Ajker Patrika

শহীদ মিনারে আহমদ রফিককে শেষ শ্রদ্ধা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শনিবার ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিককে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শনিবার ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিককে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভাষাসংগ্রামী, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে তাঁর মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হলে একে একে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিপ্রেমী থেকে শুরু করে রাজনীতিকেরা।

আহমদ রফিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শোকযাত্রার মাধ্যমে এই ভাষাসংগ্রামীর মরদেহ নেওয়া হবে রাজধানীর ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ ও গবেষণার জন্য মরণোত্তর দেহ দান করে গেছেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ৯৬ বছর বয়সে মারা যান আহমদ রফিক।

আজ তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে সকাল থেকেই শহীদ মিনারে ভিড় করেন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের মানুষ।

বেলা ১১টার আগে সেখানে পৌঁছে যায় তাঁর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স। ঠিক ১১টায় শুরু হয় তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর্ব।

এ সময় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘আহমদ রফিক তাঁর সময়ের কীর্তিমানদের থেকে আলাদা ছিলেন। তিনি ভাষাসৈনিক ছিলেন। খুব কম মানুষ আছেন, যাঁরা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আদর্শ রক্ষা করে চলতে পেরেছেন। আদর্শ বিস্তারে আহমদ রফিক কাজ করে গেছেন। আহমদ রফিক সেই বিরল মানুষদের একজন, যিনি মরণোত্তর দেহ দান করে আরেক অনন্য নজির স্থাপন করে গেছেন।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আহমদ রফিক অমায়িক মানুষ ছিলেন। প্রচারবিমুখ ছিলেন। আদর্শ থেকে তাঁকে বিচ্যুত করা যায়নি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য তিনি কাজ করেছেন। তাঁর যে রাষ্ট্রভাষা বাংলার লড়াই, তা যদি রাষ্ট্র ও সমাজজীবনে আমরা বিস্তৃত করতে পারি, তাহলেই আহমদ রফিকের প্রতি আমরা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করতে পারব।’

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি প্রাবন্ধিক মফিদুল হক বলেন, ‘আহমদ রফিক সমগ্র বাংলার সাহিত্য, সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছিলেন। স্বাধীনতা আমাদের অনেক উঁচু জায়গায় নিয়ে গেছে। এই জায়গা আহমদ রফিকেরা নির্মাণ করেছেন। রবীন্দ্রচর্চার যে ধারাবাহিকতা, সেখানে তিনি এক নতুন অধ্যায় তুলে ধরেছিলেন। আমরা যতটা তাঁকে জানব, নিজেরাও তত সমৃদ্ধ হব।’

এ সময় আহমদ রফিকের বড় ভাইয়ের মেয়ে রেহানা আক্তার ঝর্ণা বলেন, ‘আজকে উনি নেই আমাদের কাছে। তাঁর প্রতি মানুষের ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। তিনি যাওয়ার আগে একদম একা হয়ে গিয়েছিলেন। উনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমাদের একটাই কাজ হবে সেই স্বপ্ন নিয়ে পথচলা। তাঁর সেই স্বপ্ন যেন আমরা পালন করতে পারি, আপনারা দোয়া করবেন।’

এ ছাড়া শহীদ মিনারে শোক জানাতে আসেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, মানজার চৌধুরী সুইট, লতিফুল ইসলাম শিবলী, টিপু বিশ্বাস, হাবিবুল আলম, জামশেদ আনোয়ার তপন, তানজীম ওয়াহাব, লাইসা আহমদ লিসা, সাজ্জাদ শরিফ, আলমগীর শিকদার লোটন, আব্দুল্লাহ আল কাফি রতন, মফিদুল হক প্রমুখ।

আহমদ রফিক ফাউন্ডেশনের আয়োজনে শোক জানায় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর, জাতীয় গণগ্রন্থাগার, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বাংলা একাডেমি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ছায়ানট, বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট, জাতীয় গণফ্রন্ট, একুশে চেতনা পরিষদ, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন, গণমুক্তি ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাসদ, প্রথম আলো, ঐক্য ন্যাপ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি, বাসদ, বাংলাদেশ লেখক শিবির, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২০২৬ সালের রমজানের সম্ভাব্য তারিখ জানালেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

যৌনকর্মীকে হোটেলে ডেকে ছিনতাই, সিঙ্গাপুরে দুই ভারতীয়কে কারাদণ্ড ও বেত্রাঘাত

হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে গুলতেকিন খানের পোস্ট, কেন এত আলোচনা

সৌদি আরবে অভূতপূর্ব কমেডি শো, যৌনতা-ট্রান্সজেন্ডার কোনো কিছুই আটকাচ্ছে না

‘ইসরায়েলে আকস্মিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত