মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঝিকরগাছা (যশোর)
ফুল চাষের জন্য ফুলকানন নামে খ্যাত পানিসারা গ্রাম। এর প্রতিবেশী গ্রামের নাম হাঁড়িয়া। এ দুটি গ্রামের মিলনস্থানে গড়ে ওঠা পর্যটনস্থানটি ফুল মোড় নামে পরিচিত। এটি ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালীর কাছে। ফুল মোড়ে চোখ জুড়ানো ফুল দেখতে এসে দর্শনার্থীরা এখন মন জুড়ানো খাবারের স্বাদও নিতে পারছে। এখানকার হান্ডি ঘর নামের একটি খাবারের হোটেলে মাটির হাঁড়িতে রান্না হচ্ছে সুস্বাদু মাংস। এর খুশবু ছাপিয়ে যাচ্ছে ফুলের সৌরভকেও।
মাটির হাঁড়িতে রান্না আমাদের অঞ্চলে নতুন কিছু নয়, বরং অনেক প্রাচীন। তবে অ্যালুমিনিয়াম ও লোহার পাত্রের দাপটে মাটির হাঁড়িতে রান্নার এ ধরন এখন বিলুপ্তই বলা চলে। তাই কৌতূহলী মানুষের কাছে হান্ডি ঘরের মাটির হাঁড়িতে রান্না করা মাংস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফুলের রাজ্যের এই খাবার এখন অনেকের কাছে ফুল মোড়ের আরেক ফুল হিসেবে পরিচিত।
পানিসারা-হাঁড়িয়া ফুল মোড় ফুলের সৌরভ নিতে গিয়ে নাকে ঢুকল মাংসের ঘ্রাণ। এক পা দু পা করে এগোতে থাকলাম সুগন্ধের উৎসের দিকে। পানিসারা-হাঁড়িয়া ফুল মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে এগোলে একটি দোতলা ভবন দেখা যাবে। সেই ভবনের নিচে ঝুলছে ‘হান্ডি ঘর’ নামের এক রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ড। সেখানে উপস্থিত হতে ঘ্রাণ আরও তীব্রভাবে ঢুকল নাকে। ডান দিকে তাকাতেই নজরে পড়ল চুলার ওপর দুটি মাটির হাঁড়ি। সেগুলোর মুখ বেশ শক্তভাবে সরা দিয়ে আটকানো। পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির মুখের দিকে তাকাতেই বলে উঠলেন, ‘এখানে মাটির হাঁড়িতে গোশত রান্না হচ্ছে। সম্পূর্ণ পানি বাদে এই রান্না। ভেতরে যান।’ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বোঝার চেষ্টা করলাম খেয়ে বেরিয়ে আসা মানুষ কী বলেন। কয়েকজনের কথা শুনে মনে হলো, রিভিউ ভালো!
রিভিউ শুনতে শুনতে হান্ডি ঘরের সম্মুখে নজরে এল স্টিলের চকচকে টেবিলের ওপর কয়লার চুলায় ফ্যানের বাতাসে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িতে রান্না চলছে। এই রান্নার ঘ্রাণই বাতাসে ভাসছে। আমরা তিনজন ভেতরে প্রবেশ করলাম। হাত-মুখ ধুয়ে টেবিলে বসতে গিয়ে ছাদের দিকে চোখ গেল। সেখানে ছোট ছোট ছাতা ঝুলছে। বসতে না বসতেই ভাতের প্লেট চলে এল। ওয়েটার জানতে চাইলেন আমরা খাসি না গরুর মাংস খাব। মাংস নেওয়ার আগে তিনি আমাদের একটু সবজি দেবেন কি না। চাইতেই লাউয়ের সঙ্গে চিংড়ি মাছ হাজির হয়ে গেল। হালকা ঝোলে নতুন আলুর ফালি দেওয়া এই সবজি বেশ মুখরোচক। এরপর হাঁড়িতে রান্না মাংস এল। মাটির পাত্রে তিন টুকরো মাংসের সঙ্গে দেশি আস্ত রসুন। ঘন ঝোলের ওপর ভেসে থাকা এই মাংস বেশ নরম, হাতেই ছেঁড়া যাচ্ছিল।
খাওয়া শেষ হতেই রেস্তোরাঁর একজন জিজ্ঞাসা করলেন, ‘মাংস ভালো লেগেছে?’ তিনি জানালেন, এখানে ফিরতি কাস্টমারের সংখ্যা প্রচুর। বুঝলাম, লোকজন বেশ পাগল হয়েছে হান্ডি ঘরের এই রান্নায়।
মাটির হাঁড়িতে রান্না করার প্রক্রিয়া বেশ দৃষ্টিনন্দন। হাঁড়িগুলো পানিতে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর তাতে তেল দেওয়া হয়। হাঁড়িতে দেওয়া হয় ২৩ পদের অরগানিক মসলা। তারপর তাতে পানি ছাড়া মাংস দিয়ে মাটির সরা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তারপর আটা বা ময়দার খামি দিয়ে সরা সিলগালা করে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে এই মাংস রান্না করা হয়। এ সময় কোনো পানি ব্যবহার করা হয় না। রান্না শেষে মাটির পাত্রে এই মাংস পরিবেশন করা হয়। হাঁড়ির মুখ খুলতেই দারুণ এক সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে ফুল মোড়ে। তখন তার স্বাদ নিতে ভোজনরসিকেরা চনমনে হয়ে ওঠে। মাটির হাঁড়িতে রান্না করা এই মাংসের স্বাদ প্রচলিত পদ্ধতিতে রান্না করা মাংসের চেয়ে খানিক আলাদা।
হান্ডি ঘরের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কে এম নান্নু। চাকরির সুবাদে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় দীর্ঘদিন খেতে হয়েছে তাঁকে। এখানে তৈরি হয় নান্নুর রান্না ও স্বাদের প্রতি দারুণ এক ভালো লাগা। সেই ভালো লাগা জিয়ে রাখতে তিনি এই রেস্তোরাঁ চালু করেছেন। হান্ডি ঘরের অপর স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল কাইয়ুম প্রায় দেড় যুগ প্রবাসে বসবাস করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশে হান্ডি ঘরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই রেস্তোরাঁয় এখন তিনি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
হান্ডি ঘরে মাংস পাওয়া যায় দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত। আর সকালে থাকে নানান পদের নাশতা। এ ছাড়া হান্ডি ঘরে পাওয়া যায় হান্ডি বিফ ও মটন, আফগানি চিকেন, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি বিফ ও মটন, মেন্দি বিরিয়ানি, ল্যাটকা খিচুড়ি, বিফ ও চিকেন কাবাব, চিকেন, ললি ফ্লাইড চিকেন, বিভিন্ন ধরনের কফি এবং সকালের বিভিন্ন নাশতা।
ফুল চাষের জন্য ফুলকানন নামে খ্যাত পানিসারা গ্রাম। এর প্রতিবেশী গ্রামের নাম হাঁড়িয়া। এ দুটি গ্রামের মিলনস্থানে গড়ে ওঠা পর্যটনস্থানটি ফুল মোড় নামে পরিচিত। এটি ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছার গদখালীর কাছে। ফুল মোড়ে চোখ জুড়ানো ফুল দেখতে এসে দর্শনার্থীরা এখন মন জুড়ানো খাবারের স্বাদও নিতে পারছে। এখানকার হান্ডি ঘর নামের একটি খাবারের হোটেলে মাটির হাঁড়িতে রান্না হচ্ছে সুস্বাদু মাংস। এর খুশবু ছাপিয়ে যাচ্ছে ফুলের সৌরভকেও।
মাটির হাঁড়িতে রান্না আমাদের অঞ্চলে নতুন কিছু নয়, বরং অনেক প্রাচীন। তবে অ্যালুমিনিয়াম ও লোহার পাত্রের দাপটে মাটির হাঁড়িতে রান্নার এ ধরন এখন বিলুপ্তই বলা চলে। তাই কৌতূহলী মানুষের কাছে হান্ডি ঘরের মাটির হাঁড়িতে রান্না করা মাংস বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফুলের রাজ্যের এই খাবার এখন অনেকের কাছে ফুল মোড়ের আরেক ফুল হিসেবে পরিচিত।
পানিসারা-হাঁড়িয়া ফুল মোড় ফুলের সৌরভ নিতে গিয়ে নাকে ঢুকল মাংসের ঘ্রাণ। এক পা দু পা করে এগোতে থাকলাম সুগন্ধের উৎসের দিকে। পানিসারা-হাঁড়িয়া ফুল মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে এগোলে একটি দোতলা ভবন দেখা যাবে। সেই ভবনের নিচে ঝুলছে ‘হান্ডি ঘর’ নামের এক রেস্তোরাঁর সাইনবোর্ড। সেখানে উপস্থিত হতে ঘ্রাণ আরও তীব্রভাবে ঢুকল নাকে। ডান দিকে তাকাতেই নজরে পড়ল চুলার ওপর দুটি মাটির হাঁড়ি। সেগুলোর মুখ বেশ শক্তভাবে সরা দিয়ে আটকানো। পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তির মুখের দিকে তাকাতেই বলে উঠলেন, ‘এখানে মাটির হাঁড়িতে গোশত রান্না হচ্ছে। সম্পূর্ণ পানি বাদে এই রান্না। ভেতরে যান।’ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বোঝার চেষ্টা করলাম খেয়ে বেরিয়ে আসা মানুষ কী বলেন। কয়েকজনের কথা শুনে মনে হলো, রিভিউ ভালো!
রিভিউ শুনতে শুনতে হান্ডি ঘরের সম্মুখে নজরে এল স্টিলের চকচকে টেবিলের ওপর কয়লার চুলায় ফ্যানের বাতাসে ছোট ছোট মাটির হাঁড়িতে রান্না চলছে। এই রান্নার ঘ্রাণই বাতাসে ভাসছে। আমরা তিনজন ভেতরে প্রবেশ করলাম। হাত-মুখ ধুয়ে টেবিলে বসতে গিয়ে ছাদের দিকে চোখ গেল। সেখানে ছোট ছোট ছাতা ঝুলছে। বসতে না বসতেই ভাতের প্লেট চলে এল। ওয়েটার জানতে চাইলেন আমরা খাসি না গরুর মাংস খাব। মাংস নেওয়ার আগে তিনি আমাদের একটু সবজি দেবেন কি না। চাইতেই লাউয়ের সঙ্গে চিংড়ি মাছ হাজির হয়ে গেল। হালকা ঝোলে নতুন আলুর ফালি দেওয়া এই সবজি বেশ মুখরোচক। এরপর হাঁড়িতে রান্না মাংস এল। মাটির পাত্রে তিন টুকরো মাংসের সঙ্গে দেশি আস্ত রসুন। ঘন ঝোলের ওপর ভেসে থাকা এই মাংস বেশ নরম, হাতেই ছেঁড়া যাচ্ছিল।
খাওয়া শেষ হতেই রেস্তোরাঁর একজন জিজ্ঞাসা করলেন, ‘মাংস ভালো লেগেছে?’ তিনি জানালেন, এখানে ফিরতি কাস্টমারের সংখ্যা প্রচুর। বুঝলাম, লোকজন বেশ পাগল হয়েছে হান্ডি ঘরের এই রান্নায়।
মাটির হাঁড়িতে রান্না করার প্রক্রিয়া বেশ দৃষ্টিনন্দন। হাঁড়িগুলো পানিতে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নেওয়া হয়। তারপর তাতে তেল দেওয়া হয়। হাঁড়িতে দেওয়া হয় ২৩ পদের অরগানিক মসলা। তারপর তাতে পানি ছাড়া মাংস দিয়ে মাটির সরা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। তারপর আটা বা ময়দার খামি দিয়ে সরা সিলগালা করে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে এই মাংস রান্না করা হয়। এ সময় কোনো পানি ব্যবহার করা হয় না। রান্না শেষে মাটির পাত্রে এই মাংস পরিবেশন করা হয়। হাঁড়ির মুখ খুলতেই দারুণ এক সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে ফুল মোড়ে। তখন তার স্বাদ নিতে ভোজনরসিকেরা চনমনে হয়ে ওঠে। মাটির হাঁড়িতে রান্না করা এই মাংসের স্বাদ প্রচলিত পদ্ধতিতে রান্না করা মাংসের চেয়ে খানিক আলাদা।
হান্ডি ঘরের অন্যতম স্বত্বাধিকারী কে এম নান্নু। চাকরির সুবাদে বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় দীর্ঘদিন খেতে হয়েছে তাঁকে। এখানে তৈরি হয় নান্নুর রান্না ও স্বাদের প্রতি দারুণ এক ভালো লাগা। সেই ভালো লাগা জিয়ে রাখতে তিনি এই রেস্তোরাঁ চালু করেছেন। হান্ডি ঘরের অপর স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুল কাইয়ুম প্রায় দেড় যুগ প্রবাসে বসবাস করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশে হান্ডি ঘরের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এই রেস্তোরাঁয় এখন তিনি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
হান্ডি ঘরে মাংস পাওয়া যায় দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত। আর সকালে থাকে নানান পদের নাশতা। এ ছাড়া হান্ডি ঘরে পাওয়া যায় হান্ডি বিফ ও মটন, আফগানি চিকেন, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি বিফ ও মটন, মেন্দি বিরিয়ানি, ল্যাটকা খিচুড়ি, বিফ ও চিকেন কাবাব, চিকেন, ললি ফ্লাইড চিকেন, বিভিন্ন ধরনের কফি এবং সকালের বিভিন্ন নাশতা।
ত্বকের বিশেষ যত্নে হোক বা না হোক, কমবেশি সবাই রোজ ত্বকে দুই বেলা ব্যবহার করেন, এমন একটি প্রসাধনী হচ্ছে ফেসওয়াশ। সাধারণত এটি খুব ভেবেচিন্তে বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ না মেনে পছন্দ হলেই কিনে ফেলি। কিন্তু কাজ হয় কি না, সেদিকে অনেক সময় খেয়ালও করি না। কিন্তু নালিশ করেই যাই, অমুক ব্র্যান্ডের ফেসওয়াশ...
৭ ঘণ্টা আগেকফি পান করতে গিয়ে জামাকাপড়ে পড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। কখনোবা অসাবধানতাবশত কার্পেট বা মেঝেতেও পড়ে যায়। কফির দাগ তুলতে বেগ পেতে হয়। সঠিক নিয়ম জানা থাকলে কঠিন দাগ নিমেষে দূর করা সম্ভব।
৮ ঘণ্টা আগেএই রোদ, এই বৃষ্টি। এই আবহাওয়ায় সব বয়সী মানুষ নানা ধরনের ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত গরমে, বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুদের ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়, পাশাপাশি এই সময় ওদের মেজাজও খিটমিটে হয়ে থাকে। তাই স্কুলগামী শিশুদের খাবার, জীবনযাপন এবং তাদের খিটমিটে মেজাজ ঠিক রাখার জন্য অভিভাবকদের...
৯ ঘণ্টা আগেরাজা হেনরি ২-এর মনে হয়েছিল, পাই ও পেস্ট্রি খেলে তাঁর সৈন্যরা সব অলস হয়ে যাবে। সে তো আর হতে দেওয়া যায় না। তাই তিনি এ দুটি খাবার বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন। সেটাই হয়ে গেল আইন। ১২ শতকের এই আইনের নাম ‘পাই অ্যান্ড পেস্ট্রি অ্যাক্ট’। এই আইনে বলা হয়েছিল, রোববার ছাড়া অন্য দিন পাই বা পেস্ট্রি বিক্রি
৯ ঘণ্টা আগে