Ajker Patrika

প্রবাসীদের প্রতি ভোটে খরচ হবে ৭০০ টাকা: ইসি সানাউল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আউট অব কান্ট্রি ভোটিং (ওসিভি) বিষয়ে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে অনলাইনে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান তিনি।

প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ভোটার তালিকায় নাম থাকা বাধ্যতামূলক। যিনি ভোটার হয়েছেন, তাঁরই এনআইডি রয়েছে। তাই এবার এনআইডি ছাড়া ভোট দেওয়া যাবে না। সশরীর ভোট ও নো ভিসা রিকয়ার্ড আমলে নেওয়া সম্ভব হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কার্যক্রম স্থগিত থাকা দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে। সমর্থকদের ভোট দেওয়ার বিষয়টি নিষিদ্ধ নেই। তাই সমর্থকেরা ভোট দিতে পারবেন।

প্রবাসীদের ভোটপ্রতি ৭০০ টাকা ব্যয় হবে জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, এর মধ্যে ৫০০ টাকা যাবে প্রবাসে আনা-নেওয়ায়। আর ২০০ টাকা অন্যান্য খাতে। পোস্টাল ব্যালটে নিবন্ধন ও ভোট দেওয়ার হার কম। ব্যয়বহুল হলেও যৌক্তিক বিবেচনায় পোস্টাল ভোটিং করা হচ্ছে আর প্রত্যাশাকেও সীমিত রাখতে হবে। পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া, আনা-নেওয়ায় ভোটারের কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। সরকার পুরো অর্থ ব্যয় করবে।

পোস্টাল ব্যালটে ভোটের বৈশ্বিক চিত্র জানিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের পোস্টাল ভোটিংয়ে নিবন্ধনের হার মাত্র ২ দশমিক ৭ শতাংশ। এদের মধ্যে ভোট দেওয়ার প্রবণতাও ৩০ শতাংশের নিচে। ভারতে সর্বশেষ ৪ কোটি প্রবাসীর মধ্যে ১ লাখ ১৯ হাজার নিবন্ধন করেছেন, ভোট দিয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৯০০ জন। মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৮ লাখ প্রবাসী আছেন। তাঁরা গত তিনটা নির্বাচন ধরে চেষ্টা করে সর্বশেষ নির্বাচনে নিবন্ধন করতে পেরেছিলেন ৫৪ হাজার। যদিও তাঁদের নিবন্ধনে একটা নেগেটিভ ইনসেনটিভ কাজ করে। কারণ, তাঁদের এই খরচটা বহন করতে হয় ইনডিভিজুয়াল ভোটারের। দেশ এই খরচ বহন করে না।

সানাউল্লাহ জানান, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকারে প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর বর্তমান নির্বাচন কমিশন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে শুরু করে এবং আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতীক বরাদ্দের পর ভোটের বাকি থাকে ২০-২১ দিন। ব্যালট ছাপানোর পর রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পৌঁছাতে সময় লাগে ১০-১২ দিন। তখন বাকি থাকে ৭-১০ দিন। যাঁরা প্রবাসে থাকেন, তাঁদের জন্য এই ৭-১০ দিনের মধ্যে ব্যালট আনা-নেওয়া সম্ভব ছিল। তাই আজ পর্যন্ত একটি ভোটও প্রবাস থেকে কাস্ট করা যায়নি।

এই সীমাবদ্ধতা মাথায় রেখে বর্তমান ইসির উদ্যোগ তুলে ধরে মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘যাঁরা অনলাইনে নিবন্ধন করবেন, তাঁদের কাছে ব্যালটটা আগেই চলে যাবে। ব্যালট হবে শুধু প্রতীকসংবলিত। যখন প্রতীক বরাদ্দ হবে, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা কনফার্ম হবে। প্রার্থী তালিকা দেখার পর ভোট দেবেন এবং ভোট দেওয়ার পরে উনি খামটি আবার ফেরত পাঠাবেন।

‘আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মূলত দুটি। পোস্টাল ব্যালটের ব্যাপারে অন্য চ্যালেঞ্জগুলো তো আছেই। এক নম্বর চ্যালেঞ্জ হচ্ছে গোপনীয়তার। ইনডিভিজুয়াল ভোটাররা যেন এই গোপনীয়তাটা রক্ষা করেন এবং সময়মতো ভোট দেন। কেউ যেন তাঁর ভোটে তাঁকে ইনফ্লুয়েন্স করতে না পারে। তাঁর ভোটটা তিনি কাকে দিয়েছেন, এটা যেন ডাইভার্স না হয় এবং এটা তাঁর ডিক্লারেশনের মধ্যেও থাকবে। তিনিও একটা আন্ডারটেকিং দেবেন ইনডিভিজুয়াল ভোটার।’

এ ক্ষেত্রে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়ে জোর দেন ইসি।

তিনি বলেন, দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা নিশ্চিত হওয়ার পরে কিন্তু (প্রবাসীর) ভোট শুরু হয়ে যাবে। কিন্তু যদি কোনো আসনে শেষ মুহূর্তে আদালতের আদেশে প্রার্থী তালিকা পরিবর্তন হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে সেই আসনে বিদেশ থেকে সংগৃহীত সব ভোট বাদ পড়ে যাবে। এই একটা চ্যালেঞ্জ আছে।

পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এক-চতুর্থাংশ ব্যালট নষ্ট হয়। পৃথিবীতে এই পদ্ধতিতে প্রবাসী ভোটের অয়েস্টেজের হার হচ্ছে ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি চারটি ব্যালটের মধ্যে একটিই সময়মতো পৌঁছায় না। তারপরও দেড় কোটি প্রবাসীর আগ্রহের কারণে ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগটি সৃষ্টি করা হচ্ছে, বলেন তিনি।

এ সময় ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, যাঁরা নিবন্ধন করবেন, তাঁদের ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানান।

৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার হওয়ার সুযোগ রয়েছে জানিয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘আবেদন করার সময় বাংলাদেশি মোবাইল নম্বর দেওয়ার কথা বলা হলেও অনেকে প্রবাসের নম্বর দেন। এতে কার্যক্রম দেরি হয়। আমরা বাংলাদেশে থাকা আত্মীয়দের মোবাইল নম্বর দিতে বলি। কারণ, যাতে সহজে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি থেকে বাদ

ঘরে সদ্য বিবাহিত বিক্রয় প্রতিনিধির লাশ, চিরকুটে লেখা ‘জীবন খুবই কঠিন’

নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করেও মুখে দুর্গন্ধের কারণ, পরিত্রাণের উপায়

২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর হাইস্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা নয়: শিক্ষা মন্ত্রণালয়

রাজশাহী খাদ্য অফিস: ‘আশীর্বাদপুষ্ট’ কর্মকর্তা বহাল

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত