আমিনুল ইসলাম নাবিল, ঢাকা
খাবারের ঐতিহ্য কোনো কোনো জনপদের আলাদা পরিচিতি তৈরি করে। এই যেমন চট্টগ্রামের বিস্কুট কিংবা নাটোরের কাঁচাগোল্লা অথবা মুক্তাগাছার মণ্ডা। তেমনি ঢাকা মানেই বাকরখানি। কিংবদন্তি হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আগা বাঁকের আর খনি বিবির নাম, সেটাও ঢাকার প্রেক্ষাপটেই। কিন্তু এই ঐতিহ্যে এবার মিশতে চলেছে প্রযুক্তির পানি।
মাটির তৈরি তন্দুরে কাঠ-কয়লার আগুনে পুড়ে যে বাকরখানি তৈরি হতো ঢাকার অলিগলিতে, যার ইতিহাস কয়েক শ বছরের পুরোনো, সেই তন্দুরের গোলাপি আভায় এবার ভাগ বসাতে এসেছে আধুনিক প্রযুক্তির ওভেন। নতুন তন্দুরের বদলে দোকানগুলোতে বসছে বাকরখানি তৈরির ওভেন। আর তাতে তন্দুরের মতো নোনতা ও মিষ্টি স্বাদের বাকরখানি তো তৈরি হচ্ছেই, পুরান ঢাকার অলিগলি ঘুরে জানা গেল ঘি, চর্বি, পনির ও ঝুরি মাংসের বাকরখানিও তৈরি হয় তাতে।
ওভেনে সহজে, দ্রুত ও সংখ্যায় বেশি বাকরখানি তৈরি করা যায়। পুরান ঢাকার সুরিটোলা এলাকায় ওভেনে বাকরখানি তৈরির এমন বেশ কয়েকটি দোকান গড়ে উঠেছে। এখানে ক্রেতাদের ভিড়ও আগের মতোই। দোকানিরা বলছেন, ডিজিটাল দেশে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।
ওভেনে বাকরখানি তৈরি হয় সুরিটোলা—এমন একটি দোকানে মহাজন শাহিনুর নামে এক দোকানির সঙ্গে কথা হয়। তাঁর দাবি, তিনিই প্রথম ওভেনে বাকরখানি তৈরির কার্যক্রম শুরু করেন এবং তাঁর হাত ধরে অনেক দোকানে ওভেন মেশিনে বাকরখানি তৈরির যাত্রা শুরু হয়। কেক, বিস্কুট ইত্যাদি তৈরি করা গেলে বাকরখানিও করা যাবে—এমন ধারণা থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ওভেনে বাকরখানি তৈরির প্রচলন শুরু করেন শাহিনুর। একে তিনি ‘পরিবেশবান্ধব বাকরখানি’ বলে উল্লেখ করেন। কারণ, এতে লাকড়ি-কয়লা জোগাড়ের ঝামেলা নেই। ফলে খরচ ও পরিশ্রম কম এবং বাকরখানি ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। ওভেনের আরও সুবিধার কথা জানালেন তাঁর দোকানের কর্মচারী মো. আরমান। তিনি জানান, তন্দুর চুল্লির কালো ধোঁয়ার কারণে বাড়িওয়ালারা দোকান ভাড়া দিতে চায় না। এখন আর সে ঝামেলা নেই। আগে যেমন কারিগর তন্দুর চুল্লির তাপে ঘেমে ক্লান্ত হয়ে যেতেন, এখন সে অবস্থা আর নেই।
শাহিনুরের দোকানের পাশের গলিতে বাকরখানি তৈরির কারিগর হিসেবে কাজ করেন আমিনুল ইসলাম বাবু। তিনি কয়েক দশক ধরে এ কাজ করে চলেছেন। নতুনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চার মাস ধরে ওভেনে বাকরখানি তৈরি করছেন তিনি। বাবু জানালেন, কম সময়ে অনেক বাকরখানি তৈরি করা যায় বলে ধীরে ধীরে সব দোকানেই এই ওভেন মেশিন ঢুকে যাচ্ছে।
তন্দুর বনাম ওভেনে তৈরি বাকরখানি নিয়ে ক্রেতারা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ ওভেনে তৈরি বাকরখানিকে স্বাদের দিক থেকে বেশি এগিয়ে রাখছেন। তাঁদের মতে, তন্দুর চুল্লির বাকরখানি শক্ত হয়ে যেত, এটার ক্ষেত্রে এমন অসুবিধা হয় না। তবে অনেকে বলছেন, আগে পোড়া পোড়া যে স্বাদ ছিল, এখন সেটা নেই। আগের স্বাদ নেই বলে অনেকে ওভেনে তৈরি বাকরখানিকে ‘বাকরখানি’ হিসেবে স্বীকারই করতে চান না! তাঁদের দাবি, স্বাদ আর ঐতিহ্য—দুটোই শেষ। এ বিষয়ে ঢাকাইয়া সংস্কৃতিকর্মী ও বাচিকশিল্পী আরিফা আলম সোনিয়া ঐতিহ্যের দিকেই থাকলেন। বললেন, ‘বাসায় হাজার রেসিপিতেই রান্না হোক, বিয়েবাড়ির বাবুর্চির হাতের রান্নার কিন্তু অন্য রকম মজা। আসলে বাবুর্চির জন্য না, লাকড়ি-কয়লার চুলায় যে রান্না হয়, সেটার ফ্লেভারই আলাদা। ইলেকট্রিক ওভেনে যত যা-ই হোক, মাটির তন্দুরে তৈরি বাকরখানির যে স্বাদ, সেটা কখনোই পাওয়া যায় না।’
এভাবেই সময়ের হাত ধরে ঐতিহ্য বদলায়। বাকরখানিতেও সেই বদলের ছোঁয়া লেগেছে। এই বদল ভালো কি মন্দ, সেটা বলবে সময়।
খাবারের ঐতিহ্য কোনো কোনো জনপদের আলাদা পরিচিতি তৈরি করে। এই যেমন চট্টগ্রামের বিস্কুট কিংবা নাটোরের কাঁচাগোল্লা অথবা মুক্তাগাছার মণ্ডা। তেমনি ঢাকা মানেই বাকরখানি। কিংবদন্তি হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আগা বাঁকের আর খনি বিবির নাম, সেটাও ঢাকার প্রেক্ষাপটেই। কিন্তু এই ঐতিহ্যে এবার মিশতে চলেছে প্রযুক্তির পানি।
মাটির তৈরি তন্দুরে কাঠ-কয়লার আগুনে পুড়ে যে বাকরখানি তৈরি হতো ঢাকার অলিগলিতে, যার ইতিহাস কয়েক শ বছরের পুরোনো, সেই তন্দুরের গোলাপি আভায় এবার ভাগ বসাতে এসেছে আধুনিক প্রযুক্তির ওভেন। নতুন তন্দুরের বদলে দোকানগুলোতে বসছে বাকরখানি তৈরির ওভেন। আর তাতে তন্দুরের মতো নোনতা ও মিষ্টি স্বাদের বাকরখানি তো তৈরি হচ্ছেই, পুরান ঢাকার অলিগলি ঘুরে জানা গেল ঘি, চর্বি, পনির ও ঝুরি মাংসের বাকরখানিও তৈরি হয় তাতে।
ওভেনে সহজে, দ্রুত ও সংখ্যায় বেশি বাকরখানি তৈরি করা যায়। পুরান ঢাকার সুরিটোলা এলাকায় ওভেনে বাকরখানি তৈরির এমন বেশ কয়েকটি দোকান গড়ে উঠেছে। এখানে ক্রেতাদের ভিড়ও আগের মতোই। দোকানিরা বলছেন, ডিজিটাল দেশে পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।
ওভেনে বাকরখানি তৈরি হয় সুরিটোলা—এমন একটি দোকানে মহাজন শাহিনুর নামে এক দোকানির সঙ্গে কথা হয়। তাঁর দাবি, তিনিই প্রথম ওভেনে বাকরখানি তৈরির কার্যক্রম শুরু করেন এবং তাঁর হাত ধরে অনেক দোকানে ওভেন মেশিনে বাকরখানি তৈরির যাত্রা শুরু হয়। কেক, বিস্কুট ইত্যাদি তৈরি করা গেলে বাকরখানিও করা যাবে—এমন ধারণা থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ওভেনে বাকরখানি তৈরির প্রচলন শুরু করেন শাহিনুর। একে তিনি ‘পরিবেশবান্ধব বাকরখানি’ বলে উল্লেখ করেন। কারণ, এতে লাকড়ি-কয়লা জোগাড়ের ঝামেলা নেই। ফলে খরচ ও পরিশ্রম কম এবং বাকরখানি ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। ওভেনের আরও সুবিধার কথা জানালেন তাঁর দোকানের কর্মচারী মো. আরমান। তিনি জানান, তন্দুর চুল্লির কালো ধোঁয়ার কারণে বাড়িওয়ালারা দোকান ভাড়া দিতে চায় না। এখন আর সে ঝামেলা নেই। আগে যেমন কারিগর তন্দুর চুল্লির তাপে ঘেমে ক্লান্ত হয়ে যেতেন, এখন সে অবস্থা আর নেই।
শাহিনুরের দোকানের পাশের গলিতে বাকরখানি তৈরির কারিগর হিসেবে কাজ করেন আমিনুল ইসলাম বাবু। তিনি কয়েক দশক ধরে এ কাজ করে চলেছেন। নতুনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে চার মাস ধরে ওভেনে বাকরখানি তৈরি করছেন তিনি। বাবু জানালেন, কম সময়ে অনেক বাকরখানি তৈরি করা যায় বলে ধীরে ধীরে সব দোকানেই এই ওভেন মেশিন ঢুকে যাচ্ছে।
তন্দুর বনাম ওভেনে তৈরি বাকরখানি নিয়ে ক্রেতারা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ ওভেনে তৈরি বাকরখানিকে স্বাদের দিক থেকে বেশি এগিয়ে রাখছেন। তাঁদের মতে, তন্দুর চুল্লির বাকরখানি শক্ত হয়ে যেত, এটার ক্ষেত্রে এমন অসুবিধা হয় না। তবে অনেকে বলছেন, আগে পোড়া পোড়া যে স্বাদ ছিল, এখন সেটা নেই। আগের স্বাদ নেই বলে অনেকে ওভেনে তৈরি বাকরখানিকে ‘বাকরখানি’ হিসেবে স্বীকারই করতে চান না! তাঁদের দাবি, স্বাদ আর ঐতিহ্য—দুটোই শেষ। এ বিষয়ে ঢাকাইয়া সংস্কৃতিকর্মী ও বাচিকশিল্পী আরিফা আলম সোনিয়া ঐতিহ্যের দিকেই থাকলেন। বললেন, ‘বাসায় হাজার রেসিপিতেই রান্না হোক, বিয়েবাড়ির বাবুর্চির হাতের রান্নার কিন্তু অন্য রকম মজা। আসলে বাবুর্চির জন্য না, লাকড়ি-কয়লার চুলায় যে রান্না হয়, সেটার ফ্লেভারই আলাদা। ইলেকট্রিক ওভেনে যত যা-ই হোক, মাটির তন্দুরে তৈরি বাকরখানির যে স্বাদ, সেটা কখনোই পাওয়া যায় না।’
এভাবেই সময়ের হাত ধরে ঐতিহ্য বদলায়। বাকরখানিতেও সেই বদলের ছোঁয়া লেগেছে। এই বদল ভালো কি মন্দ, সেটা বলবে সময়।
অফিসের পরিবেশ আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। অনেকে অফিসে যাওয়ার কথা ভাবতেই হতাশ হয়ে পড়েন। এর কারণ হয়তো খিটখিটে বস, অতিরিক্ত কাজের চাপ কিংবা সহকর্মীদের খারাপ ব্যবহার। এতে দেখা দিতে পারে মানসিক চাপ, ঘুমের সমস্যা, এমনকি বিষণ্নতাও।
২ ঘণ্টা আগেআজ টুনা দিবস। বিশ্বব্যাপী খাদ্যনিরাপত্তা, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং অর্থনীতিতে টুনার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছরের ২ মে বিশ্ব টুনা দিবস পালিত হয়। টুনা মাছের প্রজননপ্রক্রিয়া যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে মাছ ধরাকে উৎসাহিত করতেই দিবসটি পালিত হয়।
১৫ ঘণ্টা আগেবিশ্বব্যাপী খাদ্যনিরাপত্তা, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য এবং অর্থনীতিতে টুনার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছরের ২ মে বিশ্ব টুনা দিবস পালিত হয়। টুনা মাছের প্রজননপ্রক্রিয়া যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে মাছ ধরাকে উৎসাহিত করতেই দিবসটি পালিত হয়।
২০ ঘণ্টা আগেইউক্রেনের আলোকচিত্রী নিকা রিতচেল ব্যালেরিনাদের ছবি তুলে যুদ্ধের অমানিশা ভুলে থাকার চেষ্টা করছেন। কিয়েভের বোমার শব্দের মধ্যেও থেমে না থেকে তিনি শিল্পচর্চায় আগ্রহীদের মনে জাগিয়ে তুলছেন সাহস, আশাবাদ ও স্বাধীনতার স্বপ্ন।
২ দিন আগে