বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার ‘আরএনপিপি’র জন্য পরমাণু জ্বালানি গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ক্রেমলিন থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্ত হন। ভিয়েনা থেকে ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা—আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসিও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করেছি।’
বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দেশসহ সবাইকে সম্মানিত করায় তিনি রাশিয়ার ফেডারেশন এবং এর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তাঁর সরকার, দেশবাসী ও তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশ-রাশিয়া বন্ধুত্ব অটুট থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইমাত্র আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে শুনেছি ২০২৬ সালে আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট এবং ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট চালু হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আর এই বিদ্যুৎ হবে অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।’
এর আগে তাঁর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিট থেকে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য আমরা পৃথক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছি। যেকোনো ধরনের দুর্যোগে আমাদের এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকটা খেয়াল রেখে এই প্ল্যান্টের ডিজাইন প্রণয়ন এবং নির্মাণকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া ব্যবহৃত জ্বালানি (স্পেন্ট ফুয়েল) ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। রাশিয়ান ফেডারেশন এসব স্পেন্ট ফুয়েল তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাবে বলে আমাদের কথা দিয়েছে।’
রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
শুরুতে আরএনপিপির প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি তৈরি ও বিতরণের ওপর একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়, যেখানে আরএনপিপি প্রকল্প পরিচালক এবং এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর আরএনপিপির পরিচিতি তুলে ধরেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব মো. আলী হোসেন। পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তরের জন্য জ্বালানি সরবরাহের সনদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাতে জ্বালানি সরবরাহের একটি মডেল তুলে দেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক গণভবন প্রান্তের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
তেজস্ক্রিয় জ্বালানি হস্তান্তর করার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে এই শক্তিকে শান্তির জন্য ব্যবহারের এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘পরমাণু শক্তি আমরা শান্তি রক্ষায় ব্যবহার করব। আমরা বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছি। আমরা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছি এবং একটি স্বাধীন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি।’
এই কর্তৃপক্ষ ‘আইএইএ’র সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। ২০২০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ভিশন স্টেটমেন্ট ও পলিসি স্টেটমেন্ট অন পাওয়ার সেক্টর রিফর্মস প্রণয়নও অনুমোদন করি। ১৯৯৬ সালে আমরা জ্বালানি নীতিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করি। বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০ প্রণয়ন করি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএর সহযোগিতা চাই। আইএইএর আন্তরিক সহায়তায় আমরা একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করি এবং একটি বিশেষ কমিটিও করে দেওয়া হয়।’
এরপর সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই প্রকল্প আর এগোয়নি এবং ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প আবারও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কাজেই এর সঙ্গে সংগতি রেখে আবার রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে। তা ছাড়া আইএইএ শুরু থেকেই আমাদের নানাভাবে সহায়তা করে আসছে। এ জন্য আমি রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার, আইএইএ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর রাশিয়া সফরে পুতিনের সঙ্গে মস্কোতে বৈঠক এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছি। এখন পর্যন্ত আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।’
তিনি বন্ধুরাষ্ট্র ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ধন্যবাদ জানান এই নির্মাণকাজে সহযোগিতার জন্য।
তিনি ২০১৭ সালে আইএইএর তৎকালীন মহাপরিচালক ইউকিও আমানোর আমন্ত্রণে ভিয়েনা সফরের সময় আইএইএর সদর দপ্তরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে সেই সময় এই প্রকল্পে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তাদের সার্বিক সহায়তা ও মনিটরিং করার আহ্বানের উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘সেই থেকে আইএইএ আমাদের এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। এরপর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আমি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করি। ২০২১ ও ২০২২-এ এই কেন্দ্রের যথাক্রমে ইউনিট-১ ও ইউনিট-২-এর রি-অ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন করি। আজ এই কেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি সংযুক্ত হলো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলকে রাশিয়ান ফেডারেশন যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। যেহেতু বন্ধুপ্রতিম ভারতেও একই রকম একটি প্রকল্প হচ্ছে—সে জন্য আমাদের কিছু জনবলকে প্রশিক্ষণের জন্য আমরা ভারতেও প্রেরণ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় এ দেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ গঠনকালেই জাতির পিতার প্রচেষ্টার উল্লেখ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা মাত্র ৯ মাসেই একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব শিরোনামে সেই সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে যুক্ত করেছিলেন—নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’
সে লক্ষ্যে তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সমুদ্রসম্পদ এমনকি খনিজ সম্পদ জাতীয়করণ করেছিলেন এবং বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো থেকে আমাদের গ্যাস ফিল্ডগুলো কিনে নিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন এবং নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে প্রস্তাবিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা। সে অনুযায়ী কিছু কাজও হয়েছিল। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর এই মেগা প্রকল্পটিসহ সব জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেমে যায়।
প্রধানমন্ত্রী সেই বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে দেশের জনগণের জন্য আজকের দিনটিকে অত্যন্ত আনন্দের দিন হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় পারমাণবিক জ্বালানি গ্রহণের মধ্য দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আজ সফল পরিণতি লাভ করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আগামীতে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার আরেকটি পদক্ষেপ।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার ‘আরএনপিপি’র জন্য পরমাণু জ্বালানি গ্রহণ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ক্রেমলিন থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুক্ত হন। ভিয়েনা থেকে ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা—আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসিও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প এলাকায় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা নিউক্লিয়ার যুগে প্রবেশ করেছি।’
বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধুপ্রতিম দেশ রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দেশসহ সবাইকে সম্মানিত করায় তিনি রাশিয়ার ফেডারেশন এবং এর প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তাঁর সরকার, দেশবাসী ও তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশ-রাশিয়া বন্ধুত্ব অটুট থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রেসিডেন্ট পুতিনের বক্তব্যের উদ্ধৃতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইমাত্র আমরা প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে শুনেছি ২০২৬ সালে আমাদের দ্বিতীয় ইউনিট এবং ২০২৪ সালে প্রথম ইউনিট চালু হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। অচিরেই প্রথম ইউনিট থেকে ১২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আর এই বিদ্যুৎ হবে অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব।’
এর আগে তাঁর সরকার ২০২৩ সালের মধ্যে প্রথম ইউনিট থেকে এবং ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য আমরা পৃথক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছি। যেকোনো ধরনের দুর্যোগে আমাদের এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে দিকটা খেয়াল রেখে এই প্ল্যান্টের ডিজাইন প্রণয়ন এবং নির্মাণকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া ব্যবহৃত জ্বালানি (স্পেন্ট ফুয়েল) ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি সই করেছি। রাশিয়ান ফেডারেশন এসব স্পেন্ট ফুয়েল তাদের দেশে ফেরত নিয়ে যাবে বলে আমাদের কথা দিয়েছে।’
রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, আইএইএর মহাপরিচালক রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
শুরুতে আরএনপিপির প্রথম ব্যাচের পারমাণবিক জ্বালানি তৈরি ও বিতরণের ওপর একটি অডিও-ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়, যেখানে আরএনপিপি প্রকল্প পরিচালক এবং এনপিসিবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর আরএনপিপির পরিচিতি তুলে ধরেন।
স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসচিব মো. আলী হোসেন। পরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পক্ষ থেকে রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে হস্তান্তরের জন্য জ্বালানি সরবরাহের সনদ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের হাতে জ্বালানি সরবরাহের একটি মডেল তুলে দেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু, জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক গণভবন প্রান্তের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
তেজস্ক্রিয় জ্বালানি হস্তান্তর করার ফলে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় পারমাণবিক জ্বালানি ব্যবহারকারী রাষ্ট্র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে এই শক্তিকে শান্তির জন্য ব্যবহারের এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘পরমাণু শক্তি আমরা শান্তি রক্ষায় ব্যবহার করব। আমরা বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক অস্ত্রের সাধারণ ও সম্পূর্ণ নির্মূল এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছি। আমরা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছি এবং একটি স্বাধীন পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেছি।’
এই কর্তৃপক্ষ ‘আইএইএ’র সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে আমরা সরকার গঠন করি। ২০২০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্য নিয়ে ভিশন স্টেটমেন্ট ও পলিসি স্টেটমেন্ট অন পাওয়ার সেক্টর রিফর্মস প্রণয়নও অনুমোদন করি। ১৯৯৬ সালে আমরা জ্বালানি নীতিতে পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করি। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু করি। বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্ল্যান-২০০০ প্রণয়ন করি। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএর সহযোগিতা চাই। আইএইএর আন্তরিক সহায়তায় আমরা একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনাও গ্রহণ করি এবং একটি বিশেষ কমিটিও করে দেওয়া হয়।’
এরপর সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এই প্রকল্প আর এগোয়নি এবং ২০০৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০০৯ সালে পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প আবারও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কাজেই এর সঙ্গে সংগতি রেখে আবার রূপপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া এটি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসে। তা ছাড়া আইএইএ শুরু থেকেই আমাদের নানাভাবে সহায়তা করে আসছে। এ জন্য আমি রাশিয়ান ফেডারেশন সরকার, আইএইএ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
তিনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর রাশিয়া সফরে পুতিনের সঙ্গে মস্কোতে বৈঠক এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছি। এখন পর্যন্ত আপনার সর্বাত্মক সহযোগিতায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।’
তিনি বন্ধুরাষ্ট্র ভারত এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও ধন্যবাদ জানান এই নির্মাণকাজে সহযোগিতার জন্য।
তিনি ২০১৭ সালে আইএইএর তৎকালীন মহাপরিচালক ইউকিও আমানোর আমন্ত্রণে ভিয়েনা সফরের সময় আইএইএর সদর দপ্তরে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে সেই সময় এই প্রকল্পে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তাদের সার্বিক সহায়তা ও মনিটরিং করার আহ্বানের উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘সেই থেকে আইএইএ আমাদের এ বিষয়ে সার্বিক সহায়তা প্রদান করছে। এরপর ২০১৭ ও ২০১৮ সালে আমি এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাইয়ের উদ্বোধন করি। ২০২১ ও ২০২২-এ এই কেন্দ্রের যথাক্রমে ইউনিট-১ ও ইউনিট-২-এর রি-অ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন করি। আজ এই কেন্দ্রে পারমাণবিক জ্বালানি সংযুক্ত হলো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলকে রাশিয়ান ফেডারেশন যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। যেহেতু বন্ধুপ্রতিম ভারতেও একই রকম একটি প্রকল্প হচ্ছে—সে জন্য আমাদের কিছু জনবলকে প্রশিক্ষণের জন্য আমরা ভারতেও প্রেরণ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় এ দেশে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ গঠনকালেই জাতির পিতার প্রচেষ্টার উল্লেখ করে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা মাত্র ৯ মাসেই একটি সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। গ্রামীণ উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব শিরোনামে সেই সংবিধানের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে যুক্ত করেছিলেন—নগর ও গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করিবার উদ্দেশ্যে কৃষি বিপ্লবের বিকাশ, গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণের ব্যবস্থা, কুটিরশিল্প ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ এবং শিক্ষা, যোগাযোগব্যবস্থা ও জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের আমূল রূপান্তর সাধনের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’
সে লক্ষ্যে তিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুতায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। সমুদ্রসম্পদ এমনকি খনিজ সম্পদ জাতীয়করণ করেছিলেন এবং বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো থেকে আমাদের গ্যাস ফিল্ডগুলো কিনে নিয়ে রাষ্ট্রীয় মালিকানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন এবং নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দেশ দিয়েছিলেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াকে প্রস্তাবিত রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা। সে অনুযায়ী কিছু কাজও হয়েছিল। দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করার পর এই মেগা প্রকল্পটিসহ সব জনবান্ধব ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড থেমে যায়।
প্রধানমন্ত্রী সেই বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে দেশের জনগণের জন্য আজকের দিনটিকে অত্যন্ত আনন্দের দিন হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় পারমাণবিক জ্বালানি গ্রহণের মধ্য দিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আজ সফল পরিণতি লাভ করছে।

রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি...
৪ ঘণ্টা আগেআইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন আবার ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। সব মিলিয়ে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ককটেল-আগুনের ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ-আতঙ্ক আরও বাড়ল।
পরিস্থিতি যে উদ্বেগের, তা মনে করছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমও। তিনি গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলা হলে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকে।’
রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে পরিস্থিতি একটু উন্নত হতো মন্তব্য করে আইজিপি আরও বলেন, ‘কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য নেই। তারপরও পুলিশ চেষ্টা করছে, যেসব জায়গায় ত্রুটি রয়েছে সেগুলো ঠিক করার। আগামী আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাব। কারণ, জনপ্রতিনিধি ও জনগণই বড় শক্তি।’
ককটেল বিস্ফোরণ
গতকাল ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ধানমন্ডি, খিলগাঁও এবং বাংলামোটর এলাকায় ১৩টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এগুলোর মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সীমানার মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ছাড়া ভোরের আলো ফোটার আগেই দুটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সব জায়গাতেই মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে আসা ব্যক্তিরা ককটেল ছোড়ে এবং বাসে আগুন দেয়। তাদের মোটরসাইকেলের নম্বরপ্লেটগুলো কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের অভ্যর্থনাকেন্দ্রের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমটি রাত ২টা ২৬ মিনিটে এবং অপরটি ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটে বিস্ফোরিত হয়। দুটি ককটেল অভ্যর্থনাকেন্দ্রের সামনে বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।
গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, ককটেল বিস্ফোরণের পর গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভবনের সামনের ফুটপাতে ও প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায়, তিনজন নিরাপত্তাকর্মী এবং একজন কর্মকর্তা বসে আছেন। সামনেই অভ্যর্থনাকক্ষ। কাচের দরজার অভ্যর্থনাকক্ষের প্রবেশমুখে লালচে ককটেল বিস্ফোরণের দাগের নমুনা এবং বিস্ফোরিত অংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আল হেলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারীরা দুটি মোটরসাইকেলে করে মিরপুর ১০ নম্বরের দিক থেকে আসে। এরপর ভবনের সামনে মোটরবাইক থামিয়ে পেছনে বসা হেলমেট পরা ব্যক্তি সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে ককটেল ছুরে মেরে মিরপুর ১ নম্বরের দিকে পালিয়ে যায়। এরপর আরেকটি মোটরসাইকেলে করে প্রায় এক ঘণ্টা পর আরও দুজন একই কায়দায় এসে ককটেল ছুড়ে চলে যায়। ঘটনার পর আলামত ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, হামলাকারীদের মাথায় হেলমেট ছিল। চেহারা বোঝা যায়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুজনকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে হামলার পর সকাল ৭টার দিকে মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা এবং বীজবিস্তার ফাউন্ডেশনের সামনের সড়কে ও সীমানার ভেতরে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। দুজন হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলে জানিয়েছেন প্রবর্তনার নিরাপত্তাকর্মী মো. মোস্তফা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, প্রবর্তনার সামনের সড়ক ও ভবনের ভেতরে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এ ছাড়া গতকাল ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মাইডাস সেন্টারের সামনে দুটি এবং ৯/এ সড়কে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সকাল পৌনে সাতটা থেকে সাতটার মধ্যে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। দুটি জায়গাতেই মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে এসে ককটেল ছোড়া হয়।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, সকাল পৌনে সাতটার দিকে মাইডাস সেন্টারের সামনে একটি মোটরসাইকেলে করে দু-তিনজন এসে দুটি ককটেল ছোড়ে এবং বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সাতটার দিকে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনেও একইভাবে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশে শাহ আলী মার্কেটের সামনে পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপরও একটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে পুলিশ।
মিরপুর মডেল থানার কর্মকর্তারা জানান, ফুটওভারব্রিজের ওপর থেকে কেউ ককটেল নিক্ষেপ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
আর রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানী বাংলামোটর এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে আরও একটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তিনটি বাসে আগুন
ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়াও গতকাল ভোরে রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় যাত্রীবাহী দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাশেদ বিন খালেদ বলেন, ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলশানের শাহজাদপুর এলাকায় যাত্রীবাহী ভিক্টর পরিবহনে এবং মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সকাল সোয়া ছয়টার দিকে যাত্রীবাহী আকাশ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুর সড়কে ল্যাবএইডের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে বাস থেকে বের হয়ে যায় তারা।
রাজধানীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রাতদিন পুলিশের টহলে থাকে বলে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তবে একযোগে রাজধানীর ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এসব ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি তারা।
ঢাকার বাইরে দুই জায়গায় আগুন
রাজধানীর বাইরে দুই জায়গায় নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথুলী এলাকায় মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া গতকাল নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগের বাড়ির ফটকে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
পুলিশের নজরদারি জোরদার
এসব নাশকতার ঘটনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির কারণে সারা দেশে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ের সব ইউনিটকে বাড়তি নিরাপত্তা, টহল ও নজরদারি জোরদারের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে মাঠে থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সরকারি স্থাপনা, পরিবহন টার্মিনাল, দলীয় কার্যালয় ও কৌশলগত মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বসানো হয়েছে নতুন চেকপোস্ট। সাইবার ইউনিটকেও সক্রিয় করা হয়েছে; যাতে সামাজিক মাধ্যমে গুজব, উসকানি বা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের হোস্টেল, মেস, বাসাবাড়ি এবং আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালানো হবে। ঝটিকা মিছিল কিংবা আকস্মিক সমাবেশ দেখলে তাৎক্ষণিক ছত্রভঙ্গ এবং অংশগ্রহণকারীদের আটক করার নির্দেশনা রয়েছে। গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে দেওয়া হবে না।

রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আগামী বৃহস্পতিবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন আবার ঢাকা লকডাউনের হুমকি দিয়েছে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ। সব মিলিয়ে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ককটেল-আগুনের ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ-আতঙ্ক আরও বাড়ল।
পরিস্থিতি যে উদ্বেগের, তা মনে করছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমও। তিনি গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চোরাগোপ্তা হামলা হলে স্বাভাবিকভাবে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে থাকে।’
রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে পরিস্থিতি একটু উন্নত হতো মন্তব্য করে আইজিপি আরও বলেন, ‘কিন্তু দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য নেই। তারপরও পুলিশ চেষ্টা করছে, যেসব জায়গায় ত্রুটি রয়েছে সেগুলো ঠিক করার। আগামী আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাব। কারণ, জনপ্রতিনিধি ও জনগণই বড় শক্তি।’
ককটেল বিস্ফোরণ
গতকাল ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, মিরপুর, ধানমন্ডি, খিলগাঁও এবং বাংলামোটর এলাকায় ১৩টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এগুলোর মধ্যে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সীমানার মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ছাড়া ভোরের আলো ফোটার আগেই দুটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সব জায়গাতেই মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে আসা ব্যক্তিরা ককটেল ছোড়ে এবং বাসে আগুন দেয়। তাদের মোটরসাইকেলের নম্বরপ্লেটগুলো কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। তবে এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের অভ্যর্থনাকেন্দ্রের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। প্রথমটি রাত ২টা ২৬ মিনিটে এবং অপরটি ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটে বিস্ফোরিত হয়। দুটি ককটেল অভ্যর্থনাকেন্দ্রের সামনে বিস্ফোরিত হয়। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ভবনেরও কোনো ক্ষতি হয়নি।
গতকাল সরেজমিন দেখা যায়, ককটেল বিস্ফোরণের পর গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভবনের সামনের ফুটপাতে ও প্রধান ফটকের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই দেখা যায়, তিনজন নিরাপত্তাকর্মী এবং একজন কর্মকর্তা বসে আছেন। সামনেই অভ্যর্থনাকক্ষ। কাচের দরজার অভ্যর্থনাকক্ষের প্রবেশমুখে লালচে ককটেল বিস্ফোরণের দাগের নমুনা এবং বিস্ফোরিত অংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়ে গেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংক ভবনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আল হেলাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, হামলাকারীরা দুটি মোটরসাইকেলে করে মিরপুর ১০ নম্বরের দিক থেকে আসে। এরপর ভবনের সামনে মোটরবাইক থামিয়ে পেছনে বসা হেলমেট পরা ব্যক্তি সীমানাপ্রাচীরের ভেতরে ককটেল ছুরে মেরে মিরপুর ১ নম্বরের দিকে পালিয়ে যায়। এরপর আরেকটি মোটরসাইকেলে করে প্রায় এক ঘণ্টা পর আরও দুজন একই কায়দায় এসে ককটেল ছুড়ে চলে যায়। ঘটনার পর আলামত ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. মিজানুর রহমান জানান, হামলাকারীদের মাথায় হেলমেট ছিল। চেহারা বোঝা যায়নি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুজনকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে হামলার পর সকাল ৭টার দিকে মোহাম্মদপুরের স্যার সৈয়দ রোডে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান প্রবর্তনা এবং বীজবিস্তার ফাউন্ডেশনের সামনের সড়কে ও সীমানার ভেতরে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। দুজন হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে এসে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলে জানিয়েছেন প্রবর্তনার নিরাপত্তাকর্মী মো. মোস্তফা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান বলেন, প্রবর্তনার সামনের সড়ক ও ভবনের ভেতরে দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এ ছাড়া গতকাল ধানমন্ডি ২৭ নম্বরের মাইডাস সেন্টারের সামনে দুটি এবং ৯/এ সড়কে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সকাল পৌনে সাতটা থেকে সাতটার মধ্যে এসব বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এসব ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। দুটি জায়গাতেই মোটরসাইকেলে হেলমেট পরে এসে ককটেল ছোড়া হয়।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, সকাল পৌনে সাতটার দিকে মাইডাস সেন্টারের সামনে একটি মোটরসাইকেলে করে দু-তিনজন এসে দুটি ককটেল ছোড়ে এবং বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আশপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সকাল সাতটার দিকে ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনেও একইভাবে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের পাশে শাহ আলী মার্কেটের সামনে পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। একই সময়ে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপরও একটি ককটেল বিস্ফোরণের খবর দিয়েছে পুলিশ।
মিরপুর মডেল থানার কর্মকর্তারা জানান, ফুটওভারব্রিজের ওপর থেকে কেউ ককটেল নিক্ষেপ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
আর রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানী বাংলামোটর এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে আরও একটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
তিনটি বাসে আগুন
ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ছাড়াও গতকাল ভোরে রাজধানীর বাড্ডা ও শাহজাদপুর এলাকায় যাত্রীবাহী দুটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বরত কর্মকর্তা রাশেদ বিন খালেদ বলেন, ভোর ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে গুলশানের শাহজাদপুর এলাকায় যাত্রীবাহী ভিক্টর পরিবহনে এবং মেরুল বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সকাল সোয়া ছয়টার দিকে যাত্রীবাহী আকাশ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিরপুর সড়কে ল্যাবএইডের সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হুড়োহুড়ি করে বাস থেকে বের হয়ে যায় তারা।
রাজধানীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রাতদিন পুলিশের টহলে থাকে বলে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়, তবে একযোগে রাজধানীর ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় এসব ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি কাউকে শনাক্তও করতে পারেনি তারা।
ঢাকার বাইরে দুই জায়গায় আগুন
রাজধানীর বাইরে দুই জায়গায় নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দিবাগত রাতে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার উথুলী এলাকায় মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। এ ছাড়া গতকাল নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগের বাড়ির ফটকে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
পুলিশের নজরদারি জোরদার
এসব নাশকতার ঘটনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মসূচির কারণে সারা দেশে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মাঠপর্যায়ের সব ইউনিটকে বাড়তি নিরাপত্তা, টহল ও নজরদারি জোরদারের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, বিজিবি এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে মাঠে থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, সরকারি স্থাপনা, পরিবহন টার্মিনাল, দলীয় কার্যালয় ও কৌশলগত মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে বসানো হয়েছে নতুন চেকপোস্ট। সাইবার ইউনিটকেও সক্রিয় করা হয়েছে; যাতে সামাজিক মাধ্যমে গুজব, উসকানি বা অপপ্রচার ছড়িয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঢাকা শহরের হোস্টেল, মেস, বাসাবাড়ি এবং আবাসিক হোটেলে তল্লাশি চালানো হবে। ঝটিকা মিছিল কিংবা আকস্মিক সমাবেশ দেখলে তাৎক্ষণিক ছত্রভঙ্গ এবং অংশগ্রহণকারীদের আটক করার নির্দেশনা রয়েছে। গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে দেওয়া হবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ
০৫ অক্টোবর ২০২৩
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি...
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।
অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘গত ৩১ জুলাই থেকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে দায়িত্ব পালন করছি। সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিবাদী গোপালপুর পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উত্থান (৫২), সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত আলী (৫৫), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লিটন মিয়া (৫০), যুগ্ম সম্পাদক মো. মহির উদ্দিন (৫৬), যুবদল নেতা/কর্মী কামরুল ইসলাম (৪২)সহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জন নেতা-কর্মীসহ অফিস কক্ষে যায়। তখন আমি খালিদ হাসানকে কী সেবা দিতে পারি জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন, আমি কেন তাদের মূল্যায়ন/মান্য করি না এবং কেন তাদের কথামতো কাজ করি না। আমি সরকারি বিধি মোতাবেক সকল সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি জানালে উল্লিখিত বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা আমাকে আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি মর্মে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি বিবাদীদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করে আওয়ামী লীগের কী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছি, তার প্রমাণ দিতে বলি। এতে বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারপিট করতে উদ্যত হয় এবং আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন।
‘এই ঘটনা শুরু থেকে স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানা তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকে। ভিডিও করার বিষয়টি দেখতে পেয়ে খালিদ হাসান অন্যান্য বিবাদীকে হুকুম দিয়ে বলে, ‘শালার ভিডিও করার সাধ মিটাইয়া দে।’ হুকুম পাওয়া মাত্রই ৩-৫ নম্বর বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা মো. সুমন রানাকে ধরে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
‘তখন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. আমজাদ হোসেন বিবাদীদের কবল থেকে স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ৩ নম্বর বিবাদী তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমজাদ হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং অফিসের সার্ভার রুমের কাচের গ্লাস ভাঙচুর করে। কাচের থাই গ্লাস ভেঙে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনের বাম পায়ের কনিষ্ঠ আঙুলের একটু ওপরে পড়ে কেটে গুরুতর রক্তাক্ত হয়। আমি স্ক্যানিং অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ১ ও ২ নম্বর বিবাদী আমার পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে জখম করে। তখন সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আবু রায়হান বিবাদীদের কবল থেকে আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারা হয়।’
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ওই সময় অফিস কক্ষে থাকা একজন সেবাগ্রহীতাকে বিবাদীরা একইভাবে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। বিবাদীরা অফিসের অন্যান্য কক্ষের কাচের থাই গ্লাস, বারান্দায় রাখা ফুলের টবসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ও হেল্প ডেস্কে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র ছিঁড়ে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। আমাকেসহ আমার অফিসের সহকর্মীদের নানা রকম ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি দেয়।
‘আমার অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারী আহত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে গোপালপুর উপজেলা পরিষদের মূল গেটের সামনে বিবাদী গোপালপুর পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মো. তুহিনসহ (২৭) অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা পুনরায় আমজাদ হোসেনকে মারপিট করে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের সহায়তায় আমজাদ হোসেনকে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
‘ঘটনাটি আমি তাৎক্ষণিক গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। পরবর্তীতে বিবাদীরা আমার ও স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানার কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন দুটি ইউএনওর মাধ্যমে ফেরত দেয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।
অভিযোগে নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ‘গত ৩১ জুলাই থেকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে দায়িত্ব পালন করছি। সোমবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টায় সময় উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিবাদী গোপালপুর পৌর বিএনপির সভাপতি খালিদ হাসান উত্থান (৫২), সাধারণ সম্পাদক কাজী লিয়াকত আলী (৫৫), সাংগঠনিক সম্পাদক মো. লিটন মিয়া (৫০), যুগ্ম সম্পাদক মো. মহির উদ্দিন (৫৬), যুবদল নেতা/কর্মী কামরুল ইসলাম (৪২)সহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জন নেতা-কর্মীসহ অফিস কক্ষে যায়। তখন আমি খালিদ হাসানকে কী সেবা দিতে পারি জিজ্ঞাসা করলে তিনি রাগান্বিত কণ্ঠে বলেন, আমি কেন তাদের মূল্যায়ন/মান্য করি না এবং কেন তাদের কথামতো কাজ করি না। আমি সরকারি বিধি মোতাবেক সকল সেবা দিতে সর্বদা প্রস্তুত আছি জানালে উল্লিখিত বিবাদীরাসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা আমাকে আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করছি মর্মে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমি বিবাদীদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করে আওয়ামী লীগের কী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছি, তার প্রমাণ দিতে বলি। এতে বিবাদীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারপিট করতে উদ্যত হয় এবং আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন।
‘এই ঘটনা শুরু থেকে স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানা তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকে। ভিডিও করার বিষয়টি দেখতে পেয়ে খালিদ হাসান অন্যান্য বিবাদীকে হুকুম দিয়ে বলে, ‘শালার ভিডিও করার সাধ মিটাইয়া দে।’ হুকুম পাওয়া মাত্রই ৩-৫ নম্বর বিবাদীসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা মো. সুমন রানাকে ধরে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।
‘তখন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. আমজাদ হোসেন বিবাদীদের কবল থেকে স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ৩ নম্বর বিবাদী তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আমজাদ হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে এবং অফিসের সার্ভার রুমের কাচের গ্লাস ভাঙচুর করে। কাচের থাই গ্লাস ভেঙে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনের বাম পায়ের কনিষ্ঠ আঙুলের একটু ওপরে পড়ে কেটে গুরুতর রক্তাক্ত হয়। আমি স্ক্যানিং অপারেটর ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে ১ ও ২ নম্বর বিবাদী আমার পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে জখম করে। তখন সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. আবু রায়হান বিবাদীদের কবল থেকে আমাকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাকেও এলোপাতাড়ি কিলঘুষি ও লাথি মারা হয়।’
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ওই সময় অফিস কক্ষে থাকা একজন সেবাগ্রহীতাকে বিবাদীরা একইভাবে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। বিবাদীরা অফিসের অন্যান্য কক্ষের কাচের থাই গ্লাস, বারান্দায় রাখা ফুলের টবসহ অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে ও হেল্প ডেস্কে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র ছিঁড়ে আনুমানিক ৮০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। আমাকেসহ আমার অফিসের সহকর্মীদের নানা রকম ভয়ভীতি ও খুন জখমের হুমকি দেয়।
‘আমার অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারী আহত ডাটা এন্ট্রি অপারেটর আমজাদ হোসেনকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়ার পথে গোপালপুর উপজেলা পরিষদের মূল গেটের সামনে বিবাদী গোপালপুর পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মো. তুহিনসহ (২৭) অজ্ঞাতনামা বিবাদীরা পুনরায় আমজাদ হোসেনকে মারপিট করে হাসপাতালে নিতে বাধা দেয়। সহকারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পুলিশের সহায়তায় আমজাদ হোসেনকে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
‘ঘটনাটি আমি তাৎক্ষণিক গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি। পরবর্তীতে বিবাদীরা আমার ও স্ক্যানিং অপারেটর মো. সুমন রানার কেড়ে নেওয়া মোবাইল ফোন দুটি ইউএনওর মাধ্যমে ফেরত দেয়।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ
০৫ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে।
৪১ মিনিট আগে
একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি...
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
সভা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের একাদশ গ্রেডে বেতন দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, এমনটা কখনো দেয়নি। তাই আমরা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করব। শহীদ মিনারে গিয়ে নেতারা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। আগামীকাল থেকে আমরা ক্লাসে ফিরে যাব।’
গত শনিবার থেকে দশম গ্রেডের দাবিতে শিক্ষকেরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে তাঁরা গতকাল রোববার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। দশম গ্রেডে বেতন, চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছিলেন তাঁরা।
তৃতীয় দিনের অবস্থান ও দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি শেষে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা শেষে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন।
শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে অর্থসচিব বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে অর্থ বিভাগে একটি প্রস্তাব করলে অর্থ বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে।
এর আগে গতকাল রোববার সারা দেশে কর্মবিরতি ও শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পর সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই বৈঠকে আশানুরূপ সমাধান না এলেও প্রথমে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা। তবে গভীর রাতে ফের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।
এ ঘোষণার পর আজ দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ওলিউল্লাহ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সফল করার জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বিরতিতে রয়েছি।’ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, ঢাকার আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে কোটালীপাড়ায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি করছেন শিক্ষকেরা। তবে তাঁরা বিদ্যালয়েই আছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ময়নুর রহমান মিলন জানান, প্রাথমিকের কেন্দ্রীয় শিক্ষক সংগঠনগুলোর ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার জন্য গাইবান্ধায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলছে। তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন হলেই তাঁরা পুনরায় ক্লাসে ফিরবেন।
এই তিন দফা দাবিতে গত শনিবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাঁরা ‘কলমবিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করেন। বিকেল ৪টার দিকে শাহবাগ থানার সামনে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের। এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা। এরপর ওই দিন রাতেই শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি দেশজুড়ে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
সভা শেষে আন্দোলনরত শিক্ষক সংগঠনগুলোর মোর্চা ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের’ আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির (শাহিন-লিপি) সাধারণ সম্পাদক খায়রুন নাহার লিপি প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের একাদশ গ্রেডে বেতন দেওয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছে, এমনটা কখনো দেয়নি। তাই আমরা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করব। শহীদ মিনারে গিয়ে নেতারা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। আগামীকাল থেকে আমরা ক্লাসে ফিরে যাব।’
গত শনিবার থেকে দশম গ্রেডের দাবিতে শিক্ষকেরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে তাঁরা গতকাল রোববার থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। দশম গ্রেডে বেতন, চাকরির ১০ ও ১৬ বছরে উচ্চতর গ্রেড পাওয়া নিয়ে জটিলতা নিরসন এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছিলেন তাঁরা।
তৃতীয় দিনের অবস্থান ও দ্বিতীয় দিনের কর্মবিরতি শেষে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা শেষে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন।
শিক্ষকদের ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির বিষয়ে জটিলতা প্রসঙ্গে অর্থসচিব বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে অর্থ বিভাগে একটি প্রস্তাব করলে অর্থ বিভাগ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বিধিমালার আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে।
এর আগে গতকাল রোববার সারা দেশে কর্মবিরতি ও শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পর সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই বৈঠকে আশানুরূপ সমাধান না এলেও প্রথমে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন শিক্ষকেরা। তবে গভীর রাতে ফের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।
এ ঘোষণার পর আজ দেশের প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ওলিউল্লাহ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সফল করার জন্য শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বিরতিতে রয়েছি।’ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখর রঞ্জন ভক্ত বলেন, ঢাকার আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে কোটালীপাড়ায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি করছেন শিক্ষকেরা। তবে তাঁরা বিদ্যালয়েই আছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. ময়নুর রহমান মিলন জানান, প্রাথমিকের কেন্দ্রীয় শিক্ষক সংগঠনগুলোর ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার জন্য গাইবান্ধায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলছে। তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন হলেই তাঁরা পুনরায় ক্লাসে ফিরবেন।
এই তিন দফা দাবিতে গত শনিবার সকাল থেকে শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষকেরা। ওই দিন বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাঁরা ‘কলমবিরতি কর্মসূচি’ পালনে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে এগিয়ে যাওয়া শুরু করেন। বিকেল ৪টার দিকে শাহবাগ থানার সামনে তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। এ সময় পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান, লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায় শিক্ষকদের। এ সময় দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হওয়ার পাশাপাশি পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন শিক্ষক নেতারা। এরপর ওই দিন রাতেই শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি দেশজুড়ে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ
০৫ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি...
৪ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।শিক্ষাসচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব এবং সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৮ আগস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫-এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছিল। এর দুই মাসের মধ্যে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালায়’ সংশোধন আনা হয়। সংশোধিত বিধিমালায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া হয়। সংশোধিত বিধিমালা গেজেটে ২ নভেম্বর প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পরে সংশোধিত ওই বিধিমালার গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারওয়াত সিরাজ শুক্লা। রিটের পক্ষে শুক্লা নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া-সংক্রান্ত বিধান কেন আইনগত কর্তৃত্ব-বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো. আসিফ হাসানের বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।শিক্ষাসচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব এবং সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৮ আগস্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৫-এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ রাখা হয়েছিল। এর দুই মাসের মধ্যে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালায়’ সংশোধন আনা হয়। সংশোধিত বিধিমালায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ দেওয়া হয়। সংশোধিত বিধিমালা গেজেটে ২ নভেম্বর প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
পরে সংশোধিত ওই বিধিমালার গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারওয়াত সিরাজ শুক্লা। রিটের পক্ষে শুক্লা নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার আরেকটি পদক্ষেপ
০৫ অক্টোবর ২০২৩
রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কয়েক জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ এবং কয়েকটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরেও এই সময়ে ঘটেছে নাশকতামূলক আগুনের ঘটনা। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর রশি-টানাটানি, অস্থিরতা চলছে।
৪১ মিনিট আগে
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসে হামলার অভিযোগ থানায় অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (৫০)। আজ সোমবার তিনি গোপালপুর থানায় এমন অভিযোগ করেন।
১ ঘণ্টা আগে
একাদশ গ্রেডে বেতনের আশ্বাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকেরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কনফারেন্স রুমে অর্থ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তাঁরা।
৪ ঘণ্টা আগে