Ajker Patrika

নেতৃত্বশূন্য সংগঠন, প্রশাসকে অস্বস্তি

  • দলীয়করণেই ঐক্যে ফাটল, চালকের আসনে প্রশাসক।
  • এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, বেসিস, ই-ক্যাব ও চট্টগ্রাম চেম্বার চালাচ্ছেন প্রশাসকেরা।
  • নতুন নেতৃত্বের খোঁজ। সংগঠনে সংস্কার ছাড়া নতুন নেতৃত্বেও সংশয়।
শাহ আলম খান ও রোকন উদ্দীন, ঢাকা
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩: ৪১
নেতৃত্বশূন্য সংগঠন, প্রশাসকে অস্বস্তি

দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সবখানে চেয়ার পরিবর্তনের ধারা চলছে তা থেকে বাদ পড়েনি ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটিও। রাজনৈতিক কারণে সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিলে গত সেপ্টেম্বরে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে সেখানে প্রশাসক নিয়োগ নিয়োগ দেয় সরকার।

শুধু এফবিসিসিআই নয়, একে একে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ, চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার, ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব, তথ্য প্রযুক্তি খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস)-এ। বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তি আছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। তারা বলছেন, ব্যবসায়ী সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব ব্যবসায়ীদের হাতেই থাকা উচিত। কারণ ব্যবসায়ীর স্বার্থ ব্যবসায়ীরাই ভালো বুঝবে।

একের পর এক নির্বাচিত কার্যনির্বাহী পরিষদগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করায় পুরো ব্যবসায়িক খাত কার্যত অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এসব ব্যবসায়িক সংগঠনে যাদের প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের দায়িত্ব সীমিত রাখা হয়েছে কেবল রুটিন কাজ চালানোর মধ্যেই। তাদের মূল কাজ হলো সংগঠনের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্ধারণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু চলমান অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে খাত সংশ্লিষ্ট নানা সমস্যা সমাধানে এ প্রশাসকদের কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।

দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সরবরাহে ঘাটতি ও দরবৃদ্ধি, শিল্প-কারখানায় গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহে সংকট এবং আমদানি জটিলতা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ক্রেতা ও ভোক্তারা চাপে থাকায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংকুচিত হচ্ছে এবং বিনিয়োগে বাধা সৃষ্টি করছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা, বোনাসসহ নানা দাবিতে চলমান আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থায় রয়েছে পোশাক খাত। কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকার হচ্ছে হাজার হাজার শ্রমিক। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও প্রায় একশ পণ্যে ভ্যাট ও শুল্ক আরোপ করে সরকার, যা ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে বাণিজ্যিক গ্যাসের মূল্য বাড়ানোর বিষয়েও আগাম ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব নীতি প্রণয়নে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়ও তেমন কোনো আলোচনা হত না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যবসায় রাজনীতির প্রবেশের কারণে ব্যবসায়ীদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে। ফলে যখন যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, তারা যখন যা খুশি, সহজেই সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারছে। তবে এই একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেবল ব্যবসা ও শিল্পের সংকট তৈরি করেনি, ক্রেতা-ভোক্তার জন্য মারাত্মক ভোগান্তির কারণ হয়েছে।

সাধারণত ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি বা সিদ্ধান্তে সরকারের সঙ্গে এফবিসিসিআইর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখন সেই ভূমিকা কার্যত দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া খাতভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ ও বড় সংগঠন বিজিএমইএর কার্যক্রমও অচল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল মিন্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিশ্বের সব দেশেই বেসরকারি খাতের স্বার্থ রক্ষায় ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো গড়ে ওঠে। তবে দেশে গত ১০ বছরে রাজনীতির মতো এসব সংগঠনেও দলীয়করণ প্রবল হয়েছে। এর ফলেই এখন নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। এই কারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় সরকারের নজরে আসছে না।

তিনি দাবি করেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থে কথা বলতে হলে ব্যবসায়িক সংগঠনে নির্বাচিত প্রতিনিধির প্রয়োজন। তবে বাস্তবতা হলো, সংগঠনগুলোর সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে নতুন নেতৃত্বও ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন রয়েছে।

সরকারের উচিত দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের নিয়ে একটি সংস্কার কমিটি গঠন করা। এই কমিটি দেশের বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন অনুসরণ করে একটি সংস্কার প্রস্তাব তৈরি করবে, যা ভিত্তি হিসেবে সব সংগঠনের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নির্ধারণ করবে। এমনটি না হলে, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে দলীয় আনুগত্যের প্রবণতা থাকবে।

এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ও রাজনৈতিক বিবাদই প্রশাসক নিয়োগের কারণ। নির্বাচিত নেতৃত্ব থাকলে সরকারের সঙ্গে আলোচনা আরও ভালোভাবে হতে পারত।

গত ৪ ডিসেম্বর বেসিসে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ মেহেদী হাসান নিয়োগ পান। এর আগে ২০ অক্টোবর বিজিএমইএ-তে প্রশাসক হিসেবে মো. আনোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দেয় সরকার। ১২ সেপ্টেম্বর এফবিসিসিআই-তে প্রশাসক হিসেবে মো. হাফিজুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর ই-ক্যাবের প্রশাসক হিসেবে মুহাম্মদ সাঈদ আলীকে নিয়োগ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম চেম্বারে প্রশাসক হিসেবে মুহম্মদ আনোয়ার পাশাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব সংগঠনে সাধারণত শেখ হাসিনার সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বা আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্ব ছিল।

এফবিসিসিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ব্যবসায়ী সংগঠনের সংখ্যা ৪৮৫ টি। এক সময় ব্যবসায়ী সংগঠন ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত। তারা নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবি আদায়ে সব সময় সোচ্চার ছিল। সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক বা চাপিয়ে দেওয়া মনে হলে তার প্রতিবাদ করেছে এবং একই সঙ্গে সেই সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের পথও সরকারের সামনে তুলে ধরেছে। এর ফলে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো, তা সব পক্ষের জন্যই গ্রহণযোগ্য ও সহনশীল বিবেচিত হতো।

বিগত সরকারের সময়ে ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোতে অতিরিক্ত রাজনীতি ও দলীয়করণের কারণে তাদের ঐতিহ্য ও কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন এসেছে। এতে কিছু গোষ্ঠী অতিরিক্ত সুবিধা ভোগ ও প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেলেও ভিন্নমতের ব্যবসায়ীরা উপেক্ষিত থেকে গেছে। ফলে তাদের মধ্যে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সদ্য সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সব সময় ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশে সহায়ক পরিস্থিতি তৈরি করতে তৎপর থাকে। সরকারের ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্তও সাধারণত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্ধারণ হয়, যাতে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের স্বার্থ ঠিকভাবে রক্ষা হয়। এ ছাড়া গ্যাস-বিদ্যুৎ সমস্যা, ডলার সরবরাহ, আমদানি এলসি ইত্যাদি সমস্যার সমাধানেও তারা সক্রিয় থাকে। তবে এখন এই সংগঠনগুলোর অনেকেই নেতৃত্বহীন, বিশেষ করে অ্যাপেক্স বডি বা মাদার সংগঠনগুলো, যার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে কিছু সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।

ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদের মতে, ব্যবসায়িক সংগঠনের প্রশাসকদের প্রধান লক্ষ্য হলো সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করে নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা। প্রশাসকেরা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করেন না, আর সাধারণ সদস্যদের অংশগ্রহণ ছাড়া সংগঠনের পক্ষে কাজ করা কঠিন। এর ফলে অনেক ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকে।

বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, এটা ঠিক ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত প্রতিনিধি হলে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো আরও ব্যাপকভাবে দেখবে। তবে নির্বাচনের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের জন্য সবাই সহযোগিতা করছে। জানুয়ারির শেষ নাগাদ নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট কমিটি গঠন করা হবে এবং এপ্রিলের শেষ নাগাদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অ্যাটর্নি জেনারেল পদে থেকেও নির্বাচন করতে পারেন: আসাদুজ্জামান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ফাইল ছবি

ক্ষমতায় (পদে) থেকেও অ্যাটর্নি জেনারেল জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে পারবেন, এখানে অস্পষ্টতার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার-সংক্রান্ত আপিলের শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল সরকারের কর্মচারী নয়, সংবিধানের ৬৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রের আইনজীবী। অ্যাটর্নি জেনারেল ক্ষমতায় থেকেও নির্বাচন করতে পারেন। এখানে কোনো অ্যাম্বিগুইটির (অস্পষ্টতা) কিছু নেই। এটা সেটেল ল।’

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘আমি যতক্ষণ অ্যাটর্নি জেনারেল আছি, ততক্ষণ রাষ্ট্রের আইনজীবী। দায়িত্ব পালনের সময় আমি রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ করেছি। এর বাইরে না, এর উপরে-নিচে কোনো জায়গায় না। অ্যাটর্নি জেনারেল যদি মনে করে সরকারের কোনো অ্যাকশন ডিফেন্ডেবল না, রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর। আমি সেই সরকারের বিরুদ্ধেও দাঁড়াতে পারি—দ্যাট ইজ ল।’

এর আগে গতকাল বুধবার পদ ছেড়ে দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে ভোট করার কথা জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি ভোট করব। আমি নমিনেশন ওখানে চেয়েছি। আমি ভোট করব, আমি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আছি এখনো। আমার অ্যাটর্নি জেনারেল পদ ছেড়ে যেয়ে আমি ভোট করব। যখন সময় আসবে তখন করব।’

গত বছরের ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি বিএনপির মানবাধিকার-বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারণা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পুলিশ সদর দপ্তর। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ সদর দপ্তর। ছবি: সংগৃহীত

সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও ছবি ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। প্রতারক চক্র জনপ্রতিনিধি বা শীর্ষ কর্মকর্তাদের ছবি প্রোফাইল হিসেবে ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে টাকা দাবি করছে।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) পুলিশ সদর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনো আইডিতে পরিচিত ব্যক্তির ছবি থাকলেই সেটি তাঁর নিজের নম্বর—এমন ধারণা করা ঠিক নয়। এ ধরনের বার্তায় প্রতিক্রিয়া না দেওয়ার এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে। এ ধরনের প্রতারণায় কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাগেরহাট ডিসি অফিসের সাবেক উমেদারের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাগেরহাট ডিসি অফিসের সাবেক উমেদারের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলা

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক উমেদার (এমএলএসএস) আব্দুল মান্নান তালুকদারসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের অনুসন্ধানের ভিত্তিতে বাগেরহাট সদর থানায় মামলাটি করা হয়।

মামলার অন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন মো. আনিসুর রহমান (৬২), সালেহা বেগম ও আব্দুল মান্নানের স্ত্রী জেসমিন নাহার।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সিআইডির মুখপাত্র বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ১৯ হাজার ৯৬৭ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করা হয়। পরে এসব অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তির নামে-বেনামে ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়।

তদন্তে জানা যায়, আব্দুল মান্নান তালুকদার ১৯৮৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরি করেন। চাকরিরত অবস্থায় তিনি জমি কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেন। অবসরে যাওয়ার পর তিনি ‘মানুষ মানুষের জন্য’ স্লোগানে ‘নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে মান্নান ও তাঁর পরিবারের মালিকানা ছিল ৯৫ শতাংশ এবং অন্য ৫ শতাংশের মালিক ছিলেন আনিসুর রহমান।

প্রতিষ্ঠানটি সুদবিহীন ‘হালাল ব্যবসার’ নামে প্রচারণা চালিয়ে ৫ হাজার টাকা থেকে যেকোনো অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগে আকৃষ্ট করত। বিনিয়োগের চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ মুনাফার কথা বলা হতো। এভাবে অর্থ সংগ্রহ করে তা গোপনে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যবসায় স্থানান্তর করেন।

তদন্তে আরও জানা যায়, সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ৬৬ কোটি ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা মান্নানের মালিকানাধীন সাবিল গ্রুপের ছয়টি সহযোগী প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো এজাক্স জুট মিলস লিমিটেড (খুলনা), সাবিল ড্রেজিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড (বাগেরহাট), সাবিল জেনারেল হাসপাতাল (পিরোজপুর), সাবিল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, সাবিল ল প্লাজা ও সাবিল মৎস্য প্রকল্প।

বাকি অর্থও বিভিন্ন নামে-বেনামে সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রতারণা ও অর্থ পাচারের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট তদন্ত করছে।

সিআইডি জানিয়েছে, অর্থের পূর্ণ প্রবাহ শনাক্ত, সম্পদ জব্দ ও সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসির নিবন্ধন পেল ৬৬ পর্যবেক্ষক সংস্থা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ১৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পেয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ইসির জনসংযোগ পরিচালক মো. রুহুল আমিন মল্লিক এ তথ্য জানান।

ইসি সূত্র জানিয়েছে, এবার নির্ধারিত সময়ে ৩১৮টি এবং পরে ১৩টি পর্যবেক্ষক সংস্থা নিবন্ধনের জন্য ইসিতে আবেদন করে। প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকেছিল ৭৩টি সংস্থা। দাবি-আপত্তি শেষে ৬৬টি সংস্থাকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত