তারেক আজিজ

আলবার্ট হলের আলো-আঁধারি সিঁড়ি পেরিয়ে বন্ধু অমৃত দত্তের সঙ্গে সোমেন উঠে এলেন তিন তলার স্টুডিওতে। সোমেন ঢাকার ছেলে, বয়স মাত্র ১৮ বছর। এই বয়সেই গল্প লিখে বেশ নাম করেছেন। এই তো গত বছর ‘সাপ্তাহিক দেশ’ পত্রিকায় একটা গল্প ছাপা হয়েছে—‘শিশু তপন’। সেবার বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে এসেছেন কলকাতা। কলেজ স্ট্রিটের র্যালফ ফক্সের একটা বই খুঁজছিলেন। স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলার প্রস্তাব দিলেন অমৃত। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রদের মুখে অমৃত অনেক শুনেছেন এই স্টুডিওর কথা, এর ফটোগ্রাফারের কথা। প্রস্তাবে সাড়া দিলেন সোমেন। ফটোগ্রাফারের নির্দেশমতো পরনের রংজ্বলা ধূসর উলের চাদরটা সরিয়ে রাখলেন সোমেন; বেত বোনা চেয়ারটার পেছন ভাগে হাত রেখে বসলেন। ওদিকে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে তেপায়া ক্যামেরার পেছন–ভাগে দাঁড়ালেন ফটোগ্রাফার। লেন্সের খাপটা খুলে নিয়ে আওড়ালেন ‘ওয়ান, টু, থ্রি…’। ১৯৩৮ সালে ডিসেম্বরের এক বিকেলে তোলা হলো সোমেন চন্দের জীবনের একমাত্র ছবি। এর তিন বছর পরই ঢাকার বুকে আততায়ীর আক্রমণে অমিত সম্ভাবনাময় এই সাহিত্যিকের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। আঠারো বছরের সোমেনের মুখটি যার ক্যামেরায় অমর হয়ে রইল, তাঁর নাম চারুচন্দ্র গুহ (১৮৮৪–১৯৫৭)। স্টুডিও ব্যবসার প্রাথমিক যুগে যে ক’জন বাঙালি ফটোগ্রাফার দিশারি হয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের অন্যতম নাম চারু গুহ। নামটি আজকের ঢাকাবাসীর কাছে নতুন ঠেকলেও বুড়িগঙ্গার ওপারে তেঘরিয়ায় জন্ম নেওয়া চারু গুহর কর্মজীবনের শুরুটা কিন্তু হয়েছিল এই ঢাকাতেই।
চারুর জন্ম ১৮৮৪ সালে। মাত্র দশ বছর বয়সে বাবাকে হারান তিনি। মা শরৎশশী পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে পড়ে যান। চা বাগানের কিছু শেয়ার কেনা ছিল, সেগুলো বিক্রি করে সংসার চলতে থাকে। ১৬ বছর বয়সে চারু চলে যান কলকাতায় মামা সুরেন ঘোষের কাছে। সেখানে থেকেই পড়ালেখা চালাতে থাকেন, ভর্তি হন কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টে। ১৯০৫ সালে পাস করবার পরপর দার্জিলিঙে ছবি আঁকার একটা কাজ পেলেন চারু। এই দার্জিলিঙে গিয়ে তাঁর জীবনের গতিপথ বদলে যায়। চারুর সখ্য গড়ে ওঠে সেখানকার এক ইউরোপীয় ফটোগ্রাফারের সঙ্গে।
ভদ্রলোকের নিজস্ব স্টুডিও ছিল। তবে কিছুদিন পর তিনি স্টুডিও ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে দীর্ঘদিনের আলাপচারিতায় চারুও ঝুঁকে পড়লেন ছবি তোলায়। ফটোগ্রাফারের ফেলে যাওয়া ব্যবসার ক্যামেরা, আর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে নিতে চাইলেন তিনি। টাকা চেয়ে পূর্ব বাংলায় মাকে চিঠি লিখলেন। সংসারের শত অভাব-অভিযোগের মধ্যেও চারুর চাপাচাপিতে শরৎশশী টাকার জোগাড় করলেন। ছবি তোলার কলাকৌশল শিখে ক্যামেরা, আর অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ চারু ফিরে এলেন তেঘরিয়ায়, মায়ের কাছে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে তো আর স্টুডিও ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। ওদিকে ছোট ভাই পরেশও মেডিকেল স্কুল পাস করে ডাক্তার হয়েছেন। দুই ভাই মিলে বাসা ভাড়া করে মাকে নিয়ে সংসার পাতলেন ঢাকায়। আর সদরঘাটের কাছেই চারু খুললেন তাঁর স্বপ্নের নিজস্ব স্টুডিও।
চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু করেন। অন্যদিকে বেঙ্গল স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন পি মুখার্জি। চারু গুহ স্টুডিও চালুর পরের বছর নবাবপুর রোডে চালু হয় ‘আর সি দাস এন্ড সন্স’ নামে এক স্টুডিও। সেখানে ছবি তোলার পাশাপাশি ক্যামেরা, ছবি ছাপানোর কাগজ, রাসায়নিক—এসবও বিক্রি হতো। ক্রমে গড়ে ওঠে খাজা আফজালের স্টুডিও, খাজা সোলায়মান কাদেরের স্টুডিও ও টেকনিক্যাল আর্ট স্টুডিও। অনেক পরে ত্রিশের দশকে নবাবপুর রোডে চালু হয় ডস অ্যান্ড কোম্পানি। ছবি তোলাও কারও পেশা হতে পারে! বিষয়টি স্থানীয় ঢাকাবাসীর কাছে ছিল রীতিমতো অভিনব। তাঁরা পেশাটির চমৎকার এক নাম দেয় ‘ফটোওয়ালা’।
১৯০১ সালে ঢাকাবাসী প্রথম বিদ্যুতের আলো দেখতে পেলেও প্রথম দু–তিন দশক তা সহজলভ্য ছিল না। অল্প কিছু আবাসিক ভবন, আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকত রাতের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে বেশির ভাগ ব্যবসার মতো স্টুডিও ব্যবসাও ছিল সূর্যের আলোনির্ভর। এ ধরনের স্টুডিওকে বলা হতো ডে–লাইট স্টুডিও। চারুর স্টুডিওটি ছিল সেরকমই। স্টুডিওর নিচতলা ছিল ডার্ক রুম আর কাউন্টার। কখনো দোকানের সামনে, কখনো ওপরতলায় টিনের চাল বা বাঁশের বেড়ার সাহায্যে আলো নিয়ন্ত্রণ করে সফট লাইটে ছবি তোলা হতো। পেছনে ঝোলানো থাকত প্রয়োজনমতো নিজের ছবি আঁকা কাপড়ে তৈরি ব্যাকড্রপ। সাধারণের ছবি তোলার জন্য এই স্টুডিও খোলা থাকত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এত স্বপ্ন আর উদ্যোগ নিয়ে চালু করার পরও চারুর স্টুডিও ব্যবসা লাভের মুখ দেখল না। স্টুডিও নিয়ে চারুর নিজের অতৃপ্তি ছিল। দার্জিলিঙে বিদ্যুতের সুবিধা ছিল, কৃত্রিম আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ফটোতে নানান শৈল্পিক মাত্রা যোগ করা যেত। আলোছায়ার খেলাকে ধারণ করবার সেই সুযোগ ঢাকায় সীমিত। এ সীমাবদ্ধতার সঙ্গে আয়ের বিষয়টিও যোগ হলো।
ফটোগ্রাফির প্রথম যুগে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলা ছিল বাঙালির কাছে বিলাসিতা। ঢাকার প্রভাবশালী লোকজন আর এখানে অবস্থানরত ইউরোপীয়রা আগে থেকেই ক্যাপের স্টুডিওতে ছবি তুলতেন। এর পাশাপাশি অন্য বিত্তবানদেরও নানা প্রয়োজনে কলকাতা যাওয়া–আসা ছিল, সেখানকার প্রসিদ্ধ স্টুডিওতে ছবি তুলতে তাঁরা গর্ববোধ করতেন। তাই কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া স্টুডিও ব্যবসা নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ফটোওয়ালার সংসারও বড় হয়েছে। চারু বিয়ে করেছেন, জন্ম নিয়েছে সুধাংশু বালা ও চারুর প্রথম সন্তান। আট বছরের কিছু বেশি সময় চালানোর পর নানা প্রতিকূলতায় স্টুডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। সেটা ১৯১৭ সালের কথা। এর পর পরিবার নিয়ে চারু চলে যান কলকাতা।
কলকাতায় পৌঁছে প্রথম শুরু করলেন ঘুরে ঘুরে ছবি তোলার কাজ। সারা দিন একটা ভারী ক্যামেরা নিয়ে ট্রামে চেপে আউটডোরে ছবি তুলতেন। বিকেলে ধর্মতলার এক স্টুডিওর ডার্ক রুমে বসে সেসব ডেভেলপ করতেন। নিজের সঞ্চয়ে একসময় হ্যারিসন রোডের (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেখানে নতুন করে স্টুডিও ব্যবসা চালু করেন। এবার প্রথমেই করলেন বিদ্যুতের ব্যবস্থা, হাজার ওয়াটের এক বাল্ব জুড়ে দিলেন স্টুডিওতে। স্টুডিওর নামও রাখলেন ‘ইলেক্ট্রো ফটো স্টুডিও’। হ্যারিসন রোডে ছবি তুলবার মানুষ পেতে চারুকে বেগ পেতে হলো না।
শিয়ালদহ আর হাওড়া রেলস্টেশনে যাতায়াত করা মানুষেরা চারুর খ্যাতি ছড়িয়ে দিল। ব্যবসার পসারের সঙ্গে চারু চলে এলেন কলেজ স্ট্রিটের আলবার্ট হলের (বর্তমানে যে ভবনে ইন্ডিয়ান কফি হাউস) তিন তলায়। এ কালের মতো তখনো আলবার্ট হল ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। স্টুডিও পোর্ট্রেটের পাশাপাশি সেসব সভা-সমাবেশ ক্যামেরাবন্দী করার কাজটিও পেয়ে গেলেন চারু গুহ। সন্ধ্যার পর তাঁর স্টুডিও হয়ে উঠল সেকালের রথী-মহারথীদের মিলনমেলা। চারুর ক্যামেরায় অমর হয়ে রইলেন কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আলী আকবর, গায়ক পঙ্কজ মল্লিকসহ বহু গুণীজন।
এক বিকেলে ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এলেন, সঙ্গে কবি সুফিয়া এন হোসেন (পরবর্তীকালে বেগম সুফিয়া কামাল)। সেটা ১৯২৯ সালের কথা। নাসিরউদ্দীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘সওগাত’–এর একটি নারী সংখ্যা প্রকাশ করবেন, যেখানে লেখিকাদের ছবিসহ লেখা থাকবে। সেকালে মুসলিম নারীদের ছবি তোলার উদাহরণ বিরল। কবি সুফিয়া কামাল কখনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। চারুও কোনো মুসলিম নারীর ছবি তোলেননি। এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে নাসিরুদ্দীনকে সতর্কও করেন চারু। কিন্তু নাসিরুদ্দীন তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। প্রথম এক মুসলিম নারী কবির ছবি তোলার কোনো পারিশ্রমিক নিলেন না চারু। ছবিগুলো সযত্নে পাঠিয়ে দিলেন ‘সওগাত’ অফিসে। চারুর তোলা সেই ছবিসহ প্রথম নারী সংখ্যা ‘সওগাত’ প্রকাশ পায় সে বছরের সেপ্টেম্বরে। এ সংখ্যা প্রকাশের পর অনেক মুসলিম লেখিকা তাঁদের ছবি পত্রিকায় ছাপাতে সম্মত হন।
কাজের উৎকর্ষের জন্য চারু সব সময় ছিলেন সচেষ্ট। ১৯৩১ সালে নিজ অর্থব্যয়ে জার্মানি গিয়ে শিখে আসেন ছবি তোলার আধুনিক সব কলাকৌশল। তাঁর সেসব কৌশল সেকালের বাঙালির জন্য ছিল অভিনব। কলেজ স্ট্রিটের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের জন্যও ছবি তোলার গন্তব্য হয়ে ওঠে চারুর স্টুডিও। সেই কথা স্মরণ করেছেন ভাষাতত্ত্ববিদ সুকুমার সেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন আলবার্ট হলের ওপরতলায় তাঁর স্টুডিওটি গ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের তীর্থস্থানের মতো ছিল। সেনেট হাউসে কনভোকেশনের পর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরেরা দলে দলে তাঁর স্টুডিওতে গিয়ে গাউন হুড পরে ছবি তোলাতো।’
চারু গুহর জীবনাবসান হয় ১৯৫৭ সালে। মৃত্যুর পর বড় ছেলে চিত্তরঞ্জন চার দশক ধরে চালিয়ে নেন ছবি তোলার ব্যবসা। স্টুডিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার বেশ অনেক কাল পর চারুর উত্তরসূরিরা সেখানে গড়ে তোলেন এক প্রদর্শনীশালা। সাধারণ পেশাজীবী মানুষকে ছবি তোলায় আকৃষ্ট করার জন্য এক কালে চারু আলবার্ট হলের দেয়ালে জুড়ে দিয়েছিলেন, ‘Your mother, wife and Children-keep them nearby photograph’, ‘If you want a record, have it photographed’, ‘If you have beauty I will take it, if you have none, come, I will make it. ’ ইত্যাদি কত কত বিজ্ঞাপন! রং চটে যাওয়া মলিন সেসব বিজ্ঞাপনের কিছু আজও টিকে আছে। আর স্টুডিওতে ঢুকবার মুখে চারুর তোলা কিছু ছবি পিন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বড় বড় স্বপ্নভরা চোখ নিয়ে সোমেন চন্দ সেখানে দিব্যি তাকিয়ে আছেন, ঠিক যেমনটি ছিলেন চারুর লেন্সের সামনে, আজ থেকে আশি বছর আগে।
সহায়ক সূত্র:
১. চারু গুহ: জীবন ও আলোকচিত্র, বই-চিত্র, ২০০৭
২. বেগম, ৫০ বর্ষ পূর্তি সংখ্যা, ২০০০
৩. পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ, অনুপম হায়াৎ, বাংলা একাডেমি, ২০০১
তারেক আজিজ: অধ্যাপক, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আলবার্ট হলের আলো-আঁধারি সিঁড়ি পেরিয়ে বন্ধু অমৃত দত্তের সঙ্গে সোমেন উঠে এলেন তিন তলার স্টুডিওতে। সোমেন ঢাকার ছেলে, বয়স মাত্র ১৮ বছর। এই বয়সেই গল্প লিখে বেশ নাম করেছেন। এই তো গত বছর ‘সাপ্তাহিক দেশ’ পত্রিকায় একটা গল্প ছাপা হয়েছে—‘শিশু তপন’। সেবার বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে এসেছেন কলকাতা। কলেজ স্ট্রিটের র্যালফ ফক্সের একটা বই খুঁজছিলেন। স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলার প্রস্তাব দিলেন অমৃত। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রদের মুখে অমৃত অনেক শুনেছেন এই স্টুডিওর কথা, এর ফটোগ্রাফারের কথা। প্রস্তাবে সাড়া দিলেন সোমেন। ফটোগ্রাফারের নির্দেশমতো পরনের রংজ্বলা ধূসর উলের চাদরটা সরিয়ে রাখলেন সোমেন; বেত বোনা চেয়ারটার পেছন ভাগে হাত রেখে বসলেন। ওদিকে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে তেপায়া ক্যামেরার পেছন–ভাগে দাঁড়ালেন ফটোগ্রাফার। লেন্সের খাপটা খুলে নিয়ে আওড়ালেন ‘ওয়ান, টু, থ্রি…’। ১৯৩৮ সালে ডিসেম্বরের এক বিকেলে তোলা হলো সোমেন চন্দের জীবনের একমাত্র ছবি। এর তিন বছর পরই ঢাকার বুকে আততায়ীর আক্রমণে অমিত সম্ভাবনাময় এই সাহিত্যিকের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। আঠারো বছরের সোমেনের মুখটি যার ক্যামেরায় অমর হয়ে রইল, তাঁর নাম চারুচন্দ্র গুহ (১৮৮৪–১৯৫৭)। স্টুডিও ব্যবসার প্রাথমিক যুগে যে ক’জন বাঙালি ফটোগ্রাফার দিশারি হয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের অন্যতম নাম চারু গুহ। নামটি আজকের ঢাকাবাসীর কাছে নতুন ঠেকলেও বুড়িগঙ্গার ওপারে তেঘরিয়ায় জন্ম নেওয়া চারু গুহর কর্মজীবনের শুরুটা কিন্তু হয়েছিল এই ঢাকাতেই।
চারুর জন্ম ১৮৮৪ সালে। মাত্র দশ বছর বয়সে বাবাকে হারান তিনি। মা শরৎশশী পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে পড়ে যান। চা বাগানের কিছু শেয়ার কেনা ছিল, সেগুলো বিক্রি করে সংসার চলতে থাকে। ১৬ বছর বয়সে চারু চলে যান কলকাতায় মামা সুরেন ঘোষের কাছে। সেখানে থেকেই পড়ালেখা চালাতে থাকেন, ভর্তি হন কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টে। ১৯০৫ সালে পাস করবার পরপর দার্জিলিঙে ছবি আঁকার একটা কাজ পেলেন চারু। এই দার্জিলিঙে গিয়ে তাঁর জীবনের গতিপথ বদলে যায়। চারুর সখ্য গড়ে ওঠে সেখানকার এক ইউরোপীয় ফটোগ্রাফারের সঙ্গে।
ভদ্রলোকের নিজস্ব স্টুডিও ছিল। তবে কিছুদিন পর তিনি স্টুডিও ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে দীর্ঘদিনের আলাপচারিতায় চারুও ঝুঁকে পড়লেন ছবি তোলায়। ফটোগ্রাফারের ফেলে যাওয়া ব্যবসার ক্যামেরা, আর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে নিতে চাইলেন তিনি। টাকা চেয়ে পূর্ব বাংলায় মাকে চিঠি লিখলেন। সংসারের শত অভাব-অভিযোগের মধ্যেও চারুর চাপাচাপিতে শরৎশশী টাকার জোগাড় করলেন। ছবি তোলার কলাকৌশল শিখে ক্যামেরা, আর অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ চারু ফিরে এলেন তেঘরিয়ায়, মায়ের কাছে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে তো আর স্টুডিও ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। ওদিকে ছোট ভাই পরেশও মেডিকেল স্কুল পাস করে ডাক্তার হয়েছেন। দুই ভাই মিলে বাসা ভাড়া করে মাকে নিয়ে সংসার পাতলেন ঢাকায়। আর সদরঘাটের কাছেই চারু খুললেন তাঁর স্বপ্নের নিজস্ব স্টুডিও।
চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু করেন। অন্যদিকে বেঙ্গল স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন পি মুখার্জি। চারু গুহ স্টুডিও চালুর পরের বছর নবাবপুর রোডে চালু হয় ‘আর সি দাস এন্ড সন্স’ নামে এক স্টুডিও। সেখানে ছবি তোলার পাশাপাশি ক্যামেরা, ছবি ছাপানোর কাগজ, রাসায়নিক—এসবও বিক্রি হতো। ক্রমে গড়ে ওঠে খাজা আফজালের স্টুডিও, খাজা সোলায়মান কাদেরের স্টুডিও ও টেকনিক্যাল আর্ট স্টুডিও। অনেক পরে ত্রিশের দশকে নবাবপুর রোডে চালু হয় ডস অ্যান্ড কোম্পানি। ছবি তোলাও কারও পেশা হতে পারে! বিষয়টি স্থানীয় ঢাকাবাসীর কাছে ছিল রীতিমতো অভিনব। তাঁরা পেশাটির চমৎকার এক নাম দেয় ‘ফটোওয়ালা’।
১৯০১ সালে ঢাকাবাসী প্রথম বিদ্যুতের আলো দেখতে পেলেও প্রথম দু–তিন দশক তা সহজলভ্য ছিল না। অল্প কিছু আবাসিক ভবন, আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকত রাতের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে বেশির ভাগ ব্যবসার মতো স্টুডিও ব্যবসাও ছিল সূর্যের আলোনির্ভর। এ ধরনের স্টুডিওকে বলা হতো ডে–লাইট স্টুডিও। চারুর স্টুডিওটি ছিল সেরকমই। স্টুডিওর নিচতলা ছিল ডার্ক রুম আর কাউন্টার। কখনো দোকানের সামনে, কখনো ওপরতলায় টিনের চাল বা বাঁশের বেড়ার সাহায্যে আলো নিয়ন্ত্রণ করে সফট লাইটে ছবি তোলা হতো। পেছনে ঝোলানো থাকত প্রয়োজনমতো নিজের ছবি আঁকা কাপড়ে তৈরি ব্যাকড্রপ। সাধারণের ছবি তোলার জন্য এই স্টুডিও খোলা থাকত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এত স্বপ্ন আর উদ্যোগ নিয়ে চালু করার পরও চারুর স্টুডিও ব্যবসা লাভের মুখ দেখল না। স্টুডিও নিয়ে চারুর নিজের অতৃপ্তি ছিল। দার্জিলিঙে বিদ্যুতের সুবিধা ছিল, কৃত্রিম আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ফটোতে নানান শৈল্পিক মাত্রা যোগ করা যেত। আলোছায়ার খেলাকে ধারণ করবার সেই সুযোগ ঢাকায় সীমিত। এ সীমাবদ্ধতার সঙ্গে আয়ের বিষয়টিও যোগ হলো।
ফটোগ্রাফির প্রথম যুগে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলা ছিল বাঙালির কাছে বিলাসিতা। ঢাকার প্রভাবশালী লোকজন আর এখানে অবস্থানরত ইউরোপীয়রা আগে থেকেই ক্যাপের স্টুডিওতে ছবি তুলতেন। এর পাশাপাশি অন্য বিত্তবানদেরও নানা প্রয়োজনে কলকাতা যাওয়া–আসা ছিল, সেখানকার প্রসিদ্ধ স্টুডিওতে ছবি তুলতে তাঁরা গর্ববোধ করতেন। তাই কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া স্টুডিও ব্যবসা নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ফটোওয়ালার সংসারও বড় হয়েছে। চারু বিয়ে করেছেন, জন্ম নিয়েছে সুধাংশু বালা ও চারুর প্রথম সন্তান। আট বছরের কিছু বেশি সময় চালানোর পর নানা প্রতিকূলতায় স্টুডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। সেটা ১৯১৭ সালের কথা। এর পর পরিবার নিয়ে চারু চলে যান কলকাতা।
কলকাতায় পৌঁছে প্রথম শুরু করলেন ঘুরে ঘুরে ছবি তোলার কাজ। সারা দিন একটা ভারী ক্যামেরা নিয়ে ট্রামে চেপে আউটডোরে ছবি তুলতেন। বিকেলে ধর্মতলার এক স্টুডিওর ডার্ক রুমে বসে সেসব ডেভেলপ করতেন। নিজের সঞ্চয়ে একসময় হ্যারিসন রোডের (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেখানে নতুন করে স্টুডিও ব্যবসা চালু করেন। এবার প্রথমেই করলেন বিদ্যুতের ব্যবস্থা, হাজার ওয়াটের এক বাল্ব জুড়ে দিলেন স্টুডিওতে। স্টুডিওর নামও রাখলেন ‘ইলেক্ট্রো ফটো স্টুডিও’। হ্যারিসন রোডে ছবি তুলবার মানুষ পেতে চারুকে বেগ পেতে হলো না।
শিয়ালদহ আর হাওড়া রেলস্টেশনে যাতায়াত করা মানুষেরা চারুর খ্যাতি ছড়িয়ে দিল। ব্যবসার পসারের সঙ্গে চারু চলে এলেন কলেজ স্ট্রিটের আলবার্ট হলের (বর্তমানে যে ভবনে ইন্ডিয়ান কফি হাউস) তিন তলায়। এ কালের মতো তখনো আলবার্ট হল ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। স্টুডিও পোর্ট্রেটের পাশাপাশি সেসব সভা-সমাবেশ ক্যামেরাবন্দী করার কাজটিও পেয়ে গেলেন চারু গুহ। সন্ধ্যার পর তাঁর স্টুডিও হয়ে উঠল সেকালের রথী-মহারথীদের মিলনমেলা। চারুর ক্যামেরায় অমর হয়ে রইলেন কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আলী আকবর, গায়ক পঙ্কজ মল্লিকসহ বহু গুণীজন।
এক বিকেলে ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এলেন, সঙ্গে কবি সুফিয়া এন হোসেন (পরবর্তীকালে বেগম সুফিয়া কামাল)। সেটা ১৯২৯ সালের কথা। নাসিরউদ্দীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘সওগাত’–এর একটি নারী সংখ্যা প্রকাশ করবেন, যেখানে লেখিকাদের ছবিসহ লেখা থাকবে। সেকালে মুসলিম নারীদের ছবি তোলার উদাহরণ বিরল। কবি সুফিয়া কামাল কখনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। চারুও কোনো মুসলিম নারীর ছবি তোলেননি। এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে নাসিরুদ্দীনকে সতর্কও করেন চারু। কিন্তু নাসিরুদ্দীন তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। প্রথম এক মুসলিম নারী কবির ছবি তোলার কোনো পারিশ্রমিক নিলেন না চারু। ছবিগুলো সযত্নে পাঠিয়ে দিলেন ‘সওগাত’ অফিসে। চারুর তোলা সেই ছবিসহ প্রথম নারী সংখ্যা ‘সওগাত’ প্রকাশ পায় সে বছরের সেপ্টেম্বরে। এ সংখ্যা প্রকাশের পর অনেক মুসলিম লেখিকা তাঁদের ছবি পত্রিকায় ছাপাতে সম্মত হন।
কাজের উৎকর্ষের জন্য চারু সব সময় ছিলেন সচেষ্ট। ১৯৩১ সালে নিজ অর্থব্যয়ে জার্মানি গিয়ে শিখে আসেন ছবি তোলার আধুনিক সব কলাকৌশল। তাঁর সেসব কৌশল সেকালের বাঙালির জন্য ছিল অভিনব। কলেজ স্ট্রিটের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের জন্যও ছবি তোলার গন্তব্য হয়ে ওঠে চারুর স্টুডিও। সেই কথা স্মরণ করেছেন ভাষাতত্ত্ববিদ সুকুমার সেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন আলবার্ট হলের ওপরতলায় তাঁর স্টুডিওটি গ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের তীর্থস্থানের মতো ছিল। সেনেট হাউসে কনভোকেশনের পর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরেরা দলে দলে তাঁর স্টুডিওতে গিয়ে গাউন হুড পরে ছবি তোলাতো।’
চারু গুহর জীবনাবসান হয় ১৯৫৭ সালে। মৃত্যুর পর বড় ছেলে চিত্তরঞ্জন চার দশক ধরে চালিয়ে নেন ছবি তোলার ব্যবসা। স্টুডিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার বেশ অনেক কাল পর চারুর উত্তরসূরিরা সেখানে গড়ে তোলেন এক প্রদর্শনীশালা। সাধারণ পেশাজীবী মানুষকে ছবি তোলায় আকৃষ্ট করার জন্য এক কালে চারু আলবার্ট হলের দেয়ালে জুড়ে দিয়েছিলেন, ‘Your mother, wife and Children-keep them nearby photograph’, ‘If you want a record, have it photographed’, ‘If you have beauty I will take it, if you have none, come, I will make it. ’ ইত্যাদি কত কত বিজ্ঞাপন! রং চটে যাওয়া মলিন সেসব বিজ্ঞাপনের কিছু আজও টিকে আছে। আর স্টুডিওতে ঢুকবার মুখে চারুর তোলা কিছু ছবি পিন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বড় বড় স্বপ্নভরা চোখ নিয়ে সোমেন চন্দ সেখানে দিব্যি তাকিয়ে আছেন, ঠিক যেমনটি ছিলেন চারুর লেন্সের সামনে, আজ থেকে আশি বছর আগে।
সহায়ক সূত্র:
১. চারু গুহ: জীবন ও আলোকচিত্র, বই-চিত্র, ২০০৭
২. বেগম, ৫০ বর্ষ পূর্তি সংখ্যা, ২০০০
৩. পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ, অনুপম হায়াৎ, বাংলা একাডেমি, ২০০১
তারেক আজিজ: অধ্যাপক, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
তারেক আজিজ

আলবার্ট হলের আলো-আঁধারি সিঁড়ি পেরিয়ে বন্ধু অমৃত দত্তের সঙ্গে সোমেন উঠে এলেন তিন তলার স্টুডিওতে। সোমেন ঢাকার ছেলে, বয়স মাত্র ১৮ বছর। এই বয়সেই গল্প লিখে বেশ নাম করেছেন। এই তো গত বছর ‘সাপ্তাহিক দেশ’ পত্রিকায় একটা গল্প ছাপা হয়েছে—‘শিশু তপন’। সেবার বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে এসেছেন কলকাতা। কলেজ স্ট্রিটের র্যালফ ফক্সের একটা বই খুঁজছিলেন। স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলার প্রস্তাব দিলেন অমৃত। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রদের মুখে অমৃত অনেক শুনেছেন এই স্টুডিওর কথা, এর ফটোগ্রাফারের কথা। প্রস্তাবে সাড়া দিলেন সোমেন। ফটোগ্রাফারের নির্দেশমতো পরনের রংজ্বলা ধূসর উলের চাদরটা সরিয়ে রাখলেন সোমেন; বেত বোনা চেয়ারটার পেছন ভাগে হাত রেখে বসলেন। ওদিকে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে তেপায়া ক্যামেরার পেছন–ভাগে দাঁড়ালেন ফটোগ্রাফার। লেন্সের খাপটা খুলে নিয়ে আওড়ালেন ‘ওয়ান, টু, থ্রি…’। ১৯৩৮ সালে ডিসেম্বরের এক বিকেলে তোলা হলো সোমেন চন্দের জীবনের একমাত্র ছবি। এর তিন বছর পরই ঢাকার বুকে আততায়ীর আক্রমণে অমিত সম্ভাবনাময় এই সাহিত্যিকের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। আঠারো বছরের সোমেনের মুখটি যার ক্যামেরায় অমর হয়ে রইল, তাঁর নাম চারুচন্দ্র গুহ (১৮৮৪–১৯৫৭)। স্টুডিও ব্যবসার প্রাথমিক যুগে যে ক’জন বাঙালি ফটোগ্রাফার দিশারি হয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের অন্যতম নাম চারু গুহ। নামটি আজকের ঢাকাবাসীর কাছে নতুন ঠেকলেও বুড়িগঙ্গার ওপারে তেঘরিয়ায় জন্ম নেওয়া চারু গুহর কর্মজীবনের শুরুটা কিন্তু হয়েছিল এই ঢাকাতেই।
চারুর জন্ম ১৮৮৪ সালে। মাত্র দশ বছর বয়সে বাবাকে হারান তিনি। মা শরৎশশী পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে পড়ে যান। চা বাগানের কিছু শেয়ার কেনা ছিল, সেগুলো বিক্রি করে সংসার চলতে থাকে। ১৬ বছর বয়সে চারু চলে যান কলকাতায় মামা সুরেন ঘোষের কাছে। সেখানে থেকেই পড়ালেখা চালাতে থাকেন, ভর্তি হন কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টে। ১৯০৫ সালে পাস করবার পরপর দার্জিলিঙে ছবি আঁকার একটা কাজ পেলেন চারু। এই দার্জিলিঙে গিয়ে তাঁর জীবনের গতিপথ বদলে যায়। চারুর সখ্য গড়ে ওঠে সেখানকার এক ইউরোপীয় ফটোগ্রাফারের সঙ্গে।
ভদ্রলোকের নিজস্ব স্টুডিও ছিল। তবে কিছুদিন পর তিনি স্টুডিও ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে দীর্ঘদিনের আলাপচারিতায় চারুও ঝুঁকে পড়লেন ছবি তোলায়। ফটোগ্রাফারের ফেলে যাওয়া ব্যবসার ক্যামেরা, আর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে নিতে চাইলেন তিনি। টাকা চেয়ে পূর্ব বাংলায় মাকে চিঠি লিখলেন। সংসারের শত অভাব-অভিযোগের মধ্যেও চারুর চাপাচাপিতে শরৎশশী টাকার জোগাড় করলেন। ছবি তোলার কলাকৌশল শিখে ক্যামেরা, আর অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ চারু ফিরে এলেন তেঘরিয়ায়, মায়ের কাছে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে তো আর স্টুডিও ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। ওদিকে ছোট ভাই পরেশও মেডিকেল স্কুল পাস করে ডাক্তার হয়েছেন। দুই ভাই মিলে বাসা ভাড়া করে মাকে নিয়ে সংসার পাতলেন ঢাকায়। আর সদরঘাটের কাছেই চারু খুললেন তাঁর স্বপ্নের নিজস্ব স্টুডিও।
চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু করেন। অন্যদিকে বেঙ্গল স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন পি মুখার্জি। চারু গুহ স্টুডিও চালুর পরের বছর নবাবপুর রোডে চালু হয় ‘আর সি দাস এন্ড সন্স’ নামে এক স্টুডিও। সেখানে ছবি তোলার পাশাপাশি ক্যামেরা, ছবি ছাপানোর কাগজ, রাসায়নিক—এসবও বিক্রি হতো। ক্রমে গড়ে ওঠে খাজা আফজালের স্টুডিও, খাজা সোলায়মান কাদেরের স্টুডিও ও টেকনিক্যাল আর্ট স্টুডিও। অনেক পরে ত্রিশের দশকে নবাবপুর রোডে চালু হয় ডস অ্যান্ড কোম্পানি। ছবি তোলাও কারও পেশা হতে পারে! বিষয়টি স্থানীয় ঢাকাবাসীর কাছে ছিল রীতিমতো অভিনব। তাঁরা পেশাটির চমৎকার এক নাম দেয় ‘ফটোওয়ালা’।
১৯০১ সালে ঢাকাবাসী প্রথম বিদ্যুতের আলো দেখতে পেলেও প্রথম দু–তিন দশক তা সহজলভ্য ছিল না। অল্প কিছু আবাসিক ভবন, আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকত রাতের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে বেশির ভাগ ব্যবসার মতো স্টুডিও ব্যবসাও ছিল সূর্যের আলোনির্ভর। এ ধরনের স্টুডিওকে বলা হতো ডে–লাইট স্টুডিও। চারুর স্টুডিওটি ছিল সেরকমই। স্টুডিওর নিচতলা ছিল ডার্ক রুম আর কাউন্টার। কখনো দোকানের সামনে, কখনো ওপরতলায় টিনের চাল বা বাঁশের বেড়ার সাহায্যে আলো নিয়ন্ত্রণ করে সফট লাইটে ছবি তোলা হতো। পেছনে ঝোলানো থাকত প্রয়োজনমতো নিজের ছবি আঁকা কাপড়ে তৈরি ব্যাকড্রপ। সাধারণের ছবি তোলার জন্য এই স্টুডিও খোলা থাকত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এত স্বপ্ন আর উদ্যোগ নিয়ে চালু করার পরও চারুর স্টুডিও ব্যবসা লাভের মুখ দেখল না। স্টুডিও নিয়ে চারুর নিজের অতৃপ্তি ছিল। দার্জিলিঙে বিদ্যুতের সুবিধা ছিল, কৃত্রিম আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ফটোতে নানান শৈল্পিক মাত্রা যোগ করা যেত। আলোছায়ার খেলাকে ধারণ করবার সেই সুযোগ ঢাকায় সীমিত। এ সীমাবদ্ধতার সঙ্গে আয়ের বিষয়টিও যোগ হলো।
ফটোগ্রাফির প্রথম যুগে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলা ছিল বাঙালির কাছে বিলাসিতা। ঢাকার প্রভাবশালী লোকজন আর এখানে অবস্থানরত ইউরোপীয়রা আগে থেকেই ক্যাপের স্টুডিওতে ছবি তুলতেন। এর পাশাপাশি অন্য বিত্তবানদেরও নানা প্রয়োজনে কলকাতা যাওয়া–আসা ছিল, সেখানকার প্রসিদ্ধ স্টুডিওতে ছবি তুলতে তাঁরা গর্ববোধ করতেন। তাই কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া স্টুডিও ব্যবসা নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ফটোওয়ালার সংসারও বড় হয়েছে। চারু বিয়ে করেছেন, জন্ম নিয়েছে সুধাংশু বালা ও চারুর প্রথম সন্তান। আট বছরের কিছু বেশি সময় চালানোর পর নানা প্রতিকূলতায় স্টুডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। সেটা ১৯১৭ সালের কথা। এর পর পরিবার নিয়ে চারু চলে যান কলকাতা।
কলকাতায় পৌঁছে প্রথম শুরু করলেন ঘুরে ঘুরে ছবি তোলার কাজ। সারা দিন একটা ভারী ক্যামেরা নিয়ে ট্রামে চেপে আউটডোরে ছবি তুলতেন। বিকেলে ধর্মতলার এক স্টুডিওর ডার্ক রুমে বসে সেসব ডেভেলপ করতেন। নিজের সঞ্চয়ে একসময় হ্যারিসন রোডের (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেখানে নতুন করে স্টুডিও ব্যবসা চালু করেন। এবার প্রথমেই করলেন বিদ্যুতের ব্যবস্থা, হাজার ওয়াটের এক বাল্ব জুড়ে দিলেন স্টুডিওতে। স্টুডিওর নামও রাখলেন ‘ইলেক্ট্রো ফটো স্টুডিও’। হ্যারিসন রোডে ছবি তুলবার মানুষ পেতে চারুকে বেগ পেতে হলো না।
শিয়ালদহ আর হাওড়া রেলস্টেশনে যাতায়াত করা মানুষেরা চারুর খ্যাতি ছড়িয়ে দিল। ব্যবসার পসারের সঙ্গে চারু চলে এলেন কলেজ স্ট্রিটের আলবার্ট হলের (বর্তমানে যে ভবনে ইন্ডিয়ান কফি হাউস) তিন তলায়। এ কালের মতো তখনো আলবার্ট হল ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। স্টুডিও পোর্ট্রেটের পাশাপাশি সেসব সভা-সমাবেশ ক্যামেরাবন্দী করার কাজটিও পেয়ে গেলেন চারু গুহ। সন্ধ্যার পর তাঁর স্টুডিও হয়ে উঠল সেকালের রথী-মহারথীদের মিলনমেলা। চারুর ক্যামেরায় অমর হয়ে রইলেন কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আলী আকবর, গায়ক পঙ্কজ মল্লিকসহ বহু গুণীজন।
এক বিকেলে ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এলেন, সঙ্গে কবি সুফিয়া এন হোসেন (পরবর্তীকালে বেগম সুফিয়া কামাল)। সেটা ১৯২৯ সালের কথা। নাসিরউদ্দীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘সওগাত’–এর একটি নারী সংখ্যা প্রকাশ করবেন, যেখানে লেখিকাদের ছবিসহ লেখা থাকবে। সেকালে মুসলিম নারীদের ছবি তোলার উদাহরণ বিরল। কবি সুফিয়া কামাল কখনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। চারুও কোনো মুসলিম নারীর ছবি তোলেননি। এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে নাসিরুদ্দীনকে সতর্কও করেন চারু। কিন্তু নাসিরুদ্দীন তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। প্রথম এক মুসলিম নারী কবির ছবি তোলার কোনো পারিশ্রমিক নিলেন না চারু। ছবিগুলো সযত্নে পাঠিয়ে দিলেন ‘সওগাত’ অফিসে। চারুর তোলা সেই ছবিসহ প্রথম নারী সংখ্যা ‘সওগাত’ প্রকাশ পায় সে বছরের সেপ্টেম্বরে। এ সংখ্যা প্রকাশের পর অনেক মুসলিম লেখিকা তাঁদের ছবি পত্রিকায় ছাপাতে সম্মত হন।
কাজের উৎকর্ষের জন্য চারু সব সময় ছিলেন সচেষ্ট। ১৯৩১ সালে নিজ অর্থব্যয়ে জার্মানি গিয়ে শিখে আসেন ছবি তোলার আধুনিক সব কলাকৌশল। তাঁর সেসব কৌশল সেকালের বাঙালির জন্য ছিল অভিনব। কলেজ স্ট্রিটের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের জন্যও ছবি তোলার গন্তব্য হয়ে ওঠে চারুর স্টুডিও। সেই কথা স্মরণ করেছেন ভাষাতত্ত্ববিদ সুকুমার সেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন আলবার্ট হলের ওপরতলায় তাঁর স্টুডিওটি গ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের তীর্থস্থানের মতো ছিল। সেনেট হাউসে কনভোকেশনের পর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরেরা দলে দলে তাঁর স্টুডিওতে গিয়ে গাউন হুড পরে ছবি তোলাতো।’
চারু গুহর জীবনাবসান হয় ১৯৫৭ সালে। মৃত্যুর পর বড় ছেলে চিত্তরঞ্জন চার দশক ধরে চালিয়ে নেন ছবি তোলার ব্যবসা। স্টুডিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার বেশ অনেক কাল পর চারুর উত্তরসূরিরা সেখানে গড়ে তোলেন এক প্রদর্শনীশালা। সাধারণ পেশাজীবী মানুষকে ছবি তোলায় আকৃষ্ট করার জন্য এক কালে চারু আলবার্ট হলের দেয়ালে জুড়ে দিয়েছিলেন, ‘Your mother, wife and Children-keep them nearby photograph’, ‘If you want a record, have it photographed’, ‘If you have beauty I will take it, if you have none, come, I will make it. ’ ইত্যাদি কত কত বিজ্ঞাপন! রং চটে যাওয়া মলিন সেসব বিজ্ঞাপনের কিছু আজও টিকে আছে। আর স্টুডিওতে ঢুকবার মুখে চারুর তোলা কিছু ছবি পিন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বড় বড় স্বপ্নভরা চোখ নিয়ে সোমেন চন্দ সেখানে দিব্যি তাকিয়ে আছেন, ঠিক যেমনটি ছিলেন চারুর লেন্সের সামনে, আজ থেকে আশি বছর আগে।
সহায়ক সূত্র:
১. চারু গুহ: জীবন ও আলোকচিত্র, বই-চিত্র, ২০০৭
২. বেগম, ৫০ বর্ষ পূর্তি সংখ্যা, ২০০০
৩. পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ, অনুপম হায়াৎ, বাংলা একাডেমি, ২০০১
তারেক আজিজ: অধ্যাপক, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আলবার্ট হলের আলো-আঁধারি সিঁড়ি পেরিয়ে বন্ধু অমৃত দত্তের সঙ্গে সোমেন উঠে এলেন তিন তলার স্টুডিওতে। সোমেন ঢাকার ছেলে, বয়স মাত্র ১৮ বছর। এই বয়সেই গল্প লিখে বেশ নাম করেছেন। এই তো গত বছর ‘সাপ্তাহিক দেশ’ পত্রিকায় একটা গল্প ছাপা হয়েছে—‘শিশু তপন’। সেবার বড়দিনের ছুটিতে বেড়াতে এসেছেন কলকাতা। কলেজ স্ট্রিটের র্যালফ ফক্সের একটা বই খুঁজছিলেন। স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলার প্রস্তাব দিলেন অমৃত। প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রদের মুখে অমৃত অনেক শুনেছেন এই স্টুডিওর কথা, এর ফটোগ্রাফারের কথা। প্রস্তাবে সাড়া দিলেন সোমেন। ফটোগ্রাফারের নির্দেশমতো পরনের রংজ্বলা ধূসর উলের চাদরটা সরিয়ে রাখলেন সোমেন; বেত বোনা চেয়ারটার পেছন ভাগে হাত রেখে বসলেন। ওদিকে কালো কাপড়ে মাথা ঢেকে তেপায়া ক্যামেরার পেছন–ভাগে দাঁড়ালেন ফটোগ্রাফার। লেন্সের খাপটা খুলে নিয়ে আওড়ালেন ‘ওয়ান, টু, থ্রি…’। ১৯৩৮ সালে ডিসেম্বরের এক বিকেলে তোলা হলো সোমেন চন্দের জীবনের একমাত্র ছবি। এর তিন বছর পরই ঢাকার বুকে আততায়ীর আক্রমণে অমিত সম্ভাবনাময় এই সাহিত্যিকের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। আঠারো বছরের সোমেনের মুখটি যার ক্যামেরায় অমর হয়ে রইল, তাঁর নাম চারুচন্দ্র গুহ (১৮৮৪–১৯৫৭)। স্টুডিও ব্যবসার প্রাথমিক যুগে যে ক’জন বাঙালি ফটোগ্রাফার দিশারি হয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের অন্যতম নাম চারু গুহ। নামটি আজকের ঢাকাবাসীর কাছে নতুন ঠেকলেও বুড়িগঙ্গার ওপারে তেঘরিয়ায় জন্ম নেওয়া চারু গুহর কর্মজীবনের শুরুটা কিন্তু হয়েছিল এই ঢাকাতেই।
চারুর জন্ম ১৮৮৪ সালে। মাত্র দশ বছর বয়সে বাবাকে হারান তিনি। মা শরৎশশী পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে বিপদে পড়ে যান। চা বাগানের কিছু শেয়ার কেনা ছিল, সেগুলো বিক্রি করে সংসার চলতে থাকে। ১৬ বছর বয়সে চারু চলে যান কলকাতায় মামা সুরেন ঘোষের কাছে। সেখানে থেকেই পড়ালেখা চালাতে থাকেন, ভর্তি হন কলকাতার গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টে। ১৯০৫ সালে পাস করবার পরপর দার্জিলিঙে ছবি আঁকার একটা কাজ পেলেন চারু। এই দার্জিলিঙে গিয়ে তাঁর জীবনের গতিপথ বদলে যায়। চারুর সখ্য গড়ে ওঠে সেখানকার এক ইউরোপীয় ফটোগ্রাফারের সঙ্গে।
ভদ্রলোকের নিজস্ব স্টুডিও ছিল। তবে কিছুদিন পর তিনি স্টুডিও ব্যবসা গুটিয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এদিকে দীর্ঘদিনের আলাপচারিতায় চারুও ঝুঁকে পড়লেন ছবি তোলায়। ফটোগ্রাফারের ফেলে যাওয়া ব্যবসার ক্যামেরা, আর আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র কিনে নিতে চাইলেন তিনি। টাকা চেয়ে পূর্ব বাংলায় মাকে চিঠি লিখলেন। সংসারের শত অভাব-অভিযোগের মধ্যেও চারুর চাপাচাপিতে শরৎশশী টাকার জোগাড় করলেন। ছবি তোলার কলাকৌশল শিখে ক্যামেরা, আর অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ চারু ফিরে এলেন তেঘরিয়ায়, মায়ের কাছে। কিন্তু গ্রামের বাড়িতে তো আর স্টুডিও ব্যবসা চালানো সম্ভব নয়। ওদিকে ছোট ভাই পরেশও মেডিকেল স্কুল পাস করে ডাক্তার হয়েছেন। দুই ভাই মিলে বাসা ভাড়া করে মাকে নিয়ে সংসার পাতলেন ঢাকায়। আর সদরঘাটের কাছেই চারু খুললেন তাঁর স্বপ্নের নিজস্ব স্টুডিও।
চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু করেন। অন্যদিকে বেঙ্গল স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন পি মুখার্জি। চারু গুহ স্টুডিও চালুর পরের বছর নবাবপুর রোডে চালু হয় ‘আর সি দাস এন্ড সন্স’ নামে এক স্টুডিও। সেখানে ছবি তোলার পাশাপাশি ক্যামেরা, ছবি ছাপানোর কাগজ, রাসায়নিক—এসবও বিক্রি হতো। ক্রমে গড়ে ওঠে খাজা আফজালের স্টুডিও, খাজা সোলায়মান কাদেরের স্টুডিও ও টেকনিক্যাল আর্ট স্টুডিও। অনেক পরে ত্রিশের দশকে নবাবপুর রোডে চালু হয় ডস অ্যান্ড কোম্পানি। ছবি তোলাও কারও পেশা হতে পারে! বিষয়টি স্থানীয় ঢাকাবাসীর কাছে ছিল রীতিমতো অভিনব। তাঁরা পেশাটির চমৎকার এক নাম দেয় ‘ফটোওয়ালা’।
১৯০১ সালে ঢাকাবাসী প্রথম বিদ্যুতের আলো দেখতে পেলেও প্রথম দু–তিন দশক তা সহজলভ্য ছিল না। অল্প কিছু আবাসিক ভবন, আর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকত রাতের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত। বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে বেশির ভাগ ব্যবসার মতো স্টুডিও ব্যবসাও ছিল সূর্যের আলোনির্ভর। এ ধরনের স্টুডিওকে বলা হতো ডে–লাইট স্টুডিও। চারুর স্টুডিওটি ছিল সেরকমই। স্টুডিওর নিচতলা ছিল ডার্ক রুম আর কাউন্টার। কখনো দোকানের সামনে, কখনো ওপরতলায় টিনের চাল বা বাঁশের বেড়ার সাহায্যে আলো নিয়ন্ত্রণ করে সফট লাইটে ছবি তোলা হতো। পেছনে ঝোলানো থাকত প্রয়োজনমতো নিজের ছবি আঁকা কাপড়ে তৈরি ব্যাকড্রপ। সাধারণের ছবি তোলার জন্য এই স্টুডিও খোলা থাকত সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এত স্বপ্ন আর উদ্যোগ নিয়ে চালু করার পরও চারুর স্টুডিও ব্যবসা লাভের মুখ দেখল না। স্টুডিও নিয়ে চারুর নিজের অতৃপ্তি ছিল। দার্জিলিঙে বিদ্যুতের সুবিধা ছিল, কৃত্রিম আলোকে নিয়ন্ত্রণ করে ফটোতে নানান শৈল্পিক মাত্রা যোগ করা যেত। আলোছায়ার খেলাকে ধারণ করবার সেই সুযোগ ঢাকায় সীমিত। এ সীমাবদ্ধতার সঙ্গে আয়ের বিষয়টিও যোগ হলো।
ফটোগ্রাফির প্রথম যুগে স্টুডিওতে গিয়ে ছবি তোলা ছিল বাঙালির কাছে বিলাসিতা। ঢাকার প্রভাবশালী লোকজন আর এখানে অবস্থানরত ইউরোপীয়রা আগে থেকেই ক্যাপের স্টুডিওতে ছবি তুলতেন। এর পাশাপাশি অন্য বিত্তবানদেরও নানা প্রয়োজনে কলকাতা যাওয়া–আসা ছিল, সেখানকার প্রসিদ্ধ স্টুডিওতে ছবি তুলতে তাঁরা গর্ববোধ করতেন। তাই কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া স্টুডিও ব্যবসা নিয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে ওঠে। এর মধ্যে ফটোওয়ালার সংসারও বড় হয়েছে। চারু বিয়ে করেছেন, জন্ম নিয়েছে সুধাংশু বালা ও চারুর প্রথম সন্তান। আট বছরের কিছু বেশি সময় চালানোর পর নানা প্রতিকূলতায় স্টুডিওটি বন্ধ হয়ে যায়। সেটা ১৯১৭ সালের কথা। এর পর পরিবার নিয়ে চারু চলে যান কলকাতা।
কলকাতায় পৌঁছে প্রথম শুরু করলেন ঘুরে ঘুরে ছবি তোলার কাজ। সারা দিন একটা ভারী ক্যামেরা নিয়ে ট্রামে চেপে আউটডোরে ছবি তুলতেন। বিকেলে ধর্মতলার এক স্টুডিওর ডার্ক রুমে বসে সেসব ডেভেলপ করতেন। নিজের সঞ্চয়ে একসময় হ্যারিসন রোডের (বর্তমান মহাত্মা গান্ধী রোড) যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, সেখানে নতুন করে স্টুডিও ব্যবসা চালু করেন। এবার প্রথমেই করলেন বিদ্যুতের ব্যবস্থা, হাজার ওয়াটের এক বাল্ব জুড়ে দিলেন স্টুডিওতে। স্টুডিওর নামও রাখলেন ‘ইলেক্ট্রো ফটো স্টুডিও’। হ্যারিসন রোডে ছবি তুলবার মানুষ পেতে চারুকে বেগ পেতে হলো না।
শিয়ালদহ আর হাওড়া রেলস্টেশনে যাতায়াত করা মানুষেরা চারুর খ্যাতি ছড়িয়ে দিল। ব্যবসার পসারের সঙ্গে চারু চলে এলেন কলেজ স্ট্রিটের আলবার্ট হলের (বর্তমানে যে ভবনে ইন্ডিয়ান কফি হাউস) তিন তলায়। এ কালের মতো তখনো আলবার্ট হল ছিল সামাজিক, রাজনৈতিক নানা কর্মসূচির অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। স্টুডিও পোর্ট্রেটের পাশাপাশি সেসব সভা-সমাবেশ ক্যামেরাবন্দী করার কাজটিও পেয়ে গেলেন চারু গুহ। সন্ধ্যার পর তাঁর স্টুডিও হয়ে উঠল সেকালের রথী-মহারথীদের মিলনমেলা। চারুর ক্যামেরায় অমর হয়ে রইলেন কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ, ওস্তাদ আলী আকবর, গায়ক পঙ্কজ মল্লিকসহ বহু গুণীজন।
এক বিকেলে ‘সওগাত’ সম্পাদক মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন এলেন, সঙ্গে কবি সুফিয়া এন হোসেন (পরবর্তীকালে বেগম সুফিয়া কামাল)। সেটা ১৯২৯ সালের কথা। নাসিরউদ্দীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘সওগাত’–এর একটি নারী সংখ্যা প্রকাশ করবেন, যেখানে লেখিকাদের ছবিসহ লেখা থাকবে। সেকালে মুসলিম নারীদের ছবি তোলার উদাহরণ বিরল। কবি সুফিয়া কামাল কখনো ক্যামেরার সামনে দাঁড়াননি। চারুও কোনো মুসলিম নারীর ছবি তোলেননি। এর সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে নাসিরুদ্দীনকে সতর্কও করেন চারু। কিন্তু নাসিরুদ্দীন তাঁর সিদ্ধান্তে অটল। প্রথম এক মুসলিম নারী কবির ছবি তোলার কোনো পারিশ্রমিক নিলেন না চারু। ছবিগুলো সযত্নে পাঠিয়ে দিলেন ‘সওগাত’ অফিসে। চারুর তোলা সেই ছবিসহ প্রথম নারী সংখ্যা ‘সওগাত’ প্রকাশ পায় সে বছরের সেপ্টেম্বরে। এ সংখ্যা প্রকাশের পর অনেক মুসলিম লেখিকা তাঁদের ছবি পত্রিকায় ছাপাতে সম্মত হন।
কাজের উৎকর্ষের জন্য চারু সব সময় ছিলেন সচেষ্ট। ১৯৩১ সালে নিজ অর্থব্যয়ে জার্মানি গিয়ে শিখে আসেন ছবি তোলার আধুনিক সব কলাকৌশল। তাঁর সেসব কৌশল সেকালের বাঙালির জন্য ছিল অভিনব। কলেজ স্ট্রিটের আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের জন্যও ছবি তোলার গন্তব্য হয়ে ওঠে চারুর স্টুডিও। সেই কথা স্মরণ করেছেন ভাষাতত্ত্ববিদ সুকুমার সেন, ‘আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তখন আলবার্ট হলের ওপরতলায় তাঁর স্টুডিওটি গ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের তীর্থস্থানের মতো ছিল। সেনেট হাউসে কনভোকেশনের পর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরেরা দলে দলে তাঁর স্টুডিওতে গিয়ে গাউন হুড পরে ছবি তোলাতো।’
চারু গুহর জীবনাবসান হয় ১৯৫৭ সালে। মৃত্যুর পর বড় ছেলে চিত্তরঞ্জন চার দশক ধরে চালিয়ে নেন ছবি তোলার ব্যবসা। স্টুডিও বন্ধ হয়ে যাওয়ার বেশ অনেক কাল পর চারুর উত্তরসূরিরা সেখানে গড়ে তোলেন এক প্রদর্শনীশালা। সাধারণ পেশাজীবী মানুষকে ছবি তোলায় আকৃষ্ট করার জন্য এক কালে চারু আলবার্ট হলের দেয়ালে জুড়ে দিয়েছিলেন, ‘Your mother, wife and Children-keep them nearby photograph’, ‘If you want a record, have it photographed’, ‘If you have beauty I will take it, if you have none, come, I will make it. ’ ইত্যাদি কত কত বিজ্ঞাপন! রং চটে যাওয়া মলিন সেসব বিজ্ঞাপনের কিছু আজও টিকে আছে। আর স্টুডিওতে ঢুকবার মুখে চারুর তোলা কিছু ছবি পিন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বড় বড় স্বপ্নভরা চোখ নিয়ে সোমেন চন্দ সেখানে দিব্যি তাকিয়ে আছেন, ঠিক যেমনটি ছিলেন চারুর লেন্সের সামনে, আজ থেকে আশি বছর আগে।
সহায়ক সূত্র:
১. চারু গুহ: জীবন ও আলোকচিত্র, বই-চিত্র, ২০০৭
২. বেগম, ৫০ বর্ষ পূর্তি সংখ্যা, ২০০০
৩. পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রসঙ্গ, অনুপম হায়াৎ, বাংলা একাডেমি, ২০০১
তারেক আজিজ: অধ্যাপক, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
১ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
২ ঘণ্টা আগে
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৬ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মেষ
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান; পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।
বৃষ
আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না; বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন, যা দেখে হাসবেন নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।
মিথুন
মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।
কর্কট
কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।
সিংহ
সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটা বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টাপাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।
কন্যা
আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসিঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।
তুলা
গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দুই দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন; অর্থাৎ ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে; যেমন ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।
বৃশ্চিক
বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দুজন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।
ধনু
ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।
মকর
মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দুবার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না, যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
কুম্ভ
কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন ‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে, যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।
মীন
মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মধ্যে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

মেষ
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান; পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।
বৃষ
আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না; বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন, যা দেখে হাসবেন নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।
মিথুন
মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।
কর্কট
কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।
সিংহ
সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটা বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টাপাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।
কন্যা
আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসিঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।
তুলা
গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দুই দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন; অর্থাৎ ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে; যেমন ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।
বৃশ্চিক
বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দুজন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।
ধনু
ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।
মকর
মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দুবার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না, যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।
কুম্ভ
কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন ‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে, যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।
মীন
মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মধ্যে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু কর
১২ জুলাই ২০২১
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
২ ঘণ্টা আগে
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৬ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।
এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।
আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।
রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।
শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।
এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।
আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।
রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।
শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু কর
১২ জুলাই ২০২১
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
১ ঘণ্টা আগে
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১৪ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৬ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।
গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।
দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’
আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।
গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।
এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।
দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’
আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু কর
১২ জুলাই ২০২১
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
১ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
২ ঘণ্টা আগে
আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।...
১৬ ঘণ্টা আগেফারিয়া রহমান খান

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।
অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা
মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়
উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—
স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘামাচি বা র্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।
চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—
কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়
প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।
অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা
মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়
উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—
স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।
ঘামাচি বা র্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।
চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়
অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—
কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়
প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।
সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

চারু যে সময়ে ফটো স্টুডিওর ব্যবসা শুরু করেন, সে সময় ঢাকার মাত্র দুটি বাণিজ্যিক স্টুডিওর নাম জানা যায়—ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিও ও বেঙ্গল স্টুডিও। ওয়াইজঘাটের ক্যাপ ফ্রিৎজ স্টুডিওর ফটোগ্রাফার ছিলেন জার্মান নাগরিক ফ্রিৎজ ক্যাপ। ঢাকার নবাব আহসানউল্লাহর আর্থিক সহযোগিতায় বিশ শতকের শুরুতে ক্যাপ এই স্টুডিও চালু কর
১২ জুলাই ২০২১
আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন।
১ ঘণ্টা আগে
শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা...
২ ঘণ্টা আগে
সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।...
১৪ ঘণ্টা আগে