বিবিসি বাংলায় সাক্ষাৎকার

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’
বিবিসি বাংলায় সাক্ষাৎকার

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায় সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, সংস্কার ও নির্বাচন, ছাত্র নেতৃত্বের নতুন দল গঠনসহ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ নিয়েও কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গও।
প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর তাঁর প্রথম চেষ্টা ছিল দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। এরপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা। তাঁর প্রথম চিন্তাই ছিল সংস্কার।
তিনি বলেন, এর কারণ হলো, যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিস রুল ইত্যাদি—সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনব। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে।
সংস্কার প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার তো এখনো শুরু করিনি...। গত ছয় মাসে বহু পরিবর্তন এসেছে। যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে যে আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটা তো পরিষ্কার—সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই, তার চেয়ে বেশি করব এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।
ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা একটা অপরিচিত জগৎ, আমরা এসেছি। আমরা কোনো এক্সপার্ট এখানে এসে বসি নাই। আমরা এসেছি যার যার জগৎ থেকে, নিজের মতো করে চেষ্টা করছি কীভাবে করতে পারি। তার মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমি তো অস্বীকার করছি না।’
এ পর্যন্ত আত্মতৃপ্তি পাওয়ার মতো কোনো কাজ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনোটাই ভালো হয়নি সে অর্থে। যত ইচ্ছা আমাদের—আমাদের ইচ্ছা তো অনেক। রাতারাতি দেশ পরিবর্তন করতে চাই। সেটা তো আমরা পারি নাই। সময় লাগবে। আমরা চেয়েছিলাম যে এখনই আমরা সংলাপটা শুরু করব। এটাও পারি নাই। সংলাপ শুরু হতে হতেও দেরি হয়ে যাচ্ছে। এগুলো আর কী। যেগুলো সময়মতো আমরা করতে চেয়েছি, ওই সময়ে করতে পারিনি।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘অবনতিটা কোন পয়েন্ট থেকে হয়েছে? এটা বলতে হবে তো আমাকে। আপনি বলছেন, অবনতি হয়েছে। কোন রেফারেন্স পয়েন্ট থেকে অবনতিটা হয়েছে? সেটা না দিলে তো আমরা বুঝতে পারব না।’ তিনি দাবি করেন, ‘অপরাধের পরিমাণ মোটেই বাড়েনি। আগের মতোই রয়েছে।’
পুলিশ বাহিনীকে কার্যকর করতে সময় লেগেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘চেষ্টা করছি আমরা। সমস্যা আপনিও জানেন, আমিও জানি। প্রথম দিকে সমস্যা ছিল যে পুলিশ বাহিনী যাকে দিয়ে আমরা কাজ করাচ্ছিলাম, তারা ভয়ে রাস্তায় নামছিল না। দুই দিন আগে তারা এদেরকে গুলি করেছে। কাজেই মানুষ দেখলেই সে ভয় পায়। কাজেই তাকে ঠিক করতে করতেই আমাদের কয়েক মাস চলে গেছে। এখন মোটামুটি ঠিক হয়ে গেছে। এখন আবার নিয়ম-শৃঙ্খলার দিকে আমরা রওনা হয়েছি। কাজ করতে থাকব।’
তবে প্রধান উপদেষ্টা স্বীকার করেন যে পুলিশকে এখনো সেভাবে সক্রিয় করা সম্ভব হয়নি। তবে অনেক উন্নতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক এবং জাতীয় ঐক্য প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার তো অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে হয় না। কেউ আমাকে অসমর্থন করছে, এ রকম কোনো খবর তো আমি পাই নাই এখনো। সবাই সমর্থন করছে, সবাই চাচ্ছে যে সুন্দরভাবে দেশ চলুক, তাদের সবার মধ্যে ঐক্য আছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের মধ্যে অনেক তফাত আছে। কিন্তু তার মানে এই নয়, ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই।’
ছাত্রদের রাজনৈতিক দল ও গঠন তাদের কার্যক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ আসছে কিছু মহল থেকে, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?’
‘সরকার হিসেবে আমাদের কোনো পজিশন নাই। রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ মোটেও সঠিক নয়’ বলেও জানিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
সেনাবাহিনীও সর্বাত্মকভাবে এই সরকারকে সহযোগিতা করছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘সবাই একসঙ্গে কাজ করতে না পারলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বা বিপন্ন হতে পারে।’ সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্য প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা ওনার বক্তব্য উনি বলবেন। আমার ওনাকে এনডোর্স করা না করার তো বিষয় না।’
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? সরকারপ্রধান হিসেবে কী মনে করেন? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘এটা তো সব সময় থাকে। একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে আনসেটেল করার জন্য। এটা তো সব সময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষণেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটা তো সব সময় থাকবে।’
হুমকিটা কি আপনি বলছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ থেকে আসছে? এ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘অবশ্যই। এটা তো অবভিয়াস। তারা মাঝে মাঝেই ঘোষণা করছে। বক্তৃতা দিচ্ছে। অ্যাড্রেস করছে। আপনি-আমরা সবাই শুনছি। মানুষ উত্তেজিত হচ্ছে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একেবারে প্রত্যেকটা সুপারিশ দেব। সুপারিশের সঙ্গে কথা থাকবে যে আপনার রাজনৈতিক দল এটা কি সমর্থন করে? এটাতে রাজি আছেন? রাজি থাকলে বলেন, রাজি না থাকলে বলেন। বা এই যে সুপারিশটা আছে, সেটার মধ্যে যদি কোনো একটা সংশোধনী এনে রাজি হবেন, সেটা বলেন। এটা কি নির্বাচনের আগে সংশোধন করা ঠিক হবে নাকি নির্বাচনের পরে—সব প্রশ্নের এখানেই সমাবেশ আছে।
‘রাজনৈতিক দলকে শুধু বলতে হবে কোনটা? সবকিছু মেলালে আমরা এটা ঠিক করব কোন সুপারিশে সবাই একমত হয়েছে। সেটা আলাদা করব যে এটাতে সবাই একমত হয়েছে। এ রকম যে সমস্ত সুপারিশে তারা একমত হয়েছে, সেগুলো আমরা আলাদা একটা কাগজে নিয়ে আসব যে এই সব বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। তবে এটাকে আমরা বলব একটা চার্টার–জুলাই চার্টার।
‘সবাইকে আহ্বান জানাব, আপনারা সবাই যেহেতু একমত হয়েছেন এটাতে সই করে দেন। জুলাই চার্টারের মতোই আমরা চলব। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই নির্বাচনটা হবে। নির্বাচনের আগে যেটা বলেছেন সেটা নির্বাচনের আগে হবে, যেটা নির্বাচনের পরে বলেছেন, সেটা নির্বাচনের পরে হবে। এটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু আপনারা একমত হয়েছেন। সেই ঐকমত্যই আমরা গঠন করার চেষ্টা করছি।’
নির্বাচনটা এ বছরের মধ্যেই হচ্ছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তো সেটা ঘোষণা করে দিয়েছি। আবার নতুন করে বলার তো কিছু নাই।’
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘(সম্পর্ক) খুবই ভালো। আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি, আমাদের সম্পর্ক সব সময় ভালো থাকবে। এখনো ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে। বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারব না। তবে মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা, সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল-বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল-বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।’ ভারত সরকারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ইলন মাস্কের সঙ্গে সাম্প্রতিক আলাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা মূলত ছিল স্টারলিংক নিয়ে। এটা ব্যবসায়িক একটা সম্পর্কের বিষয় ছিল। সে বিষয়ে আমরা আলাপ করছি যে স্টারলিংকের কানেকশনটা আমরা নিতে চাই।’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি অত ডিটেইলসে যাচ্ছি না। আমার বরাবরই পজিশন হলো যে আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক। আমাদের এই দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমরা সব ভাই ভাই। আমাদের এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেওয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিত, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার যোগাযোগ প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, ‘যখনই প্রয়োজন হয়। শুধু শুধু তো গিয়ে ওনার সময় নষ্ট করার দরকার নাই। যখনই দরকার হয়, আমি তো তাঁর কাছে যাই।’
সবশেষ রাজনীতি করার কোনো আকাঙ্ক্ষা আছে কি না, এ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘প্রথম কথা, আমি রাজনৈতিক দল গঠন করি নাই। গঠন করার কথা বলেছিলাম। এবং দশ সপ্তাহ যাবৎ এই কথা জারি ছিল। দশ সপ্তাহ পর আমি বলেছি—না, আমি রাজনীতিতে যাব না। আমি বলেছি যে পলিটিকস ইজ নট মাই কাপ অব টি। এবং ওটা ওখানেই সমাপ্ত। এরপর আমাকে রাজনীতির কাছে কেউ টানতে পারেনি। সবাই চেষ্টা করেছে দেশের নেতৃত্ব নেন, আপনি প্রধানমন্ত্রী হন। সবাই চেষ্টা করেছে। আমি ওটা চাই নাই। আমি বলেছি, ওই চ্যাপটার শেষ। এই দশ সপ্তাহ-দ্যাটস এনাফ। কাজেই ওইভাবেই আছি এখন। এখানে আমি রাজনীতিতে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। রাজনীতি করিও না।’

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
২৩ মিনিট আগে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
২৬ মিনিট আগে
রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন আচরণবিধিতে পোস্টার, ড্রোন, বিদেশে প্রচারণা এবং ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার না করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নানের ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং তাঁর সহযোগী সানজিদা আক্তারের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ আজ মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
দুদকের আবেদন থেকে দেখা যায়, ফ্ল্যাট দুটি ঢাকার নিকুঞ্জে অবস্থিত। এ ছাড়া ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৩ টাকা রয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, আব্দুল হান্নান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা করা হয়।
মামলার তদন্তকালে বিভিন্ন নথিপত্র ও জব্দ করা আলামত পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেখ আব্দুল হান্নান বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ গোপন করার উদ্দেশ্যে তাঁর সহযোগী সানজিদা আক্তারের নামে তা ক্রয় করেছেন এবং এ বিষয়ে সানজিদা আক্তার তাঁকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি সানজিদা আক্তারের নামে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জে ৯৫ লাখ টাকার দুটি ফ্ল্যাট করে দিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁর নামে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার এফডিআর সংরক্ষিত আছে এবং তল্লাশিকালে তাঁর বাসা থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়, যা তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে প্রতীয়মান হয়।
তদন্তকালে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সানজিদা আক্তার এসব স্থাবর সম্পদ ও আব্দুল হান্নান তাঁর অস্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন।
তদন্ত নিষ্পত্তির আগে এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে ওই টাকা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তাঁদের এসব স্থাবর সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান শেখ আব্দুল হান্নানের ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ এবং তাঁর সহযোগী সানজিদা আক্তারের দুটি ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ আজ মঙ্গলবার এ নির্দেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
দুদকের আবেদন থেকে দেখা যায়, ফ্ল্যাট দুটি ঢাকার নিকুঞ্জে অবস্থিত। এ ছাড়া ১০টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে ৪০ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮৩ টাকা রয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, আব্দুল হান্নান ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের অনুসন্ধান শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা করা হয়।
মামলার তদন্তকালে বিভিন্ন নথিপত্র ও জব্দ করা আলামত পর্যালোচনায় দেখা যায়, শেখ আব্দুল হান্নান বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ গোপন করার উদ্দেশ্যে তাঁর সহযোগী সানজিদা আক্তারের নামে তা ক্রয় করেছেন এবং এ বিষয়ে সানজিদা আক্তার তাঁকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি সানজিদা আক্তারের নামে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার নিকুঞ্জে ৯৫ লাখ টাকার দুটি ফ্ল্যাট করে দিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে তাঁর নামে প্রায় ৪৫ লাখ টাকার এফডিআর সংরক্ষিত আছে এবং তল্লাশিকালে তাঁর বাসা থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা উদ্ধার করা হয়, যা তাঁর জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে প্রতীয়মান হয়।
তদন্তকালে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, সানজিদা আক্তার এসব স্থাবর সম্পদ ও আব্দুল হান্নান তাঁর অস্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন।
তদন্ত নিষ্পত্তির আগে এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরবর্তী সময়ে ওই টাকা উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তাঁদের এসব স্থাবর সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে ক্রোক এবং অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
২৬ মিনিট আগে
রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন আচরণবিধিতে পোস্টার, ড্রোন, বিদেশে প্রচারণা এবং ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার না করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় দুদকের করা মামলার রায় ঘোষণার সময় আব্দুস সালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, অভিযোগের প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় আসামিকে খালাস দেওয়া হলো।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, দুদক ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর আব্দুস সালামকে সম্পদের হিসাব দাখিলের নোটিশ পাঠায়। আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার কথা থাকলেও একাধিকবার সময় নেন তিনি। এরপরেও তিনি তা দাখিল করেননি। ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি সময়সীমা শেষ হয় এবং একই বছরের ১৩ এপ্রিল দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক মো. সামছুল আলম রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।
পরে মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের উপপরিচালক মোহা. নূরুল হুদা। তদন্ত শেষে ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আব্দুস সালামকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।
আদালত মামলার বিচার চলাকালে নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
সম্পদের হিসাব দাখিল না করায় দুদকের করা মামলার রায় ঘোষণার সময় আব্দুস সালাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, অভিযোগের প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় আসামিকে খালাস দেওয়া হলো।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, দুদক ২০১৬ সালের ২১ নভেম্বর আব্দুস সালামকে সম্পদের হিসাব দাখিলের নোটিশ পাঠায়। আইন অনুযায়ী সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার কথা থাকলেও একাধিকবার সময় নেন তিনি। এরপরেও তিনি তা দাখিল করেননি। ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি সময়সীমা শেষ হয় এবং একই বছরের ১৩ এপ্রিল দুদকের তৎকালীন উপপরিচালক মো. সামছুল আলম রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।
পরে মামলাটি তদন্ত করেন দুদকের উপপরিচালক মোহা. নূরুল হুদা। তদন্ত শেষে ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি আব্দুস সালামকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়।
আদালত মামলার বিচার চলাকালে নয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেন।

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
২৩ মিনিট আগে
রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।
১ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন আচরণবিধিতে পোস্টার, ড্রোন, বিদেশে প্রচারণা এবং ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার না করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর একই আদালত মেঘনা আলমের পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন।
আজ মেঘনা আলমের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মহিমা বাঁধন ও মহাসিন রেজা পলাশ পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। তাঁরা আদালতকে বলেন, পেশাগত কারণে মেঘনা আলমকে প্রায়ই বিদেশ যেতে হয়। তাই তাঁর পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হোক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, মামলাটি গুরুতর অভিযোগের। এখনো তদন্ত চলছে। এ কারণে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। শুনানি শেষে আদালত নামঞ্জুর করেন।
এদিকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের সময় জব্দ করা ম্যাকবুক, দুটি মোবাইল ফোনসেট ও ল্যাপটপের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আজও প্রতিবেদন দাখিল না করায় সেগুলো ফেরতের বিষয়ে আদেশ হয়নি।
গত ২২ জুন মেঘনা আলম তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা ম্যাকবুক, পাসপোর্ট, মোবাইল ও ল্যাপটপ জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন। গত ২৯ জুলাই ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে মোবাইল ও ল্যাপটপে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দেন।
গত ২৮ এপ্রিল মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। অন্যদিকে আদালত তাঁকে জামিন দেন। ওই দিনই কারামুক্ত হন তিনি। এর পর থেকে তিনি জামিনে আছেন।
গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। পরদিন ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১৭ এপ্রিল কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে মেঘনাকে ধানমন্ডি থানার চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেঘনা আলম ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেওয়ান সমির এবং আরও দু-তিনজন পরস্পর যোগসাজশে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনা করেন। এই অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল আলিম মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য, যারা সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনী ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করতেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি জাপানি রেস্টুরেন্টে এক কূটনীতিকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনায় বৈঠক করে তারা।
মেঘনা আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। অন্যদিকে ল্যাপটপ এবং মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তা দাখিল না করায় সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিচারব্যবস্থা ধীর গতিতে চলছে। আমি ত্বরান্বিত করার দাবি জানাই।’
অবশ্য মেঘনা আলম বলেন, ‘আজ বিজ্ঞ আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে ফরেনসিক রিপোর্ট দাখিল করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।’

রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর একই আদালত মেঘনা আলমের পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন।
আজ মেঘনা আলমের পক্ষে তাঁর আইনজীবী মহিমা বাঁধন ও মহাসিন রেজা পলাশ পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে আবেদন করেন। তাঁরা আদালতকে বলেন, পেশাগত কারণে মেঘনা আলমকে প্রায়ই বিদেশ যেতে হয়। তাই তাঁর পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হোক।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এর বিরোধিতা করে বলেন, মামলাটি গুরুতর অভিযোগের। এখনো তদন্ত চলছে। এ কারণে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। শুনানি শেষে আদালত নামঞ্জুর করেন।
এদিকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তারের সময় জব্দ করা ম্যাকবুক, দুটি মোবাইল ফোনসেট ও ল্যাপটপের বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা আজও প্রতিবেদন দাখিল না করায় সেগুলো ফেরতের বিষয়ে আদেশ হয়নি।
গত ২২ জুন মেঘনা আলম তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা ম্যাকবুক, পাসপোর্ট, মোবাইল ও ল্যাপটপ জিম্মায় নেওয়ার আবেদন করেন। গত ২৯ জুলাই ওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে মোবাইল ও ল্যাপটপে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দেন।
গত ২৮ এপ্রিল মেঘনা আলমের ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল করা হয়। অন্যদিকে আদালত তাঁকে জামিন দেন। ওই দিনই কারামুক্ত হন তিনি। এর পর থেকে তিনি জামিনে আছেন।
গত ৯ এপ্রিল বাসা থেকে আটক হন মেঘনা আলম। পরদিন ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ১৭ এপ্রিল কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে মেঘনাকে ধানমন্ডি থানার চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
মেঘনা আলম ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী দেওয়ান সমির এবং আরও দু-তিনজন পরস্পর যোগসাজশে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনা করেন। এই অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক মোহাম্মদ আবদুল আলিম মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য, যারা সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনী ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেল করে অর্থ আদায় করতেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ মার্চ ধানমন্ডির একটি জাপানি রেস্টুরেন্টে এক কূটনীতিকের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের পরিকল্পনায় বৈঠক করে তারা।
মেঘনা আলম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার পাসপোর্ট ফেরতের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। অন্যদিকে ল্যাপটপ এবং মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট তদন্ত কর্মকর্তা দাখিল না করায় সেগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। বিচারব্যবস্থা ধীর গতিতে চলছে। আমি ত্বরান্বিত করার দাবি জানাই।’
অবশ্য মেঘনা আলম বলেন, ‘আজ বিজ্ঞ আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে ফরেনসিক রিপোর্ট দাখিল করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।’

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
২৩ মিনিট আগে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
২৬ মিনিট আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন আচরণবিধিতে পোস্টার, ড্রোন, বিদেশে প্রচারণা এবং ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার না করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন আচরণবিধিতে পোস্টার, ড্রোন, বিদেশে প্রচারণা এবং ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার না করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) আচরণবিধিটি গেজেট আকারে প্রকাশ করে ইসি। এতে বলা হয়েছে, আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড, দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং দলের জন্যও সমপরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান থাকবে। প্রয়োজনে তদন্তের ভিত্তিতে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও থাকবে কমিশনের হাতে।
ইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও ২০০৮ সালের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আগে ৩ নভেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা
কোনো প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা দল বা প্রার্থীসংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি প্রচার-প্রচারণা শুরুর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে।
আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা যাবে না। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কারও চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন-সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ সব ধরনের ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না। প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোনো জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা যাবে না। সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচন-সংক্রান্ত সব কনটেন্ট শেয়ার ও প্রকাশের আগে সত্যতা যাচাই করতে হবে।
রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে কিংবা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তির চরিত্র হনন; কিংবা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে, সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে, সাধারণভাবে বা সম্পাদন করে কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা কোনো মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ এবং মানহানিকর কোনো কনটেন্ট তৈরি, প্রকাশ, প্রচার ও শেয়ার করতে পারবেন না। গুজব ও এআই অপব্যবহার বন্ধে নির্বাচনী অপরাধ বিবেচনায় শাস্তির বিধান রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এবার নতুন ধারা যুক্ত করা হয়।
আচরণবিধিতে আরও যা রয়েছে
কোনো দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোনো প্রচারণা করতে পারবে না; ভোটের প্রচারে থাকছে না পোস্টারের ব্যবহার। একজন প্রার্থী তাঁর সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন না; যার দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আর প্রস্থ ৯ ফুট।
নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ-জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবে। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না; বিলবোর্ডে শুধু যেগুলো ডিজিটাল বিলবোর্ড, সেগুলোতে আলো ও বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তা ছাড়া আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেটে পলিথিনের আবরণ নয়, প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না; সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না; প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে; প্রচারসামগ্রীতে পলিথিন, রেক্সিন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে; আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে প্রার্থী ও দলের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামাও দিতে হবে; আচরণবিধির ‘গুরুতর’ অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। আগে আচরণবিধিতে আরপিও অনুচ্ছেদটি ছিল না, এবার যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী অপরাধে আরপিও ৯১ ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিল করে থাকে ইসি। এ বিষয়টি আচরণ বিধিমালায় স্পষ্ট করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আসনে সব প্রার্থীকে নিয়ে এক দিনে তাঁদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থা করবেন; প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে এবার। দেশের ভেতরে তিন ধরনের ব্যক্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি-২০২৫’ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নতুন আচরণবিধিতে পোস্টার, ড্রোন, বিদেশে প্রচারণা এবং ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার না করাসহ বেশ কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার (১০ নভেম্বর) আচরণবিধিটি গেজেট আকারে প্রকাশ করে ইসি। এতে বলা হয়েছে, আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড, দেড় লাখ টাকা জরিমানা এবং দলের জন্যও সমপরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান থাকবে। প্রয়োজনে তদন্তের ভিত্তিতে প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও থাকবে কমিশনের হাতে।
ইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও ২০০৮ সালের আচরণবিধির সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আগে ৩ নভেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা
কোনো প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে প্রার্থী বা তাঁর নির্বাচনী এজেন্ট বা দল বা প্রার্থীসংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যমের নাম, অ্যাকাউন্ট আইডি, ই-মেইল আইডিসহ অন্যান্য শনাক্তকরণ তথ্যাদি প্রচার-প্রচারণা শুরুর আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দাখিল করতে হবে।
আচরণ বিধিমালায় বলা হয়েছে, প্রচার-প্রচারণাসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কোনো বিষয়ে অসৎ উদ্দেশ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করা যাবে না। ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ভুল তথ্য, কারও চেহারা বিকৃত করা ও নির্বাচন-সংক্রান্ত বানোয়াট তথ্যসহ সব ধরনের ক্ষতিকর কনটেন্ট বানানো ও প্রচার করা যাবে না। প্রতিপক্ষ, নারী, সংখ্যালঘু বা অন্য কোনো জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা উসকানিমূলক ভাষা ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী স্বার্থ হাসিলের জন্য ধর্মীয় বা জাতিগত অনুভূতির অপব্যবহার করা যাবে না। সামাজিক মাধ্যমে নির্বাচন-সংক্রান্ত সব কনটেন্ট শেয়ার ও প্রকাশের আগে সত্যতা যাচাই করতে হবে।
রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি, ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে কিংবা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তির চরিত্র হনন; কিংবা সুনাম নষ্ট করার উদ্দেশ্যে, সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোনো মাধ্যমে, সাধারণভাবে বা সম্পাদন করে কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা কোনো মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, পক্ষপাতমূলক, বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ এবং মানহানিকর কোনো কনটেন্ট তৈরি, প্রকাশ, প্রচার ও শেয়ার করতে পারবেন না। গুজব ও এআই অপব্যবহার বন্ধে নির্বাচনী অপরাধ বিবেচনায় শাস্তির বিধান রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এবার নতুন ধারা যুক্ত করা হয়।
আচরণবিধিতে আরও যা রয়েছে
কোনো দল বা প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিদেশে জনসভা, পথসভা, সভা-সমাবেশ বা কোনো প্রচারণা করতে পারবে না; ভোটের প্রচারে থাকছে না পোস্টারের ব্যবহার। একজন প্রার্থী তাঁর সংসদীয় আসনে ২০টির বেশি বিলবোর্ড ব্যবহার করতে পারবেন না; যার দৈর্ঘ্য হবে সর্বোচ্চ ১৬ ফুট আর প্রস্থ ৯ ফুট।
নির্বাচনের দিন ও প্রচারের সময় কোনো ধরনের ড্রোন, কোয়াডকপ্টার বা এ-জাতীয় যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে অন্য কোনো প্রার্থী ও প্রতিষ্ঠান ভোটার স্লিপ বিতরণ করতে পারবে। তবে ভোটার স্লিপে প্রার্থীর নাম, ছবি, পদের নাম ও প্রতীক উল্লেখ করতে পারবে না; বিলবোর্ডে শুধু যেগুলো ডিজিটাল বিলবোর্ড, সেগুলোতে আলো ও বিদ্যুতের ব্যবহার করা যাবে। তা ছাড়া আলোকসজ্জার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ব্যানার, ফেস্টুন, লিফলেটে পলিথিনের আবরণ নয়, প্লাস্টিক (পিভিসি) ব্যানার ব্যবহার করা যাবে না; সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তালিকায় অন্তর্বর্তীকালীন বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদেরও যোগ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন না; প্রচারে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়েছে; প্রচারসামগ্রীতে পলিথিন, রেক্সিন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রচারের সময় শব্দের মাত্রা ৬০ ডেসিবেলে রাখতে হবে; আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে প্রার্থী ও দলের কাছ থেকে অঙ্গীকারনামাও দিতে হবে; আচরণবিধির ‘গুরুতর’ অপরাধের ক্ষেত্রে আরপিওতে প্রার্থিতা বাতিলের বিধান রয়েছে। আগে আচরণবিধিতে আরপিও অনুচ্ছেদটি ছিল না, এবার যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী অপরাধে আরপিও ৯১ ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিল করে থাকে ইসি। এ বিষয়টি আচরণ বিধিমালায় স্পষ্ট করা হয়েছে।
গণমাধ্যমের সংলাপ ও সব প্রার্থীর এক মঞ্চে ইশতেহার ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট আসনে সব প্রার্থীকে নিয়ে এক দিনে তাঁদের ইশতেহার বা ঘোষণাপত্রগুলো পাঠ করার ব্যবস্থা করবেন; প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে এবার। দেশের ভেতরে তিন ধরনের ব্যক্তি ও প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটাররা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন।

ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ নেতারাই দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।...
০৩ মার্চ ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ নির্দেশ দেন বলে জানান সংস্থাটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আক্তারুল ইসলাম।
২৩ মিনিট আগে
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলায় একুশে টেলিভিশনের (ইটিভি) চেয়ারম্যান ও সিইও আব্দুস সালামকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
২৬ মিনিট আগে
রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদা দাবির মামলায় আলোচিত মডেল মেঘনা আলমের জব্দ করা পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে করা আবেদন আবারও নামঞ্জুর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম নামঞ্জুরের এই আদেশ দেন।
১ ঘণ্টা আগে