Ajker Patrika

এসব নিয়ে হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত, গুমের ঘটনা প্রসঙ্গে ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ জুন ২০২৫, ১৭: ০৬
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: পিআইডি

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গুমের ঘটনাগুলো নিয়ে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। তিনি বলেছেন, ‘কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের “ভদ্রলোকেরা”, আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনেরা এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। আপনারা যা যা কিছু পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। এই ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন ফিট বাই তিন ফিট খুপড়ির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতা, সেসব চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত।’ আজ বুধবার গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।

আজ বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশনের প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেন। এ সময় কমিশনের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন ও নাবিলা ইদ্রিস। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।

প্রতিবেদন জমার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ঘিরে শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেও আগ্রহ রয়েছে।

এ সময় উপদেষ্টা কমিশন সদস্যদের কাছে প্রতিবেদনের আশু করণীয়গুলো চিহ্নিত করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়েছে, তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন, যাতে সরকার স্বল্প সময়ের মধ্যে কাজগুলো শুরু করতে পারে।

কমিশনের একজন সদস্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে জড়িত অনেক কর্মকর্তা ও অন্যরাও অনুশোচনায় ভোগেন। তাঁরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আত্মশুদ্ধির একটা প্রচেষ্টা হিসেবে। দুজন অফিসার লিখিতভাবে এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। চিঠিগুলো গণভবনে পাওয়া গেছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এই চিঠির কথা স্বীকারও করেছেন।’

কমিশনের সদস্যরা জানান, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে এবং এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে। কমিশনের সদস্যরা আরও জানান, অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনো তিন শতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তাঁরা।

কমিশনপ্রধান বলেন, বিদ্যমান আইনে কেউ সাত বছর নিখোঁজ থাকলে তাঁকে মৃত বলে ধরে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আইন সংশোধন করে এটিকে পাঁচ বছর করার সুপারিশ করেন তিনি।

অতি দ্রুত যাতে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে করণীয় জানাতেও কমিশনকে পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।

কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা ভয়ভীতি, নানান রকম হুমকি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এ দেশের মানুষের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। ভবিষ্যতে যারা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করবে, আপনারা তাদের অনুপ্রেরণা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি বাসভবনে একাই থাকতেন শরীয়তপুরের ডিসি, পরিবার থাকত ঢাকায়

স্বামীকে ভিডিও কলে রেখে ফাঁস দিলেন স্ত্রী

‘তোরা তো পুলিশ মারছিস, ফাঁড়ি জ্বালাইছিস’ বলেই জুলাই যোদ্ধাকে মারধর

ইরানে ভূমিকম্প নিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষার জল্পনা, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

বুশেহরে হামলা হলে মধ্যপ্রাচ্যে ‘ফুকুশিমা’ ঘটতে পারে, বিশ্লেষকদের হুঁশিয়ারি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত