Ajker Patrika

ডিসি সম্মেলন শুরু

অরাজনৈতিক প্রকল্পে অনাপত্তি

  • উদ্বোধনের পর মুক্ত আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
  • বেসরকারি স্কুল-কলেজের পর্ষদ নতুন করে গঠনের নির্দেশনা।
  • সামাজিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে আলোচনা।
  • স্বাস্থ্য খাতে জনবল সংকটের কথা জানিয়েছেন ডিসিরা।
বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০: ৫৪
অরাজনৈতিক প্রকল্পে অনাপত্তি

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে যেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নয়, অসমাপ্ত এমন ভালো প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশনা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনে নতুন করে তাঁদের পরিকল্পনা পাঠাতে বলা হয়েছে।

রাজধানীতে গতকাল রোববার শুরু হওয়া তিন দিনের ডিসি সম্মেলনে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর কার্যালয়ে এ সম্মেলন উদ্বোধন করে ডিসিদের সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও এর আওতাধীন দপ্তরের কার্য-অধিবেশনেও অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক অধিবেশনগুলো হয়েছে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে।

এদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিসি সম্মেলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

সম্মেলনে অংশ নেওয়া কয়েকজন ডিসি জানান, সরকার পরিবর্তনের পর বিগত সরকারের সময় নেওয়া অনেক প্রকল্প স্থবির অবস্থায় রয়েছে। এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বেশ কয়েকজন ডিসি এ বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা চান। তখন ডিসিদের জানানো হয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছিল– এমন প্রকল্প বাদ দিয়ে অন্য প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কোনো অসুবিধা নেই।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্য-অধিবেশন শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদও একই কথা বলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে অনেক প্রকল্পের ঠিকাদার টাকা নিয়ে চলে যাওয়ায় অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক অসমাপ্ত প্রকল্প রয়েছে। এমন প্রকল্পগুলো কীভাবে আবার শুরু করা যায়, সে বিষয়ে ডিসিদের বলা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন জনহিতকর প্রকল্প বাস্তবায়ন যেন বিঘ্নিত না হয়, তাঁরা সে নির্দেশনা দিয়েছেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিকভাবে স্থানীয় প্রকল্পের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে সেই অবস্থা নেই বলে ডিসিদের স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। রাস্তাঘাট, সেতু, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণসহ স্থানীয়ভাবে কী ধরনের প্রকল্প নেওয়া দরকার, সে বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দিতেও ডিসিদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদ গঠনের নির্দেশ: গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের পর থেকে বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে রয়েছে।

এসব পরিচালনা পর্ষদ নতুন করে গঠন করতে ডিসিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধিবেশন শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বেসরকারি স্কুল-কলেজের পরিচালনা পর্ষদ নিয়ে অনেক সমস্যা হয়েছে। এখানে যারা ছিল তারা চলে গেছে। চর দখলের মতো নতুন প্রভাবশালীরা সেটা দখলের চেষ্টা করেছে। আমরা পরিচালনা পর্ষদগুলো ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ করেছিলাম। ডিসি, ইউএনওদের সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু এত দায়িত্ব তাঁদের পক্ষে পালন করা খুবই কঠিন। এ কারণে আমরা তাঁদেরকে পরামর্শ দিয়েছি, পরিচালনা পর্ষদগুলো আবার শুরু করে দিতে।’

রাজনৈতিক চাপ উপেক্ষা করে স্থানীয়ভাবে সৎ, ভালো মানুষ এবং সরকারি চাকুরে ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়ে এই পর্যদ গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন উপদেষ্টা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করে স্কুলের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে হলে কমপক্ষে বিএ পাস এবং কলেজের পরিচালনা পর্ষদে থাকতে কমপক্ষে মাস্টার্স ডিগ্রি থাকার নিয়ম করে দেওয়ার বিষয়টিও ডিসিদের মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এ বছর পাঠ্যপুস্তক ছাপানো ও বিতরণ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, যে বিষয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হবে, সেসব বিষয়ের বই ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে চলে যাবে বলে তিনি আশা করছেন। প্রান্তিক স্কুলগুলোতে যেন আগে বই যায়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, ‘তাঁদের (ডিসি) সামনে নির্বাচন আসছে এবং সেই নির্বাচনকে কী করে সুষ্ঠু করা যায়। আমাদের সরকারের প্রধান কাজ তো সবার দাবিদাওয়া মেটানো নয়; বরং একটি সুশাসিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় যাতে উত্তরণ হয়, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে হয়, সে ক্ষেত্রে ডিসিরা সব থেকে বেশি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারেন।’ তিনি বলেন, ‘আগের জেলা প্রশাসকেরা তাঁদের শহরের জন্য একটি স্মৃতি রেখে যেতেন। আমি ডিসিদের তাঁদের শহরে একটি করে নিদর্শন রেখে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আজকাল সবকিছুই রাজনীতিকদের নামে হয়, প্রশাসকদের নামে কিছু হয় না। অন্তর্বর্তী সরকারে যাঁরা আছেন তাঁদের নামেও কিন্তু কোথাও কিছু হবে না। আমরা কোনো ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে চাই না। আমাদের একমাত্র কাজ হলো সুন্দর নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়া।’

শিক্ষা উপদেষ্টা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনলাইনভিত্তিক বদলির ব্যবস্থা চালু, তাঁদের জন্য ভাতা বাড়ানো এবং বকেয়া অবসর-সুবিধা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগে বিশেষ উদ্যোগ: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কার্য-অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্য খাতে জনবলের অভাবের কথা ডিসিরা বলেছেন। কোথাও ৫০০ শয্যার জায়গায় ১ হাজার ২০০ রোগী থাকছে। কোথাও কোথাও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি প্রতিষ্ঠার চাহিদা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের বেআইনি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, এসব ক্ষেত্রে ডিসিরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে যেন আমাদের স্বাস্থ্যকাঠামোর পাশে থাকেন, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। যে জনবলকাঠামো, সেটা নিয়ে আরও ভালো স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব, আমরা তাঁদের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছি।’

বিশেষ সহকারী বলেন, ‘আমরা দেখছি এন্ট্রি পদে ৫ হাজারের বেশি চিকিৎসক প্রয়োজন। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ পদ এবং অন্যান্য আধুনিক হাসপাতালগুলোতে পদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পদ সৃষ্টি এবং এর আর্থিক সংশ্লেষ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা ইতিমধ্যে ৫ হাজার পদ সৃষ্টির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা নিয়ে যেটুকু অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে, ১২-১৪ হাজার আহতের তুলনায় তা খুবই কম। অসন্তোষের মাত্রা কোনোভাবেই ১ শতাংশও নয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৪০ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা কখনোই টাকার দিকে তাকাননি। আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁদের চিকিৎসা করানোর জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে চিকিৎসকদের আনা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও আওতাধীন সংস্থাসম্পর্কিত অধিবেশনে সব বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থাসংশ্লিষ্ট ভূমি অধিগ্রহণের কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে নিষ্পন্ন করা, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জে ইপিজেড নির্মাণ, নির্মাণাধীন আশ্রয়ণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নির্মাণকাজ শেষ করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধিবেশনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার জন্য এনজিওগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে ওয়ার্কফোর্স তৈরির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিখোঁজের দুই দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা উদ্ধার

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক নাইম রহমান। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক নাইম রহমান। ছবি: সংগৃহীত

নিখোঁজ হওয়ার দুই দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক নাইম রহমানকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে তাঁকে মাদারীপুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করা হয়েছিল।

মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, নিখোঁজ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তার অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। মাদারীপুরে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেখান থেকে ঢাকায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।

এর আগে গত রোববার সকালে মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন নাইম রহমান। তিনি পরিবারের সঙ্গে রাজধানীর মিরপুরের উত্তর পীরেরবাগ এলাকায় থাকেন। নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর বাবা সাজ্জাদ রহমান জলি থানায় জিডি করেন।

জিডিতে সাজ্জাদ রহমান উল্লেখ করেন, রোববার সকাল ১০টার দিকে ছেলে বাসা থেকে মতিঝিল শাখায় যাওয়ার উদ্দেশে বের হন। কিন্তু অফিস শেষে আর বাসায় ফেরেননি। ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন তিনি অফিসে উপস্থিত হন। তবে দুপুর ১২টার পর নিজের ব্যাগ ও অফিসের পরিচয়পত্র কর্মস্থলে রেখে কোথাও বের হন এবং আর ফিরে আসেননি।

উদ্ধারের আগে তাঁর সর্বশেষ অবস্থান শনাক্ত হয় সায়েদাবাদ এলাকায়। সেদিন দুপুর ১২টা ৫৩ মিনিটে তিনি নিজের ব্যাচের এক সহকর্মীকে বার্তা পাঠান। সেই বার্তায় মানসিক অস্থিরতা বা হতাশার আভাস পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। ঘটনার রহস্য ও নিখোঁজের কারণ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দিল্লি বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের সংবাদ উড়িয়ে দিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গাড়িবোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়িয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে, সেগুলো ‘বিশ্বাসের কোনো কারণ’ নেই বলে উড়িয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যাই কিছু ঘটুক না কেন, (ভারতীয়) মিডিয়া আমাদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করবেই। কিন্তু কোনো কারণ নাই এটা বিশ্বাস করার, কোনো সেন্সিবল লোক তো এটা বিশ্বাস করবে না। কাজেই এটা নিয়ে আমরা বদার্ড না।’

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে লালকেল্লার কাছে গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় ১৩ জন নিহত হন। ভারতীয় সরকার একে ‘নাশকতা’ বললেও কে বা কারা এর জন্য দায়ী, তা নিশ্চিত করেনি। এবিষয়ে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ঘটনার তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত হামলার দায়ও কেউ স্বীকার করেনি।

তবে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই তৈয়বাকে দায়ী করা হচ্ছে এই হামলার জন্য। সেই সঙ্গে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে এই গোষ্ঠী ভারতে হামলা চালাচ্ছে।

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের জাতিসংঘে চিঠি পাঠানোর বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যে কেউ জাতিসংঘে যেকোনো কিছু নিয়ে আবেদন করতে পারে। ‘জাতিসংঘ যদি বাংলাদেশকে কিছু বলে, তখন আমরা দেখব। জাতিসংঘ আমাদের কিছু বলেনি।’

মার্কিন সিনেটে কণ্ঠভোটে পাস হওয়া ‘থিঙ্ক টোয়াইস অ্যাক্ট’ নিয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ভারসাম্যের নীতি বজায় রেখেছে এবং রাখবে। চীন থেকে অস্ত্র কিনলে নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনা নেই।

বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা খাতে চীনের আধিপত্য রোধ করতে থিঙ্ক টোয়াইস অ্যাক্ট-২০২৫ নামে নতুন একটি আইন করছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বলা হয়েছে, কোনো দেশ চীন থেকে সমরাস্ত্র কিনলে ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞাসহ অর্থনৈতিক বিধিনিষেধে পড়তে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিএনসিসি সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বাসস, ঢাকা  
যমুনায় ‘বিএনসিসির মাধ্যমে জাতীয় রূপান্তর’ শীর্ষক উপস্থাপনার পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলেন। ছবি : সিএ প্রেস উইং
যমুনায় ‘বিএনসিসির মাধ্যমে জাতীয় রূপান্তর’ শীর্ষক উপস্থাপনার পরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কথা বলেন। ছবি : সিএ প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশের তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জাতীয় উন্নয়নে সম্পৃক্ত করার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) কার্যক্রমের গুণগত মান ও অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘বিএনসিসির মাধ্যমে জাতীয় রূপান্তর’ শীর্ষক উপস্থাপনার পরে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। উপস্থাপনাটি পেশ করেন বিএনসিসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সঈদ আল মসউদ।

সভায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সঈদ আল মসউদ বিএনসিসির বর্তমান কাঠামো, তরুণ কর্মশক্তি উন্নয়ন কাঠামো, জাতীয় যুব কর্মপরিকল্পনা, জনবল নিয়োগ, বাজেট, চ্যালেঞ্জ এবং সুপারিশের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন।

তিনি জানান, বর্তমানে বিএনসিসির আওতায় ৫৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং সারা দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এর শাখা স্থাপনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আল মসউদ বলেন, ‘বিএনসিসিতে যোগদানের বয়সসীমা ১৭ থেকে ১৮ বছর। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ লাখ দক্ষ ক্যাডেট প্রশিক্ষণ দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিএনসিসির দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে বলেন, গুণগত প্রশিক্ষণ ও ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গি নিশ্চিত করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বিএনসিসির পক্ষে, কিন্তু আমাদের নজর দিতে হবে গুণগত মানে—বিশ্বাসযোগ্য ও যোগ্য প্রশিক্ষক থাকতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের মনোযোগী হতে হবে এবং ভবিষ্যতমুখী ভাবনা নিতে হবে।’

অধ্যাপক ইউনুস আত্মমর্যাদা, শৃঙ্খলা ও অন্তর্ভুক্তিকে বিএনসিসির মূল মূল্যবোধ হিসেবে গুরুত্ব দেন।

তিনি বলেন, ‘বিএনসিসি মানে আত্মমর্যাদা ও শৃঙ্খলা। ক্যাডেটদের জন্য এমন একটি সনদপ্রদান ব্যবস্থা থাকতে হবে, যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানে সহায়ক হবে। পাশাপাশি, তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগও তৈরি করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনসিসি শুধু ছেলেদের জন্য নয়; মেয়েদের সমান অংশগ্রহণও নিশ্চিত করতে হবে।’

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনসিসিকে আরও কার্যকর ও কর্মমুখী করে তুলতে হবে। ‘কোন পরিস্থিতিতে আমরা এই স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে লাগাতে পারি, তা বিবেচনা করতে হবে।’ 

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সাম্প্রতিক জাতীয় ঘটনাগুলোতে বিএনসিসির ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘যোগ্য প্রশিক্ষক নিয়োগকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিএনসিসি ক্যাডেটরা রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছিল—এটি ছিল অত্যন্ত সুন্দর ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’

প্রধান উপদেষ্টা বিএনসিসি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সরকার নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের মাধ্যমে তরুণদের উন্নয়নকে জাতীয় রূপান্তরের মূলধারায় একীভূত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকোর্টে স্থায়ী নিয়োগ পেলেন ২২ বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হাইকোর্ট বিভাগে ২২ জন বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ২২ জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের ২২ জন অতিরিক্ত বিচারককে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথ নেওয়ার তারিখ হতে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, আগামীকাল বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ২২ বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি শপথ পড়াবেন।

২২ বিচারপতি হলেন—

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন, বিচারপতি মো. মনসুর আলম, বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর, বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা, বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেন, বিচারপতি মুবিনা আসাফ, বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম, বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা, বিচারপতি মো. আবদুল মান্নান, বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদী, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ, বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান, বিচারপতি নাসরিন আক্তার, বিচারপতি সাথীকা হোসেন, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেন, বিচারপতি মো. তৌফিক ইনাম, বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমন, বিচারপতি শেখ তাহসিন আলী, বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ, বিচারপতি মো. সগীর হোসেন ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর ২৩ জনকে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২৩ জনের মধ্যে বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী ছিলেন। তাঁর বয়স এখনো ৪৫ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাঁকে এবার স্থায়ী করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত