Ajker Patrika

সিদ্ধান্ত গ্রহণের সহজ ৬ উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি চর্চার বিষয়। আপনি সিদ্ধান্তের দাস নন, বরং সিদ্ধান্ত আপনার নিয়ন্ত্রণে! প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি চর্চার বিষয়। আপনি সিদ্ধান্তের দাস নন, বরং সিদ্ধান্ত আপনার নিয়ন্ত্রণে! প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

রাতের খাবারে কী খাবেন, কোথায় ঘুরতে যাবেন, কোন চাকরিতে আবেদন করবেন—এসব ছোট-বড় সিদ্ধান্তই আমাদের প্রতিদিনের জীবনের অংশ। কেউ কেউ ঝটপট সিদ্ধান্ত নিতে পারে, আবার অনেকে ‘কী করব’ ভাবনায় আটকে থাকে। এ ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, আমি কী চাই। মূল লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। সেটা ক্যারিয়ার, সুখ, আয়, অভিজ্ঞতা—যা-ই হোক না কেন। লক্ষ্য পরিষ্কার হলে সঠিক বিকল্প বেছে নেওয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে। মোটকথা, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেই বিখ্যাত সংলাপ বিবেচনায় রাখবেন, ‘ভাবো, ভাবা প্র্যাকটিস করো’।

সিদ্ধান্ত গ্রহণ কোনো জাদুবিদ্যা নয়, এটা চর্চার বিষয়। আপনি যত বেশি সিদ্ধান্ত নেবেন, তত বেশি শিখবেন। ভুল করলেও পিছিয়ে যাবেন না। মনে রাখবেন, আপনি সিদ্ধান্তের দাস নন, বরং সিদ্ধান্ত আপনার নিয়ন্ত্রণে! সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতাও অনুশীলনের মাধ্যমে বাড়ে। প্রতিদিন ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস করুন। ছোট সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যত দক্ষ হবেন, বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তত সময় পাবেন ভেবে নেওয়ার জন্য।

বিকল্প ভাবুন, ভাবা প্র্যাকটিস করুন

সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বিবেচনায় আনুন সব সম্ভাব্য বিকল্প। এটা শুনতে সাধারণ মনে হলেও অনেক সময় আমরা সিদ্ধান্তের চাপের কারণে বিভিন্ন বিকল্প ঠিকমতো চিন্তা করি না। যতটা সময় হাতে আছে, সে অনুযায়ী বিকল্পগুলো নিয়ে ভাবুন। হোক সেটা কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিট। তারপর একে একে ভাবতে থাকুন কোন বিষয়গুলো আপনার লক্ষ্য পূরণ করতে সাহায্য করবে। যেসব বিকল্প আপনাকে মূল লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে না, সেগুলো সরিয়ে দিন। সেগুলোতে বেশি সময় নষ্ট করবেন না। এতে আপনার সামনে থাকবে শুধু বাস্তবসম্মত ও সহায়ক অপশনগুলো। অনেক সময় কোনো বিকল্পই খুব ভালো মনে হয় না। তখন বর্তমান বিকল্পগুলোর মধ্য থেকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়ার চেয়ে যেটা তুলনামূলক ভালো মনে হয়, সেটাই বেছে নিন এবং এগিয়ে যান।

অহংবোধ দূর করুন

সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় অহংবোধ রাখবেন না। অনেক সময় মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অস্পষ্ট করে ফেলে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় অহংবোধ রাখবেন না। অনেক সময় মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অস্পষ্ট করে ফেলে। প্রতীকী ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি।

অন্য কারও সঙ্গে আপনার সিদ্ধান্ত ও বিকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করুন। অনেক সময় কথা বলার মধ্যেই জিনিসগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। আপনার লক্ষ্য কী, সেটা আগে বলুন এবং তারপর বিকল্পগুলো ব্যাখ্যা করুন। এতে হয়তো বুঝতে পারবেন, কোন বিকল্পটা আপনি নিজের অজান্তেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। অনেক সময় মুখে বললেই চিন্তাটা পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে এ ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো, নিজের মধ্যে থাকা অহংবোধ কমানো। এটা কঠিন হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। অহংবোধ অনেক সময় আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি অস্পষ্ট করে ফেলে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন উদ্যোক্তা যদি নিজের ব্যর্থতার পেছনে ভুল কারণ খোঁজে শুধু নিজের অহং রক্ষা করার জন্য, তবে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

রুটিন বদলান, নতুন কিছু শিখুন

নতুনভাবে কিছু ভাবতে হলে মাঝে মাঝে আমাদের রুটিনে পরিবর্তন আনতে হয়। একঘেয়েমি থেকে বের হয়ে নতুন অভিজ্ঞতা নিন। নতুন কিছু শেখা বা নিজেকে নতুন পরিবেশে ফেলা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে আরও দক্ষ করে তুলবে। অন্যদিকে একই রুটিনে থাকলে চিন্তাভাবনায় স্থবিরতা আসে। তাই মাঝে মাঝে নতুন কিছু শিখুন, নতুন জায়গায় যান, নতুন মানুষদের সঙ্গে মিশুন। এতে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হবে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গিও বদলাবে। প্রতিদিন ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস করুন। আজ কী পরবেন, কী খাবেন, কোন কাজ আগে করবেন—এসব ছোট সিদ্ধান্তে দক্ষ হলে বড় সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ হয়ে যাবে।

পরিণতি কল্পনা করুন

ভবিষ্যৎ ফলাফল নিয়ে একটু চিন্তা করুন। যেমন আয় বাড়বে কি? সময় লাগবে কত? মানসিক চাপ বাড়বে কি না— প্রশ্নগুলোর উত্তরই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। মাইন্ডফুলনেস বা সচেতনতা আমাদের মনকে শান্ত করে এবং চিন্তার জট ছাড়াতে সাহায্য করে। এই চর্চা করতে বেশি কিছু দরকার হয় না। দিনে কয়েক মিনিট যেকোনো সময় নিজের মনোযোগ বর্তমান মুহূর্তে ফিরিয়ে আনুন। অনেক সময় অহংকারের কারণে আমরা নিজেকে সঠিক ভাবি এবং ভুল সিদ্ধান্ত আঁকড়ে ধরি। সেটা আত্মবিশ্বাস নয়, বরং নিজের বিকাশের পথে বাধা।

মননশীল হোন, বিরতি নিন

গতি ধীর করুন। প্রয়োজন হলে ঘুমিয়ে নিন বা একটু হেঁটে আসুন। অনেক সময় সাময়িক বিরতিই মানসিক চাপ কমিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। ভালো ঘুম বা অল্প সময়ের বিশ্রাম আপনার চিন্তাভাবনা পরিষ্কার করে তুলতে পারে। ঘুমের সময় মস্তিষ্ক তথ্য প্রক্রিয়া করে এবং অনেক সময় ঘুম থেকে উঠে আপনি সমস্যার সমাধান পেয়ে যেতে পারেন। যদি ঘুমানোর সময় না থাকে, তাহলে অন্তত কিছু সময়ের জন্য পিছিয়ে এসে একটু বিশ্রাম নিন। তারপর আবার ভাবুন।

ভুল করতে ভয় নেই

ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভয় আমাদের অনেক সময় পঙ্গু করে দেয়। মনে রাখুন, ভুল করা স্বাভাবিক। ভুল করলেই দুনিয়া শেষ হয়ে যায় না। সিদ্ধান্ত ভুল হলে সেটি শুধরে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু সিদ্ধান্ত না নেওয়া মানেই অচলাবস্থা। একবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলার পর ‘যদি ওটা করতাম...’ এ ধরনের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। এই ধরনের চিন্তা খুবই ধ্বংসাত্মক। ক্ষতিকর জিনিস হলো, একবার সিদ্ধান্ত নিয়ে বারবার আফসোস করা। সামনে আরও অনেক সুযোগ আসবে—এই ভেবে এগিয়ে যান। সব সময় পারফেক্ট বিকল্প থাকবে না। তখন যেটা সবচেয়ে কম খারাপ মনে হয়, সেটিই বেছে নিন। বসে থাকা বা দেরি করার থেকে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো অনেক ভালো।

সূত্র: উইকি হাউ, ক্যালেন্ডার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাস্তি পাচ্ছেন বিটিআরসির মহাপরিচালকসহ ৩০ জনের বেশি কর্মকর্তা

ভূমি অফিসের কাণ্ড: এসি ল্যান্ড দপ্তরের নামে দেড় কোটি টাকা আদায়

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

বরখাস্ত সৈনিককে অস্ত্র দিয়েছেন বিএনপি নেতা, অডিও নিয়ে তোলপাড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত