আবার তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকার কাজী আবসারকে দ্বিতীয় মেয়াদে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং কোম্পানিটির প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের শীর্ষ মহলের আশীর্বাদপুষ্ট প্রতিমন্ত্রীর সুনজরে থাকা ব্যক্তির এ ‘সৌভাগ্য’ কীভাবে হয়, তা তাঁরা বুঝে উঠছেন না।
তৃতীয় হয়েও মন্ত্রীর ধমকে নিয়োগ: বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে এনডব্লিউপিসিএলের এমডি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছিলেন যথাক্রমে মো. মাসুদুল ইসলাম, প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলাম এবং কাজী আবসার উদ্দীন। এর মধ্যে এনডব্লিউপিসিএল বোর্ড প্রথমে মো. মাসুদুল ইসলামকে নিয়োগের সুপারিশ করে। তবে কোম্পানির চাকরিবিধির শর্তে না থাকলেও আওয়ামী লীগের সমর্থক প্রকৌশলীরা মাসুদুল ইসলাম প্রকৌশলী না হওয়ায় তাঁকে নিয়োগের বিরোধিতা করেন। তখন দ্বিতীয় হওয়া প্রকৌশলী হাসিবুল ইসলামের নাম এলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তা বাতিল করে দেন। বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিদ্যুৎ সচিব প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন, দ্বিতীয় যিনি হয়েছেন তিনি যেহেতু প্রকৌশলী তাঁকে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নসরুল হামিদ এ সময় বিদ্যুৎ সচিবকে আক্ষরিক অর্থে ধমক দিয়ে আবসারকে নিয়োগ দিতে বলেন। অভিযোগ রয়েছে, পরীক্ষায় আবসার তৃতীয় হলেও অন্য দুজনের বদলে তাঁকে ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নিয়োগ পেয়ে বেপরোয়া আচরণ
এনডব্লিউপিসিএলের কয়েকজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, তিনি ২০২৩ সালের ৭ মে এমডি হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া আচরণ করতে থাকেন। কোম্পানির খরচে নিজের জন্য একটি ও পরিবারের জন্য একটি পাজেরো গাড়ি নেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দুটি গাড়িরই জ্বালানি ব্যয়, চালকের বেতন ও মেরামতের অর্থ নিতেন তিনি। কর্মকর্তারা বলেছেন, এনডব্লিউপিসিএলের মালিকানাধীন খুলনার রূপসার ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাংহাই ইলেকট্রিক গ্রুপ (চীন) ও আনসালদো এনারজিয়ার (ইতালি) কনসোর্টিয়ামের অর্থে ২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর চীন ভ্রমণে যান আবসার। অজুহাত হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগের কাছ থেকে ‘ম্যানেজমেন্ট মিটিং’য়ের নামে সরকারি আদেশ (জিও) নেন। অথচ কেন্দ্রটি নির্মাণের কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল কর্মকর্তাদের ভাষ্য, নিজের নামে জিও নিলেও আবসার ঠিকাদারের অর্থে চীন ভ্রমণ করেন সপরিবারে। এরপর সরকারকে না জানিয়ে সবাই মিলে চীন থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সে ভ্রমণের অর্থও দিয়েছিল বিদেশি ঠিকাদারদের ওই কনসোর্টিয়াম।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে কাজী আবসার উদ্দীনকে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইলে কয়েকবার ফোন করে সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিতর্কিত রামপালে ভূমিকা: বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ‘ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র’ (বিআইএফপিসিএল) নির্মাণ করে। বিশেষজ্ঞ এবং পরিবেশবাদীদের তুমুল সমালোচনা ও বিরোধিতা উপেক্ষা করে বাগেরহাটের রামপালে সুন্দরবনের খুব কাছেই কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্ধারিত উৎপাদন ক্ষমতা ১৩২০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটি কাগজে-কলমে কারিগরিভাবে জাতীয় গ্রিডে একসঙ্গে ১২৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহে সক্ষম হলেও উৎপাদন শুরুর পর থেকে একবারের জন্যও এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেনি। এর দুটি ইউনিটের প্রতিটির উৎপাদনক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট। কিন্তু ৪৫০-৫০০ মেগাওয়াটের বেশি উৎপাদন করতে গেলেই বয়লারের টিউব ফেটে যায়। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর আগে যতবারই এ চেষ্টা করা হয়েছে, ততবারই টিউব ফেটে কয়েক দিন উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। সে ক্ষেত্রে ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এর পেছনে গুনতে হয় দিনে কয়েক কোটি টাকা।
শুরুতে একজন ভারতীয় যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রামপাল কেন্দ্রের এমডি ছিলেন। এরপর এমডির দায়িত্ব নেন কাজী আবসার উদ্দীন। তাঁর আগে তিনি কেন্দ্রটি নির্মাণের প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা ছিলেন। পিডিবির প্রকৌশলীরা বলছেন, প্রধান ক্রয় কর্মকর্তা থাকার সময় কেন্দ্রে কী মান ও ধরনের যন্ত্রপাতি বসছে, তা দেখার দায়িত্ব ছিল আবসারের। নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ব্যবহারের পরও ক্রয়ের দায়িত্বে থাকা আবসারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো তাঁকে বানানো হয়েছে দেশের বৃহত্তম সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানির এমডি।
পরামর্শক হিসেবেও স্বার্থোদ্ধার
পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সময় পুরোনো বা নিম্নমানের যন্ত্র বসানোর বিষয়টি আবসার বিগত সরকারকে টের পেতে দেননি। তবে বারবার কেন্দ্রটির সমস্যা দেখে একসময় সরকারের আশঙ্কা হয় ভবিষ্যতে এটি বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সে ভাবনা থেকে সরকার কতটা বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন নিশ্চিতভাবে সম্ভব তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়। রামপাল কেন্দ্রের পরামর্শক হিসেবে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভারতের ভেল নিয়োগ দিয়েছিল জার্মান কোম্পানি ফিশনারকে। ফিশনার জার্মান কোম্পানি হলেও এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল সব ভারতীয়। বিআইএফপিসিএলের চাকরি যাওয়ার পর আবসার উদ্দীন মাসিক ৮ লাখ টাকা বেতনে এই ফিশনারের ‘অলিখিত পরামর্শক’ হিসেবে কাজ করতেন। সরকার রামপালের বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য ঠিকাদারের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকেই পরামর্শক নিয়োগ দিলে আবসার আরও একদফা সুযোগ পেয়ে যান। তখন ফিশনারের মাধ্যমে রামপাল কেন্দ্রের উৎপাদন ১২৬৪ মেগাওয়াট দেখিয়ে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। ফিশনারের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যতে পুরোদমে চালু হলে বয়লারের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে, অথচ এ পর্যন্ত সমস্যাটি ঠিক হয়নি।
এ বিষয়ে ভোক্তা-অধিকার নজরদারি প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত সরকার বিদ্যুৎ খাত যে ধসিয়ে দিয়েছে, এ ঘটনাটি তার একটি উদাহরণ। যাঁর থাকার কথা কারাগারে, তিনি এখন ফের ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে গেছেন। মৌলিক পরিবর্তন না হলে ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম এবং বিচারে তাঁদের সাজা হওয়ার কিছু নজির রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতভিন্নতায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর এমন বিভেদ চলতে থাকলে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সরকারের জন্য।
৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (৮৩) আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
১২ ঘণ্টা আগে
২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের শ্রমবাজারে সৃষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাপানের নাগোয়া শহরে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাপানের
১৪ ঘণ্টা আগেআমানুর রহমান রনি, ঢাকা
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম এবং বিচারে তাঁদের সাজা হওয়ার কিছু নজির রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগপত্রে মৃত, অনাবাসী ব্যক্তির নাম ঠেকাতে পুলিশ সদর দপ্তর ৯টি নির্দেশনা দিয়েছে।
সূত্র বলেছে, নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো মৃত ব্যক্তিকে আদালতে দেওয়া চূড়ান্ত অভিযোগপত্রে বা তদন্ত প্রতিবেদনে আসামি করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁদের শাস্তি পেতে হবে।
অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও ঘটনার সময় প্রবাসী ব্যক্তিদের নাম থাকাকে তদন্তে ঘাটতি, গাফিলতি বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, গত (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনের আগে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির চাপের কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা বলেন, মৃত ও অনিবাসী মানুষকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া শুধু প্রশাসনিক ত্রুটি নয়, এটি আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি করে। পুলিশ সদর দপ্তরের নজরদারির উদ্যোগ ইতিবাচক হলেও বাস্তবে কতটা পরিবর্তন আসবে, সময়ই তা বলে দেবে।
পুলিশের সূত্র জানায়, বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে সারা দেশের থানায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর অসংখ্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামির তালিকায় মৃত ব্যক্তির নামও দিয়েছেন বাদীরা। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। এ জন্যই পুলিশ সদর দপ্তর ইউনিটগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের রিসার্চ, প্ল্যানিং ও ইনোভেশন বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) আহমেদুল কবীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সম্প্রতি পুলিশের সব ইউনিটকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার ৩ নম্বর ক্রমিকে বলা হয়েছে, ভুয়া, গায়েবি মামলায় অনিবাসী, মৃত, নিরাপরাধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য হবে। কোনো পুলিশ সদস্য যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাউকে এ ধরনের মামলায় হয়রানি করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন এক মাসের মধ্যেই দিতে হবে।
বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে স্পষ্ট বলা আছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলারও নিষ্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানায়, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন থানার তদন্তকারী কর্মকর্তারা অন্তত ১১ জন মৃত ব্যক্তির নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী। এ ছাড়া অভিযোগের ঘটনার সময় নিখোঁজ বা প্রবাসে ছিলেন এমন বেশ কয়েকজনের নামও রয়েছে আদালতে দেওয়া কিছু অভিযোগপত্রে। তাঁরা মারা যাওয়ার, নিখোঁজ ও প্রবাসে থাকার বিষয়টি পুলিশ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেনি। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগপর্যন্ত ১১ মৃত ব্যক্তির নামে অভিযোগপত্র দাখিল ও সাজা হওয়ার ঘটনা ঘটে।
যেমন রাজধানীর নিউমার্কেট থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন মো. আবু তাহের দাইয়া। তাঁর মৃত্যুর চার বছর পর ২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে ঢাকার একটি আদালত দেড় বছরের কারাদণ্ড দেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন আদালত। অভিযোগপত্র ও মামলার নথিতে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করেনি পুলিশ। বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর বনানী থেকে নিখোঁজ হন। তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জাকির ২০১৫ সালের এপ্রিলে নিখোঁজ হন। তাঁদের বিরুদ্ধেও পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। সেই অভিযোগপত্র ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ দুজনের সাজাও হয়। এসব ঘটনায় পুলিশের তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।
ফৌজদারি অপরাধ বিশেষজ্ঞ এস এম শাহজাহান বলেন, এমন ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষের চরম আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। ভুলক্রমে মৃত মানুষের নাম অভিযোগপত্রে উঠে আসা কেবল প্রশাসনিক ত্রুটি নয়, এটি তদন্তপ্রক্রিয়ার গভীর অব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত।
এদিকে জুলাই-আগস্টের হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, ফৌজদারি মামলায় নিষ্পত্তির আগে আসামির নাম প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে এমন ব্যক্তিদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা যায়। আর অভিযোগপত্রে নাম থাকলে মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এমন কোনো কোনো মামলার বাদী ভুল স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কলেজছাত্র আসীর ইনতিশারুল হক (২১) হত্যার ঘটনায় ওই বছরের ৬ অক্টোবর শ্রীপুর থানায় মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই মামলায় অন্যদের সঙ্গে আবুল কালাম ওরফে কালা মিয়ার (৫৫) নামও আসামি হিসেবে দেওয়া হয়। তবে তিনি মামলা করার আগেই ২৫ সেপ্টেম্বর মারা যান। এ নিয়ে ক্ষোভ জানান মৃত কালামের ছেলে আলমগীর হোসেন।
এ প্রসঙ্গে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, নাম দেওয়ার বিষয়টি একমাত্র বাদীর এখতিয়ার। বাদীর দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়। মৃত ব্যক্তির নাম মামলায় থাকলে তদন্ত করে বাদ দেওয়া হবে।
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ২০২১ সালের ১৮ মার্চ মারা যাওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চকবাজারের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সায়িদ গোলাম হায়দার মিন্টুকে। ২০২৪ সালের ৪ আগস্টের একটি হত্যার অভিযোগে চলতি বছরের ২২ মার্চ এনামুল হক নামের এক ছাত্রপ্রতিনিধি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলার আসামির তালিকায় রয়েছে জাফর আলমের নাম। জাফর আলম মারা গেছেন বলে জানান তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, তাঁর বাবা জাফর আলম ঈদগাঁও উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
পুলিশের সূত্র জানায়, মামলায় মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম থাকলেও অভিযোগপত্রে যেন না থাকে সে জন্যই পুলিশ সদর দপ্তর এই উদ্যোগ নিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বড় ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার পর দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়ার চাপ থাকে তদন্ত কর্মকর্তাদের ওপর। এই তাড়াহুড়োয় যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ কম থাকে। এতে ‘তালিকা-নির্ভর’ ও ‘কপি-পেস্ট’ তথ্য ব্যবহার করা হয়। ফলে মৃত বা অনুপস্থিত ব্যক্তির নাম ঢুকে যায় অভিযোগপত্রে।
সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ভুলগুলোকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। তদন্তে গাফিলতি বা অসততা আছে কি না, তা সদর দপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বের করা দরকার।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম এবং বিচারে তাঁদের সাজা হওয়ার কিছু নজির রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগপত্রে মৃত, অনাবাসী ব্যক্তির নাম ঠেকাতে পুলিশ সদর দপ্তর ৯টি নির্দেশনা দিয়েছে।
সূত্র বলেছে, নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কোনো মৃত ব্যক্তিকে আদালতে দেওয়া চূড়ান্ত অভিযোগপত্রে বা তদন্ত প্রতিবেদনে আসামি করা হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁদের শাস্তি পেতে হবে।
অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও ঘটনার সময় প্রবাসী ব্যক্তিদের নাম থাকাকে তদন্তে ঘাটতি, গাফিলতি বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, গত (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনের আগে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির চাপের কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা বলেন, মৃত ও অনিবাসী মানুষকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেওয়া শুধু প্রশাসনিক ত্রুটি নয়, এটি আইনি প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি করে। পুলিশ সদর দপ্তরের নজরদারির উদ্যোগ ইতিবাচক হলেও বাস্তবে কতটা পরিবর্তন আসবে, সময়ই তা বলে দেবে।
পুলিশের সূত্র জানায়, বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হামলা, লুট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে সারা দেশের থানায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর অসংখ্য ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আসামির তালিকায় মৃত ব্যক্তির নামও দিয়েছেন বাদীরা। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ। এ জন্যই পুলিশ সদর দপ্তর ইউনিটগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের রিসার্চ, প্ল্যানিং ও ইনোভেশন বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) আহমেদুল কবীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সম্প্রতি পুলিশের সব ইউনিটকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। নির্দেশনার ৩ নম্বর ক্রমিকে বলা হয়েছে, ভুয়া, গায়েবি মামলায় অনিবাসী, মৃত, নিরাপরাধ নাগরিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিলের বিষয়টি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য হবে। কোনো পুলিশ সদস্য যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কাউকে এ ধরনের মামলায় হয়রানি করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ছাড়া ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চাকরির জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন এক মাসের মধ্যেই দিতে হবে।
বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে স্পষ্ট বলা আছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মারা গেলে তাঁর বিরুদ্ধে মামলারও নিষ্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র জানায়, ২০২২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন থানার তদন্তকারী কর্মকর্তারা অন্তত ১১ জন মৃত ব্যক্তির নাম অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাঁদের বেশির ভাগই ছিলেন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী। এ ছাড়া অভিযোগের ঘটনার সময় নিখোঁজ বা প্রবাসে ছিলেন এমন বেশ কয়েকজনের নামও রয়েছে আদালতে দেওয়া কিছু অভিযোগপত্রে। তাঁরা মারা যাওয়ার, নিখোঁজ ও প্রবাসে থাকার বিষয়টি পুলিশ অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেনি। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগপর্যন্ত ১১ মৃত ব্যক্তির নামে অভিযোগপত্র দাখিল ও সাজা হওয়ার ঘটনা ঘটে।
যেমন রাজধানীর নিউমার্কেট থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন মো. আবু তাহের দাইয়া। তাঁর মৃত্যুর চার বছর পর ২০২৩ সালের নভেম্বরে একটি রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে ঢাকার একটি আদালত দেড় বছরের কারাদণ্ড দেন। তাঁর বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন আদালত। অভিযোগপত্র ও মামলার নথিতে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করেনি পুলিশ। বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমন ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর বনানী থেকে নিখোঁজ হন। তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জাকির ২০১৫ সালের এপ্রিলে নিখোঁজ হন। তাঁদের বিরুদ্ধেও পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। সেই অভিযোগপত্র ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে এ দুজনের সাজাও হয়। এসব ঘটনায় পুলিশের তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।
ফৌজদারি অপরাধ বিশেষজ্ঞ এস এম শাহজাহান বলেন, এমন ঘটনায় পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে সাধারণ মানুষের চরম আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। ভুলক্রমে মৃত মানুষের নাম অভিযোগপত্রে উঠে আসা কেবল প্রশাসনিক ত্রুটি নয়, এটি তদন্তপ্রক্রিয়ার গভীর অব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত।
এদিকে জুলাই-আগস্টের হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, ফৌজদারি মামলায় নিষ্পত্তির আগে আসামির নাম প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে এমন ব্যক্তিদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা যায়। আর অভিযোগপত্রে নাম থাকলে মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এমন কোনো কোনো মামলার বাদী ভুল স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গাজীপুরের শ্রীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে কলেজছাত্র আসীর ইনতিশারুল হক (২১) হত্যার ঘটনায় ওই বছরের ৬ অক্টোবর শ্রীপুর থানায় মামলা করেন তাঁর বাবা। ওই মামলায় অন্যদের সঙ্গে আবুল কালাম ওরফে কালা মিয়ার (৫৫) নামও আসামি হিসেবে দেওয়া হয়। তবে তিনি মামলা করার আগেই ২৫ সেপ্টেম্বর মারা যান। এ নিয়ে ক্ষোভ জানান মৃত কালামের ছেলে আলমগীর হোসেন।
এ প্রসঙ্গে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, নাম দেওয়ার বিষয়টি একমাত্র বাদীর এখতিয়ার। বাদীর দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়। মৃত ব্যক্তির নাম মামলায় থাকলে তদন্ত করে বাদ দেওয়া হবে।
চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় একটি হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে ২০২১ সালের ১৮ মার্চ মারা যাওয়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চকবাজারের সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর সায়িদ গোলাম হায়দার মিন্টুকে। ২০২৪ সালের ৪ আগস্টের একটি হত্যার অভিযোগে চলতি বছরের ২২ মার্চ এনামুল হক নামের এক ছাত্রপ্রতিনিধি বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলার আসামির তালিকায় রয়েছে জাফর আলমের নাম। জাফর আলম মারা গেছেন বলে জানান তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, তাঁর বাবা জাফর আলম ঈদগাঁও উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
পুলিশের সূত্র জানায়, মামলায় মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম থাকলেও অভিযোগপত্রে যেন না থাকে সে জন্যই পুলিশ সদর দপ্তর এই উদ্যোগ নিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, বড় ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার পর দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়ার চাপ থাকে তদন্ত কর্মকর্তাদের ওপর। এই তাড়াহুড়োয় যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ কম থাকে। এতে ‘তালিকা-নির্ভর’ ও ‘কপি-পেস্ট’ তথ্য ব্যবহার করা হয়। ফলে মৃত বা অনুপস্থিত ব্যক্তির নাম ঢুকে যায় অভিযোগপত্রে।
সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ভুলগুলোকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। তদন্তে গাফিলতি বা অসততা আছে কি না, তা সদর দপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্তে বের করা দরকার।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪
গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতভিন্নতায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর এমন বিভেদ চলতে থাকলে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সরকারের জন্য।
৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (৮৩) আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
১২ ঘণ্টা আগে
২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের শ্রমবাজারে সৃষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাপানের নাগোয়া শহরে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাপানের
১৪ ঘণ্টা আগেতানিম আহমেদ, ঢাকা

গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতভিন্নতায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর এমন বিভেদ চলতে থাকলে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সরকারের জন্য। এমনটি যাতে না হয়, সে জন্য দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন প্রধান উপদেষ্টা। চলতি সপ্তাহের মধ্যে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে সরকারকেই নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তখন আদেশ জারির ক্ষেত্রে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর দুটি সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরপরই গণভোট এবং নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) ইস্যুতে বিপরীত অবস্থানে চলে যায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এমন অবস্থায় ৩ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক হয়। যেখানে দলগুলোকে আলোচনা করে সাত দিনের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে অনুরোধ জানানো হয়। এরই মধ্যে পাঁচ দিন কেটে গেছে, কিন্তু দলগুলোর মধ্যে আলোচনায় বসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আলোচনার জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি তাতে।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ মতের জন্য অপেক্ষার পাশাপাশি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির প্রস্তুতিও চলছে সরকারের ভেতরে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে এবং আদেশ জারির বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
সূত্র জানিয়েছে, কমিশনের দ্বিতীয় প্রস্তাবের আলোকে সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ২৭০ দিনের স্থলে যত দিন লাগে, তত দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা বলা থাকতে পারে। একই সঙ্গে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রস্তাব ছাড়া বাকি প্রস্তাবগুলোতে নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিল পাস করবে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দলগুলোকে আলোচনার জন্য সাত দিনের কথা বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সে সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তুতিমূলক অনেক বৈঠক হচ্ছে। তারা (উপদেষ্টা পরিষদ) আশা করে, দলগুলো নিজেরা নিজেরা এই পুরো বিষয়গুলো নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসবে। পুরো জাতি এখন নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে আছে।
সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষিত সাত দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত না দিলে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে সব দল নিয়ে বৈঠক করার চিন্তাভাবনা করছেন প্রধান উপদেষ্টা। কারণ, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বন্ধ পরিকর। সে অনুযায়ী ডিসেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সমাধান ধীরগতি হলে তফসিল ঘোষণা পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের বিষয়ে সমঝোতার জন্য আলোচনায় বসতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। গতকাল শুক্রবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া (বিএনপির) পাইনি।’ আলোচনায় না বসলে জুলাই সনদ নিয়ে তৈরি হওয়া সংকটের সমাধান কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, ‘আমরা তাদের সাড়ার অপেক্ষায় আছি, দেখা যাক। এ নিয়ে কাল্পনিকভাবে আগাম কিছুই বলতে চাই না।’
আলোচনায় বসার বিষয়ে সরকারের অনুরোধ ও জামায়াতের আমন্ত্রণের বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সেখানে বিএনপি জুলাই সনদ ইস্যুতে আর আলোচনায় বসবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জামায়াত ও এনসিপির একাধিক নেতা দাবি করেছেন, বিএনপি আলোচনায় বসতে চায় না। এনসিপির এক নেতা বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তারা তো দেখি এখন গণভোটকে অস্বীকার করা শুরু করেছে। এটা তো অসুবিধার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয় দল এবং এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এনসিপি। সেখানে বাস্তবায়ন ইস্যুতে দলগুলো এক থাকবে বলে জানা গেছে। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে। তারপরও সরকারের অনুরোধে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা মনে করি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। সিদ্ধান্ত সরকারের কাছে।’

গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতভিন্নতায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর এমন বিভেদ চলতে থাকলে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সরকারের জন্য। এমনটি যাতে না হয়, সে জন্য দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন প্রধান উপদেষ্টা। চলতি সপ্তাহের মধ্যে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে সরকারকেই নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তখন আদেশ জারির ক্ষেত্রে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গত ২৭ অক্টোবর দুটি সুপারিশ সরকারের কাছে জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরপরই গণভোট এবং নোট অব ডিসেন্ট (আপত্তি) ইস্যুতে বিপরীত অবস্থানে চলে যায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। এমন অবস্থায় ৩ নভেম্বর উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক হয়। যেখানে দলগুলোকে আলোচনা করে সাত দিনের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে অনুরোধ জানানো হয়। এরই মধ্যে পাঁচ দিন কেটে গেছে, কিন্তু দলগুলোর মধ্যে আলোচনায় বসার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। আলোচনার জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি তাতে।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ মতের জন্য অপেক্ষার পাশাপাশি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারির প্রস্তুতিও চলছে সরকারের ভেতরে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের বিষয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে এবং আদেশ জারির বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
সূত্র জানিয়েছে, কমিশনের দ্বিতীয় প্রস্তাবের আলোকে সরকার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে ২৭০ দিনের স্থলে যত দিন লাগে, তত দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কারের কাজ শেষ করার কথা বলা থাকতে পারে। একই সঙ্গে পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার প্রস্তাব ছাড়া বাকি প্রস্তাবগুলোতে নোট অব ডিসেন্ট উল্লেখ থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংস্কার পরিষদ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে বিল পাস করবে।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, দলগুলোকে আলোচনার জন্য সাত দিনের কথা বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলো কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারলে অন্তর্বর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। সে সিদ্ধান্তের জন্য প্রস্তুতিমূলক অনেক বৈঠক হচ্ছে। তারা (উপদেষ্টা পরিষদ) আশা করে, দলগুলো নিজেরা নিজেরা এই পুরো বিষয়গুলো নিয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসবে। পুরো জাতি এখন নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে আছে।
সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষিত সাত দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত না দিলে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে সব দল নিয়ে বৈঠক করার চিন্তাভাবনা করছেন প্রধান উপদেষ্টা। কারণ, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার বন্ধ পরিকর। সে অনুযায়ী ডিসেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সমাধান ধীরগতি হলে তফসিল ঘোষণা পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা আছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও গণভোটের বিষয়ে সমঝোতার জন্য আলোচনায় বসতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। গতকাল শুক্রবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিএনপির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া দেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া (বিএনপির) পাইনি।’ আলোচনায় না বসলে জুলাই সনদ নিয়ে তৈরি হওয়া সংকটের সমাধান কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, ‘আমরা তাদের সাড়ার অপেক্ষায় আছি, দেখা যাক। এ নিয়ে কাল্পনিকভাবে আগাম কিছুই বলতে চাই না।’
আলোচনায় বসার বিষয়ে সরকারের অনুরোধ ও জামায়াতের আমন্ত্রণের বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সেখানে বিএনপি জুলাই সনদ ইস্যুতে আর আলোচনায় বসবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
জামায়াত ও এনসিপির একাধিক নেতা দাবি করেছেন, বিএনপি আলোচনায় বসতে চায় না। এনসিপির এক নেতা বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আলোচনায় বসার কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তারা তো দেখি এখন গণভোটকে অস্বীকার করা শুরু করেছে। এটা তো অসুবিধার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা হলেও আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত ছয় দল এবং এবি পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে এনসিপি। সেখানে বাস্তবায়ন ইস্যুতে দলগুলো এক থাকবে বলে জানা গেছে। এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আছে। তারপরও সরকারের অনুরোধে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা মনে করি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। সিদ্ধান্ত সরকারের কাছে।’

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম এবং বিচারে তাঁদের সাজা হওয়ার কিছু নজির রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (৮৩) আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
১২ ঘণ্টা আগে
২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের শ্রমবাজারে সৃষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাপানের নাগোয়া শহরে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাপানের
১৪ ঘণ্টা আগেখানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (৮৩) মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মরহুমের এক নিকটাত্মীয় আজকের পত্রিকাকে জানান, মাহমুদ আলী দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ১৩ দিন ধরে তিনি বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রাতে ধানমন্ডির নিজ বাসার সামনে জানাজা শেষে মরহুমকে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১৯৪৩ সালের ২ জুন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ডাক্তারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ১৯৬৩ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে যোগ দেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি ওই বছরের মে মাসে মুজিবনগরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত হন।
১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল, জার্মানিতে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল ও ভুটানে ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (৮৩) মারা গেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মরহুমের এক নিকটাত্মীয় আজকের পত্রিকাকে জানান, মাহমুদ আলী দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। ১৩ দিন ধরে তিনি বারডেম হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রাতে ধানমন্ডির নিজ বাসার সামনে জানাজা শেষে মরহুমকে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আবুল হাসান মাহমুদ আলী ১৯৪৩ সালের ২ জুন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ডাক্তারপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ১৯৬৩ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রামে যোগ দেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি ওই বছরের মে মাসে মুজিবনগরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত হন।
১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি যুক্তরাজ্যে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল, জার্মানিতে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৫ সাল ও ভুটানে ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম এবং বিচারে তাঁদের সাজা হওয়ার কিছু নজির রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতভিন্নতায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর এমন বিভেদ চলতে থাকলে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সরকারের জন্য।
৪ ঘণ্টা আগে
২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের শ্রমবাজারে সৃষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাপানের নাগোয়া শহরে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাপানের
১৪ ঘণ্টা আগেবিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা

২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের শ্রমবাজারে সৃষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাপানের নাগোয়া শহরে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাপানের জন্য দক্ষ মানবসম্পদসমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জাপান আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণার্থী ও দক্ষ কর্মী সহযোগিতা সংস্থা জিটকোর সহযোগিতায় আয়োজিত এ সেমিনার ও পরবর্তী ম্যাচিং ইভেন্টে দুই দেশের প্রায় ২৫০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
স্বাগত বক্তব্যে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, জাপানে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে দূতাবাস সব ধরনের সহায়তা দেবে।
সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া জানান, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে, অন্যদিকে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে—এ প্রবণতা ২০৪০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
নেয়ামত উল্যা বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাপানের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী সরবরাহে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ড. নেয়ামত আরও জানান, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী প্রস্তুতের জন্য বাংলাদেশে ৩৩টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) নির্ধারণ করা হয়েছে, প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এ ছাড়া প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি ‘জাপান সেল’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা জাপানি শ্রমবাজারের সঙ্গে সমন্বয় ও যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
সেমিনারে জিটকোর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিগেও মাতসুতোমি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বর্তমান অবস্থা ও জাপানের সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
পরে বাংলাদেশি জনশক্তি প্রেরণকারী ও জাপানি নিয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সেমিনারে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের শ্রমবাজারে সৃষ্ট ১ কোটি ১০ লাখ জনশক্তির ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া।
আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) জাপানের নাগোয়া শহরে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত ‘বাংলাদেশ জাপানের জন্য দক্ষ মানবসম্পদসমৃদ্ধ একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
জাপান আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণার্থী ও দক্ষ কর্মী সহযোগিতা সংস্থা জিটকোর সহযোগিতায় আয়োজিত এ সেমিনার ও পরবর্তী ম্যাচিং ইভেন্টে দুই দেশের প্রায় ২৫০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক ও নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
স্বাগত বক্তব্যে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দাউদ আলী বলেন, জাপানে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে দূতাবাস সব ধরনের সহায়তা দেবে।
সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া জানান, ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানের প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ বিদেশি কর্মীর প্রয়োজন হবে, অন্যদিকে বাংলাদেশে অতিরিক্ত ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী রয়েছে—এ প্রবণতা ২০৪০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
নেয়ামত উল্যা বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাপানের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মী সরবরাহে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে এবং এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ড. নেয়ামত আরও জানান, জাপানের শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী কর্মী প্রস্তুতের জন্য বাংলাদেশে ৩৩টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) নির্ধারণ করা হয়েছে, প্রয়োজনে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এ ছাড়া প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি ‘জাপান সেল’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা জাপানি শ্রমবাজারের সঙ্গে সমন্বয় ও যোগাযোগের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
সেমিনারে জিটকোর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট শিগেও মাতসুতোমি আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের বর্তমান অবস্থা ও জাপানের সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
পরে বাংলাদেশি জনশক্তি প্রেরণকারী ও জাপানি নিয়োগকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। সেমিনারে টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এনডব্লিউপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে নিয়োগের পরীক্ষায় তৃতীয় হয়েছিলেন কাজী আবসার উদ্দীন আহমেদ। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ‘ধমকে’ পরীক্ষার সেই ফলকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তৃতীয়
০১ ডিসেম্বর ২০২৪ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক সহিংসতার মামলার অভিযোগপত্রে মৃত, নিখোঁজ ও অনিবাসী ব্যক্তির নাম এবং বিচারে তাঁদের সাজা হওয়ার কিছু নজির রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরও কিছু মামলায় মৃত ব্যক্তিদের আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র মতভিন্নতায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। দলগুলোর এমন বিভেদ চলতে থাকলে আগামী দিনে জাতীয় নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন হয়ে পড়বে সরকারের জন্য।
৪ ঘণ্টা আগে
সাবেক পররাষ্ট্র ও অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী (৮৩) আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি স্ত্রী ও দুই পুত্রসন্তান রেখে গেছেন।
১২ ঘণ্টা আগে