
দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মন্টি বৈষ্ণব।
আজকের পত্রিকা: একজন নারী হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে নাচের মানুষ হিসেবে পরিচিতি তৈরি করা কতটা কঠিন বলে মনে হয়েছে আপনার?
পূজা সেনগুপ্ত: আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজের সুযোগ পাবার একটাই মাপকাঠি, আর তা হলো যোগ্যতা। তবে আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরেকটু জটিল ছিল। কারণ আমি যখন নাচকে পেশা হিসেবে নেবার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের দেশে নাচের কোনো পেশাদার ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। তাই নিজের নাচের চর্চা আর সৃজনশীলতার পাশাপাশি আমাকে আমার নাচের মার্কেটও তৈরি করতে হয়েছে। আমাদের দেশে নাচের পরিধি অনেক ছোট। আবার সংগীতের পরিধি অনেক বড়। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে আবার নাচের পরিধিটা অনেক বেশি প্রসারিত ও শক্তিশালী। কারণ নাচের ভাষা বিশ্বজনীন। তাই আমি শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি যখন দেশে কাজ শুরু করি, তখন এখানে নাচের কোনো মার্কেট ছিল না। যে অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করা হতো, সেখানে গান বা অন্য জনপ্রিয় মাধ্যমের শিল্পীদের প্রাধান্য থাকত। হয়তো কোনো শিল্পীর সংগীত সন্ধ্যা হবে, শুরুতে একটা নাচ। গান আমরা শুনি আর নাচ দেখি। নাচ করার সময় যদি পেছনে যন্ত্রপাতি থাকে, সেটা দেখতে ভালো দেখাবে না। সে সময় আয়োজকদের বিষয়টা বোঝানো খুব কঠিন বিষয় ছিল। আরেকটা জিনিস লক্ষ করলাম, নাচের শিল্পীদের সম্মানী অনেক কম। আমি শুরুতেই একটা স্ট্যান্ড নিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার নাচকে ঠিকমতো তুলে ধরার জন্য যে রকম আয়োজন প্রয়োজন, আয়োজকেরা সেটা নিশ্চিত করতে পারলেই কাজ করব, আর আমি উপযুক্ত বাজেটে কাজ করব। আমি অনেক কাজ ফিরিয়ে দিলাম, কম কাজ করলাম, কিন্তু যে কাজগুলো করলাম সেগুলো ভালো হলো। সবচেয়ে বড় কথা, আমি ‘না’ বলতে শিখলাম। এতে আমার লাভ হলো। দেখা গেল, কিছুদিনের মধ্যেই আমার শর্তেই সবাই আমাকে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কারণ, তত দিনে আসলে আমাদের দর্শক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শিল্পের মানের সঙ্গে আমি কখনোই আপস করিনি। অবস্থান আর সম্মান জোর করে আদায় করা যায় না, অর্জন করে নিতে হয়। কাজের মানের কারণে দেশের বাইরে মূলধারার আয়োজনেও অংশগ্রহণের জন্য সরাসরি আমন্ত্রণ পেলাম। দেশের বাইরে পারফর্ম করার সময় চেষ্টা করেছি বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে। সেখানে আরেকটা বিষয় সমস্যা তৈরি করে। সেটা হলো, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের নামটা অনেক কম পরিচিত। অনেকে আমাদের ভারতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। বাংলাদেশের একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করা ছিল আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমি সব সময় আমার কাজে এমন শিল্প উপকরণ আর শৈলী প্রয়োগ করেছি, যা সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব, যা বাংলাদেশি। তবে লোকসংস্কৃতির এই উপকরণগুলো তো তৈরি থাকে না, খুঁজে নিতে হয়, বারবার খুঁজতে হয়—এটাই রিসার্চ। আমাকেও দেশের মূল সংস্কৃতির বিষয়গুলো খুঁজে খুঁজে বের করতে হয়েছে। আমার মূল বিষয়টা ছিল বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির রূপ তুলে ধরা। আসলে আমি একজন সামান্য ফেরিওয়ালা, আমার দেশের সংস্কৃতি নিয়ে সারা বিশ্বে ফেরি করছি।
আজকের পত্রিকা: সৃষ্টিশীল ভুবনে আমাদের নারীদের অবস্থান তৈরিতে সমস্যা আছে কি না? আপনার কী মনে হয়?
পূজা: প্রত্যেক মানুষের মধ্যে শক্তি আর সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে। প্রয়োজন সেটাকে জাগিয়ে তোলা। মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা শক্তিটা কিন্তু অনেক বড়। সেই শক্তিটাকে সবাই আবিষ্কার করতে পারেন না। যাঁরা পারেন, তাঁরা কোনো না কোনাভাবে সফল হন। এ বিষয়ে আমাদের দেশের নারীদের বলতে চাই, প্রতিবাদ করতে জানতে হবে। অন্যায় মুখ বুঝে সহ্য না করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত। প্রতিবাদের মাধ্যমেই প্রতিকার আসবে।
আজকের পত্রিকা: দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজের দেশের সংস্কৃতিকে উপস্থাপনের অনুভূতি কেমন মনে হচ্ছে? উৎসবে আরতি নাচের আইডিয়াটা কীভাবে এল?
পূজা: দেশের বাইরে যখন নিজেদের কোনো পারফরম্যান্স বা পরিবেশনা নিয়ে যাই, তখন আমাদের বিবেচনায় থাকে কীভাবে দেশের সংস্কৃতিকে সেই দেশের মাটিতে তুলে ধরব। এ ক্ষেত্রে শুধু পারফরম্যান্সের সময় নয়, আমাদের কথাবার্তায়, চলাফেরায়, পোশাকে, কস্টিউম-প্রপ্স—সবকিছুর মাধ্যমেই কীভাবে দেশকে তুলে ধরব সে বিষয়েও আমরা সব সময় সচেতন থাকি। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এই আমন্ত্রণ ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসেছিল। তখন করোনার কারণে ফেস্টিভ্যালটা হলো না। আর আমাদেরও যাওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার ক্ষেত্রে দুটি চ্যালেঞ্জ কাজ করে। এক হলো, নিজের দেশের সংস্কৃতিকে খুঁজে বের করা। দুই হলো, সেটিকে ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক দর্শকের উপযোগী করে নিজের কাজকে উপস্থাপন করা। এ বিষয় দুটিকে বিবেচনায় রেখেই আরতি নাচকে বেছে নিয়েছিলাম। আমি বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, আরতি নাচ আমাদের লোকসংস্কৃতির অংশ। তবে এটা পুরোপুরি নাচ না, এর সাথে অ্যাক্রোবেটিক কৌশলও মিশে আছে। আমি এই নাচের নতুন স্টেপ বানানোর জন্য কাজ করতে শুরু করলাম, এটাকে একটা মূলধারায় পরিবেশনযোগ্য নাচের কাঠামো দেবার চেষ্টা করলাম। ভাবলাম, আমাদের মৃত্তিকাসংলগ্ন মানুষের নাচের আঙ্গিকের সঙ্গে যদি আরতি নাচকে ফিউশন করি, তাহলে এই নাচের পরিধি অনেক বেড়ে যাবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্যারেডে রাস্তায় নাচটা পরিবেশন করতে হবে আর নাচের মধ্য দিয়ে দেশের আরতি করব, তাই রবীন্দ্রনাথের ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ গানটি বেছে নিলাম। এই নাচ পরিবেশনের পর আমরা অনেক বেশি প্রশংসিত হয়েছি। নিজেরাও অনেক আনন্দিত ছিলাম।
আজকের পত্রিকা: আপনার শৈশব সম্পর্কে জানতে চাই। ছোটবেলা থেকেই কি নাচের প্রতি আগ্রহী ছিলেন?
পূজা: ছোটবেলা থেকে আমার ছকে বাঁধা জীবন ছিল। নিয়মের মধ্যে যে ধরাবাঁধা জীবন, সেই জীবনের বাইরেও যে সুন্দর একটা জীবন আছে, সেটা আমি প্রথম বুঝতে পারি যখন আমি আমার নেশাকে পেশা হিসেবে বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নিই। নাচ নিয়ে ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাই। আমার আসলে যাওয়ার কথা ছিল জার্মানিতে। পদার্থবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি করার জন্য। কিন্তু তখন আমার শিক্ষক কবির স্যারের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে নাচকে আমি আমার ভবিষ্যৎ হিসেবে বেছে নিলাম। আমার স্যার বলতেন, ‘যে কাজে তোমার আনন্দ আছে, সেটাই যদি পেশা হয়, তাহলে তোমার জীবনটা আনন্দের হবে। তা না হলে একটা অনুশোচনা থেকে যাবে।’
তবে নিজের এই পেশাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করাটা সহজ ছিল না। আমি পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে যেতাম না। কারণ যেখানেই যাই না কেন, আমি নাচ করি বা নিজেকে কোরিওগ্রাফার হিসেবে পরিচয় দিলে সবাই আরও জানতে চাইত নাচের পাশাপাশি আমি আর কী করি। এরপর যখন দেশে-বিদেশে অনেক কাজ করতে শুরু করলাম, পত্র-পত্রিকায় ভালো নিউজ হলো, স্বীকৃতি পেলাম, তখন আবার এই মানুষগুলোই আমার বাবা-মায়ের কাছে জানতে চান, পূজা কেন আজকের অনুষ্ঠানে এল না? এরপর দেখা গেল, আমাদের বাসায় দুটো আমন্ত্রণ কার্ড আসতে লাগল। একটা আমার পরিবারের নামে, আরেকটা আলাদা কার্ড, আমার নামে।
আজকের পত্রিকা: কেমন হতে পারে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
পূজা: আমি কখনো পরিচিত বা বিখ্যাত হওয়ার জন্য কাজ করিনি। আমি আমার কাজটা ভালোবেসেই করেছি। আমার ফোকাস হলো ভালো কাজ করা। মহাভারতের দ্রোণাচার্য যেমন সবাইকে তির-ধনুক হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী দেখতে পাও। একেকজন একেকটা বললেন, কেউ আকাশ, কেউ গাছ, কেউ পাখি দেখেন। কিন্তু অর্জুন বলেছিলেন আমি পাখির চোখ দেখি। সে রকম আমি আমার লক্ষ্যটাই দেখি। বাংলাদেশের নাচের অনেক ভালো একটা ভবিষ্যৎ হবে। আন্তর্জাতিক মূলধারায় বাংলাদেশের নিজস্ব নৃত্যধারাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা আর দেশে নাচের পেশাদার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করাই আমার লক্ষ্য।
আজকের পত্রিকা: দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যালে আপনারা বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই থিয়েটার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
পূজা: আমার দাদু আমার নাম তুরঙ্গমী রাখতে চেয়েছিলেন। কোনো কারণে আমার এই নাম রাখা হয়নি। তুরঙ্গমী নামের অর্থ ‘যে মেয়ে ঘোড়া চালাতে পারে’। অর্থাৎ অশ্বারোহী, ঘোড়সওয়ার। যখন এ ঘটনার কথা শুনেছি, তখন থেকে মনে মনে ভাবলাম, আমি নিজে এই নামে পরিচিত হইনি, কিন্তু বড় হয়ে যে কাজগুলো করব, সেই কাজগুলো তুরঙ্গমী নামে পরিচিত হবে। ২০১৪ সালে তুরঙ্গমীর জন্ম। এটি তরুণদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম। এই মুহূর্তে এই প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে এখানকার নৃত্যশিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরি দেওয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার উৎসবে আমাদের দুটি পরিবেশনা ছিল—একটি ‘পাঁচফোড়ন’, আরেকটি ‘নন্দিনী’। আমরা পাঁচফোড়নের পরিবেশনায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে দেখিয়েছি, যাদের ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশের অর্থনীতি টিকে আছে। যেমন–কৃষক, শ্রমিক, জেলে, মাঝি, মৌয়াল, গার্মেন্টসকর্মী। সব পেশার লোকের সমাবেশ আমাদের এই দেশ। সেটাই পাঁচফোড়নের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আরেকটা পরিবেশনা ছিল, যেটা আমরা প্যারেডে করেছি। সেটার নাম নন্দিনী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে আরতি নৃত্য। আমরা আমাদের দেশমাতৃকাকে নন্দিনীরূপেই দেখানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের সর্বমোট ১০ জনের একটা দল ছিল।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা কেমন মনে হয় আপনার?
পূজা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা আসলে শৌখিন, কিন্তু অপেশাদারদের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে এখান থেকে ভালো কাজ হবে না। দুই-চারজন নিজের মতো করে ভালো কাজ করলেও সামগ্রিকভাবে কোনো লাভ হবে না। নাচ এ দেশে অনেক বড় কাজের ক্ষেত্র হতে পারে। কারণ এ দেশের প্রচুর মানুষ নাচ করে। কিন্তু তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। শুধু নাচতে জানলেই হবে না। নাচের জন্য আলো, সেট, মিউজিকের দরকার হয়। মঞ্চে সেট ব্যবহার করব কি না, সেই সেটের আঙ্গিকটা কেমন হবে, মিউজিকটা কেমন হবে—নাচকে শিল্প হিসেবে তুলে ধরার জন্য এই বিষয়গুলো জানা খুব জরুরি। একজন কোরিওগ্রাফারের এই বিষয়গুলো জানা থাকলে তাঁর কাজ মানসম্পন্ন হবে। আরেকটা বিষয় হলো, এ দেশে নকল করার প্রবণতা অনেক বেশি। এটা যে একটি অপরাধ, সেটা অনেকে বুঝতে চান না। কপিরাইট আইনের সচেতনতা প্রয়োজন। তবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক সম্ভাবনাময়। তাদের যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়, তাহলে নাচের সেক্টরে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। সরকার যদি এ দিকটায় মনোযোগ দেয়, তাহলে ভালো হবে। আর এতে তো আসলে সরকারের লাভ হবে। কারণ দেশে শিল্প-সংস্কৃতির কাজের চর্চা যতই বাড়বে, অপরাধের মাত্রা ততই কমে আসবে। এ ছাড়া এটা একটা লাভজনক খাত হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। তখন সরকারকে আর শেষ বয়সে দুস্থ শিল্পীদের অনুদান দিতে হবে না, বরং শিল্পীরাই আয়কর দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মন্টি বৈষ্ণব।
আজকের পত্রিকা: একজন নারী হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে নাচের মানুষ হিসেবে পরিচিতি তৈরি করা কতটা কঠিন বলে মনে হয়েছে আপনার?
পূজা সেনগুপ্ত: আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজের সুযোগ পাবার একটাই মাপকাঠি, আর তা হলো যোগ্যতা। তবে আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরেকটু জটিল ছিল। কারণ আমি যখন নাচকে পেশা হিসেবে নেবার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের দেশে নাচের কোনো পেশাদার ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। তাই নিজের নাচের চর্চা আর সৃজনশীলতার পাশাপাশি আমাকে আমার নাচের মার্কেটও তৈরি করতে হয়েছে। আমাদের দেশে নাচের পরিধি অনেক ছোট। আবার সংগীতের পরিধি অনেক বড়। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে আবার নাচের পরিধিটা অনেক বেশি প্রসারিত ও শক্তিশালী। কারণ নাচের ভাষা বিশ্বজনীন। তাই আমি শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি যখন দেশে কাজ শুরু করি, তখন এখানে নাচের কোনো মার্কেট ছিল না। যে অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করা হতো, সেখানে গান বা অন্য জনপ্রিয় মাধ্যমের শিল্পীদের প্রাধান্য থাকত। হয়তো কোনো শিল্পীর সংগীত সন্ধ্যা হবে, শুরুতে একটা নাচ। গান আমরা শুনি আর নাচ দেখি। নাচ করার সময় যদি পেছনে যন্ত্রপাতি থাকে, সেটা দেখতে ভালো দেখাবে না। সে সময় আয়োজকদের বিষয়টা বোঝানো খুব কঠিন বিষয় ছিল। আরেকটা জিনিস লক্ষ করলাম, নাচের শিল্পীদের সম্মানী অনেক কম। আমি শুরুতেই একটা স্ট্যান্ড নিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার নাচকে ঠিকমতো তুলে ধরার জন্য যে রকম আয়োজন প্রয়োজন, আয়োজকেরা সেটা নিশ্চিত করতে পারলেই কাজ করব, আর আমি উপযুক্ত বাজেটে কাজ করব। আমি অনেক কাজ ফিরিয়ে দিলাম, কম কাজ করলাম, কিন্তু যে কাজগুলো করলাম সেগুলো ভালো হলো। সবচেয়ে বড় কথা, আমি ‘না’ বলতে শিখলাম। এতে আমার লাভ হলো। দেখা গেল, কিছুদিনের মধ্যেই আমার শর্তেই সবাই আমাকে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কারণ, তত দিনে আসলে আমাদের দর্শক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শিল্পের মানের সঙ্গে আমি কখনোই আপস করিনি। অবস্থান আর সম্মান জোর করে আদায় করা যায় না, অর্জন করে নিতে হয়। কাজের মানের কারণে দেশের বাইরে মূলধারার আয়োজনেও অংশগ্রহণের জন্য সরাসরি আমন্ত্রণ পেলাম। দেশের বাইরে পারফর্ম করার সময় চেষ্টা করেছি বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে। সেখানে আরেকটা বিষয় সমস্যা তৈরি করে। সেটা হলো, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের নামটা অনেক কম পরিচিত। অনেকে আমাদের ভারতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। বাংলাদেশের একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করা ছিল আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমি সব সময় আমার কাজে এমন শিল্প উপকরণ আর শৈলী প্রয়োগ করেছি, যা সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব, যা বাংলাদেশি। তবে লোকসংস্কৃতির এই উপকরণগুলো তো তৈরি থাকে না, খুঁজে নিতে হয়, বারবার খুঁজতে হয়—এটাই রিসার্চ। আমাকেও দেশের মূল সংস্কৃতির বিষয়গুলো খুঁজে খুঁজে বের করতে হয়েছে। আমার মূল বিষয়টা ছিল বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির রূপ তুলে ধরা। আসলে আমি একজন সামান্য ফেরিওয়ালা, আমার দেশের সংস্কৃতি নিয়ে সারা বিশ্বে ফেরি করছি।
আজকের পত্রিকা: সৃষ্টিশীল ভুবনে আমাদের নারীদের অবস্থান তৈরিতে সমস্যা আছে কি না? আপনার কী মনে হয়?
পূজা: প্রত্যেক মানুষের মধ্যে শক্তি আর সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে। প্রয়োজন সেটাকে জাগিয়ে তোলা। মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা শক্তিটা কিন্তু অনেক বড়। সেই শক্তিটাকে সবাই আবিষ্কার করতে পারেন না। যাঁরা পারেন, তাঁরা কোনো না কোনাভাবে সফল হন। এ বিষয়ে আমাদের দেশের নারীদের বলতে চাই, প্রতিবাদ করতে জানতে হবে। অন্যায় মুখ বুঝে সহ্য না করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত। প্রতিবাদের মাধ্যমেই প্রতিকার আসবে।
আজকের পত্রিকা: দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজের দেশের সংস্কৃতিকে উপস্থাপনের অনুভূতি কেমন মনে হচ্ছে? উৎসবে আরতি নাচের আইডিয়াটা কীভাবে এল?
পূজা: দেশের বাইরে যখন নিজেদের কোনো পারফরম্যান্স বা পরিবেশনা নিয়ে যাই, তখন আমাদের বিবেচনায় থাকে কীভাবে দেশের সংস্কৃতিকে সেই দেশের মাটিতে তুলে ধরব। এ ক্ষেত্রে শুধু পারফরম্যান্সের সময় নয়, আমাদের কথাবার্তায়, চলাফেরায়, পোশাকে, কস্টিউম-প্রপ্স—সবকিছুর মাধ্যমেই কীভাবে দেশকে তুলে ধরব সে বিষয়েও আমরা সব সময় সচেতন থাকি। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এই আমন্ত্রণ ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসেছিল। তখন করোনার কারণে ফেস্টিভ্যালটা হলো না। আর আমাদেরও যাওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার ক্ষেত্রে দুটি চ্যালেঞ্জ কাজ করে। এক হলো, নিজের দেশের সংস্কৃতিকে খুঁজে বের করা। দুই হলো, সেটিকে ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক দর্শকের উপযোগী করে নিজের কাজকে উপস্থাপন করা। এ বিষয় দুটিকে বিবেচনায় রেখেই আরতি নাচকে বেছে নিয়েছিলাম। আমি বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, আরতি নাচ আমাদের লোকসংস্কৃতির অংশ। তবে এটা পুরোপুরি নাচ না, এর সাথে অ্যাক্রোবেটিক কৌশলও মিশে আছে। আমি এই নাচের নতুন স্টেপ বানানোর জন্য কাজ করতে শুরু করলাম, এটাকে একটা মূলধারায় পরিবেশনযোগ্য নাচের কাঠামো দেবার চেষ্টা করলাম। ভাবলাম, আমাদের মৃত্তিকাসংলগ্ন মানুষের নাচের আঙ্গিকের সঙ্গে যদি আরতি নাচকে ফিউশন করি, তাহলে এই নাচের পরিধি অনেক বেড়ে যাবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্যারেডে রাস্তায় নাচটা পরিবেশন করতে হবে আর নাচের মধ্য দিয়ে দেশের আরতি করব, তাই রবীন্দ্রনাথের ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ গানটি বেছে নিলাম। এই নাচ পরিবেশনের পর আমরা অনেক বেশি প্রশংসিত হয়েছি। নিজেরাও অনেক আনন্দিত ছিলাম।
আজকের পত্রিকা: আপনার শৈশব সম্পর্কে জানতে চাই। ছোটবেলা থেকেই কি নাচের প্রতি আগ্রহী ছিলেন?
পূজা: ছোটবেলা থেকে আমার ছকে বাঁধা জীবন ছিল। নিয়মের মধ্যে যে ধরাবাঁধা জীবন, সেই জীবনের বাইরেও যে সুন্দর একটা জীবন আছে, সেটা আমি প্রথম বুঝতে পারি যখন আমি আমার নেশাকে পেশা হিসেবে বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নিই। নাচ নিয়ে ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাই। আমার আসলে যাওয়ার কথা ছিল জার্মানিতে। পদার্থবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি করার জন্য। কিন্তু তখন আমার শিক্ষক কবির স্যারের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে নাচকে আমি আমার ভবিষ্যৎ হিসেবে বেছে নিলাম। আমার স্যার বলতেন, ‘যে কাজে তোমার আনন্দ আছে, সেটাই যদি পেশা হয়, তাহলে তোমার জীবনটা আনন্দের হবে। তা না হলে একটা অনুশোচনা থেকে যাবে।’
তবে নিজের এই পেশাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করাটা সহজ ছিল না। আমি পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে যেতাম না। কারণ যেখানেই যাই না কেন, আমি নাচ করি বা নিজেকে কোরিওগ্রাফার হিসেবে পরিচয় দিলে সবাই আরও জানতে চাইত নাচের পাশাপাশি আমি আর কী করি। এরপর যখন দেশে-বিদেশে অনেক কাজ করতে শুরু করলাম, পত্র-পত্রিকায় ভালো নিউজ হলো, স্বীকৃতি পেলাম, তখন আবার এই মানুষগুলোই আমার বাবা-মায়ের কাছে জানতে চান, পূজা কেন আজকের অনুষ্ঠানে এল না? এরপর দেখা গেল, আমাদের বাসায় দুটো আমন্ত্রণ কার্ড আসতে লাগল। একটা আমার পরিবারের নামে, আরেকটা আলাদা কার্ড, আমার নামে।
আজকের পত্রিকা: কেমন হতে পারে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
পূজা: আমি কখনো পরিচিত বা বিখ্যাত হওয়ার জন্য কাজ করিনি। আমি আমার কাজটা ভালোবেসেই করেছি। আমার ফোকাস হলো ভালো কাজ করা। মহাভারতের দ্রোণাচার্য যেমন সবাইকে তির-ধনুক হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী দেখতে পাও। একেকজন একেকটা বললেন, কেউ আকাশ, কেউ গাছ, কেউ পাখি দেখেন। কিন্তু অর্জুন বলেছিলেন আমি পাখির চোখ দেখি। সে রকম আমি আমার লক্ষ্যটাই দেখি। বাংলাদেশের নাচের অনেক ভালো একটা ভবিষ্যৎ হবে। আন্তর্জাতিক মূলধারায় বাংলাদেশের নিজস্ব নৃত্যধারাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা আর দেশে নাচের পেশাদার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করাই আমার লক্ষ্য।
আজকের পত্রিকা: দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যালে আপনারা বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই থিয়েটার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
পূজা: আমার দাদু আমার নাম তুরঙ্গমী রাখতে চেয়েছিলেন। কোনো কারণে আমার এই নাম রাখা হয়নি। তুরঙ্গমী নামের অর্থ ‘যে মেয়ে ঘোড়া চালাতে পারে’। অর্থাৎ অশ্বারোহী, ঘোড়সওয়ার। যখন এ ঘটনার কথা শুনেছি, তখন থেকে মনে মনে ভাবলাম, আমি নিজে এই নামে পরিচিত হইনি, কিন্তু বড় হয়ে যে কাজগুলো করব, সেই কাজগুলো তুরঙ্গমী নামে পরিচিত হবে। ২০১৪ সালে তুরঙ্গমীর জন্ম। এটি তরুণদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম। এই মুহূর্তে এই প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে এখানকার নৃত্যশিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরি দেওয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার উৎসবে আমাদের দুটি পরিবেশনা ছিল—একটি ‘পাঁচফোড়ন’, আরেকটি ‘নন্দিনী’। আমরা পাঁচফোড়নের পরিবেশনায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে দেখিয়েছি, যাদের ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশের অর্থনীতি টিকে আছে। যেমন–কৃষক, শ্রমিক, জেলে, মাঝি, মৌয়াল, গার্মেন্টসকর্মী। সব পেশার লোকের সমাবেশ আমাদের এই দেশ। সেটাই পাঁচফোড়নের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আরেকটা পরিবেশনা ছিল, যেটা আমরা প্যারেডে করেছি। সেটার নাম নন্দিনী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে আরতি নৃত্য। আমরা আমাদের দেশমাতৃকাকে নন্দিনীরূপেই দেখানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের সর্বমোট ১০ জনের একটা দল ছিল।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা কেমন মনে হয় আপনার?
পূজা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা আসলে শৌখিন, কিন্তু অপেশাদারদের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে এখান থেকে ভালো কাজ হবে না। দুই-চারজন নিজের মতো করে ভালো কাজ করলেও সামগ্রিকভাবে কোনো লাভ হবে না। নাচ এ দেশে অনেক বড় কাজের ক্ষেত্র হতে পারে। কারণ এ দেশের প্রচুর মানুষ নাচ করে। কিন্তু তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। শুধু নাচতে জানলেই হবে না। নাচের জন্য আলো, সেট, মিউজিকের দরকার হয়। মঞ্চে সেট ব্যবহার করব কি না, সেই সেটের আঙ্গিকটা কেমন হবে, মিউজিকটা কেমন হবে—নাচকে শিল্প হিসেবে তুলে ধরার জন্য এই বিষয়গুলো জানা খুব জরুরি। একজন কোরিওগ্রাফারের এই বিষয়গুলো জানা থাকলে তাঁর কাজ মানসম্পন্ন হবে। আরেকটা বিষয় হলো, এ দেশে নকল করার প্রবণতা অনেক বেশি। এটা যে একটি অপরাধ, সেটা অনেকে বুঝতে চান না। কপিরাইট আইনের সচেতনতা প্রয়োজন। তবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক সম্ভাবনাময়। তাদের যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়, তাহলে নাচের সেক্টরে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। সরকার যদি এ দিকটায় মনোযোগ দেয়, তাহলে ভালো হবে। আর এতে তো আসলে সরকারের লাভ হবে। কারণ দেশে শিল্প-সংস্কৃতির কাজের চর্চা যতই বাড়বে, অপরাধের মাত্রা ততই কমে আসবে। এ ছাড়া এটা একটা লাভজনক খাত হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। তখন সরকারকে আর শেষ বয়সে দুস্থ শিল্পীদের অনুদান দিতে হবে না, বরং শিল্পীরাই আয়কর দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মন্টি বৈষ্ণব।
আজকের পত্রিকা: একজন নারী হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে নাচের মানুষ হিসেবে পরিচিতি তৈরি করা কতটা কঠিন বলে মনে হয়েছে আপনার?
পূজা সেনগুপ্ত: আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজের সুযোগ পাবার একটাই মাপকাঠি, আর তা হলো যোগ্যতা। তবে আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরেকটু জটিল ছিল। কারণ আমি যখন নাচকে পেশা হিসেবে নেবার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের দেশে নাচের কোনো পেশাদার ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। তাই নিজের নাচের চর্চা আর সৃজনশীলতার পাশাপাশি আমাকে আমার নাচের মার্কেটও তৈরি করতে হয়েছে। আমাদের দেশে নাচের পরিধি অনেক ছোট। আবার সংগীতের পরিধি অনেক বড়। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে আবার নাচের পরিধিটা অনেক বেশি প্রসারিত ও শক্তিশালী। কারণ নাচের ভাষা বিশ্বজনীন। তাই আমি শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি যখন দেশে কাজ শুরু করি, তখন এখানে নাচের কোনো মার্কেট ছিল না। যে অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করা হতো, সেখানে গান বা অন্য জনপ্রিয় মাধ্যমের শিল্পীদের প্রাধান্য থাকত। হয়তো কোনো শিল্পীর সংগীত সন্ধ্যা হবে, শুরুতে একটা নাচ। গান আমরা শুনি আর নাচ দেখি। নাচ করার সময় যদি পেছনে যন্ত্রপাতি থাকে, সেটা দেখতে ভালো দেখাবে না। সে সময় আয়োজকদের বিষয়টা বোঝানো খুব কঠিন বিষয় ছিল। আরেকটা জিনিস লক্ষ করলাম, নাচের শিল্পীদের সম্মানী অনেক কম। আমি শুরুতেই একটা স্ট্যান্ড নিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার নাচকে ঠিকমতো তুলে ধরার জন্য যে রকম আয়োজন প্রয়োজন, আয়োজকেরা সেটা নিশ্চিত করতে পারলেই কাজ করব, আর আমি উপযুক্ত বাজেটে কাজ করব। আমি অনেক কাজ ফিরিয়ে দিলাম, কম কাজ করলাম, কিন্তু যে কাজগুলো করলাম সেগুলো ভালো হলো। সবচেয়ে বড় কথা, আমি ‘না’ বলতে শিখলাম। এতে আমার লাভ হলো। দেখা গেল, কিছুদিনের মধ্যেই আমার শর্তেই সবাই আমাকে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কারণ, তত দিনে আসলে আমাদের দর্শক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শিল্পের মানের সঙ্গে আমি কখনোই আপস করিনি। অবস্থান আর সম্মান জোর করে আদায় করা যায় না, অর্জন করে নিতে হয়। কাজের মানের কারণে দেশের বাইরে মূলধারার আয়োজনেও অংশগ্রহণের জন্য সরাসরি আমন্ত্রণ পেলাম। দেশের বাইরে পারফর্ম করার সময় চেষ্টা করেছি বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে। সেখানে আরেকটা বিষয় সমস্যা তৈরি করে। সেটা হলো, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের নামটা অনেক কম পরিচিত। অনেকে আমাদের ভারতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। বাংলাদেশের একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করা ছিল আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমি সব সময় আমার কাজে এমন শিল্প উপকরণ আর শৈলী প্রয়োগ করেছি, যা সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব, যা বাংলাদেশি। তবে লোকসংস্কৃতির এই উপকরণগুলো তো তৈরি থাকে না, খুঁজে নিতে হয়, বারবার খুঁজতে হয়—এটাই রিসার্চ। আমাকেও দেশের মূল সংস্কৃতির বিষয়গুলো খুঁজে খুঁজে বের করতে হয়েছে। আমার মূল বিষয়টা ছিল বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির রূপ তুলে ধরা। আসলে আমি একজন সামান্য ফেরিওয়ালা, আমার দেশের সংস্কৃতি নিয়ে সারা বিশ্বে ফেরি করছি।
আজকের পত্রিকা: সৃষ্টিশীল ভুবনে আমাদের নারীদের অবস্থান তৈরিতে সমস্যা আছে কি না? আপনার কী মনে হয়?
পূজা: প্রত্যেক মানুষের মধ্যে শক্তি আর সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে। প্রয়োজন সেটাকে জাগিয়ে তোলা। মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা শক্তিটা কিন্তু অনেক বড়। সেই শক্তিটাকে সবাই আবিষ্কার করতে পারেন না। যাঁরা পারেন, তাঁরা কোনো না কোনাভাবে সফল হন। এ বিষয়ে আমাদের দেশের নারীদের বলতে চাই, প্রতিবাদ করতে জানতে হবে। অন্যায় মুখ বুঝে সহ্য না করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত। প্রতিবাদের মাধ্যমেই প্রতিকার আসবে।
আজকের পত্রিকা: দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজের দেশের সংস্কৃতিকে উপস্থাপনের অনুভূতি কেমন মনে হচ্ছে? উৎসবে আরতি নাচের আইডিয়াটা কীভাবে এল?
পূজা: দেশের বাইরে যখন নিজেদের কোনো পারফরম্যান্স বা পরিবেশনা নিয়ে যাই, তখন আমাদের বিবেচনায় থাকে কীভাবে দেশের সংস্কৃতিকে সেই দেশের মাটিতে তুলে ধরব। এ ক্ষেত্রে শুধু পারফরম্যান্সের সময় নয়, আমাদের কথাবার্তায়, চলাফেরায়, পোশাকে, কস্টিউম-প্রপ্স—সবকিছুর মাধ্যমেই কীভাবে দেশকে তুলে ধরব সে বিষয়েও আমরা সব সময় সচেতন থাকি। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এই আমন্ত্রণ ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসেছিল। তখন করোনার কারণে ফেস্টিভ্যালটা হলো না। আর আমাদেরও যাওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার ক্ষেত্রে দুটি চ্যালেঞ্জ কাজ করে। এক হলো, নিজের দেশের সংস্কৃতিকে খুঁজে বের করা। দুই হলো, সেটিকে ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক দর্শকের উপযোগী করে নিজের কাজকে উপস্থাপন করা। এ বিষয় দুটিকে বিবেচনায় রেখেই আরতি নাচকে বেছে নিয়েছিলাম। আমি বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, আরতি নাচ আমাদের লোকসংস্কৃতির অংশ। তবে এটা পুরোপুরি নাচ না, এর সাথে অ্যাক্রোবেটিক কৌশলও মিশে আছে। আমি এই নাচের নতুন স্টেপ বানানোর জন্য কাজ করতে শুরু করলাম, এটাকে একটা মূলধারায় পরিবেশনযোগ্য নাচের কাঠামো দেবার চেষ্টা করলাম। ভাবলাম, আমাদের মৃত্তিকাসংলগ্ন মানুষের নাচের আঙ্গিকের সঙ্গে যদি আরতি নাচকে ফিউশন করি, তাহলে এই নাচের পরিধি অনেক বেড়ে যাবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্যারেডে রাস্তায় নাচটা পরিবেশন করতে হবে আর নাচের মধ্য দিয়ে দেশের আরতি করব, তাই রবীন্দ্রনাথের ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ গানটি বেছে নিলাম। এই নাচ পরিবেশনের পর আমরা অনেক বেশি প্রশংসিত হয়েছি। নিজেরাও অনেক আনন্দিত ছিলাম।
আজকের পত্রিকা: আপনার শৈশব সম্পর্কে জানতে চাই। ছোটবেলা থেকেই কি নাচের প্রতি আগ্রহী ছিলেন?
পূজা: ছোটবেলা থেকে আমার ছকে বাঁধা জীবন ছিল। নিয়মের মধ্যে যে ধরাবাঁধা জীবন, সেই জীবনের বাইরেও যে সুন্দর একটা জীবন আছে, সেটা আমি প্রথম বুঝতে পারি যখন আমি আমার নেশাকে পেশা হিসেবে বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নিই। নাচ নিয়ে ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাই। আমার আসলে যাওয়ার কথা ছিল জার্মানিতে। পদার্থবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি করার জন্য। কিন্তু তখন আমার শিক্ষক কবির স্যারের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে নাচকে আমি আমার ভবিষ্যৎ হিসেবে বেছে নিলাম। আমার স্যার বলতেন, ‘যে কাজে তোমার আনন্দ আছে, সেটাই যদি পেশা হয়, তাহলে তোমার জীবনটা আনন্দের হবে। তা না হলে একটা অনুশোচনা থেকে যাবে।’
তবে নিজের এই পেশাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করাটা সহজ ছিল না। আমি পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে যেতাম না। কারণ যেখানেই যাই না কেন, আমি নাচ করি বা নিজেকে কোরিওগ্রাফার হিসেবে পরিচয় দিলে সবাই আরও জানতে চাইত নাচের পাশাপাশি আমি আর কী করি। এরপর যখন দেশে-বিদেশে অনেক কাজ করতে শুরু করলাম, পত্র-পত্রিকায় ভালো নিউজ হলো, স্বীকৃতি পেলাম, তখন আবার এই মানুষগুলোই আমার বাবা-মায়ের কাছে জানতে চান, পূজা কেন আজকের অনুষ্ঠানে এল না? এরপর দেখা গেল, আমাদের বাসায় দুটো আমন্ত্রণ কার্ড আসতে লাগল। একটা আমার পরিবারের নামে, আরেকটা আলাদা কার্ড, আমার নামে।
আজকের পত্রিকা: কেমন হতে পারে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
পূজা: আমি কখনো পরিচিত বা বিখ্যাত হওয়ার জন্য কাজ করিনি। আমি আমার কাজটা ভালোবেসেই করেছি। আমার ফোকাস হলো ভালো কাজ করা। মহাভারতের দ্রোণাচার্য যেমন সবাইকে তির-ধনুক হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী দেখতে পাও। একেকজন একেকটা বললেন, কেউ আকাশ, কেউ গাছ, কেউ পাখি দেখেন। কিন্তু অর্জুন বলেছিলেন আমি পাখির চোখ দেখি। সে রকম আমি আমার লক্ষ্যটাই দেখি। বাংলাদেশের নাচের অনেক ভালো একটা ভবিষ্যৎ হবে। আন্তর্জাতিক মূলধারায় বাংলাদেশের নিজস্ব নৃত্যধারাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা আর দেশে নাচের পেশাদার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করাই আমার লক্ষ্য।
আজকের পত্রিকা: দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যালে আপনারা বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই থিয়েটার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
পূজা: আমার দাদু আমার নাম তুরঙ্গমী রাখতে চেয়েছিলেন। কোনো কারণে আমার এই নাম রাখা হয়নি। তুরঙ্গমী নামের অর্থ ‘যে মেয়ে ঘোড়া চালাতে পারে’। অর্থাৎ অশ্বারোহী, ঘোড়সওয়ার। যখন এ ঘটনার কথা শুনেছি, তখন থেকে মনে মনে ভাবলাম, আমি নিজে এই নামে পরিচিত হইনি, কিন্তু বড় হয়ে যে কাজগুলো করব, সেই কাজগুলো তুরঙ্গমী নামে পরিচিত হবে। ২০১৪ সালে তুরঙ্গমীর জন্ম। এটি তরুণদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম। এই মুহূর্তে এই প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে এখানকার নৃত্যশিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরি দেওয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার উৎসবে আমাদের দুটি পরিবেশনা ছিল—একটি ‘পাঁচফোড়ন’, আরেকটি ‘নন্দিনী’। আমরা পাঁচফোড়নের পরিবেশনায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে দেখিয়েছি, যাদের ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশের অর্থনীতি টিকে আছে। যেমন–কৃষক, শ্রমিক, জেলে, মাঝি, মৌয়াল, গার্মেন্টসকর্মী। সব পেশার লোকের সমাবেশ আমাদের এই দেশ। সেটাই পাঁচফোড়নের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আরেকটা পরিবেশনা ছিল, যেটা আমরা প্যারেডে করেছি। সেটার নাম নন্দিনী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে আরতি নৃত্য। আমরা আমাদের দেশমাতৃকাকে নন্দিনীরূপেই দেখানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের সর্বমোট ১০ জনের একটা দল ছিল।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা কেমন মনে হয় আপনার?
পূজা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা আসলে শৌখিন, কিন্তু অপেশাদারদের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে এখান থেকে ভালো কাজ হবে না। দুই-চারজন নিজের মতো করে ভালো কাজ করলেও সামগ্রিকভাবে কোনো লাভ হবে না। নাচ এ দেশে অনেক বড় কাজের ক্ষেত্র হতে পারে। কারণ এ দেশের প্রচুর মানুষ নাচ করে। কিন্তু তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। শুধু নাচতে জানলেই হবে না। নাচের জন্য আলো, সেট, মিউজিকের দরকার হয়। মঞ্চে সেট ব্যবহার করব কি না, সেই সেটের আঙ্গিকটা কেমন হবে, মিউজিকটা কেমন হবে—নাচকে শিল্প হিসেবে তুলে ধরার জন্য এই বিষয়গুলো জানা খুব জরুরি। একজন কোরিওগ্রাফারের এই বিষয়গুলো জানা থাকলে তাঁর কাজ মানসম্পন্ন হবে। আরেকটা বিষয় হলো, এ দেশে নকল করার প্রবণতা অনেক বেশি। এটা যে একটি অপরাধ, সেটা অনেকে বুঝতে চান না। কপিরাইট আইনের সচেতনতা প্রয়োজন। তবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক সম্ভাবনাময়। তাদের যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়, তাহলে নাচের সেক্টরে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। সরকার যদি এ দিকটায় মনোযোগ দেয়, তাহলে ভালো হবে। আর এতে তো আসলে সরকারের লাভ হবে। কারণ দেশে শিল্প-সংস্কৃতির কাজের চর্চা যতই বাড়বে, অপরাধের মাত্রা ততই কমে আসবে। এ ছাড়া এটা একটা লাভজনক খাত হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। তখন সরকারকে আর শেষ বয়সে দুস্থ শিল্পীদের অনুদান দিতে হবে না, বরং শিল্পীরাই আয়কর দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মন্টি বৈষ্ণব।
আজকের পত্রিকা: একজন নারী হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে নাচের মানুষ হিসেবে পরিচিতি তৈরি করা কতটা কঠিন বলে মনে হয়েছে আপনার?
পূজা সেনগুপ্ত: আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে কাজের সুযোগ পাবার একটাই মাপকাঠি, আর তা হলো যোগ্যতা। তবে আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরেকটু জটিল ছিল। কারণ আমি যখন নাচকে পেশা হিসেবে নেবার সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের দেশে নাচের কোনো পেশাদার ক্ষেত্র তৈরি হয়নি। তাই নিজের নাচের চর্চা আর সৃজনশীলতার পাশাপাশি আমাকে আমার নাচের মার্কেটও তৈরি করতে হয়েছে। আমাদের দেশে নাচের পরিধি অনেক ছোট। আবার সংগীতের পরিধি অনেক বড়। কিন্তু আন্তর্জাতিকভাবে আবার নাচের পরিধিটা অনেক বেশি প্রসারিত ও শক্তিশালী। কারণ নাচের ভাষা বিশ্বজনীন। তাই আমি শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক মানের কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমি যখন দেশে কাজ শুরু করি, তখন এখানে নাচের কোনো মার্কেট ছিল না। যে অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করা হতো, সেখানে গান বা অন্য জনপ্রিয় মাধ্যমের শিল্পীদের প্রাধান্য থাকত। হয়তো কোনো শিল্পীর সংগীত সন্ধ্যা হবে, শুরুতে একটা নাচ। গান আমরা শুনি আর নাচ দেখি। নাচ করার সময় যদি পেছনে যন্ত্রপাতি থাকে, সেটা দেখতে ভালো দেখাবে না। সে সময় আয়োজকদের বিষয়টা বোঝানো খুব কঠিন বিষয় ছিল। আরেকটা জিনিস লক্ষ করলাম, নাচের শিল্পীদের সম্মানী অনেক কম। আমি শুরুতেই একটা স্ট্যান্ড নিলাম। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার নাচকে ঠিকমতো তুলে ধরার জন্য যে রকম আয়োজন প্রয়োজন, আয়োজকেরা সেটা নিশ্চিত করতে পারলেই কাজ করব, আর আমি উপযুক্ত বাজেটে কাজ করব। আমি অনেক কাজ ফিরিয়ে দিলাম, কম কাজ করলাম, কিন্তু যে কাজগুলো করলাম সেগুলো ভালো হলো। সবচেয়ে বড় কথা, আমি ‘না’ বলতে শিখলাম। এতে আমার লাভ হলো। দেখা গেল, কিছুদিনের মধ্যেই আমার শর্তেই সবাই আমাকে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কারণ, তত দিনে আসলে আমাদের দর্শক তৈরি হয়ে গিয়েছিল। শিল্পের মানের সঙ্গে আমি কখনোই আপস করিনি। অবস্থান আর সম্মান জোর করে আদায় করা যায় না, অর্জন করে নিতে হয়। কাজের মানের কারণে দেশের বাইরে মূলধারার আয়োজনেও অংশগ্রহণের জন্য সরাসরি আমন্ত্রণ পেলাম। দেশের বাইরে পারফর্ম করার সময় চেষ্টা করেছি বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে। সেখানে আরেকটা বিষয় সমস্যা তৈরি করে। সেটা হলো, বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের নামটা অনেক কম পরিচিত। অনেকে আমাদের ভারতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলতেন। বাংলাদেশের একটা স্বতন্ত্র পরিচিতি তৈরি করা ছিল আমার জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আমি সব সময় আমার কাজে এমন শিল্প উপকরণ আর শৈলী প্রয়োগ করেছি, যা সম্পূর্ণ আমাদের নিজস্ব, যা বাংলাদেশি। তবে লোকসংস্কৃতির এই উপকরণগুলো তো তৈরি থাকে না, খুঁজে নিতে হয়, বারবার খুঁজতে হয়—এটাই রিসার্চ। আমাকেও দেশের মূল সংস্কৃতির বিষয়গুলো খুঁজে খুঁজে বের করতে হয়েছে। আমার মূল বিষয়টা ছিল বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির রূপ তুলে ধরা। আসলে আমি একজন সামান্য ফেরিওয়ালা, আমার দেশের সংস্কৃতি নিয়ে সারা বিশ্বে ফেরি করছি।
আজকের পত্রিকা: সৃষ্টিশীল ভুবনে আমাদের নারীদের অবস্থান তৈরিতে সমস্যা আছে কি না? আপনার কী মনে হয়?
পূজা: প্রত্যেক মানুষের মধ্যে শক্তি আর সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে। প্রয়োজন সেটাকে জাগিয়ে তোলা। মানুষের ভেতরে লুকিয়ে থাকা শক্তিটা কিন্তু অনেক বড়। সেই শক্তিটাকে সবাই আবিষ্কার করতে পারেন না। যাঁরা পারেন, তাঁরা কোনো না কোনাভাবে সফল হন। এ বিষয়ে আমাদের দেশের নারীদের বলতে চাই, প্রতিবাদ করতে জানতে হবে। অন্যায় মুখ বুঝে সহ্য না করে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত। প্রতিবাদের মাধ্যমেই প্রতিকার আসবে।
আজকের পত্রিকা: দক্ষিণ কোরিয়ায় নিজের দেশের সংস্কৃতিকে উপস্থাপনের অনুভূতি কেমন মনে হচ্ছে? উৎসবে আরতি নাচের আইডিয়াটা কীভাবে এল?
পূজা: দেশের বাইরে যখন নিজেদের কোনো পারফরম্যান্স বা পরিবেশনা নিয়ে যাই, তখন আমাদের বিবেচনায় থাকে কীভাবে দেশের সংস্কৃতিকে সেই দেশের মাটিতে তুলে ধরব। এ ক্ষেত্রে শুধু পারফরম্যান্সের সময় নয়, আমাদের কথাবার্তায়, চলাফেরায়, পোশাকে, কস্টিউম-প্রপ্স—সবকিছুর মাধ্যমেই কীভাবে দেশকে তুলে ধরব সে বিষয়েও আমরা সব সময় সচেতন থাকি। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এই আমন্ত্রণ ২০১৯ সালের শেষের দিকে এসেছিল। তখন করোনার কারণে ফেস্টিভ্যালটা হলো না। আর আমাদেরও যাওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজ করার ক্ষেত্রে দুটি চ্যালেঞ্জ কাজ করে। এক হলো, নিজের দেশের সংস্কৃতিকে খুঁজে বের করা। দুই হলো, সেটিকে ঠিক রেখে আন্তর্জাতিক দর্শকের উপযোগী করে নিজের কাজকে উপস্থাপন করা। এ বিষয় দুটিকে বিবেচনায় রেখেই আরতি নাচকে বেছে নিয়েছিলাম। আমি বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, আরতি নাচ আমাদের লোকসংস্কৃতির অংশ। তবে এটা পুরোপুরি নাচ না, এর সাথে অ্যাক্রোবেটিক কৌশলও মিশে আছে। আমি এই নাচের নতুন স্টেপ বানানোর জন্য কাজ করতে শুরু করলাম, এটাকে একটা মূলধারায় পরিবেশনযোগ্য নাচের কাঠামো দেবার চেষ্টা করলাম। ভাবলাম, আমাদের মৃত্তিকাসংলগ্ন মানুষের নাচের আঙ্গিকের সঙ্গে যদি আরতি নাচকে ফিউশন করি, তাহলে এই নাচের পরিধি অনেক বেড়ে যাবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্যারেডে রাস্তায় নাচটা পরিবেশন করতে হবে আর নাচের মধ্য দিয়ে দেশের আরতি করব, তাই রবীন্দ্রনাথের ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ গানটি বেছে নিলাম। এই নাচ পরিবেশনের পর আমরা অনেক বেশি প্রশংসিত হয়েছি। নিজেরাও অনেক আনন্দিত ছিলাম।
আজকের পত্রিকা: আপনার শৈশব সম্পর্কে জানতে চাই। ছোটবেলা থেকেই কি নাচের প্রতি আগ্রহী ছিলেন?
পূজা: ছোটবেলা থেকে আমার ছকে বাঁধা জীবন ছিল। নিয়মের মধ্যে যে ধরাবাঁধা জীবন, সেই জীবনের বাইরেও যে সুন্দর একটা জীবন আছে, সেটা আমি প্রথম বুঝতে পারি যখন আমি আমার নেশাকে পেশা হিসেবে বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নিই। নাচ নিয়ে ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাই। আমার আসলে যাওয়ার কথা ছিল জার্মানিতে। পদার্থবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি করার জন্য। কিন্তু তখন আমার শিক্ষক কবির স্যারের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে নাচকে আমি আমার ভবিষ্যৎ হিসেবে বেছে নিলাম। আমার স্যার বলতেন, ‘যে কাজে তোমার আনন্দ আছে, সেটাই যদি পেশা হয়, তাহলে তোমার জীবনটা আনন্দের হবে। তা না হলে একটা অনুশোচনা থেকে যাবে।’
তবে নিজের এই পেশাকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করাটা সহজ ছিল না। আমি পারিবারিক কোনো অনুষ্ঠানে যেতাম না। কারণ যেখানেই যাই না কেন, আমি নাচ করি বা নিজেকে কোরিওগ্রাফার হিসেবে পরিচয় দিলে সবাই আরও জানতে চাইত নাচের পাশাপাশি আমি আর কী করি। এরপর যখন দেশে-বিদেশে অনেক কাজ করতে শুরু করলাম, পত্র-পত্রিকায় ভালো নিউজ হলো, স্বীকৃতি পেলাম, তখন আবার এই মানুষগুলোই আমার বাবা-মায়ের কাছে জানতে চান, পূজা কেন আজকের অনুষ্ঠানে এল না? এরপর দেখা গেল, আমাদের বাসায় দুটো আমন্ত্রণ কার্ড আসতে লাগল। একটা আমার পরিবারের নামে, আরেকটা আলাদা কার্ড, আমার নামে।
আজকের পত্রিকা: কেমন হতে পারে আপনাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
পূজা: আমি কখনো পরিচিত বা বিখ্যাত হওয়ার জন্য কাজ করিনি। আমি আমার কাজটা ভালোবেসেই করেছি। আমার ফোকাস হলো ভালো কাজ করা। মহাভারতের দ্রোণাচার্য যেমন সবাইকে তির-ধনুক হাতে দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী দেখতে পাও। একেকজন একেকটা বললেন, কেউ আকাশ, কেউ গাছ, কেউ পাখি দেখেন। কিন্তু অর্জুন বলেছিলেন আমি পাখির চোখ দেখি। সে রকম আমি আমার লক্ষ্যটাই দেখি। বাংলাদেশের নাচের অনেক ভালো একটা ভবিষ্যৎ হবে। আন্তর্জাতিক মূলধারায় বাংলাদেশের নিজস্ব নৃত্যধারাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা আর দেশে নাচের পেশাদার ক্ষেত্রকে আরও বিস্তৃত করাই আমার লক্ষ্য।
আজকের পত্রিকা: দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যালে আপনারা বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই থিয়েটার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন।
পূজা: আমার দাদু আমার নাম তুরঙ্গমী রাখতে চেয়েছিলেন। কোনো কারণে আমার এই নাম রাখা হয়নি। তুরঙ্গমী নামের অর্থ ‘যে মেয়ে ঘোড়া চালাতে পারে’। অর্থাৎ অশ্বারোহী, ঘোড়সওয়ার। যখন এ ঘটনার কথা শুনেছি, তখন থেকে মনে মনে ভাবলাম, আমি নিজে এই নামে পরিচিত হইনি, কিন্তু বড় হয়ে যে কাজগুলো করব, সেই কাজগুলো তুরঙ্গমী নামে পরিচিত হবে। ২০১৪ সালে তুরঙ্গমীর জন্ম। এটি তরুণদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম। এই মুহূর্তে এই প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে এখানকার নৃত্যশিল্পী ও কলাকুশলীদের চাকরি দেওয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার উৎসবে আমাদের দুটি পরিবেশনা ছিল—একটি ‘পাঁচফোড়ন’, আরেকটি ‘নন্দিনী’। আমরা পাঁচফোড়নের পরিবেশনায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে দেখিয়েছি, যাদের ওপর ভিত্তি করে আমাদের দেশের অর্থনীতি টিকে আছে। যেমন–কৃষক, শ্রমিক, জেলে, মাঝি, মৌয়াল, গার্মেন্টসকর্মী। সব পেশার লোকের সমাবেশ আমাদের এই দেশ। সেটাই পাঁচফোড়নের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। আরেকটা পরিবেশনা ছিল, যেটা আমরা প্যারেডে করেছি। সেটার নাম নন্দিনী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গানের সঙ্গে আরতি নৃত্য। আমরা আমাদের দেশমাতৃকাকে নন্দিনীরূপেই দেখানোর চেষ্টা করেছি। আমাদের সর্বমোট ১০ জনের একটা দল ছিল।
আজকের পত্রিকা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা কেমন মনে হয় আপনার?
পূজা: আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনটা আসলে শৌখিন, কিন্তু অপেশাদারদের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে। যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে এখান থেকে ভালো কাজ হবে না। দুই-চারজন নিজের মতো করে ভালো কাজ করলেও সামগ্রিকভাবে কোনো লাভ হবে না। নাচ এ দেশে অনেক বড় কাজের ক্ষেত্র হতে পারে। কারণ এ দেশের প্রচুর মানুষ নাচ করে। কিন্তু তাদের সঠিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। শুধু নাচতে জানলেই হবে না। নাচের জন্য আলো, সেট, মিউজিকের দরকার হয়। মঞ্চে সেট ব্যবহার করব কি না, সেই সেটের আঙ্গিকটা কেমন হবে, মিউজিকটা কেমন হবে—নাচকে শিল্প হিসেবে তুলে ধরার জন্য এই বিষয়গুলো জানা খুব জরুরি। একজন কোরিওগ্রাফারের এই বিষয়গুলো জানা থাকলে তাঁর কাজ মানসম্পন্ন হবে। আরেকটা বিষয় হলো, এ দেশে নকল করার প্রবণতা অনেক বেশি। এটা যে একটি অপরাধ, সেটা অনেকে বুঝতে চান না। কপিরাইট আইনের সচেতনতা প্রয়োজন। তবে আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক সম্ভাবনাময়। তাদের যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া যায়, তাহলে নাচের সেক্টরে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। সরকার যদি এ দিকটায় মনোযোগ দেয়, তাহলে ভালো হবে। আর এতে তো আসলে সরকারের লাভ হবে। কারণ দেশে শিল্প-সংস্কৃতির কাজের চর্চা যতই বাড়বে, অপরাধের মাত্রা ততই কমে আসবে। এ ছাড়া এটা একটা লাভজনক খাত হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। তখন সরকারকে আর শেষ বয়সে দুস্থ শিল্পীদের অনুদান দিতে হবে না, বরং শিল্পীরাই আয়কর দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে পারবেন।

অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।
৪ ঘণ্টা আগে
‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।...
৯ ঘণ্টা আগে
ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে।
১৩ ঘণ্টা আগে
ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে।
১৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ধনেপাতা এমন এক ভেষজ, যা নিয়ে মতভেদ চরমে। কেউ একে ভীষণ ভালোবাসেন; আবার কারও কাছে এটি অত্যন্ত অপছন্দের।
অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।
‘ইন দ্য কিচেন উইথ শেফ বে’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রুক বেভস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪ থেকে ১৪ শতাংশ মানুষের দেহে এই জিনগত বৈচিত্র্য আছে; যার ফলে ধনেপাতার স্বাদ তাঁদের কাছে সাবানের মতো লাগে। অন্যদের কাছে এটি একদমই তাজা ও সুগন্ধি ভেষজ।
তবে ধনেপাতা খাওয়ার কিছু অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে—যে ব্যথা অটোইমিউন, স্নায়ুবিক অবক্ষয়জনিত, পরিপাকতন্ত্রের বা হৃদ্রোগের কারণ হতে পারে, এমনকি কিছু ক্যানসারের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এ ছাড়া এই ভেষজ উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি ঘটে প্রদাহজনিত রোগের কারণে।
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই উদ্ভিদ—যা ধনেবীজও উৎপাদন করে—তাতে এমন কিছু যৌগ রয়েছে, যা গবেষকদের মতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
২০২৩ সালে ইতালির গবেষকেরা বলেন, ধনে নির্যাসের জৈব কার্যকারিতার কারণে ভেষজটিকে স্থূলতা, মেটাবলিক সিনড্রোম ও ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে মূল্যবান কার্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: দি ইনডিপেনডেন্ট

ধনেপাতা এমন এক ভেষজ, যা নিয়ে মতভেদ চরমে। কেউ একে ভীষণ ভালোবাসেন; আবার কারও কাছে এটি অত্যন্ত অপছন্দের।
অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।
‘ইন দ্য কিচেন উইথ শেফ বে’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ব্রুক বেভস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪ থেকে ১৪ শতাংশ মানুষের দেহে এই জিনগত বৈচিত্র্য আছে; যার ফলে ধনেপাতার স্বাদ তাঁদের কাছে সাবানের মতো লাগে। অন্যদের কাছে এটি একদমই তাজা ও সুগন্ধি ভেষজ।
তবে ধনেপাতা খাওয়ার কিছু অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে—যে ব্যথা অটোইমিউন, স্নায়ুবিক অবক্ষয়জনিত, পরিপাকতন্ত্রের বা হৃদ্রোগের কারণ হতে পারে, এমনকি কিছু ক্যানসারের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এ ছাড়া এই ভেষজ উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে।
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী মোট মৃত্যুর অর্ধেকের বেশি ঘটে প্রদাহজনিত রোগের কারণে।
ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই উদ্ভিদ—যা ধনেবীজও উৎপাদন করে—তাতে এমন কিছু যৌগ রয়েছে, যা গবেষকদের মতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
২০২৩ সালে ইতালির গবেষকেরা বলেন, ধনে নির্যাসের জৈব কার্যকারিতার কারণে ভেষজটিকে স্থূলতা, মেটাবলিক সিনড্রোম ও ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে মূল্যবান কার্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: দি ইনডিপেনডেন্ট

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত
০৩ আগস্ট ২০২২
‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।...
৯ ঘণ্টা আগে
ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে।
১৩ ঘণ্টা আগে
ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে।
১৪ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক, ঢাকা

‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।
চুয়ান্নতম জন্মদিনে টাবু পার করছেন ভারতীয় সিনেমার জগতে তাঁর ৩৪ বছরের কর্মজীবন। এই দীর্ঘ কর্মময় জীবনে তাঁকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। দক্ষ অভিনয়, অভিব্যক্তি, কণ্ঠস্বর আর ব্যক্তিত্ব তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। পর্দায় সহজ-সরল উপস্থিতি আসলে তাঁর সহজ-সরল জীবনযাপনেরই যেন প্রতিচ্ছবি। তাই বলে তিনি কি নিজের যত্নে উদাসীন? তা নয়; বরং তিনি নিজের ত্বক, চুলসহ শরীরের যত্নে বেশ সংবেদনশীল।
সহজে বিশ্বাসী
হ্যাঁ, টাবু জটিল ধরনের ত্বক পরিচর্যায় বিশ্বাসী নন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি সহজ ও ধারাবাহিকভাবে রুটিন মেনে চলার কথা জানিয়েছেন বহুবার। তাঁর সকালের রুটিনে সাধারণত ক্লিনজিং ও ময়শ্চারাইজিং এবং সান প্রোটেকশন বা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। এগুলোর কোনো ধাপ তিনি কখনোই বাদ দেন না।
দীর্ঘদিনের অভ্যাস
গোসলের আগে সি সল্ট ও পেট্রোলিয়াম জেলির মিশ্রণ দিয়ে এক্সফোলিয়েট করা তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তিনি মনে করেন, এটি তাঁর ত্বক নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তিনি হালকা, নন-গ্রিজি ময়শ্চারাইজার পছন্দ করেন এবং চরিত্রের প্রয়োজনে না হলে ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলেন।

খাদ্য, পানি ও বিশ্রাম
ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। তিনি জ্বালানি হিসেবে শরীর কোন ধরনের খাদ্য-পানীয় দিচ্ছেন, সেদিকেও মনোযোগ দেন। টাবু জানিয়েছেন, তিনি পর্যাপ্ত পানি পান করেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলেন এবং তাঁর খাদ্যতালিকায় থাকে সুষম খাবারের উপস্থিতি। তাতে থাকে তাজা ফল, সবজি ও ঘরে তৈরি পুষ্টিকর সাধারণ ও সহজ খাবার।
টাবু বিশ্বাস করেন, তিনি কেমন বোধ করছেন এবং কেমন দেখাচ্ছেন, এ দুয়ের ওপর ঘুমের বড় ভূমিকা আছে। দীর্ঘ সময় কাজ করা এবং রাতের শুটিং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই সুযোগ পেলেই তিনি বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করেন।
সেই একটি দামি ক্রিম
টাবু একবার কোনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নিজের মেকআপ আর্টিস্টের পরামর্শে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফেস ক্রিম কিনেছিলেন। পরে তিনি সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসাহাসি করেন। তিনি সে ধরনের পণ্য আর কিনবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। ‘ফিল্ম কম্প্যানিয়ন’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটি একবার কিনেছিলাম এবং সেটাই শেষ।’ এসব দেখে বোঝা যায়, আর যা-ই হোক, তিনি ট্রেন্ড বা দামের ট্যাগ দেখে আবেগতাড়িত হন না। তাঁর জন্য সৌন্দর্য সব সময়ই স্বাচ্ছন্দ্য, ধারাবাহিকতা এবং একটি এমন রুটিনের বিষয়, যা বিলাসিতার চেয়ে অনেক বেশি প্রাকৃতিক।

ন্যূনতম মেকআপ, সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য
সাধারণত পাবলিক ইভেন্টেও টাবুকে কখনো ভারী মেকআপে দেখা যায় না। তিনি নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। এই ন্যূনতম মেকআপের জন্য তাঁর ত্বক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারে। তিনি যেমন মিতভাষী ও আত্মবিশ্বাসী, তাঁর মেকআপও তেমনি মৃদু কিন্তু পূর্ণ।
তিনি দীর্ঘ শুটিংয়ের পর মেকআপ ঠিকঠাকমতো তুলে ফেলার বিষয়েও বিশেষ যত্নবান, যাতে তাঁর ত্বক সারা দিনের ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারের সময় পায়।
বয়সের সঙ্গে বদলে যাওয়া
টাবুকে অনন্য করে তুলেছে যে বিষয়টি, তা হলো তিনি কখনো বয়স লুকানোর চেষ্টা করেন না। তিনি এটিকে তাঁর জীবনের যাত্রাপথের একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মেনে নেন এবং এটিই সম্ভবত তাঁর সবচেয়ে বড় রহস্য। কোনো নির্দিষ্ট চেহারা বজায় রাখার চাপ নেই বা তার চেয়ে কম দেখানোরও কোনো তাড়না নেই; বরং তিনি সুস্থ বোধ করা, সক্রিয় থাকা এবং অনায়াসে জীবনযাপনের ওপর অনেক বেশি মনোযোগী।
সে জন্যই হয়তো তিনি বলতে পারেন, ‘আমি শুধু সেই গল্প বলতে চাই, যা আমাকে অনুভব করতে শেখায়।’

‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।
চুয়ান্নতম জন্মদিনে টাবু পার করছেন ভারতীয় সিনেমার জগতে তাঁর ৩৪ বছরের কর্মজীবন। এই দীর্ঘ কর্মময় জীবনে তাঁকে গ্ল্যামারের ওপর নির্ভর করতে হয়নি। দক্ষ অভিনয়, অভিব্যক্তি, কণ্ঠস্বর আর ব্যক্তিত্ব তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। পর্দায় সহজ-সরল উপস্থিতি আসলে তাঁর সহজ-সরল জীবনযাপনেরই যেন প্রতিচ্ছবি। তাই বলে তিনি কি নিজের যত্নে উদাসীন? তা নয়; বরং তিনি নিজের ত্বক, চুলসহ শরীরের যত্নে বেশ সংবেদনশীল।
সহজে বিশ্বাসী
হ্যাঁ, টাবু জটিল ধরনের ত্বক পরিচর্যায় বিশ্বাসী নন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি সহজ ও ধারাবাহিকভাবে রুটিন মেনে চলার কথা জানিয়েছেন বহুবার। তাঁর সকালের রুটিনে সাধারণত ক্লিনজিং ও ময়শ্চারাইজিং এবং সান প্রোটেকশন বা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষার বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকে। এগুলোর কোনো ধাপ তিনি কখনোই বাদ দেন না।
দীর্ঘদিনের অভ্যাস
গোসলের আগে সি সল্ট ও পেট্রোলিয়াম জেলির মিশ্রণ দিয়ে এক্সফোলিয়েট করা তাঁর দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তিনি মনে করেন, এটি তাঁর ত্বক নরম ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। তিনি হালকা, নন-গ্রিজি ময়শ্চারাইজার পছন্দ করেন এবং চরিত্রের প্রয়োজনে না হলে ভারী মেকআপ এড়িয়ে চলেন।

খাদ্য, পানি ও বিশ্রাম
ত্বকের যত্ন শুধু পণ্য ব্যবহারের বিষয় নয় বলে মনে করেন টাবু। তিনি জ্বালানি হিসেবে শরীর কোন ধরনের খাদ্য-পানীয় দিচ্ছেন, সেদিকেও মনোযোগ দেন। টাবু জানিয়েছেন, তিনি পর্যাপ্ত পানি পান করেন, প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলেন এবং তাঁর খাদ্যতালিকায় থাকে সুষম খাবারের উপস্থিতি। তাতে থাকে তাজা ফল, সবজি ও ঘরে তৈরি পুষ্টিকর সাধারণ ও সহজ খাবার।
টাবু বিশ্বাস করেন, তিনি কেমন বোধ করছেন এবং কেমন দেখাচ্ছেন, এ দুয়ের ওপর ঘুমের বড় ভূমিকা আছে। দীর্ঘ সময় কাজ করা এবং রাতের শুটিং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, তাই সুযোগ পেলেই তিনি বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করেন।
সেই একটি দামি ক্রিম
টাবু একবার কোনো সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নিজের মেকআপ আর্টিস্টের পরামর্শে তিনি প্রায় ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফেস ক্রিম কিনেছিলেন। পরে তিনি সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসাহাসি করেন। তিনি সে ধরনের পণ্য আর কিনবেন না বলেও জানিয়েছিলেন। ‘ফিল্ম কম্প্যানিয়ন’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটি একবার কিনেছিলাম এবং সেটাই শেষ।’ এসব দেখে বোঝা যায়, আর যা-ই হোক, তিনি ট্রেন্ড বা দামের ট্যাগ দেখে আবেগতাড়িত হন না। তাঁর জন্য সৌন্দর্য সব সময়ই স্বাচ্ছন্দ্য, ধারাবাহিকতা এবং একটি এমন রুটিনের বিষয়, যা বিলাসিতার চেয়ে অনেক বেশি প্রাকৃতিক।

ন্যূনতম মেকআপ, সর্বোচ্চ স্বাচ্ছন্দ্য
সাধারণত পাবলিক ইভেন্টেও টাবুকে কখনো ভারী মেকআপে দেখা যায় না। তিনি নিউট্রাল টোন, হালকা আইশ্যাডো এবং প্রাকৃতিক লুক পছন্দ করেন। এই ন্যূনতম মেকআপের জন্য তাঁর ত্বক স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারে। তিনি যেমন মিতভাষী ও আত্মবিশ্বাসী, তাঁর মেকআপও তেমনি মৃদু কিন্তু পূর্ণ।
তিনি দীর্ঘ শুটিংয়ের পর মেকআপ ঠিকঠাকমতো তুলে ফেলার বিষয়েও বিশেষ যত্নবান, যাতে তাঁর ত্বক সারা দিনের ক্ষয়ক্ষতি পুনরুদ্ধারের সময় পায়।
বয়সের সঙ্গে বদলে যাওয়া
টাবুকে অনন্য করে তুলেছে যে বিষয়টি, তা হলো তিনি কখনো বয়স লুকানোর চেষ্টা করেন না। তিনি এটিকে তাঁর জীবনের যাত্রাপথের একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে মেনে নেন এবং এটিই সম্ভবত তাঁর সবচেয়ে বড় রহস্য। কোনো নির্দিষ্ট চেহারা বজায় রাখার চাপ নেই বা তার চেয়ে কম দেখানোরও কোনো তাড়না নেই; বরং তিনি সুস্থ বোধ করা, সক্রিয় থাকা এবং অনায়াসে জীবনযাপনের ওপর অনেক বেশি মনোযোগী।
সে জন্যই হয়তো তিনি বলতে পারেন, ‘আমি শুধু সেই গল্প বলতে চাই, যা আমাকে অনুভব করতে শেখায়।’

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত
০৩ আগস্ট ২০২২
অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।
৪ ঘণ্টা আগে
ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে।
১৩ ঘণ্টা আগে
ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে।
১৪ ঘণ্টা আগেমিঠু দাশ, লামা, বান্দরবান

ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে। সূর্যের আলো ফোটার আগে বোঝার উপায় নেই, এটি কোন জনপদ। সূর্যোদয়ের পর হেসে ওঠে সব। প্রকৃতি যেন তার সবটুকু রূপ দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে বান্দরবানের লামাকে। সারি সারি পাহাড় আর সবুজ বনানীবেষ্টিত এলাকায় আপনার আগমনে যোগ হবে ভিন্ন মাত্রা। পাহাড় থেকে সূর্যাস্ত না দেখলে প্রকৃতির বর্ণনাতীত সৌন্দর্যের অনেকটাই অদেখা থেকে যায়। মেঘ আর কুয়াশাঢাকা পাহাড়ি পথে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার রোমাঞ্চকর অনুভূতি ডাকছে আপনাকে।
ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস অন্যান্য জেলার চেয়ে তিন পার্বত্য জেলা সম্পূর্ণ আলাদা। বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড় থেকে দেখা যাবে লামা শহর, পাশের সবুজ সুন্দর প্রকৃতি এবং পশ্চিমে তাকালে উপকূলীয় সবুজ বনানীর পর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুতুবদিয়া-মহেশখালী দ্বীপের বাইরে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জাহাজ এবং বোটগুলো যেন পাহাড়ি নদীর পানসি নৌকা! লামার বুকে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী যেন স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে আপনাকে। মাঝেমধ্যে উঁচু উঁচু পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেয় সূর্যের আলো। প্রকৃতির খুব কাছাকাছি আসার, বুকভরে নির্মল বাতাস নেওয়ার আর স্বর্গীয় দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ানোর একমাত্র জায়গা লামা। এখানে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। অরণ্য রানিখ্যাত লামার মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকায় আবিষ্কৃত হয়েছে শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র। দুর্গম সব পাহাড় আর বুনো প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অনেক স্থান লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে।
মিরিঞ্জা
এই জায়গা এরই মধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। এখানে আছে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স। মিরিঞ্জা নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক পর্যটনকেন্দ্র। পাহাড়টি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু। মিরিঞ্জা পর্যটনকেন্দ্র থেকে নয়ন ভরে সাগর, পাহাড়, আকাশ এবং হরেক রকম পাখি দেখা যায়। এর ওপর রয়েছে নীল আকাশে মেঘের বিচরণ। প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গা, দৃষ্টিনন্দন টাইটানিক ভিউ পয়েন্ট, ওয়াকওয়ে ও মিনি শিশুপার্ক। মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, প্রায় ৩৩ একর পাহাড়ি ভূমি ঘিরে।
সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি
মাতামুহুরী নদীর দুই তীরে সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি। চোখজুড়ানো সবুজ স্নিগ্ধ বনানীঘেরা এ দুই পাহাড়ের বুক চিরে সর্পিলাকারে বহমান মাতামুহুরী নদী। সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড়ের উঁচু চূড়ার মনোরম দৃশ্যের সমারোহ দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের হৃদয় মোহিত করেছে। এ দুই পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে মনপ্রাণ ফুরফুরে হয়ে যাবে।
পাহাড়ে জুমিয়ারা বাগান পাহারা দেওয়া এবং ফসল সংগ্রহের জন্য জুমের খেতে বাঁশ ও ছন দিয়ে জুমঘর তৈরি করে থাকে। এ জুমঘরকে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ‘প্রবাস্যা ঘর’, ম্রো ভাষায় ‘ঐবক’, মারমা ভাষায় ‘বাও’ এবং ত্রিপুরা ভাষায় ‘হুৎমাইঞা’ বলে। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এ জুমঘর বেশ জনপ্রিয় এখন। ইতিমধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে এই জুমঘর। মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া-দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকার নয়নাভিরাম পর্যটন স্থানগুলো ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে চলেছে। লামায় পর্যটকদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি পাহাড়ি সংস্কৃতি ও জুম চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটার সুযোগ অনেক বেশি।
পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী—এই তিন শ্রেণির পর্যটকের সেরা গন্তব্য মেঘে আবৃত পাহাড়, সবুজ উপত্যকার মায়াবী জনপদ লামা।
যেভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ, ফকিরাপুল অথবা সায়েদাবাদ থেকে হানিফ কিংবা শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস বাসে সরাসরি লামায় যাওয়া যায়। এ ছাড়া কক্সবাজারগামী যেকোনো বাসে চকরিয়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, জিপগাড়ি বা চাঁদের গাড়ি কিংবা বাসযোগে মিরিঞ্জা বাজারে নেমে ১০ মিনিট হেঁটে মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়া যায়। ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চকরিয়া স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে চকরিয়া বাস টার্মিনালে গিয়ে অন্য পরিবহনে মিরিঞ্জায় যাওয়া যাবে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, তারপর লামায় যেতে হবে।
ভ্রমণকালীন সতর্কতা

ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে। সূর্যের আলো ফোটার আগে বোঝার উপায় নেই, এটি কোন জনপদ। সূর্যোদয়ের পর হেসে ওঠে সব। প্রকৃতি যেন তার সবটুকু রূপ দিয়ে সাজিয়ে তুলেছে বান্দরবানের লামাকে। সারি সারি পাহাড় আর সবুজ বনানীবেষ্টিত এলাকায় আপনার আগমনে যোগ হবে ভিন্ন মাত্রা। পাহাড় থেকে সূর্যাস্ত না দেখলে প্রকৃতির বর্ণনাতীত সৌন্দর্যের অনেকটাই অদেখা থেকে যায়। মেঘ আর কুয়াশাঢাকা পাহাড়ি পথে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার রোমাঞ্চকর অনুভূতি ডাকছে আপনাকে।
ভাষা, সংস্কৃতি, ধর্মবিশ্বাস অন্যান্য জেলার চেয়ে তিন পার্বত্য জেলা সম্পূর্ণ আলাদা। বান্দরবানের লামার মিরিঞ্জা পাহাড় থেকে দেখা যাবে লামা শহর, পাশের সবুজ সুন্দর প্রকৃতি এবং পশ্চিমে তাকালে উপকূলীয় সবুজ বনানীর পর মাতারবাড়ী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, কুতুবদিয়া-মহেশখালী দ্বীপের বাইরে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জাহাজ এবং বোটগুলো যেন পাহাড়ি নদীর পানসি নৌকা! লামার বুকে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদী যেন স্বপ্নের জগতে নিয়ে যাবে আপনাকে। মাঝেমধ্যে উঁচু উঁচু পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দেয় সূর্যের আলো। প্রকৃতির খুব কাছাকাছি আসার, বুকভরে নির্মল বাতাস নেওয়ার আর স্বর্গীয় দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ানোর একমাত্র জায়গা লামা। এখানে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। অরণ্য রানিখ্যাত লামার মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকায় আবিষ্কৃত হয়েছে শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র। দুর্গম সব পাহাড় আর বুনো প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অনেক স্থান লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে গেছে।
মিরিঞ্জা
এই জায়গা এরই মধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। এখানে আছে উপজেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্স। মিরিঞ্জা নৈসর্গিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক পর্যটনকেন্দ্র। পাহাড়টি ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬০০ ফুট উঁচু। মিরিঞ্জা পর্যটনকেন্দ্র থেকে নয়ন ভরে সাগর, পাহাড়, আকাশ এবং হরেক রকম পাখি দেখা যায়। এর ওপর রয়েছে নীল আকাশে মেঘের বিচরণ। প্রতিনিয়ত মেঘ ছুঁয়ে যায় মিরিঞ্জা পাহাড়ের গা, দৃষ্টিনন্দন টাইটানিক ভিউ পয়েন্ট, ওয়াকওয়ে ও মিনি শিশুপার্ক। মিরিঞ্জা পর্যটন কমপ্লেক্সের গোড়াপত্তন হয়েছিল ২০০৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, প্রায় ৩৩ একর পাহাড়ি ভূমি ঘিরে।
সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি
মাতামুহুরী নদীর দুই তীরে সুখীয়া ও দুঃখীয়া ভ্যালি। চোখজুড়ানো সবুজ স্নিগ্ধ বনানীঘেরা এ দুই পাহাড়ের বুক চিরে সর্পিলাকারে বহমান মাতামুহুরী নদী। সুখীয়া ও দুঃখীয়া পাহাড়ের উঁচু চূড়ার মনোরম দৃশ্যের সমারোহ দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের হৃদয় মোহিত করেছে। এ দুই পাহাড়ের চূড়ায় উঠলে মনপ্রাণ ফুরফুরে হয়ে যাবে।
পাহাড়ে জুমিয়ারা বাগান পাহারা দেওয়া এবং ফসল সংগ্রহের জন্য জুমের খেতে বাঁশ ও ছন দিয়ে জুমঘর তৈরি করে থাকে। এ জুমঘরকে তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় ‘প্রবাস্যা ঘর’, ম্রো ভাষায় ‘ঐবক’, মারমা ভাষায় ‘বাও’ এবং ত্রিপুরা ভাষায় ‘হুৎমাইঞা’ বলে। প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এ জুমঘর বেশ জনপ্রিয় এখন। ইতিমধ্যে দেশজুড়ে পর্যটকদের মধ্যে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে এই জুমঘর। মিরিঞ্জা পাহাড়, সুখীয়া-দুঃখীয়া পাহাড় এবং আশপাশের এলাকার নয়নাভিরাম পর্যটন স্থানগুলো ভ্রমণপিয়াসি পর্যটকদের প্রতিনিয়ত আকৃষ্ট করে চলেছে। লামায় পর্যটকদের তাত্ত্বিক জ্ঞানের পাশাপাশি পাহাড়ি সংস্কৃতি ও জুম চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় ঘটার সুযোগ অনেক বেশি।
পর্বত, অরণ্য ও সমুদ্রপ্রেমী—এই তিন শ্রেণির পর্যটকের সেরা গন্তব্য মেঘে আবৃত পাহাড়, সবুজ উপত্যকার মায়াবী জনপদ লামা।
যেভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ, ফকিরাপুল অথবা সায়েদাবাদ থেকে হানিফ কিংবা শ্যামলী এন আর ট্রাভেলস বাসে সরাসরি লামায় যাওয়া যায়। এ ছাড়া কক্সবাজারগামী যেকোনো বাসে চকরিয়া বাস টার্মিনাল পর্যন্ত গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, জিপগাড়ি বা চাঁদের গাড়ি কিংবা বাসযোগে মিরিঞ্জা বাজারে নেমে ১০ মিনিট হেঁটে মিরিঞ্জা ভ্যালি যাওয়া যায়। ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চকরিয়া স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে। সেখান থেকে চকরিয়া বাস টার্মিনালে গিয়ে অন্য পরিবহনে মিরিঞ্জায় যাওয়া যাবে। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রাম, তারপর লামায় যেতে হবে।
ভ্রমণকালীন সতর্কতা

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত
০৩ আগস্ট ২০২২
অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।
৪ ঘণ্টা আগে
‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।...
৯ ঘণ্টা আগে
ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে।
১৪ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে। আবার অতিরিক্ত পর্যটনের বিরুদ্ধে স্পেনের রাস্তায় বিক্ষোভ পর্যন্ত দেখা গেছে। ইউরোপ ছাড়িয়ে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে এশিয়ার পর্যটনশিল্পও।
পর্যটন বিশেষজ্ঞ গ্যারি বাওয়ারম্যান বলছেন, বালি, কিয়োটো এবং ফুকেট পর্যটকদের নিয়ে সমস্যার মুখে পড়েছে। আসলে ভ্রমণের জায়গা কম, এমনটা নয়। সমস্যা হলো, একই সময় একই জায়গায় অতিরিক্ত পর্যটক জড়ো হওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক শ্যানন ক্লার্ক বলেন, ‘আমরা ভোর ৫টায় কিয়োটোর বিখ্যাত ফুশিমি ইনারি মন্দিরে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পথে ভিড় কম ছিল। কিন্তু ফেরার সময় ঢল নামল পর্যটকের। হাঁটতেও খুব কষ্ট হচ্ছিল।’
মহামারির পর ভ্রমণের ঢল
মহামারির পর অনেকের ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে। বিমান ভাড়া মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে হওয়ায় এশিয়ার পর্যটন আবার চাঙা হয়ে উঠেছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় পর্যটক বেড়েছে ২০ শতাংশ। ভিয়েতনামে বিভিন্ন শহরে এখন মানুষ গিজগিজ করছে। থাইল্যান্ডে সামান্য পর্যটক কমলেও ফুকেটের জনপ্রিয় জায়গাগুলোয় ভিড় কমছে না। যানজট, পানির সংকট এবং বর্জ্য—সব মিলিয়ে পর্যটনশিল্প চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতি ও সংস্কৃতি
‘সাউথ ইস্ট এশিয়া ব্যাকপ্যাকার ম্যাগাজিন’-এর সম্পাদক নিকি স্কট বলেন, অতিরিক্ত পর্যটক পরিবেশ ধ্বংস করছে, প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ করছে এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে বিকৃত করছে।
এ ক্ষেত্রে দ্বীপ ও সৈকত এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। বালিতে পানিসংকট, যানজট, প্লাস্টিকদূষণ এখন প্রতিদিনের ঘটনা। সেখানকার ধানখেত কেটে হোটেল বানানোর ফলে বন্যা আরও বেড়েছে। ফিলিপাইনের বোরাকায়ও একই সমস্যা হয়েছিল ২০১৮ সালে। ছয় মাস দ্বীপটি বন্ধ রেখে পর্যটন সংস্কার করা হয়েছিল।
কিয়োটোর সমস্যা
২০২৪ সালে ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কিয়োটো ভ্রমণ করেছে। এই বিশালসংখ্যক পর্যটক সামাল দিতে স্থানীয়দের প্রতিদিনের জীবন পড়েছে সংকটের মুখে। হাঁটার সংকীর্ণ রাস্তা কিংবা গণপরিবহন—সবই জনাকীর্ণ। জাপানের সংবাদমাধ্যম ‘ইওমিউরি শিম্বুন’-এর জরিপে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ বাসিন্দা অতিরিক্ত পর্যটন বা ওভার ট্যুরিজমে বিরক্ত। এসব কারণে স্থানীয় সরকার নতুন কিছু নিয়ম চালু করেছে। কিয়োটোর গিয়ন এলাকার মহল্লাগুলোর রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে ছবি তুললে রাখা হয়েছে জরিমানার ব্যবস্থা। তবে বড় শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন।
সমাধান হলো ভ্রমণ সচেতনতা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্যকর সমাধান হলো পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করা এবং নির্দিষ্ট এলাকা বন্ধ রাখা। তবে বড় শহরে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে। গ্যারি বাওয়ারম্যান বলেন, এশিয়ার দেশগুলো পর্যটনকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মূল খাত হিসেবে দেখছে। তাই তাদের পক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া অনেক সময় যথেষ্ট কঠিন।
নিকি স্কট পরামর্শ দেন, জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যের বাইরে গিয়ে নতুন গন্তব্যগুলোকে সামনে আনা উচিত। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। এমন অনেক জায়গা আছে, যেগুলো প্রচারণার জন্য পিছিয়ে পড়েছে। তাই এককেন্দ্রিক ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে বের হতে হবে।
সূত্র: সিএনএন

ইউরোপের অনেক দেশ পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন নিয়ম যোগ করেছে। এর কারণও আছে। অতিরিক্ত পর্যটকের কারণে স্থানীয় অধিবাসীরা স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারছেন না। ফলে তাঁরা পর্যটকদের ওপর বিরক্ত। এসব বিষয়ে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে বিভিন্ন দেশে। আবার অতিরিক্ত পর্যটনের বিরুদ্ধে স্পেনের রাস্তায় বিক্ষোভ পর্যন্ত দেখা গেছে। ইউরোপ ছাড়িয়ে এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে এশিয়ার পর্যটনশিল্পও।
পর্যটন বিশেষজ্ঞ গ্যারি বাওয়ারম্যান বলছেন, বালি, কিয়োটো এবং ফুকেট পর্যটকদের নিয়ে সমস্যার মুখে পড়েছে। আসলে ভ্রমণের জায়গা কম, এমনটা নয়। সমস্যা হলো, একই সময় একই জায়গায় অতিরিক্ত পর্যটক জড়ো হওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটক শ্যানন ক্লার্ক বলেন, ‘আমরা ভোর ৫টায় কিয়োটোর বিখ্যাত ফুশিমি ইনারি মন্দিরে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পথে ভিড় কম ছিল। কিন্তু ফেরার সময় ঢল নামল পর্যটকের। হাঁটতেও খুব কষ্ট হচ্ছিল।’
মহামারির পর ভ্রমণের ঢল
মহামারির পর অনেকের ভ্রমণে আগ্রহ বেড়েছে। বিমান ভাড়া মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে হওয়ায় এশিয়ার পর্যটন আবার চাঙা হয়ে উঠেছে। এ বছরের প্রথম ছয় মাসে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় পর্যটক বেড়েছে ২০ শতাংশ। ভিয়েতনামে বিভিন্ন শহরে এখন মানুষ গিজগিজ করছে। থাইল্যান্ডে সামান্য পর্যটক কমলেও ফুকেটের জনপ্রিয় জায়গাগুলোয় ভিড় কমছে না। যানজট, পানির সংকট এবং বর্জ্য—সব মিলিয়ে পর্যটনশিল্প চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
প্রকৃতি ও সংস্কৃতি
‘সাউথ ইস্ট এশিয়া ব্যাকপ্যাকার ম্যাগাজিন’-এর সম্পাদক নিকি স্কট বলেন, অতিরিক্ত পর্যটক পরিবেশ ধ্বংস করছে, প্রাকৃতিক সম্পদ শেষ করছে এবং স্থানীয় সংস্কৃতিকে বিকৃত করছে।
এ ক্ষেত্রে দ্বীপ ও সৈকত এলাকা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। বালিতে পানিসংকট, যানজট, প্লাস্টিকদূষণ এখন প্রতিদিনের ঘটনা। সেখানকার ধানখেত কেটে হোটেল বানানোর ফলে বন্যা আরও বেড়েছে। ফিলিপাইনের বোরাকায়ও একই সমস্যা হয়েছিল ২০১৮ সালে। ছয় মাস দ্বীপটি বন্ধ রেখে পর্যটন সংস্কার করা হয়েছিল।
কিয়োটোর সমস্যা
২০২৪ সালে ৫ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কিয়োটো ভ্রমণ করেছে। এই বিশালসংখ্যক পর্যটক সামাল দিতে স্থানীয়দের প্রতিদিনের জীবন পড়েছে সংকটের মুখে। হাঁটার সংকীর্ণ রাস্তা কিংবা গণপরিবহন—সবই জনাকীর্ণ। জাপানের সংবাদমাধ্যম ‘ইওমিউরি শিম্বুন’-এর জরিপে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ বাসিন্দা অতিরিক্ত পর্যটন বা ওভার ট্যুরিজমে বিরক্ত। এসব কারণে স্থানীয় সরকার নতুন কিছু নিয়ম চালু করেছে। কিয়োটোর গিয়ন এলাকার মহল্লাগুলোর রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। সেখানে ছবি তুললে রাখা হয়েছে জরিমানার ব্যবস্থা। তবে বড় শহরে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব কঠিন।
সমাধান হলো ভ্রমণ সচেতনতা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কার্যকর সমাধান হলো পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করা এবং নির্দিষ্ট এলাকা বন্ধ রাখা। তবে বড় শহরে তা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে। গ্যারি বাওয়ারম্যান বলেন, এশিয়ার দেশগুলো পর্যটনকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মূল খাত হিসেবে দেখছে। তাই তাদের পক্ষে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া অনেক সময় যথেষ্ট কঠিন।
নিকি স্কট পরামর্শ দেন, জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যের বাইরে গিয়ে নতুন গন্তব্যগুলোকে সামনে আনা উচিত। এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলা জরুরি। এমন অনেক জায়গা আছে, যেগুলো প্রচারণার জন্য পিছিয়ে পড়েছে। তাই এককেন্দ্রিক ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে বের হতে হবে।
সূত্র: সিএনএন

দক্ষিণ কোরিয়া সরকার আয়োজিত উৎসব ‘দেইগু কালারফুল ফেস্টিভ্যাল ২০২২’-এ অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশের তুরঙ্গমী রেপার্টরি ড্যান্স থিয়েটার। দক্ষিণ কোরিয়ার দেইগু শহরে গত ৮ থেকে ১০ জুলাই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তুরঙ্গমীর আর্টিস্টিক ডিরেক্টর নৃত্যশিল্পী পূজা সেনগুপ্ত
০৩ আগস্ট ২০২২
অনেকের জন্য সালাদে ধনের কয়েকটি পাতা স্বাদে এনে দেয় নতুন মাত্রা। তবে বিশেষ জিন বহনকারী কিছু মানুষের কাছে এর স্বাদ ঠিক সাবানের মতো।
৪ ঘণ্টা আগে
‘ম্যায় হু না’, ‘হায়দার’, ‘চিনি কম’, ‘চাঁদনি বার’ কিংবা ‘আন্ধাধুন’ সিনেমার কথা মনে আছে নিশ্চয়? তাহলেই মনে পড়বে টাবুর কথা। সু-অভিনয়, সাধারণ জীবনযাপন আর সময়ানুবর্তিতা—এই তিন মিলে তিনি টাবু। ৪ নভেম্বর ছিল তাঁর জন্মদিন। এই দিনে সামনে এসেছে তাঁর রূপরহস্যের কথা।...
৯ ঘণ্টা আগে
ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে পাহাড় ও মাতামুহুরী নদীবেষ্টিত বান্দরবানের লামা উপজেলা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বৈচিত্র্যময়। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেই সবুজ পাহাড়ে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। মাঝে মাঝে ঢুকে যাবেন মেঘের রাজ্যে।
১৩ ঘণ্টা আগে