Ajker Patrika

বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে: প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব

বাসস, ঢাকা  
দেড় দশক পর গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ওই বৈঠকের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে
দেড় দশক পর গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ওই বৈঠকের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

অন্তর্বর্তী সরকার প্রো-বাংলাদেশপন্থী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার অনেক উদাহরণ রয়েছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ওঠা প্রশ্নের ব্যাখ্যায় শুক্রবার আবুল কালাম আজাদ মজুমদার তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে এ কথা বলেন।

বিশ্বে পূর্বশত্রুদের মিত্রে পরিণত হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড শতাব্দী ধরে অসংখ্য যুদ্ধ করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হাত মিলিয়েছে। একই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র জাপানে বোমাবর্ষণ করেছিল, কিন্তু পরে তারা মিত্রে পরিণত হয়।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কি পাকিস্তানপন্থী হয়ে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি আমরা। এ ধরনের প্রশ্ন আমাদের মোটেও অবাক করেনি। এমন কিছু মানুষ সব সময়ই থাকবে, যারা বাংলাদেশের স্বাধীন পরিচয়ে খুব কমই বিশ্বাস করবে।’

উপপ্রেস সচিব বলেন, ‘আমাদের জবাব স্পষ্ট ছিল। অতীতে দেশের পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে যা-ই ঘটুক না কেন, এখন থেকে এটি বাংলাদেশপন্থী নীতি হবে, যা আমাদের নিজস্ব স্বার্থে পরিচালিত হবে।’

এক প্রতিবেশীকে খুশি রাখতে অন্য প্রতিবেশী থেকে দূরে সরে যাওয়া একটি স্বাধীন জাতির পররাষ্ট্রনীতি হতে পারে না বলে মনে করেন আজাদ মজুমদার।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের সফররত পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচকে দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাঁর কথাগুলো বাস্তবায়নে ২৪ ঘণ্টারও কম সময় লেগেছে। এ সময় তিনি (বালুচ) পারস্পরিক স্বার্থের জন্য একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।

আজাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারী একটি আবেগঘন বিষয় হলো, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর গণহত্যা ও নৃশংসতার জন্য দেশটির পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি।

তিনি বলেন, এমনকি পাকিস্তানের সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই বিশ্বাস করতেন, ক্ষমা চাওয়া—সদিচ্ছা ও উদারতার একটি কাজ হবে। কিন্তু পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর ও সামরিক আমলাতন্ত্র সর্বদা এই ধরনের কথার বিরোধিতা করেছে। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো ক্ষমা চাওয়া হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব জানান, বাংলাদেশ সম্পদের বিভাজনের বিষয়টির ওপরও জোর দিয়েছে, যা অতীতের শাসকদের কাছে ভুলে যাওয়া একটি বিষয় ছিল। অতীতে শাসকেরা এটি আলোচনর চেয়ে বিচ্ছিন্নতা পছন্দ করতেন।

তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালের একটি অনুমিত হিসাব অনুযায়ী, পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশের পাওনা ৪ দশমিক ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অভ্যন্তরীণ মূলধন সৃষ্টি, বৈদেশিক ঋণ নিষ্পত্তি এবং বৈদেশিক আর্থিক সম্পদ ধরে রাখার অনুমিত হিসাবের ভিত্তিতে এটি নির্ধারণ করা হয়।

আজাদ মজুমদার বলেন, বাংলাদেশের আরও প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দাবি করেছে, যা ১৯৭০ সালের নভেম্বরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ঘূর্ণিঝড় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশ/সংস্থাগুলো অনুদান দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের লাহোর শাখায় স্থানান্তরিত হওয়ার আগে এই অর্থ ঢাকায় স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের অফিসে পড়ে ছিল।

আজাদ মজুমদার তাঁর পোস্টে আরও উল্লেখ করেন, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন আরেকটি বিষয় ছিল, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ককে বাধাগ্রস্ত করেছিল। অতীতে পাকিস্তান তাদের লোকদের মাত্র ১ লাখ ২৫ হাজার জন ফিরিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ১৪টি জেলার ৭৯টি শিবিরে প্রায় ৩ লাখ ২৫ হাজার জন ছিল।

তিনি বলেন, এই বিষয়গুলোই দুই দেশের মধ্যে একটি সুস্থ ও ভবিষ্যৎমুখী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। সমস্যা সমাধানের সর্বোত্তম বিকল্প হলো আলোচনা এবং অন্তর্বর্তী সরকার ঠিক এটাই করার চেষ্টা করছে। অনেক বছর পর বাংলাদেশ পাকিস্তানকে আলোচনায় এনেছে এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনা অন্বেষণ করার পাশাপাশি যথাযথভাবে বিষয়গুলো উত্থাপন করেছে।

উপপ্রেস সচিব স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত ডিসেম্বরে মিসরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে এক বৈঠকে অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বালুচের সঙ্গে বৈঠক করার সময় তিনি তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। একই বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতের সুবিধার্থে অতীতের ইস্যুগুলো সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের এখন একসঙ্গে কাজ করা ও এগিয়ে যাওয়ার সম্ভবত সময় এসেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধার

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাইকোর্টে স্থায়ী নিয়োগ পেলেন ২২ বিচারপতি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

হাইকোর্ট বিভাগে ২২ জন বিচারপতিকে স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় থেকে ২২ জনকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে হাইকোর্ট বিভাগের ২২ জন অতিরিক্ত বিচারককে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথ নেওয়ার তারিখ হতে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, আগামীকাল বুধবার বেলা দেড়টার দিকে ২২ বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি শপথ পড়াবেন।

২২ বিচারপতি হলেন—

বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন, বিচারপতি মো. মনসুর আলম, বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুর, বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজা, বিচারপতি মো. যাবিদ হোসেন, বিচারপতি মুবিনা আসাফ, বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলাম, বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা, বিচারপতি মো. আবদুল মান্নান, বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদী, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ, বিচারপতি মো. হামিদুর রহমান, বিচারপতি নাসরিন আক্তার, বিচারপতি সাথীকা হোসেন, বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তাজরুল হোসেন, বিচারপতি মো. তৌফিক ইনাম, বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমন, বিচারপতি শেখ তাহসিন আলী, বিচারপতি ফয়েজ আহমেদ, বিচারপতি মো. সগীর হোসেন ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজী।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর ২৩ জনকে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ২৩ জনের মধ্যে বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী ছিলেন। তাঁর বয়স এখনো ৪৫ বছর পূর্ণ না হওয়ায় তাঁকে এবার স্থায়ী করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধার

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র: শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৫
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

অন্তর্বর্তী সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জেনিফার মামলাটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার (সাইবার ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. রাব্বি আলম, জয় বাংলা ব্রিগেডের সদস্য কবিরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এলাহী নেওয়াজ মাছুম, জাকির হোসেন জিকু, অধ্যাপক তাহেরুজ্জামান, এ কে এম আক্তারুজ্জামান, আওয়ামী লীগ নেতা সাবিনা ইয়াসমিন, আজিদা পারভীন পাখি, অ্যাডভোকেট এ এফ এম দিদারুল ইসলাম, মাকসুদুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ রুবিনা আক্তার, সাবেক সংসদ সদস্য পংকজ নাথ, লায়লা বানু, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, রিতু আক্তার, নুরুন্নবী নিবির, সাবিনা বেগম ও শরিফুল ইসলাম রমজান।

এ মামলায় গত ১৪ আগস্ট ২৮৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করে আসামিদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে বলে জানান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জন জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই মিটিংয়ে অংশগ্রহণকারীদের ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, মিটিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে না দেওয়ার আলোচনা হয়। একই সঙ্গে সরকারকে উৎখাত করতে গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান।

এর আগে এ বছরের ২৭ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে একই আদালতে মামলাটি করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারায় ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে সিআইডির এই কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্ত শেষে ২৮৬ জনকে আসামি করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর জয় বাংলা ব্রিগেডের জুম মিটিংয়ে শেখ হাসিনাসহ অনেকে অংশ নেন। এ সময় শেখ হাসিনা তাঁর নেতা-কর্মীদের সামনে দেশবিরোধী বক্তব্য দেন; অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উৎখাতের নির্দেশ দেন। এ বক্তব্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের মধ্যে ২৩ জন এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। শেখ হাসিনাসহ যাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল, তাঁদের পরোয়ানাসংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করায় মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধার

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ৩১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ৪ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ৪১
মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকদের ৩১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ৪ এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ৩১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে চারটি রিক্রুটিং এজেন্সির পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলাগুলো করেন।

দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন আজ মঙ্গলবার বিকেলে মামলার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় ১৮ হাজার ৫৬৩ জন শ্রমিক পাঠিয়ে সরকারনির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে তাঁদের কাছ থেকে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি অর্থ আদায়ের মাধ্যমে ৩১০ কোটি ৯৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চারটি এজেন্সির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের মালিক ফরিদা বানু ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আব্দুল হাইকে একটি মামলার আসামি করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৪৮৬ জনের কাছ থেকে সরকারনির্ধারিত ফির অতিরিক্ত ৫৮ কোটি ৩৯ লাখ ৫ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগে আনা হয়েছে।

একইভাবে অদীতি ইন্টারন্যাশনালের মালিক বিশ্বজিৎ সাহার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৮৫২ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৬৪ কোটি ৫২ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা আদায় ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ ছাড়া রাব্বি ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ৩ হাজার ১৪৮ জনের কাছ থেকে ৫২ কোটি ৭২ লাখ ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গ্রহণের অভিযোগে এর মালিক মোহাম্মদ বশিরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

চতুর্থ মামলাটি করা হয়েছে আরভিং এন্টারপ্রাইজের মালিক হেফজুল বারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের নামে। তাঁর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৭৭ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১৩৫ কোটি ২৮ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা আদায় ও আত্মাসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এর আগে ৬ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠিয়ে ৫২৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

চলতি বছরের ১১ মার্চ একই দেশে কর্মী পাঠিয়ে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩২ জনের নামে এবং ১৪ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১৩ রিক্রুটিং এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তার নামে মামলা করে দুদক।

বিভিন্ন অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ফের বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে দেশটি।

সে দেশে শ্রমিক পাঠাতে সরকারনির্ধারিত ফি সর্বোচ্চ ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধার

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশের সব বিমানবন্দরে বাড়তি সতর্কতা জারি

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা ­­
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ১০
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফাইল ছবি

দেশজুড়ে চলমান সহিংসতা ও নাশকতার আশঙ্কায় দেশের সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

আজ মঙ্গলবার বেবিচকের সদর দপ্তর থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে এক চিঠিতে এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়।

গত ১৮ অক্টোবর রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো হাউসে (পণ্য রাখার স্থান) আগুন লাগার পর বিমানবন্দরগুলোতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা কার্যকর করা হয়।

এবার এর পাশাপাশি বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছে বেবিচক; যাতে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হয়।

চিঠিতে বলা হয়, সব বিমানবন্দরে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিমানবন্দর এলাকায় ভেহিকল প্যাট্রোল ও ফুট প্যাট্রোল বাড়ানো এবং মনিটরিং ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য ঝুঁকি বা হুমকির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সব বিমানবন্দরে সর্বোচ্চসংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েনের পাশাপাশি সার্বিক ফায়ার সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়া যায়।

বেবিচকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মাদ কাউছার মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সব বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো হাউসে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকেই অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় সিসিটিভি মনিটরিং, টহল কার্যক্রম এবং ফায়ার সার্ভেইল্যান্স আরও জোরদার করা হয়েছে।

সূত্রমতে, এই বিশেষ সতর্কতা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চার জেলায় কর্মী নেবে সিটি ব্যাংক, আবেদন শেষ ১৬ নভেম্বর

বাসা থেকে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গের তরুণী ‘যুব মহিলা লীগের সদস্য’

বিএনপির ফাঁকা রাখা ঢাকার আসনে এনসিপির মনোনয়নপত্র নিলেন তাসনিম জারা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে ছাত্রদল নেতার লাশ উদ্ধার

ভারতীয় গণমাধ্যমে বলিউডের ‘হি-ম্যান’ ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুর খবর

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত