Ajker Patrika

ডেইলি সাবাহের নিবন্ধ

প্রতিরক্ষা খাতসহ বাংলাদেশ-তুরস্ক কৌশলগত অংশীদারত্ব বাড়তে পারে যেসব ক্ষেত্রে

আপডেট : ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ০২
প্রতিরক্ষা খাতসহ বাংলাদেশ ও তুরস্কের সহযোগিতা খাত বিস্তৃত হতে পারে নানা খাতেই। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিরক্ষা খাতসহ বাংলাদেশ ও তুরস্কের সহযোগিতা খাত বিস্তৃত হতে পারে নানা খাতেই। ছবি: সংগৃহীত

ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের এই সময়ে বাংলাদেশ ও তুরস্কের ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক সাউথ-সাউথ তথা দক্ষিণ-দক্ষিণ (গ্লোবাল সাউথের দুটি দেশের মধ্যকার) সহযোগিতার এক চমৎকার উদাহরণ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছে। ঐতিহাসিক বন্ধন এবং প্রায় একই রকমের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এ দুটি দেশকে দীর্ঘকাল ধরে সংযুক্ত রাখলেও আরও গভীর কৌশলগত জোটের সম্ভাবনা এখনো অনেকাংশে অনাবিষ্কৃত।

বাংলাদেশ ও তুরস্কের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে সম্ভাবনাময় হলেও বাণিজ্যিকভাবে এখনো তুলনামূলকভাবে সীমিত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তুরস্কে বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৫৮১ মিলিয়ন ডলার, যেখানে আমদানি ছিল ৪২৪ মিলিয়ন ডলার। এই বিদ্যমান বাণিজ্য ভারসাম্য আরও বেশি লেনদেনের শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করলেও, প্রকৃত সুযোগ মূলত গভীর শিল্প সহযোগিতার বিকাশে।

সম্প্রতি তুরস্কের বাণিজ্যমন্ত্রী ওমের বোলাতের সঙ্গে এক বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্টভাবে তুরস্ককে বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তর এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই অঞ্চলের চাহিদা মেটাতে দেশের তরুণ কর্মশক্তির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর ওপর জোর দেন। এই প্রস্তাব কেবলই আকাঙ্ক্ষা নয়; এটি বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির একটি বাস্তবসম্মত মূল্যায়নকে প্রতিফলিত করে, যা দেশটিকে তুর্কি উৎপাদন ও প্রতিরক্ষাশিল্পের জন্য এক আদর্শ কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

ক্রমবর্ধমান মাল্টিপোলার বা বহু মেরু বিশ্বের প্রেক্ষাপটে জটিল ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৌশলগত অংশীদারত্ব অপরিহার্য। বৈশ্বিক মঞ্চে উদীয়মান শক্তি হিসেবে স্বীকৃত তুরস্ক বাংলাদেশকে ঐতিহাসিক গভীরতা ও ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি উভয়ই ধারণকারী একটি জাতি হিসেবে দেখে। এশিয়ায় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের উত্থান এবং এর ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব দেশটিকে এই অঞ্চলে তুরস্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারে পরিণত করেছে।

অন্যদিকে, মুসলিম বিশ্বে তুরস্কের সক্রিয় কূটনীতি নিঃসন্দেহে বিশ্বমঞ্চে আংকারার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশ এই অংশীদারত্ব কাজে লাগিয়ে আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে নিজেদের ভূরাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে পারে। বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে গভীর সহযোগিতা বৈদেশিক নীতি নির্ধারণে পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ওপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

অন্যদিকে, তুরস্কের ২০১৯ সালে চালু করা ‘এশিয়া অ্যানিউ ইনিশিয়েটিভ’ (এএনআই) এশীয় দেশগুলোর সঙ্গে দেশটির কূটনৈতিক সম্পর্ককে বহুমুখী করার লক্ষ্যে পরিচালিত, যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ওপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এএনআইয়ের অংশ হিসেবে তুরস্ক বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনে সক্রিয়ভাবে আগ্রহী, কারণ দেশটি তুরস্কের অন্যতম পুরোনো অংশীদার।

গত এক দশকে তুরস্ক লাখ লাখ সিরীয় শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে, অন্যদিকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের একেবারে সামনের সারিতে রয়েছে। তাদের এই অভিন্ন অভিজ্ঞতা এক নতুন বৈশ্বিক অভিবাসন নীতিকাঠামোর পথ প্রশস্ত করতে পারে। এ ছাড়া, মানবিক সহায়তায় তাদের সহযোগিতা গ্লোবাল সাউথের নেতৃত্বাধীন সংকট মোকাবিলা ব্যবস্থার একটি নজির স্থাপন করতে পারে, যা মানবিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে আরও স্থানীয় ও সংস্কৃতি-সংবেদনশীল পদ্ধতির প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।

তুরস্কের হাই-টেক শিল্পে, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা খাতে প্রমাণিত দক্ষতার কথা বিবেচনা করা যাক। এই দক্ষতা বাংলাদেশের বিশাল ও গতিশীল কর্মশক্তির সঙ্গে যুক্ত করে উভয় দেশ একটি যৌথ শিল্পবিপ্লব ঘটাতে পারে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে এবং দেশ দুটির নাগরিকদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।

বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যে আসন্ন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক প্রতিরক্ষা শিল্পসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ খাতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। মূল প্রশ্ন হলো, এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা কেবল অস্ত্র বিক্রির বাইরে যৌথ প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং সহ-উৎপাদন পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারবে কি না, যা উভয় দেশের জন্য একটি আরও স্থিতিশীল ও স্বয়ংসম্পূর্ণ নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলবে।

বাংলাদেশ ও তুরস্ক সম্পর্ক এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। ঐতিহাসিক বন্ধন ও অভিন্ন মূল্যবোধ একটি শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করলেও এই অংশীদারত্বের আসল সম্ভাবনা ঐতিহ্যবাহী কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক লেনদেনের ঊর্ধ্বে একটি কৌশলগত জোট গঠনের মধ্যেই নিহিত।

বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও মানবিক বিষয়ে সহযোগিতা গভীর করার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও তুরস্ক কেবল তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থই রক্ষা করবে না, বরং একটি আরও স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও ন্যায়সংগত বিশ্বব্যবস্থা গঠনেও অবদান রাখবে। এখন প্রশ্ন হলো, উভয় দেশেরই কি এই সুযোগ কাজে লাগানোর মতো দূরদর্শিতা, রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কৌশলগত প্রজ্ঞা রয়েছে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন করবেন না—বিদায়ী ভাষণে বিচারকদের প্রধান বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ফাইল ছবি

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, পছন্দসই পদায়নের জন্য রাজনৈতিক পদলেহন পরিহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, আইন বৃহত্তর রাজনীতির একটা অঙ্গ হলেও বিচারকদের রাজনীতির উর্ধ্বে ওঠার প্রয়াস রপ্ত করতে হয়। কেবল ক্ষমতাবান শাসকশ্রেণির পক্ষে প্রয়োজনীয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব নিলে বিচার বিভাগের আলাদা কোনো অস্তিত্বেরই প্রয়োজন নেই। সে কাজের জন্য নির্বাহী বিভাগ ও পুলিশই যথেষ্ট। রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ভিত্তি যে আদর্শকেই ধারণ করে গড়ে ওঠুক না কেন, বিচারকদের সুনীতি ও সুবিবেচনা বজায় রেখে কাজ করতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট অডিটরিয়ামে আজ রোববার জেলা ও মহানগর দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে দেওয়া বিদায়ী ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে গত বছরের ১১ আগস্ট ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন রেফাত আহমেদ। অবসর নেওয়ার আগে আজ বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। ২৭ ডিসেম্বর অবসরে যাবেন রেফাত আহমেদ।

প্রধান বিচারপতি বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, অসৎ ও অসাধু বিচারকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। বিচারকদের দ্বারা সৃষ্ট যাবতীয় অন্যায়ের জন্য এখন থেকে অন্যের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ বন্ধ করতে হবে। জনগণের জন্য সংক্ষিপ্ত সময়ে সুবিচার নিশ্চিত করতে শতভাগ দায়িত্ব পালন করতে হবে। শুনানিকালে কোনো বিশেষ পদবিধারী ব্যক্তি বা ক্ষমতাবান পক্ষকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া বিচারকের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত নয়।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, ‘এই পৃথক সচিবালয় (সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়) প্রতিষ্ঠার কোনো স্বার্থকতা নেই, যদি না আমরা ব্যক্তিগত অসততার ব্যাপারে সতর্ক থাকি। একটি স্বাধীন সচিবালয় কেবল শুরু, সর্বশেষ উদ্দেশ্য নয়। আপনাদের উচিত, সততা আর যোগ্যতার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হওয়া। অনুপার্জিত অর্থের বাসনা, অন্যায্য বিলাসী জীবন এবং অসংগত ক্ষমতার প্রতিপত্তি যদি আমাদের মনকে কলুষিত করে রাখে, তাহলে পৃথিবীর কোনো আইনি বিধানই আমাদের সামষ্টিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারবে না।’

বিচারকদের উদ্দেশে রেফাত আহমেদ আরও বলেন, ‘উন্নত জীবনমান ও কর্মপরিবেশের প্রতি প্রত্যাশা কখনোই ব্যক্তিগত ভোগ, আত্মতুষ্টি কিংবা সামাজিক মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্য হতে পারে না। এর অন্তরে থাকতে হবে বিচারিক সক্ষমতার উন্নয়ন, জ্ঞানচর্চার সম্প্রসারণ এবং উচ্চমানের কর্মদক্ষতা অর্জনের সৎ প্রেরণা। এটি অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থায় চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ সংস্কৃতি এখনো কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছায়নি। প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা এখনো একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারিনি। তবে বিদ্যমান সুযোগের ন্যূনতম সদ্ব্যবহারের ক্ষেত্রেও বিচারকদের বড় অংশের অনীহা ও কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ—জ্ঞান অর্জন ও পাঠাভ্যাসকে আপনারা জীবনের পরম দায় হিসেবে নেবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা থাকলেও ভোট নিয়ে শঙ্কা দেখছে না ইসি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার মো. সানাউল্লাহ। ছবি: বাসস

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনার পর আরও চোরাগোপ্তা হামলার শঙ্কা দেখছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে এতে নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই বলে জানানো হয়েছে।

আজ রোববার (১৪ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

সানাউল্লাহ বলেন, ‘আজকে একটা বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের ডেকেছিলাম। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে তফসিল ঘোষণার পর থেকে এই পর্যন্ত উদ্ভূত বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। সামনের আমাদের কার্যক্রম এবং কৌশল কী হওয়া উচিত—সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং তাঁদের বিভিন্ন মত শুনেছি।’

সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় একটা ঘটনা, যেটা আমাদের সবার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। শরিফ ওসমান হাদির ওপরে চোরাগোপ্তা হামলা। সেটা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলছি না। সেখানকার আরও কিছু বিষয় সম্বন্ধে আমরা অবহিত হয়েছে। যেগুলোর সাথে নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনের স্বার্থ জড়িত।’

সানাউল্লাহ বলেন, ‘এখানে কয়েকটা বিষয় উঠে এসেছে যে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হচ্ছে সন্দেহভাজন হিসেবে। তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই একটা সখ্যতা গড়ে তুলে অত্যন্ত কাছে গিয়েছে। দ্বিতীয়ত হচ্ছে যে তার একটা অতীত আছে, পেছনে তার একটা রাজনৈতিক ইন্টারেসিডেন্স (মধ্যস্থতা বা হস্তক্ষেপ) আছে এবং তার একটা ক্রিমিনাল রেকর্ড আছে। সেটা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে আমরা জানতে পারলাম যে রেবেল হান্ট বিশেষ করে—এক শুরু হওয়ার পর থেকে যেসব সন্ত্রাসীদের অ্যারেস্ট করা হয়েছিল, তাদের একটা বড় সংখ্যা ইতিমধ্যে জামিন পেয়ে গেছে এবং তারা সমাজে বিরাজ করছে। এটা নিয়ে আমাদের কী করণীয়—সেটা নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’

দেশে চোরাগোপ্তা হামলার আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সামনেও যে এটা সম্ভাবনা নাই, তা-ও বলছি না। আজকের মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বা এগুলো যাতে কঠোর হস্তে দমন করা হয় ... নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার। নির্বাচন নিয়ে কোনো আশঙ্কা নাই।’

প্রার্থীদের বৈধ অস্ত্র ও লাইসেন্স দেওয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য নজরে আনলে এই নির্বাচন কমিশনার বলে, ‘আমার সাথে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা হয়েছে বলে আমার জানা নাই। উনি কী মন্তব্য করেছেন, কোন প্রেক্ষাপটে করেছেন, আমি যদি জানি পরে আমি আলোকপাত করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন আশিক চৌধুরী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট হাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট হাতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ

মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে ৫৪টি জাতীয় পতাকা উড়িয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ৫৪ জন প্যারাট্রুপার। এই দলে থাকবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে স্কাই ডাইভিং করবেন তিনি।

আজ রোববার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, ‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন। এই ৫৪ জনের একজন আশিক চৌধুরী জাম্প করবেন ওসমান হাদির ছবি আঁকা হেলমেট পরে। বিজয়ের দিনে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় সকলকে দোয়া ও প্রার্থনার আহ্বান জানাই।’

এদিন একই পেজে দেওয়া আরেক পোস্টে বলা হয়, ‘এই বিজয় দিবসে চলে আসুন দলে দলে, এক অবিস্মরণীয় এয়ার শো দেখতে। বিজয়ের ৫৪তম বছরে, ৫৪ জন প্যারাট্রুপার, ৫৪টি জাতীয় পতাকা হাতে বিমান থেকে অবতরণ করবেন, গড়বেন বিশ্ব রেকর্ড। এয়ার শো উপভোগ করতে ব্যবহার করবেন আইডিবির উল্টো পাশের তালতলা গেট। গেট খোলা হবে ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টায়। ১০টার মধ্যেই সবাইকে নির্ধারিত স্থানে সমবেত হওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং গত সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর যৌথ উদ্যোগে স্বাধীনতার ৫৪ বছর উদ্‌যাপনে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাই ডাইভিং করবেন। এটি হবে বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিং, যা গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড গড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দলের জন্য নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ।

আজ রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।

এতে বলা হয়, এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা ও আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাঁদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা ও সাইবার স্পেসে কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন—সে বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত