Ajker Patrika

ভোট দিতে বাধা বা ভোট দিতে বাধ্য করলে কী করবেন

সুলতান মাহমুদ, ঢাকা
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০০: ৩১
ভোট দিতে বাধা বা ভোট দিতে বাধ্য করলে কী করবেন

বিশ্বের অনেক দেশে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও বাংলাদেশে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। বাংলাদেশের মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই ভোট দেন। ভোট দেওয়া তাঁদের অধিকার। তাঁরা মন চাইলে ভোট দেবেন। মন না চাইলে ভোট দেবেন না। নির্বাচনে কোনো নাগরিক ভোট দেবেন কি দেবেন না, তা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। কেউ কোনো নাগরিককে ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারবেন না আবার কেউ কাউকে ভোট দেওয়ার জন্য জোর করতেও পারবেন না। যদি কেউ কাউকে ভোটদানে বাধা দেন বা কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করেন, তাহলে দুটি কাজই অপরাধ বলে গণ্য হবে। নির্বাচন কমিশন এবং মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকেও এমনটাই বলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘ভোটারদের ভোট দিতে বাধা বা হুমকি-ধমকি দিলে দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনার সুযোগ আগে ছিল না। নতুন আইনে হুমকিদাতাকে অপরাধী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়ার বিধান আছে।’

আর মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনে ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং ভোট দিতে বাধ্য করা আচরণবিধির লঙ্ঘন। কামাল উদ্দিন বলেন, কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করা হলে, এটি প্রমাণিত হলে, সেটি হবে আচরণবিধির লঙ্ঘন। সেটি অবশ্যই নির্বাচন কমিশন দেখবে। কেউ ভোট দিতে না চাইলে, তাঁকে জোর করে নিয়ে গেলে, সে দিকটায়ও মানবাধিকার কমিশন নজর রাখছে।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, যেমন নিউজিল্যান্ড। কিন্তু আমাদের দেশে সে ধরনের নিয়ম নেই। সে কারণে আমি বলব, কেউ যদি ভোট না দিতে যান, তাহলে সেটা তাঁর ইচ্ছা। কিন্তু কেউ যদি দিতে চান, তাঁকে বাধা দেওয়াও অনুচিত, এটা কিন্তু আইনের বরখেলাপ এবং এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন।’

ভোট দিতে বাধা দিলে বা জোর করলে যে অপরাধ
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ বলেন, কেউ কোনো ব্যক্তিকে ভোটদানে বাধা দিতে পারবেন না বা কাউকে ভোট দেওয়ার জন্য জোর করা যাবে না। যদি কেউ কাউকে ভোটদানে বাধা দেন বা কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করেন, তাহলে দুটি কাজই হবে অপরাধ। যদি কেউ এই অপরাধের অভিযুক্ত হন, তাহলে তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের অনুচ্ছেদ ৭৩ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড বা কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। 

তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ৭৭ অনুচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে বলেন, কোনো ব্যক্তি অসংগত প্রভাব বিস্তারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হবেন, যদি তিনি কোনো ব্যক্তিকে কোনো নির্বাচনে ভোট দিতে বা ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে কোনো প্রকার শক্তি, হ্রাস বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন বা ভীতি প্রদর্শন করেন।

অভিযোগ করবেন কোথায়
যদি কোনো ব্যক্তিকে কেন্দ্রে ভোট দিতে যেতে বাধা দেওয়া হয় অথবা যদি কেউ ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হয়, তাহলে ওই ব্যক্তি প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে জানাতে পারেন। প্রতিটি উপজেলায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বা ইউএনওর আওতায় একটি করে অভিযোগ কেন্দ্র রয়েছে। সেই অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ করতে পারেন অথবা রিটার্নিং কর্মকর্তা বা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ করতে পারেন। 

বরগুনার জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যদি কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে বাধা বা ভীতি প্রদর্শন করে বা কোনো রকম বিঘ্ন সৃষ্টির মতো অপরাধ করে, আমাদের মোবাইলে বা যেকোনোভাবে জানালে সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনব। প্রতিটি উপজেলায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটি করে অভিযোগ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। অভিযোগ কেন্দ্রের ওই নম্বরে যে কেউ ফোন করে অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে স্ট্রাইকিং ফোর্স এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভ্রাম্যমাণ আদালত গিয়ে ব্যবস্থা নেবে।’

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন বরগুনা জেলা প্রতিনিধি রূদ্র রুহান)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত