জাহাঙ্গীর আলম

আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মহান শহীদ দিবস, একই সঙ্গে এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালের এই দিন মাতৃভাষার মর্যাদার রক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। এই আত্মত্যাগের বৈশ্বিক স্বীকৃতি হিসেবে এই দিনটি এখন ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মাতৃভাষাকে উন্নীত করার জন্য প্রতি বছর উদ্যাপন করা হয়।
কিন্তু শিগগিরই মাতৃভাষার ধারণা গিয়ে ঠেকেছে তথাকথিত শুদ্ধ ও প্রমিত বাংলায়। শিক্ষিত বাবা–মায়েরা শৈশব থেকেই সন্তানদের ভাষাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য মুখ থেকে যেকোনো প্রকারের গ্রাম্যতা দূর করার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। করুণ বাস্তবতা হচ্ছে, ছোটকালে এই প্রমিতকরণের পাল্লায় পড়ে আমাদের ঠোঁটের প্রতিটি শব্দই অস্বাভাবিক মনে হয়। স্কুলের পরীক্ষার খাতায় লিখিত প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা, জাতে ওঠার জন্য শেখা ইংরেজি, দাদা–দাদি নানা–নানির ‘উপভাষায়’ বলা স্থানীয় শব্দ ঠোঁটে ঝুলে থাকে, গলার অর্ধেক পথে আটকে যায় কিন্তু মুখে প্রকাশ পায় না। গ্রামে বেড়ে ওঠা প্রতিটি শিশুরই এমন অভিজ্ঞতা হয়।
আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
এভাবে, আমরা সর্বশক্তিমান প্রমিত ও ইংরেজির কাছে নতজানু হয়ে পড়ছি। ব্যাকরণের নিয়ম আত্মস্থ করে ভদ্রস্থ বাংলা এবং বাজার অর্থনীতির যুগে জাতের ওঠার উচ্চাভিলাষের ফাঁদে বাংলাকে উপেক্ষা করছি। আমাদের শ্রম, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করছি তথাকথিত কেজো ভাষা শিক্ষায়!
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলার যে বেহাল দশা তার একটি চিত্র এখানে স্পষ্ট। ২০২৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) একটি সমীক্ষা প্রকাশ পায়। তাতে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির ৭৬ শতাংশ ও চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঠিকমতো বাংলা পড়তে পারে না। তৃতীয় শ্রেণির প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী বর্ণ (অক্ষর) ও শব্দ ঠিকঠাক চিনতে পারে না। চতুর্থ শ্রেণির ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শব্দ চিনতে পারে না। আর পড়ার (রিডিং) ক্ষেত্রেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ঘাম ছুটে যায়!
১৮৩৫ সালে লর্ড ম্যাকলে তাঁর শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাবে একটি শ্রেণি তৈরি করার যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন যারা দোভাষী হতে পারে...যারা রক্তে এবং বর্ণে ভারতীয় কিন্তু রুচি, মতামত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিতে হবে ইংরেজ। আমরা আমাদের মুখের ভাষা, সংস্কৃতি ও স্থানীয় জ্ঞানকে পশ্চিমা বিশ্বের শ্রম ও ভোক্তা বাজারে পরিণত করার জন্য বিনিময় করেছি। আমাদের স্থানীয় ভাষাগুলো নিকৃষ্ট, অলিখিত (যদি কথ্য হয়) এবং যেকোনো গুরুতর জ্ঞান সৃষ্টি বা প্রচার প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার জন্য অক্ষম থেকে গেছে। আধুনিককালে ইংরেজির দাপটে আমরা দিশেহারা হয়ে তাকেই আলিঙ্গন করেছি।
বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রথম এ দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এই শিক্ষানীতি ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন কৌশল ও পরিকল্পনাপত্রে এ বিষয়টির উল্লেখ বেশ আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। কিন্তু এখনো সব ভাষায় শিশুদের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সম্ভব হয়নি। আর আঞ্চলিক ভাষা তো বরাবরই উপেক্ষিত। এমনকি জনপরিসরে আঞ্চলিক ভাষায় ভাব বিনিময়ও রীতিমতো লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলত শহুরে ও গ্রামীণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং আঞ্চলিক ও নৃগোষ্ঠীর ভাষা এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অবিচল বিভেদ তৈরি হয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি শিক্ষানীতির বাইরে রয়ে গেছে দেশের ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালোরিয়েট (আইবি) এবং কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইজিসিএসই)–এর সঙ্গে যুক্ত স্কুলগুলো। আবার এমন স্কুল রয়েছে যেগুলোর আসলে এ ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নেই। এই স্কুলগুলো স্থানীয় ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা দমিয়ে রাখে।
ইদানীং শিক্ষার্থীদের একটি নতুন প্রজন্ম দেখা যাচ্ছে। এরা সংকর ভাষায় কথা বলে। কিন্তু তাদের ডিএনএ–তে সে অর্থে বাংলা ভাষা নেই। এমনকি হিন্দিতে বোল ফুটছে ভালোই, কিন্তু বাংলা বলতে গিয়ে আটক যাচ্ছে। এমন অনেক শিশু আছে যারা ইংরেজিতে কথা বলে, বাংলায় একটি শব্দও বোঝে না।
বাবা–মায়েরা নিজেদের ভাষা হীনমন্যতায় গর্বিত! ‘আমার বাচ্চা ইংরেজিতে কথা বলতে পারে’, এই গর্ব ক্রমে ‘আমার বাচ্চা তো বাংলা বলতেই না’ এই এ পর্যায়ে পর্যবসিত হয়। অভিভাবকদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা হচ্ছে, বাংলা আর শ্রম বা মর্যাদার বাজারে বিপণনযোগ্য নয়, সুতরাং এ ভাষা সন্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখানোর প্রয়োজন নেই, কাজ চালানোর মতো হলেই হবে!
এই প্রবণতা নাগরিকদের একটি নতুন শ্রেণির জন্মকে চিহ্নিত করছে। তারা সে অর্থে ম্যাকলের দোভাষী শ্রেণি নয়; বরং, নিজস্ব পরিচয় স্পষ্ট করতে তাদের আরও আরও সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হবে। তাদের কথিত বৈশ্বিকতা তাদের স্থানীয় সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্তির বিচ্ছেদের দিকে ঝোঁক তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক বোর্ডের (ইংরেজি মাধ্যম) শহুরে শিশুরা জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পড়াশোনা করা গ্রামীণ শিশুদের কিছুই বুঝবে না—এই দুই শ্রেণির মধ্যে কোনো সংযোগকারী কোনো ভাষা নেই। দেশীয় ভাষায় সাহিত্য এবং জ্ঞান নিয়ে আলোচনা তো আরও দূরের কথা। প্রমিত বাংলা ও ইংরেজির দাপটে আঞ্চলিক ভাষার বাগধারাগুলো আমাদের দৈনন্দিন ভাষা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে, এতে বাংলার মধ্যে ইংরেজি শব্দ প্রক্ষিপ্ত হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।
অবশ্য এর জন্য শুধু গ্লোবালাইজেশন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ আর বাজার অর্থনীতির পাশাপাশি অভিভাবকদের হীনম্মন্যতাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। মূলত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকতেই অভিভাবকদের ক্রমেই ইংরেজিপ্রীতি ও বাংলার প্রতি অবহেলা বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলার ব্যাপক ব্যবহার ও উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তি পর্যায়েও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। ইন্টারনেটের এই যুগে শিশুরা ফিডার ধরতে শেখার আগে মোবাইল হাতে পায়। ইন্টারনেটে শিশুদের উপযোগী বাংলায় ভালো কোনো কনটেন্ট নেই, যেগুলো তারা আনন্দের সঙ্গে দেখবে। ফলে কথা বলতে শেখার আগেই হাতের মুঠোয় পাচ্ছে হিন্দি অথবা ইংরেজি কনটেন্ট। বাংলা শেখার আগেই শিশু ইংরেজিতে গড়গড় করে কথা বলা শিখছে, সেটি অভিভাবকদের জন্য আনন্দের বিষয়ই তো বটে!
বাংলাদেশের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২১ ফেব্রুয়ারি। ২০০২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটিকে স্বাগত জানানো হয়।
ভাষাগত বৈচিত্র্যের মর্যাদা রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শেখার অধিকারকে সমর্থন করার জন্য এই দিবসটি গৃহীত হয়। যাতে শিশুরা আরও ভালো বোঝাপড়া, সম্পৃক্ততা এবং চিন্তার দক্ষতা অর্জন করতে পারে—এটিই ছিল উদ্দেশ্য। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হয়নি এমন স্থানে টিকে থাকা ভাষাগুলো কত স্তরের দমন সহ্য করছে, সেটিরও একটি অনুস্মারক এটি। আধুনিক শিক্ষা ধারণায় মায়েদের এবং মাতৃভাষাগুলোকে সন্তানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে অক্ষম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এভাবেই তাদের প্রান্তিক করে রাখা হয়।
লেখক: আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক

আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মহান শহীদ দিবস, একই সঙ্গে এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালের এই দিন মাতৃভাষার মর্যাদার রক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। এই আত্মত্যাগের বৈশ্বিক স্বীকৃতি হিসেবে এই দিনটি এখন ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মাতৃভাষাকে উন্নীত করার জন্য প্রতি বছর উদ্যাপন করা হয়।
কিন্তু শিগগিরই মাতৃভাষার ধারণা গিয়ে ঠেকেছে তথাকথিত শুদ্ধ ও প্রমিত বাংলায়। শিক্ষিত বাবা–মায়েরা শৈশব থেকেই সন্তানদের ভাষাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য মুখ থেকে যেকোনো প্রকারের গ্রাম্যতা দূর করার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। করুণ বাস্তবতা হচ্ছে, ছোটকালে এই প্রমিতকরণের পাল্লায় পড়ে আমাদের ঠোঁটের প্রতিটি শব্দই অস্বাভাবিক মনে হয়। স্কুলের পরীক্ষার খাতায় লিখিত প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা, জাতে ওঠার জন্য শেখা ইংরেজি, দাদা–দাদি নানা–নানির ‘উপভাষায়’ বলা স্থানীয় শব্দ ঠোঁটে ঝুলে থাকে, গলার অর্ধেক পথে আটকে যায় কিন্তু মুখে প্রকাশ পায় না। গ্রামে বেড়ে ওঠা প্রতিটি শিশুরই এমন অভিজ্ঞতা হয়।
আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
এভাবে, আমরা সর্বশক্তিমান প্রমিত ও ইংরেজির কাছে নতজানু হয়ে পড়ছি। ব্যাকরণের নিয়ম আত্মস্থ করে ভদ্রস্থ বাংলা এবং বাজার অর্থনীতির যুগে জাতের ওঠার উচ্চাভিলাষের ফাঁদে বাংলাকে উপেক্ষা করছি। আমাদের শ্রম, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করছি তথাকথিত কেজো ভাষা শিক্ষায়!
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলার যে বেহাল দশা তার একটি চিত্র এখানে স্পষ্ট। ২০২৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) একটি সমীক্ষা প্রকাশ পায়। তাতে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির ৭৬ শতাংশ ও চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঠিকমতো বাংলা পড়তে পারে না। তৃতীয় শ্রেণির প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী বর্ণ (অক্ষর) ও শব্দ ঠিকঠাক চিনতে পারে না। চতুর্থ শ্রেণির ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শব্দ চিনতে পারে না। আর পড়ার (রিডিং) ক্ষেত্রেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ঘাম ছুটে যায়!
১৮৩৫ সালে লর্ড ম্যাকলে তাঁর শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাবে একটি শ্রেণি তৈরি করার যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন যারা দোভাষী হতে পারে...যারা রক্তে এবং বর্ণে ভারতীয় কিন্তু রুচি, মতামত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিতে হবে ইংরেজ। আমরা আমাদের মুখের ভাষা, সংস্কৃতি ও স্থানীয় জ্ঞানকে পশ্চিমা বিশ্বের শ্রম ও ভোক্তা বাজারে পরিণত করার জন্য বিনিময় করেছি। আমাদের স্থানীয় ভাষাগুলো নিকৃষ্ট, অলিখিত (যদি কথ্য হয়) এবং যেকোনো গুরুতর জ্ঞান সৃষ্টি বা প্রচার প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার জন্য অক্ষম থেকে গেছে। আধুনিককালে ইংরেজির দাপটে আমরা দিশেহারা হয়ে তাকেই আলিঙ্গন করেছি।
বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রথম এ দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এই শিক্ষানীতি ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন কৌশল ও পরিকল্পনাপত্রে এ বিষয়টির উল্লেখ বেশ আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। কিন্তু এখনো সব ভাষায় শিশুদের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সম্ভব হয়নি। আর আঞ্চলিক ভাষা তো বরাবরই উপেক্ষিত। এমনকি জনপরিসরে আঞ্চলিক ভাষায় ভাব বিনিময়ও রীতিমতো লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলত শহুরে ও গ্রামীণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং আঞ্চলিক ও নৃগোষ্ঠীর ভাষা এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অবিচল বিভেদ তৈরি হয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি শিক্ষানীতির বাইরে রয়ে গেছে দেশের ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালোরিয়েট (আইবি) এবং কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইজিসিএসই)–এর সঙ্গে যুক্ত স্কুলগুলো। আবার এমন স্কুল রয়েছে যেগুলোর আসলে এ ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নেই। এই স্কুলগুলো স্থানীয় ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা দমিয়ে রাখে।
ইদানীং শিক্ষার্থীদের একটি নতুন প্রজন্ম দেখা যাচ্ছে। এরা সংকর ভাষায় কথা বলে। কিন্তু তাদের ডিএনএ–তে সে অর্থে বাংলা ভাষা নেই। এমনকি হিন্দিতে বোল ফুটছে ভালোই, কিন্তু বাংলা বলতে গিয়ে আটক যাচ্ছে। এমন অনেক শিশু আছে যারা ইংরেজিতে কথা বলে, বাংলায় একটি শব্দও বোঝে না।
বাবা–মায়েরা নিজেদের ভাষা হীনমন্যতায় গর্বিত! ‘আমার বাচ্চা ইংরেজিতে কথা বলতে পারে’, এই গর্ব ক্রমে ‘আমার বাচ্চা তো বাংলা বলতেই না’ এই এ পর্যায়ে পর্যবসিত হয়। অভিভাবকদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা হচ্ছে, বাংলা আর শ্রম বা মর্যাদার বাজারে বিপণনযোগ্য নয়, সুতরাং এ ভাষা সন্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখানোর প্রয়োজন নেই, কাজ চালানোর মতো হলেই হবে!
এই প্রবণতা নাগরিকদের একটি নতুন শ্রেণির জন্মকে চিহ্নিত করছে। তারা সে অর্থে ম্যাকলের দোভাষী শ্রেণি নয়; বরং, নিজস্ব পরিচয় স্পষ্ট করতে তাদের আরও আরও সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হবে। তাদের কথিত বৈশ্বিকতা তাদের স্থানীয় সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্তির বিচ্ছেদের দিকে ঝোঁক তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক বোর্ডের (ইংরেজি মাধ্যম) শহুরে শিশুরা জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পড়াশোনা করা গ্রামীণ শিশুদের কিছুই বুঝবে না—এই দুই শ্রেণির মধ্যে কোনো সংযোগকারী কোনো ভাষা নেই। দেশীয় ভাষায় সাহিত্য এবং জ্ঞান নিয়ে আলোচনা তো আরও দূরের কথা। প্রমিত বাংলা ও ইংরেজির দাপটে আঞ্চলিক ভাষার বাগধারাগুলো আমাদের দৈনন্দিন ভাষা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে, এতে বাংলার মধ্যে ইংরেজি শব্দ প্রক্ষিপ্ত হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।
অবশ্য এর জন্য শুধু গ্লোবালাইজেশন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ আর বাজার অর্থনীতির পাশাপাশি অভিভাবকদের হীনম্মন্যতাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। মূলত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকতেই অভিভাবকদের ক্রমেই ইংরেজিপ্রীতি ও বাংলার প্রতি অবহেলা বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলার ব্যাপক ব্যবহার ও উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তি পর্যায়েও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। ইন্টারনেটের এই যুগে শিশুরা ফিডার ধরতে শেখার আগে মোবাইল হাতে পায়। ইন্টারনেটে শিশুদের উপযোগী বাংলায় ভালো কোনো কনটেন্ট নেই, যেগুলো তারা আনন্দের সঙ্গে দেখবে। ফলে কথা বলতে শেখার আগেই হাতের মুঠোয় পাচ্ছে হিন্দি অথবা ইংরেজি কনটেন্ট। বাংলা শেখার আগেই শিশু ইংরেজিতে গড়গড় করে কথা বলা শিখছে, সেটি অভিভাবকদের জন্য আনন্দের বিষয়ই তো বটে!
বাংলাদেশের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২১ ফেব্রুয়ারি। ২০০২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটিকে স্বাগত জানানো হয়।
ভাষাগত বৈচিত্র্যের মর্যাদা রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শেখার অধিকারকে সমর্থন করার জন্য এই দিবসটি গৃহীত হয়। যাতে শিশুরা আরও ভালো বোঝাপড়া, সম্পৃক্ততা এবং চিন্তার দক্ষতা অর্জন করতে পারে—এটিই ছিল উদ্দেশ্য। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হয়নি এমন স্থানে টিকে থাকা ভাষাগুলো কত স্তরের দমন সহ্য করছে, সেটিরও একটি অনুস্মারক এটি। আধুনিক শিক্ষা ধারণায় মায়েদের এবং মাতৃভাষাগুলোকে সন্তানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে অক্ষম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এভাবেই তাদের প্রান্তিক করে রাখা হয়।
লেখক: আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক
জাহাঙ্গীর আলম

আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মহান শহীদ দিবস, একই সঙ্গে এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালের এই দিন মাতৃভাষার মর্যাদার রক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। এই আত্মত্যাগের বৈশ্বিক স্বীকৃতি হিসেবে এই দিনটি এখন ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মাতৃভাষাকে উন্নীত করার জন্য প্রতি বছর উদ্যাপন করা হয়।
কিন্তু শিগগিরই মাতৃভাষার ধারণা গিয়ে ঠেকেছে তথাকথিত শুদ্ধ ও প্রমিত বাংলায়। শিক্ষিত বাবা–মায়েরা শৈশব থেকেই সন্তানদের ভাষাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য মুখ থেকে যেকোনো প্রকারের গ্রাম্যতা দূর করার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। করুণ বাস্তবতা হচ্ছে, ছোটকালে এই প্রমিতকরণের পাল্লায় পড়ে আমাদের ঠোঁটের প্রতিটি শব্দই অস্বাভাবিক মনে হয়। স্কুলের পরীক্ষার খাতায় লিখিত প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা, জাতে ওঠার জন্য শেখা ইংরেজি, দাদা–দাদি নানা–নানির ‘উপভাষায়’ বলা স্থানীয় শব্দ ঠোঁটে ঝুলে থাকে, গলার অর্ধেক পথে আটকে যায় কিন্তু মুখে প্রকাশ পায় না। গ্রামে বেড়ে ওঠা প্রতিটি শিশুরই এমন অভিজ্ঞতা হয়।
আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
এভাবে, আমরা সর্বশক্তিমান প্রমিত ও ইংরেজির কাছে নতজানু হয়ে পড়ছি। ব্যাকরণের নিয়ম আত্মস্থ করে ভদ্রস্থ বাংলা এবং বাজার অর্থনীতির যুগে জাতের ওঠার উচ্চাভিলাষের ফাঁদে বাংলাকে উপেক্ষা করছি। আমাদের শ্রম, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করছি তথাকথিত কেজো ভাষা শিক্ষায়!
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলার যে বেহাল দশা তার একটি চিত্র এখানে স্পষ্ট। ২০২৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) একটি সমীক্ষা প্রকাশ পায়। তাতে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির ৭৬ শতাংশ ও চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঠিকমতো বাংলা পড়তে পারে না। তৃতীয় শ্রেণির প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী বর্ণ (অক্ষর) ও শব্দ ঠিকঠাক চিনতে পারে না। চতুর্থ শ্রেণির ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শব্দ চিনতে পারে না। আর পড়ার (রিডিং) ক্ষেত্রেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ঘাম ছুটে যায়!
১৮৩৫ সালে লর্ড ম্যাকলে তাঁর শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাবে একটি শ্রেণি তৈরি করার যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন যারা দোভাষী হতে পারে...যারা রক্তে এবং বর্ণে ভারতীয় কিন্তু রুচি, মতামত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিতে হবে ইংরেজ। আমরা আমাদের মুখের ভাষা, সংস্কৃতি ও স্থানীয় জ্ঞানকে পশ্চিমা বিশ্বের শ্রম ও ভোক্তা বাজারে পরিণত করার জন্য বিনিময় করেছি। আমাদের স্থানীয় ভাষাগুলো নিকৃষ্ট, অলিখিত (যদি কথ্য হয়) এবং যেকোনো গুরুতর জ্ঞান সৃষ্টি বা প্রচার প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার জন্য অক্ষম থেকে গেছে। আধুনিককালে ইংরেজির দাপটে আমরা দিশেহারা হয়ে তাকেই আলিঙ্গন করেছি।
বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রথম এ দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এই শিক্ষানীতি ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন কৌশল ও পরিকল্পনাপত্রে এ বিষয়টির উল্লেখ বেশ আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। কিন্তু এখনো সব ভাষায় শিশুদের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সম্ভব হয়নি। আর আঞ্চলিক ভাষা তো বরাবরই উপেক্ষিত। এমনকি জনপরিসরে আঞ্চলিক ভাষায় ভাব বিনিময়ও রীতিমতো লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলত শহুরে ও গ্রামীণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং আঞ্চলিক ও নৃগোষ্ঠীর ভাষা এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অবিচল বিভেদ তৈরি হয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি শিক্ষানীতির বাইরে রয়ে গেছে দেশের ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালোরিয়েট (আইবি) এবং কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইজিসিএসই)–এর সঙ্গে যুক্ত স্কুলগুলো। আবার এমন স্কুল রয়েছে যেগুলোর আসলে এ ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নেই। এই স্কুলগুলো স্থানীয় ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা দমিয়ে রাখে।
ইদানীং শিক্ষার্থীদের একটি নতুন প্রজন্ম দেখা যাচ্ছে। এরা সংকর ভাষায় কথা বলে। কিন্তু তাদের ডিএনএ–তে সে অর্থে বাংলা ভাষা নেই। এমনকি হিন্দিতে বোল ফুটছে ভালোই, কিন্তু বাংলা বলতে গিয়ে আটক যাচ্ছে। এমন অনেক শিশু আছে যারা ইংরেজিতে কথা বলে, বাংলায় একটি শব্দও বোঝে না।
বাবা–মায়েরা নিজেদের ভাষা হীনমন্যতায় গর্বিত! ‘আমার বাচ্চা ইংরেজিতে কথা বলতে পারে’, এই গর্ব ক্রমে ‘আমার বাচ্চা তো বাংলা বলতেই না’ এই এ পর্যায়ে পর্যবসিত হয়। অভিভাবকদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা হচ্ছে, বাংলা আর শ্রম বা মর্যাদার বাজারে বিপণনযোগ্য নয়, সুতরাং এ ভাষা সন্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখানোর প্রয়োজন নেই, কাজ চালানোর মতো হলেই হবে!
এই প্রবণতা নাগরিকদের একটি নতুন শ্রেণির জন্মকে চিহ্নিত করছে। তারা সে অর্থে ম্যাকলের দোভাষী শ্রেণি নয়; বরং, নিজস্ব পরিচয় স্পষ্ট করতে তাদের আরও আরও সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হবে। তাদের কথিত বৈশ্বিকতা তাদের স্থানীয় সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্তির বিচ্ছেদের দিকে ঝোঁক তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক বোর্ডের (ইংরেজি মাধ্যম) শহুরে শিশুরা জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পড়াশোনা করা গ্রামীণ শিশুদের কিছুই বুঝবে না—এই দুই শ্রেণির মধ্যে কোনো সংযোগকারী কোনো ভাষা নেই। দেশীয় ভাষায় সাহিত্য এবং জ্ঞান নিয়ে আলোচনা তো আরও দূরের কথা। প্রমিত বাংলা ও ইংরেজির দাপটে আঞ্চলিক ভাষার বাগধারাগুলো আমাদের দৈনন্দিন ভাষা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে, এতে বাংলার মধ্যে ইংরেজি শব্দ প্রক্ষিপ্ত হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।
অবশ্য এর জন্য শুধু গ্লোবালাইজেশন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ আর বাজার অর্থনীতির পাশাপাশি অভিভাবকদের হীনম্মন্যতাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। মূলত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকতেই অভিভাবকদের ক্রমেই ইংরেজিপ্রীতি ও বাংলার প্রতি অবহেলা বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলার ব্যাপক ব্যবহার ও উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তি পর্যায়েও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। ইন্টারনেটের এই যুগে শিশুরা ফিডার ধরতে শেখার আগে মোবাইল হাতে পায়। ইন্টারনেটে শিশুদের উপযোগী বাংলায় ভালো কোনো কনটেন্ট নেই, যেগুলো তারা আনন্দের সঙ্গে দেখবে। ফলে কথা বলতে শেখার আগেই হাতের মুঠোয় পাচ্ছে হিন্দি অথবা ইংরেজি কনটেন্ট। বাংলা শেখার আগেই শিশু ইংরেজিতে গড়গড় করে কথা বলা শিখছে, সেটি অভিভাবকদের জন্য আনন্দের বিষয়ই তো বটে!
বাংলাদেশের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২১ ফেব্রুয়ারি। ২০০২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটিকে স্বাগত জানানো হয়।
ভাষাগত বৈচিত্র্যের মর্যাদা রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শেখার অধিকারকে সমর্থন করার জন্য এই দিবসটি গৃহীত হয়। যাতে শিশুরা আরও ভালো বোঝাপড়া, সম্পৃক্ততা এবং চিন্তার দক্ষতা অর্জন করতে পারে—এটিই ছিল উদ্দেশ্য। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হয়নি এমন স্থানে টিকে থাকা ভাষাগুলো কত স্তরের দমন সহ্য করছে, সেটিরও একটি অনুস্মারক এটি। আধুনিক শিক্ষা ধারণায় মায়েদের এবং মাতৃভাষাগুলোকে সন্তানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে অক্ষম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এভাবেই তাদের প্রান্তিক করে রাখা হয়।
লেখক: আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক

আজ ২১ শে ফেব্রুয়ারি আমাদের মহান শহীদ দিবস, একই সঙ্গে এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ তম বার্ষিকী উদ্যাপিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালের এই দিন মাতৃভাষার মর্যাদার রক্ষার জন্য রক্ত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। এই আত্মত্যাগের বৈশ্বিক স্বীকৃতি হিসেবে এই দিনটি এখন ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং মাতৃভাষাকে উন্নীত করার জন্য প্রতি বছর উদ্যাপন করা হয়।
কিন্তু শিগগিরই মাতৃভাষার ধারণা গিয়ে ঠেকেছে তথাকথিত শুদ্ধ ও প্রমিত বাংলায়। শিক্ষিত বাবা–মায়েরা শৈশব থেকেই সন্তানদের ভাষাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য মুখ থেকে যেকোনো প্রকারের গ্রাম্যতা দূর করার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। করুণ বাস্তবতা হচ্ছে, ছোটকালে এই প্রমিতকরণের পাল্লায় পড়ে আমাদের ঠোঁটের প্রতিটি শব্দই অস্বাভাবিক মনে হয়। স্কুলের পরীক্ষার খাতায় লিখিত প্রাতিষ্ঠানিক বাংলা, জাতে ওঠার জন্য শেখা ইংরেজি, দাদা–দাদি নানা–নানির ‘উপভাষায়’ বলা স্থানীয় শব্দ ঠোঁটে ঝুলে থাকে, গলার অর্ধেক পথে আটকে যায় কিন্তু মুখে প্রকাশ পায় না। গ্রামে বেড়ে ওঠা প্রতিটি শিশুরই এমন অভিজ্ঞতা হয়।
আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
এভাবে, আমরা সর্বশক্তিমান প্রমিত ও ইংরেজির কাছে নতজানু হয়ে পড়ছি। ব্যাকরণের নিয়ম আত্মস্থ করে ভদ্রস্থ বাংলা এবং বাজার অর্থনীতির যুগে জাতের ওঠার উচ্চাভিলাষের ফাঁদে বাংলাকে উপেক্ষা করছি। আমাদের শ্রম, সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করছি তথাকথিত কেজো ভাষা শিক্ষায়!
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলার যে বেহাল দশা তার একটি চিত্র এখানে স্পষ্ট। ২০২৪ সালের মার্চে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএসের) একটি সমীক্ষা প্রকাশ পায়। তাতে দেখা যায়, তৃতীয় শ্রেণির ৭৬ শতাংশ ও চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঠিকমতো বাংলা পড়তে পারে না। তৃতীয় শ্রেণির প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী বর্ণ (অক্ষর) ও শব্দ ঠিকঠাক চিনতে পারে না। চতুর্থ শ্রেণির ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী সাধারণ শব্দ চিনতে পারে না। আর পড়ার (রিডিং) ক্ষেত্রেও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর ঘাম ছুটে যায়!
১৮৩৫ সালে লর্ড ম্যাকলে তাঁর শিক্ষা বিষয়ক প্রস্তাবে একটি শ্রেণি তৈরি করার যুক্তি উপস্থাপন করেছিলেন যারা দোভাষী হতে পারে...যারা রক্তে এবং বর্ণে ভারতীয় কিন্তু রুচি, মতামত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিতে হবে ইংরেজ। আমরা আমাদের মুখের ভাষা, সংস্কৃতি ও স্থানীয় জ্ঞানকে পশ্চিমা বিশ্বের শ্রম ও ভোক্তা বাজারে পরিণত করার জন্য বিনিময় করেছি। আমাদের স্থানীয় ভাষাগুলো নিকৃষ্ট, অলিখিত (যদি কথ্য হয়) এবং যেকোনো গুরুতর জ্ঞান সৃষ্টি বা প্রচার প্রক্রিয়ার অংশ হওয়ার জন্য অক্ষম থেকে গেছে। আধুনিককালে ইংরেজির দাপটে আমরা দিশেহারা হয়ে তাকেই আলিঙ্গন করেছি।
বাংলাদেশের শিক্ষার উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রথম এ দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। এই শিক্ষানীতি ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন কৌশল ও পরিকল্পনাপত্রে এ বিষয়টির উল্লেখ বেশ আগে থেকেই লক্ষ করা গেছে। কিন্তু এখনো সব ভাষায় শিশুদের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন সম্ভব হয়নি। আর আঞ্চলিক ভাষা তো বরাবরই উপেক্ষিত। এমনকি জনপরিসরে আঞ্চলিক ভাষায় ভাব বিনিময়ও রীতিমতো লজ্জার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলত শহুরে ও গ্রামীণ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এবং আঞ্চলিক ও নৃগোষ্ঠীর ভাষা এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অবিচল বিভেদ তৈরি হয়ে রয়েছে।
এ ছাড়া সরকারি শিক্ষানীতির বাইরে রয়ে গেছে দেশের ইন্টারন্যাশনাল ব্যাকালোরিয়েট (আইবি) এবং কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল জেনারেল সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশন (আইজিসিএসই)–এর সঙ্গে যুক্ত স্কুলগুলো। আবার এমন স্কুল রয়েছে যেগুলোর আসলে এ ধরনের কোনো আন্তর্জাতিক যোগাযোগ নেই। এই স্কুলগুলো স্থানীয় ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা দমিয়ে রাখে।
ইদানীং শিক্ষার্থীদের একটি নতুন প্রজন্ম দেখা যাচ্ছে। এরা সংকর ভাষায় কথা বলে। কিন্তু তাদের ডিএনএ–তে সে অর্থে বাংলা ভাষা নেই। এমনকি হিন্দিতে বোল ফুটছে ভালোই, কিন্তু বাংলা বলতে গিয়ে আটক যাচ্ছে। এমন অনেক শিশু আছে যারা ইংরেজিতে কথা বলে, বাংলায় একটি শব্দও বোঝে না।
বাবা–মায়েরা নিজেদের ভাষা হীনমন্যতায় গর্বিত! ‘আমার বাচ্চা ইংরেজিতে কথা বলতে পারে’, এই গর্ব ক্রমে ‘আমার বাচ্চা তো বাংলা বলতেই না’ এই এ পর্যায়ে পর্যবসিত হয়। অভিভাবকদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা হচ্ছে, বাংলা আর শ্রম বা মর্যাদার বাজারে বিপণনযোগ্য নয়, সুতরাং এ ভাষা সন্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখানোর প্রয়োজন নেই, কাজ চালানোর মতো হলেই হবে!
এই প্রবণতা নাগরিকদের একটি নতুন শ্রেণির জন্মকে চিহ্নিত করছে। তারা সে অর্থে ম্যাকলের দোভাষী শ্রেণি নয়; বরং, নিজস্ব পরিচয় স্পষ্ট করতে তাদের আরও আরও সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করতে হবে। তাদের কথিত বৈশ্বিকতা তাদের স্থানীয় সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্তির বিচ্ছেদের দিকে ঝোঁক তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক বোর্ডের (ইংরেজি মাধ্যম) শহুরে শিশুরা জাতীয় শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পড়াশোনা করা গ্রামীণ শিশুদের কিছুই বুঝবে না—এই দুই শ্রেণির মধ্যে কোনো সংযোগকারী কোনো ভাষা নেই। দেশীয় ভাষায় সাহিত্য এবং জ্ঞান নিয়ে আলোচনা তো আরও দূরের কথা। প্রমিত বাংলা ও ইংরেজির দাপটে আঞ্চলিক ভাষার বাগধারাগুলো আমাদের দৈনন্দিন ভাষা থেকে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে, এতে বাংলার মধ্যে ইংরেজি শব্দ প্রক্ষিপ্ত হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।
অবশ্য এর জন্য শুধু গ্লোবালাইজেশন, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ আর বাজার অর্থনীতির পাশাপাশি অভিভাবকদের হীনম্মন্যতাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। মূলত বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে এগিয়ে থাকতেই অভিভাবকদের ক্রমেই ইংরেজিপ্রীতি ও বাংলার প্রতি অবহেলা বাড়ছে। প্রকৃতপক্ষে বাংলার ব্যাপক ব্যবহার ও উন্নয়নে রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তি পর্যায়েও তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। ইন্টারনেটের এই যুগে শিশুরা ফিডার ধরতে শেখার আগে মোবাইল হাতে পায়। ইন্টারনেটে শিশুদের উপযোগী বাংলায় ভালো কোনো কনটেন্ট নেই, যেগুলো তারা আনন্দের সঙ্গে দেখবে। ফলে কথা বলতে শেখার আগেই হাতের মুঠোয় পাচ্ছে হিন্দি অথবা ইংরেজি কনটেন্ট। বাংলা শেখার আগেই শিশু ইংরেজিতে গড়গড় করে কথা বলা শিখছে, সেটি অভিভাবকদের জন্য আনন্দের বিষয়ই তো বটে!
বাংলাদেশের উদ্যোগে ১৯৯৯ সালে ইউনেসকোর সাধারণ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায় ২১ ফেব্রুয়ারি। ২০০২ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এটিকে স্বাগত জানানো হয়।
ভাষাগত বৈচিত্র্যের মর্যাদা রক্ষা ও সংরক্ষণ এবং শিশুদের মাতৃভাষায় শেখার অধিকারকে সমর্থন করার জন্য এই দিবসটি গৃহীত হয়। যাতে শিশুরা আরও ভালো বোঝাপড়া, সম্পৃক্ততা এবং চিন্তার দক্ষতা অর্জন করতে পারে—এটিই ছিল উদ্দেশ্য। আনুষ্ঠানিক শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত হয়নি এমন স্থানে টিকে থাকা ভাষাগুলো কত স্তরের দমন সহ্য করছে, সেটিরও একটি অনুস্মারক এটি। আধুনিক শিক্ষা ধারণায় মায়েদের এবং মাতৃভাষাগুলোকে সন্তানদের যথাযথভাবে শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে অক্ষম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এভাবেই তাদের প্রান্তিক করে রাখা হয়।
লেখক: আজকের পত্রিকার জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেতানিম আহমেদ, ঢাকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
সংসদ কার্যকর না থাকায় অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা এখন রাষ্ট্রপতির হাতে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অধ্যাদেশ চায় না। কাজেই প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারির পথেই সরকার এগোচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
তবে বিএনপি আবার আদেশ জারির বিরোধিতা করছে। জুলাই সনদ নিয়ে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করলে তার ওপর গণভোট হতে পারে বলে মত দিয়েছে দলটি।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা হবে, আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সে পথ বের করার উপায় খুঁজছে সরকার। এক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়কে প্রাধান্য দেওয়ার চিন্তা চলছে।
জুলাই সনদের খসড়ায় সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদবলে আপিল বিভাগের মতামতের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত জুলাই সনদে এই অংশটুকু বাদ দিয়ে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করতে একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সরকারকে এই আদেশ জারির সুপারিশ করেছে কমিশন।
সরকারের কয়েকটি সূত্র বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে কীভাবে এই আদেশ জারি করা যায়, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আইনি জটিলতা না থাকলে প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশ জারি করবেন। তবে আদেশটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা যায় কি না, এখনো সে বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে নতুন কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়, তা মাথায় রাখছে সরকার।
গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ নামে আদেশ জারির সুপারিশ করে কমিশন। সেখানে আদেশে থাকা সংবিধান-সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে গণভোট এবং আগামী সংসদের দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের মধ্যে ৪৭টি সংবিধান-সম্পর্কিত।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির পাশাপাশি বাস্তবায়নের দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটে বিষয়টি পাস হলে সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে এসব সংস্কার শেষ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হলেও প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করতে হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা যাবে, তা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই কোনো অধ্যাদেশ নয়, আবার সংসদ দ্বারা তৈরি কোনো আইনও নয়।
জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির আইনগত কিছু নেই। যেহেতু বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, সেই অনুযায়ী আদেশ জারির বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা। সরকার যেভাবে চায়, সেভাবে জারি করতে পারে। সরকার যদি মনে করে প্রধান উপদেষ্টা এটি জারি করবেন, সেটা পারবেন। আবার সরকার যদি মনে করে রাষ্ট্রপতি এটা জারি করবেন, সেটাও হতে পারে। এ ক্ষমতাটা সরকারের।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাকে বেশি ধারক বলা যায়, তাই তিনি এই আদেশ জারি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আইনি কোনো ঝামেলা নেই, কারণ এটি অধ্যাদেশ নয়।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
সংসদ কার্যকর না থাকায় অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা এখন রাষ্ট্রপতির হাতে। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের অধ্যাদেশ চায় না। কাজেই প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে আদেশ জারির পথেই সরকার এগোচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
তবে বিএনপি আবার আদেশ জারির বিরোধিতা করছে। জুলাই সনদ নিয়ে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করলে তার ওপর গণভোট হতে পারে বলে মত দিয়েছে দলটি।
সূত্র জানায়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা হবে, আইনি কাঠামোর মধ্য থেকে সে পথ বের করার উপায় খুঁজছে সরকার। এক্ষেত্রে গণ-অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে জনগণের অভিপ্রায়কে প্রাধান্য দেওয়ার চিন্তা চলছে।
জুলাই সনদের খসড়ায় সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদবলে আপিল বিভাগের মতামতের আলোকে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলা ছিল। কিন্তু চূড়ান্ত জুলাই সনদে এই অংশটুকু বাদ দিয়ে বলা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এর মধ্য দিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে জনগণের অভিপ্রায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
ঐকমত্য কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করতে একটি আনুষ্ঠানিক আদেশ জারি করা একান্ত প্রয়োজন। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে সরকারকে এই আদেশ জারির সুপারিশ করেছে কমিশন।
সরকারের কয়েকটি সূত্র বলছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে কীভাবে এই আদেশ জারি করা যায়, তা নিবিড়ভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আইনি জটিলতা না থাকলে প্রধান উপদেষ্টা এই আদেশ জারি করবেন। তবে আদেশটি রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে জারি করা যায় কি না, এখনো সে বিষয়টি ভাবনার মধ্যে রয়েছে। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে নতুন কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়, তা মাথায় রাখছে সরকার।
গত ২৭ অক্টোবর সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ নামে আদেশ জারির সুপারিশ করে কমিশন। সেখানে আদেশে থাকা সংবিধান-সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে গণভোট এবং আগামী সংসদের দ্বৈত ভূমিকা পালনের মাধ্যমে সংবিধান-সম্পর্কিত সুপারিশগুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের ৮৪টি সুপারিশের মধ্যে ৪৭টি সংবিধান-সম্পর্কিত।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির পাশাপাশি বাস্তবায়নের দুটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়েছে, গণভোটে বিষয়টি পাস হলে সংসদের প্রথম অধিবেশন থেকে ২৭০ দিনের মধ্যে এসব সংস্কার শেষ করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে শেষ না করলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার পরিষদকে গাঠনিক ক্ষমতা দেওয়া হলেও প্রথম অধিবেশন শুরুর ২৭০ দিনের মধ্যে জুলাই সনদ অনুসারে সংবিধান সংস্কার শেষ করতে হবে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ কীভাবে জারি করা যাবে, তা সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই কোনো অধ্যাদেশ নয়, আবার সংসদ দ্বারা তৈরি কোনো আইনও নয়।
জানতে চাইলে ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ জারির আইনগত কিছু নেই। যেহেতু বর্তমান সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, সেই অনুযায়ী আদেশ জারির বিষয়টি অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা। সরকার যেভাবে চায়, সেভাবে জারি করতে পারে। সরকার যদি মনে করে প্রধান উপদেষ্টা এটি জারি করবেন, সেটা পারবেন। আবার সরকার যদি মনে করে রাষ্ট্রপতি এটা জারি করবেন, সেটাও হতে পারে। এ ক্ষমতাটা সরকারের।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য এই আদেশ জারি করতে হবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে গণ-অভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাকে বেশি ধারক বলা যায়, তাই তিনি এই আদেশ জারি করতে পারেন। এক্ষেত্রে আইনি কোনো ঝামেলা নেই, কারণ এটি অধ্যাদেশ নয়।

আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেরাহুল শর্মা, ঢাকা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫ (সংশোধিত)-এর খসড়ায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।
বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে কেবল ইউজিসিকে জানায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এ ফি নির্ধারণে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার পর হঠাৎ করে টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় লিখিত নোটিশও দেয় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সংশোধিত নতুন আইন কার্যকর হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি নির্ধারণ ও আদায় করতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। ভোগান্তিরও অবসান হবে।
জানতে চাইলে গত বুধবার ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংশোধিত আইনের খসড়াটি শিগগির চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
ইউজিসির সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোবর ইউজিসির ৫৭তম মাসিক সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫-এর সংশোধনীর খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হয়। ওই সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি কমিটি করার এবং অংশীজনদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানো, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ, একাডেমিক প্রোগ্রাম অনুমোদনে বাধ্যবাধকতা, ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবর্তন, যৌন হয়রানি নিরোধ ও সাইবার নিরাপত্তা কমিটি করাসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইউজিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১১৬টি। এগুলোর মধ্যে ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে। ৪টির কার্যক্রম নানা কারণে বন্ধ রয়েছে। আর বাকি ৫টির একাডেমিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জন।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, ইউজিসি এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য ডাকলে তাঁরা মতামত দেবেন।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় টিউশন ফির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফি কাঠামো তৈরি করে কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নেবে এবং সরকারকে জানাবে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফির হার ৫০ শতাংশ বেশি হবে। একজন শিক্ষার্থী যে ফি কাঠামোয় ভর্তি হবেন, প্রোগ্রাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোক্রমেই তা বাড়ানো যাবে না। অন্য কোনো নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না।
খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিধান লঙ্ঘনে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। এর আগে ছিল ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। সার্টিফিকেট (সনদ) জালিয়াতির শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ন্যূনতম দুই বছর বন্ধের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে, এই সময়সীমা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে আরও ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া কমিশনের তদন্ত, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত ক্ষমতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাল সনদ তৈরি বা অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিশনের টিমকে তাৎক্ষণিক তল্লাশি, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, দলিল ও দ্রব্যাদি জব্দ এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হবে।
খসড়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইউজিসির সদস্যের (চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে সাত সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কমিটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করে চ্যান্সেলরের কাছে প্রতিটি পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া বাড়ির কথা বলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইনে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভবনের প্রয়োজনীয় আয়তন ছিল ২৫ হাজার বর্গফুট। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ১ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার স্থলে ৫ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের এই বাধ্যবাধকতা শিথিল থাকবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে সরকার থেকে সনদ নিতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে সাময়িক সনদ দেওয়া হয়। বর্তমান আইনে সাত বছরের মধ্যে বেসরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী সনদ না নিলে কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় এতে পরিবর্তন এনে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন এবং ১২ বছরের মধ্যে সনদ না পেলে ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, মহাসড়ক ও বাইপাসের কাছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ গবেষণা খাতে বরাদ্দ করে কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী খরচ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে শহর, জেলা, বিভাগ, দেশের নাম, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শব্দ ব্যবহার না করা, অভিন্ন গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ ও ক্রেডিট ট্রান্সফার উন্মুক্ত রাখা, প্রোগ্রামের আসনসংখ্যা ইউজিসির অনুমোদনে নির্ধারণ, ন্যূনতম ৯ শতাংশ আসনে মেধাবী অথচ দরিদ্র/প্রত্যন্ত অঞ্চলের/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইত্যাদি এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধিত আইনের খসড়ায়। এতে বলা হয়েছে, অনধিক ১৫ সদস্য কিন্তু অন্যূন ৯ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করতে হবে। তবে একই পরিবার থেকে পাঁচজনের বেশি বোর্ড সদস্য হতে পারবেন না। খসড়ায় জমি বা ভবন সম্প্রসারণে বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ভূমি বা ভবন না পাওয়া গেলে কমিশনের সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন নিয়ে এক বর্গকিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ভূমি বা ভবন কেনা যেতে পারে। তবে এক বা একাধিক পূর্ণাঙ্গ ফ্যাকাল্টি ভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা যাবে না।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান আইনটি যুগোপযোগী করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ ছিল, এ আইন কার্যকরের ফলে তা লাঘব হবে বলে আশা করি।’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫ (সংশোধিত)-এর খসড়ায় এসব প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়ায় উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি করার বিধান রাখা হয়েছে।
বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেরাই বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করে কেবল ইউজিসিকে জানায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এ ফি নির্ধারণে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ, ভর্তি হওয়ার পর হঠাৎ করে টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অনেক সময় লিখিত নোটিশও দেয় না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ইউজিসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সংশোধিত নতুন আইন কার্যকর হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি নির্ধারণ ও আদায় করতে পারবে না। এতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। ভোগান্তিরও অবসান হবে।
জানতে চাইলে গত বুধবার ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সংশোধিত আইনের খসড়াটি শিগগির চূড়ান্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর মন্ত্রণালয় তা কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
ইউজিসির সূত্র বলছে, গত ২৩ অক্টোবর ইউজিসির ৫৭তম মাসিক সভায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০২৫-এর সংশোধনীর খসড়া নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা হয়। ওই সভায় আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে একটি কমিটি করার এবং অংশীজনদের নিয়ে কর্মশালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানো, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রির বিষয়ে ইউজিসির নীতিমালা অনুসরণ, একাডেমিক প্রোগ্রাম অনুমোদনে বাধ্যবাধকতা, ট্রাস্টি বোর্ডে পরিবর্তন, যৌন হয়রানি নিরোধ ও সাইবার নিরাপত্তা কমিটি করাসহ বেশ কিছু নতুন বিষয় যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইউজিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১১৬টি। এগুলোর মধ্যে ১০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান চলছে। ৪টির কার্যক্রম নানা কারণে বন্ধ রয়েছে। আর বাকি ৫টির একাডেমিক কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৪১৪ জন।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি মো. সবুর খান বলেন, ইউজিসি এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য ডাকলে তাঁরা মতামত দেবেন।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় টিউশন ফির বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফি কাঠামো তৈরি করে কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদন নেবে এবং সরকারকে জানাবে। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য এই ফির হার ৫০ শতাংশ বেশি হবে। একজন শিক্ষার্থী যে ফি কাঠামোয় ভর্তি হবেন, প্রোগ্রাম শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোক্রমেই তা বাড়ানো যাবে না। অন্য কোনো নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের ফি আদায় করা যাবে না।
খসড়ায় আইন লঙ্ঘনে শাস্তি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিধান লঙ্ঘনে অনূর্ধ্ব ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। এর আগে ছিল ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। সার্টিফিকেট (সনদ) জালিয়াতির শাস্তি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ন্যূনতম দুই বছর বন্ধের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির ওপর জোর দিয়ে বলা হয়েছে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ৬০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করতে হবে, এই সময়সীমা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে আরও ৩০ দিন বাড়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া কমিশনের তদন্ত, তল্লাশি ও গ্রেপ্তার-সংক্রান্ত ক্ষমতাও বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাল সনদ তৈরি বা অননুমোদিত ক্যাম্পাস পরিচালনার ক্ষেত্রে কমিশনের টিমকে তাৎক্ষণিক তল্লাশি, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র, দলিল ও দ্রব্যাদি জব্দ এবং অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানায় সোপর্দ করা হবে।
খসড়ায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের জন্য ইউজিসির সদস্যের (চেয়ারম্যান) নেতৃত্বে সাত সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কমিটি উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করে চ্যান্সেলরের কাছে প্রতিটি পদের বিপরীতে তিনজন প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে।
সংশোধিত আইনের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার জন্য ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের নিজস্ব বা ভাড়া বাড়ির কথা বলা হয়েছে। ২০১০ সালের আইনে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভবনের প্রয়োজনীয় আয়তন ছিল ২৫ হাজার বর্গফুট। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ১ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার স্থলে ৫ একর জমি থাকার বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন পেয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে জমির পরিমাণের এই বাধ্যবাধকতা শিথিল থাকবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালাতে সরকার থেকে সনদ নিতে হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে সাময়িক সনদ দেওয়া হয়। বর্তমান আইনে সাত বছরের মধ্যে বেসরকারি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী সনদ না নিলে কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান রয়েছে। সংশোধিত আইনের খসড়ায় এতে পরিবর্তন এনে সাত বছরের মধ্যে স্থায়ী সনদের জন্য আবেদন এবং ১২ বছরের মধ্যে সনদ না পেলে ভর্তিসহ সব কার্যক্রম বন্ধ রাখার বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, মহাসড়ক ও বাইপাসের কাছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা যাবে না। এ ছাড়া বার্ষিক বাজেটের ন্যূনতম ২ শতাংশ অর্থ গবেষণা খাতে বরাদ্দ করে কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী খরচ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে শহর, জেলা, বিভাগ, দেশের নাম, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শব্দ ব্যবহার না করা, অভিন্ন গ্রেডিং সিস্টেম অনুসরণ ও ক্রেডিট ট্রান্সফার উন্মুক্ত রাখা, প্রোগ্রামের আসনসংখ্যা ইউজিসির অনুমোদনে নির্ধারণ, ন্যূনতম ৯ শতাংশ আসনে মেধাবী অথচ দরিদ্র/প্রত্যন্ত অঞ্চলের/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইত্যাদি এমন শিক্ষার্থীদের জন্য বিনা বেতনে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড গঠনে কিছু পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে সংশোধিত আইনের খসড়ায়। এতে বলা হয়েছে, অনধিক ১৫ সদস্য কিন্তু অন্যূন ৯ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করতে হবে। তবে একই পরিবার থেকে পাঁচজনের বেশি বোর্ড সদস্য হতে পারবেন না। খসড়ায় জমি বা ভবন সম্প্রসারণে বাধ্যবাধকতার প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন ভূমি বা ভবন না পাওয়া গেলে কমিশনের সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন নিয়ে এক বর্গকিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ভূমি বা ভবন কেনা যেতে পারে। তবে এক বা একাধিক পূর্ণাঙ্গ ফ্যাকাল্টি ভিন্ন স্থানে পরিচালনা করা যাবে না।
সংশোধিত আইনের খসড়ার বিষয়ে অভিমত জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান আইনটি যুগোপযোগী করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের যে অভিযোগ ছিল, এ আইন কার্যকরের ফলে তা লাঘব হবে বলে আশা করি।’

আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বদলি করা জেলা প্রশাসকদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীতে, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জে, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুরে, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকায়, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধায় এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুরে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পাবনার জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মিজ আফরোজা আখতারকে সাতক্ষীরায়, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক (উপসচিব) গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাটে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়ায় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার ডিসি পদে পদায়ন করা হয়েছে।

১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বদলি করা জেলা প্রশাসকদের মধ্যে বাগেরহাটের ডিসি আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালীতে, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জে, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুরে, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকায়, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধায় এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জে, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুরে, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর পাবনার জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা মিজ আফরোজা আখতারকে সাতক্ষীরায়, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক (উপসচিব) গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাটে, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়ায় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার ডিসি পদে পদায়ন করা হয়েছে।

আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
৮ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, আমরা লক্ষ করছি যে ‘#TMD’ অর্থাৎ ‘Total Maloun Death’ নামীয় হিন্দুবিদ্বেষী হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উসকানি প্রচার করছে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারিত হচ্ছে, যা মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এ ট্যাগকে ব্যবহার করে অসংখ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও সহিংসতাপ্রবণ পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ছে। যার ফলে দেশের ছাত্র ও যুব সমাজের মধ্যে বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দ্রুত ছড়ানোর কারণে এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের বিদ্বেষ ক্রমবর্ধমান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রচারণার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের একটি স্বাধীন দেশে এ ধরনের ধর্মবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার কখনো কাম্য হতে পারে না।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এবং ধর্মীয় উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ এমন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, আমরা লক্ষ করছি যে ‘#TMD’ অর্থাৎ ‘Total Maloun Death’ নামীয় হিন্দুবিদ্বেষী হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উসকানি প্রচার করছে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। এতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারিত হচ্ছে, যা মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এ ট্যাগকে ব্যবহার করে অসংখ্য ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ, অশ্লীল ও সহিংসতাপ্রবণ পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ছে। যার ফলে দেশের ছাত্র ও যুব সমাজের মধ্যে বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দ্রুত ছড়ানোর কারণে এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের বিদ্বেষ ক্রমবর্ধমান।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক প্রচারণার মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে এবং সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থানের একটি স্বাধীন দেশে এ ধরনের ধর্মবিদ্বেষী সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার কখনো কাম্য হতে পারে না।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী এবং ধর্মীয় উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করাসহ এমন প্রচার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।

আমাদের শহরগুলোতে এখন ‘স্পোকেন ইংলিশ’ বিজ্ঞাপনে ছেয়ে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই বাণিজ্যের রমরমা। আমাদের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বাংলায় কথা বলাকে নিরুৎসাহিত করা হয়। এমনকি বাবা–মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া সন্তানের সঙ্গে ঘরেও ইংরেজিতে কথা বলেন। বাংলা বলার ক্ষেত্রে অনেকে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে থাকেন।
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে অধ্যাদেশ জারির বাধ্যবাধকতা না থাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আদেশ জারি করতে পারেন বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অধ্যাদেশ জারির ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ইচ্ছেমতো’ টিউশন ফি আদায় বন্ধ হচ্ছে। শিক্ষার্থী ভর্তির পর টিউশন ও অন্যান্য ফি বাড়ানো যাবে না। টিউশন ফি অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে। অন্য কোনো নামেও ফি আদায় করা যাবে না।
৫ ঘণ্টা আগে
১৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার (৮ নভেম্বর) রাতে এ নিয়োগ দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে