Ajker Patrika

৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডেথ ভ্যালিতে মানুষ যা করে

আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৩, ২২: ৫৮
৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ডেথ ভ্যালিতে মানুষ যা করে

গরম কমার কোনো লক্ষণই নেই। ঘর থেকে বের হলেই রোদের তাপে শরীর ঝলসে যায় বলে মনে হচ্ছে। ঘরেও রেহাই নেই, বনবন করে ঘুরতে থাকা বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসটাও যে গরম। গত কয়েক দিনের ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়, ৩৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাঠকদেরও কিছুটা সান্ত্বনা দিতে গতকাল পৃথিবীর বেশি গরম পড়ে এমন ১০টি জায়গার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম, যেসব জায়গায় তাপমাত্রা আমাদের দেশের বিভিন্ন শহরের থেকে অনেক বেশি থাকে। এই তালিকায় প্রথম ছিল মার্কিন মুল্লুকের ডেথ ভ্যালির নাম। অনেকের মতেই পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ জায়গা এটি। আজ সেখানে বাস করা মানুষের জীবন কীভাবে কাটে তা-ই জানাব। আশা করা যায়, এই লেখা পড়ার পর কিছুটা স্বস্তি পাবেন এই ভেবে, সেখানে থাকতে হচ্ছে না আপনাকে! 

তিন শতাধিক মানুষের বাস আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার ডেথ ভ্যালিতে। আগস্টে দিনে এখানকার গড় তাপমাত্রা থাকে ১২০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। যে কোনো বিচারেই জায়গাটিকে বিবেচনা করা যায় পৃথিবীর উষ্ণতম জায়গাগুলোর একটি হিসেবে। এখানকার অধিবাসীদের বেশির ভাগ ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের কর্মকর্তা–কর্মচারী কিংবা স্থানীয় হোটেলের কর্মী। 

তাপমাত্রা তখন ৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস২০২০ সালের আগস্টের একদিন দুপুরের পরে সেখানে পৌঁছে শরীর ঝলসে দেওয়া ১৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২২ সালে সেপ্টেম্বরে ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে ডেথ ভ্যালি, সেটি ১২৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। 

রেকর্ড হোক বা না হোক, জুলাই আর আগস্টের বেশির ভাগ দিনে আপনার মনে হবে ওভেনের ভেতর দিয়ে হাঁটছেন। এটি আমার কথা নয়, সেখানকার ফার্নেস ক্রিকের বাসিন্দা ও ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার ব্র্যান্ডি স্টুয়ার্টের। ‘আপনি বাইরে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই টের পাবেন এটি। আপনার ত্বক এটা জানান দেবে, তবে ঘামের উপস্থিতি অনুভব করবেন না। কারণ, এটা বাষ্পীভূত হয়ে যায় দ্রুত।’ বলেন তিনি।

ডেথ ভ্যালিতে সারা বছর থাকা ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষের আগস্টজুড়ে দিনে ১১০ থেকে ১২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রাতেই সব কাজ করতে হয়। রাতে অবশ্য তাপমাত্রা ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (৩২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) আশপাশে থাকে। তবে এই আগুনে গরমেই এখানকার বাসিন্দারা কাজ করেন, সামাজিক যোগাযোগ বজায় এমনকি বাইরে ব্যায়াম কিংবা শরীরচর্চাও করেন।

কাউ ক্রিকের প্লে গ্রাউন্ডে খেলা করছে শিশুরাডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কের শিক্ষা বিভাগের প্রধান প্যাট্রিক টেইলর জানান, এখানকার তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা মোটেই সহজ নয়। এখানে প্রথম গ্রীষ্মটা বেশ কঠিন ছিল তাঁর জন্য। এ সময় প্রচণ্ড ক্লান্তির পাশাপাশি প্রচুর ঘামের অভিজ্ঞতা হতে পারে। এমনকি থাকে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও।

টেইলর জানান, তাঁর মোটামুটি এক বছর লেগেছে এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে। অন্যদের বেলায়ও মোটামুটি একই ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা।

তবে একটা ভালো দিক হচ্ছে, এখানকার তাপটা শুষ্ক। মানে, ঘাম দ্রুত বাষ্পীভূত হয়। শরীরটা এভাবে দ্রুত শীতল হয়।

ডেথ ভ্যালির প্রচণ্ড গরমের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সহজ নয়শীত পরিস্থিতি অবশ্য একেবারেই আলাদা। দিনে এখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (১৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) আশপাশে, রাতে নেমে আসে ৩০ ডিগ্রি ফারেনোইটের আশপাশে, অর্থাৎ সেলসিয়াসে হিসেব করলে কখনো কখনো হিমাঙ্কের নিচে।

কাছাকাছি থাকা
কাউ ক্রিক, টিমবিশা শশন ভিলেজ আর স্টোভপাইপ ওয়েলসে ডেথ ভ্যালিতে বছরজুড়ে থাকা মানুষদের বেশিরভাগের বাস। কাছের শহরে গাড়িতে এক ঘণ্টার যাত্রা। এখানকার কিছু কিছু শিশু এক ঘণ্টা বাস ভ্রমণ করে স্কুলে যায়। অবশ্য টেইলর ও তাঁর স্ত্রী বাড়িতেই তাঁদের পাঁচ মেয়েকে পড়ালেখা করান। 

কাউ ক্রিক কমপ্লেক্সে ৮০টির মতো হাউজিং ইউনিট আছে। বেশির ভাগই একটি থেকে আরেকটি হাঁটা দূরত্বে। এখানে জিম, খেলার জায়গা এমনকি পাঠাগারও আছে। বেশির ভাগ বাড়িতেই শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের দুই ধরনের ব্যবস্থা আছে। একটি সাধারণ এসি ইউনিট। অপরটি সোয়াম্প বা এভাপোরেটিভ কুলার, যেটি শুকনো, উষ্ণ বাতাসকে শীতল করে। 

তবে সব বাসিন্দাই যে দুই ধরনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ব্যবহার করেন তা নয়। এমনকি একটিও ব্যবহার করেন না কেউ কেউ। 

‘কেউ কেউ এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না।’ বলেন টেইলর। তিনি জানান, মূলত অর্থ সাশ্রয়েই এটা করেন তাঁরা। টেইলর আরও বলেন, এখানে সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকে। ন্যাশনাল পার্কের মোটামুটি ১৫০ জন চাকরিজীবী বুক ক্লাব, ক্রাফটিং ক্লাবসহ নানা সংগঠনের মাধ্যমে মিলেমিশে থাকেন। 

শুনে চমকাবেন, এমনকি জুলাইয়েও ডেথ ভ্যালির বাসিন্দারা বাইরে দৌড়ান। ‘আমরা এখানে ঘুরতে আসা কাউকে গ্রীষ্মে বাইরে দৌড়ানোর পরামর্শ দেব না কখনোই।’ বলেন টেইলর, ‘তবে আপনি যদি প্রতিদিন দৌড়ান, তাহলে ১১৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার সঙ্গেও মানিয়ে নেবে।’ 

 ন্যাশনাল পার্কের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তাতবে বাইরে বের হওয়ার সময় বাড়তি কিছু সতর্কতা মানতে হয় এখানকার বাসিন্দাদের। গ্রীষ্মে ডেথ ভ্যালির রোদ সাধারণ কাজকেও বিপজ্জনক করে তোলে। 

টেইলর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়তি স্যাটেলাইট ফোন ছাড়া বের হন না। স্টুয়ার্ট কখনো বয়ফ্রেন্ড ও পানিভর্তি বড় একটি জগ ছাড়া মুদি দোকানে যান না। নিয়মিতই গাড়িটার দিকে নজর থাকে তাঁর। পাছে চাকা ফেঁসে গিয়ে দুর্গম জায়গায় অসহায় অবস্থায় আটকা পড়তে হয়।

বড় বিপদ জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে ডেথ ভ্যালির বাসিন্দাদের ওপরও। গত ২০ বছর ডেথ ভ্যালির ইতিহাসের সবচেয়ে ১০টি মাসের মধ্যে ছয়টি রেকর্ড করা হয়েছে।

ডেথ ভ্যালির একটি ফিলিং স্টেশনযুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড এটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সূত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে আগস্টে ডেথ ভ্যালির গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট, গত বছর এটি ছিল ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তেমনি সেপ্টেম্বরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭৪ থেকে উঠেছে ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। ‘রাতে ঘুরে বেড়াতে এবং খেলাধুলা করার অভ্যাস করে নিয়েছি আমরা।’ বলেন টেইলর।

মজার ঘটনা, ডেথ ভ্যালিতে একটি গলফ কোর্স বা গলফ মাঠও আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে নিম্নতম গলফ মাঠ এটা, সাগর সমতল থেকে যার অবস্থান ২১৪ ফুট নিচে। 

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
ডেথ ভ্যালির ফার্নেস ক্রিকের দখলে বায়ুর উষ্ণতম তাপমাত্রার রেকর্ডটি। এই মরু উপত্যকায় ১৯১৩ সালের গ্রীষ্মে তাপমাত্রা পৌঁছায় ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে কিছু কারণে ওই রেকর্ড নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

ডেথ ভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে ঘুরতে আসা এক পর্যটকওয়েদার হিস্টরিয়ান বা আবহাওয়া বিষয়ের ঐতিহাসিক ক্রিস্টোফার বার্ট বলেন, ডেথ ভ্যালির ১৯১৩ সালের রেকর্ডটিকে সন্দেহযুক্ত করেছে একই সময়ে এই এলাকায় নেওয়া অন্য রিডিংগুলো। ফার্নেস ক্রিকের রিডিংটা ছিল আশপাশের অন্য আবহাওয়া স্টেশনগুলোর তুলনায় ২-৩ ডিগ্রি বেশি।

রেকর্ড বুকে থাকার পরও ওটাকে যদি গণনায় না-ও ধরেন, তার পরও গ্রহণযোগ্য সূত্র থেকে পাওয়া উচ্চ তাপমাত্রার রিডিংগুলোর মধ্যে সবার ওপরে ফার্নেস ক্রিকই। ২০২০-এর আগস্টে এখানে তাপমাত্রা পৌঁছায় ৫৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বুঝুন, এখানে অবলীলায় বছরের পর বছর ধরে বাস করছে ৩০০-৪০০ মানুষ! আর এটা চিন্তা করে মাথার ওপর আগুন ঢালা সূর্যটাকে রেখে, কিংবা ঘরের ভেতরের অসহ্য গরমের পরও একটু তৃপ্তির ঢেকুর তো তুলতেই পারেন, যাক ডেথ ভ্যালিতে অন্তত থাকতে হচ্ছে না।

সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার, বিবিসি

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

মেষ

আজ এক প্রকার ‘অটো-মোডে’ থাকবেন। সকালে উঠেই মনে হবে, ‘আমি কি ঘুমিয়েও কাজ করে ফেলতে পারি?’ বসের সামনে আপনার একটি ভুল আইডিয়া আজ এমনভাবে হিট করবে যে তিনি ভাববেন, আপনি হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কোনো বিশ্বমানের কোর্স করেছেন। সাবধান: পুরোনো প্রেমিকার হঠাৎ ফোন আসতে পারে। ফোনটা ধরবেন, নাকি বলবেন ‘নেটওয়ার্কের বাইরে আছি’, সেটা আপনার কর্মফল! প্রেমের ক্ষেত্রে বিরক্তি বা অনাগ্রহ না দেখানোই ভালো।

বৃষ

আজ আপনার ব্যাংক ব্যালেন্সের দিকে নজর দিতে হবে। না, অর্থ আসবে না, বরং অর্থ যাওয়ার পথ তৈরি হবে! বিশেষত অনলাইন শপিংয়ের দিকে মন ঝুঁকতে পারে। এমন কিছু অর্ডার করে ফেলবেন, যেটা হাতে আসার পর মনে হবে—‘এটার আসল প্রয়োজন কী ছিল?’ স্ত্রীর কাছ থেকে উপহার চেয়ে বসলে এমন কিছু পাবেন যা দেখে হাসবেন, নাকি কাঁদবেন, তা ঠিক করতে পারবেন না। ফাস্ট ফুডের দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিন। একটু কম তেল-ঝাল খান, নইলে গ্যাসের চোটে মহাকাশে যাত্রা শুরু করতে পারেন।

মিথুন

মিথুন রাশির দ্বৈত সত্তা আজ দ্বিগুণ সক্রিয়। এক মন বলবে, ‘কাজটা করে ফেলি,’ আর অন্য মন বলবে, ‘আরে বাবা! নেটফ্লিক্সের সিরিজটা আগে শেষ করা যাক!’ এই দোটানার জন্য দিনের শেষে আপনার কাজও হবে না, আবার সিরিজটাও শেষও হবে না। কর্মক্ষেত্রে সহকর্মী আজ আপনার সাফল্যের গল্পে এত বেশি রং মেশাবেন যে আসল গল্পের চেয়ে সেটা শুনেই বসের বেশি হাসি পাবে। সন্ধ্যায় পরিচিত কাউকে এমন একটি উপদেশ দেবেন, যা আপনি নিজে জীবনে কখনো মেনে চলেননি।

কর্কট

কর্কট রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত ঘরকুনো হন। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে ঘরের বাইরে ঠেলে দেবে। অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধু বা আত্মীয়ের দল বাড়িতে এসে আপনার শান্তি ভঙ্গ করতে পারে। তাদের আপ্যায়ন করতে গিয়ে পকেটের দফারফা হবে। তবে চিন্তা নেই, এই বিড়ম্বনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের কোনো শুভ ইঙ্গিত। প্রেমিক/প্রেমিকা আজ আপনাকে ‘ডায়েট কন্ট্রোল’ করতে বলবে। আপনি গোপনে লুকিয়ে ফ্রিজের দিকে এগোনোর সময় ধরা পড়তে পারেন।

সিংহ

সিংহ রাশি, আজ আপনার ব্যক্তিত্বের তেজ এতটাই বেশি থাকবে যে ঘরে ঢুকে লাইট না জ্বাললেও চলবে। সবাই আজ আপনার কথা শুনতে চাইবে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো—আপনার বলার মতো বিশেষ কোনো কথা আজ থাকবে না। বসের চোখে পড়তে চাচ্ছেন? যান, একটু উল্টা-পাল্টা কিছু করুন। আপনার ভুল করার স্টাইল দেখেও তারা মুগ্ধ হতে পারে। অপ্রয়োজনীয় জিনিসে প্রচুর টাকা খরচ হতে পারে, যেমন—চতুর্থ কফির কাপ অথবা একটি লাল রঙের ক্যাপ যা আপনার মোটেই প্রয়োজন নেই।

কন্যা

আজ আপনার ভেতরের ‘পারফেকশনিস্ট’ সত্তাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে। সহকর্মীর ফাইলে সামান্য একটি বানান ভুল পেলেও এমন রিঅ্যাক্ট করবেন যেন তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপরাধটি করে ফেলেছেন। এই বাড়তি খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য কিছু মানুষ আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে। নিজেকে নিয়ে একটু হাসি-ঠাট্টা করুন। সবকিছু সিরিয়াসলি নেবেন না। যদি দেখেন জুতা উল্টো পরে ফেলেছেন, তা নিয়ে একটা সেলফি তুলে পোস্ট করে দিন! দেখবেন দিনটি হালকা হয়ে গেছে।

তুলা

গ্রহদের মতে, আজ আপনার ‘ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট’ সফল হবে। তবে এই ব্যালেন্স কর্মক্ষেত্র বা ব্যক্তিগত জীবনে নয়, হবে আপনার ফ্রিজের খাবার আর আপনার ডায়েটের মধ্যে! আপনি দু’দিকেই সামঞ্জস্য রক্ষা করবেন—অর্থাৎ, ডায়েটও ভাঙবেন, আবার রাতে আফসোসও করবেন। আজ আপনার সঙ্গী এমন একটি অদ্ভুত প্রশ্ন করতে পারে, যার উত্তর দিতে গিয়ে আপনার মাথা পুরোপুরি ঘুরে যাবে। যেমন: ‘বিয়ে না হলে আমাদের জীবনটা কেমন হতো?’ শান্ত থাকুন এবং হাসতে শিখুন।

বৃশ্চিক

বৃশ্চিক, আপনার রহস্যময় স্বভাব আজ কারও কাছে ধরা পড়বে না। কারণ, নিজেই আজ আপনার রহস্য ভুলে যাবেন! পুরোনো একটি ভুলে যাওয়া ঋণ বা পাওনা টাকা আজ হুট করে মনে পড়তে পারে। তবে যখন সেটি দাবি করতে যাবেন, তখন অন্য পক্ষ এমন এক গল্প শোনাবে যে আপনি উল্টো তাকেই সহানুভূতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে আসতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে আজ এমন একজনের সঙ্গে দেখা হবে, যিনি আপনার চেয়েও বেশি গম্ভীর। দু’জন মিলে এমন একটি হাসির মুহূর্ত তৈরি করবেন, যা কেউ কল্পনাও করেনি।

ধনু

ধনু রাশির জাতক-জাতিকারা সাধারণত অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন। কিন্তু আজকের অ্যাডভেঞ্চারটি হবে আলমারি গোছানো! ভাবতেও পারেননি, আপনার আলমারির ভেতরে এত অদ্ভুত জিনিস লুকিয়ে ছিল। পুরোনো প্রেমের চিঠি থেকে শুরু করে ছেঁড়া মোজা পর্যন্ত সবই পেয়ে যাবেন। যদি আজ কোথাও যাওয়ার প্ল্যান থাকে, তবে সাবধানে যান। মানিব্যাগটি ভুল করে রান্নাঘরে রেখে আসতে পারেন। এই ভুলে যাওয়াটাই আজ আপনার সবচেয়ে বড় কৌতুক হতে চলেছে।

মকর

মকর, আপনি সাধারণত খুব শৃঙ্খলাপরায়ণ। কিন্তু আজ গ্রহরা আপনাকে একটু ডিসকোয়ালিফাই করবে। দিনের শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ মিটিং-এর আগে মোবাইল ফোন খুঁজে পাবেন না। পরে দেখবেন, ফোনটি প্যান্টের পকেটেই ছিল। আপনার কঠোর পরিশ্রমের ফল আজ মিষ্টি হবে, তবে মিষ্টির সঙ্গে সামান্য তেতো অভিজ্ঞতাও আসতে পারে। বিনিয়োগের আগে দু’বার চিন্তা করুন। এমন কাউকে বিশ্বাস করবেন না যিনি আপনাকে ‘এক মাসে দ্বিগুণ লাভ’ করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন।

কুম্ভ

কুম্ভ, আজ আপনার বুদ্ধি আকাশ ছুঁয়ে যাবে। এমন একটি সমস্যার সমাধান করবেন, যা কেউ ভাবতেও পারেনি। কিন্তু আফসোস! সেই সমস্যাটি হয়তো একেবারেই গুরুত্বহীন ছিল, যেমন—‘কে আগে রিমোট নেবে’ বা ‘চায়ের কাপের দাগটা কীভাবে তোলা যায়।’ বন্ধুদের মধ্যে কেউ আজ এমন একটি বড় দাবি করবে যা শুনে আপনি প্রথমে অবাক হবেন, পরে হো হো করে হেসে উঠবেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করলে তাতে অপ্রত্যাশিতভাবে প্রচুর লাইক ও কমেন্ট পাবেন।

মীন

মীন রাশির জাতক-জাতিকারা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসেন। আজ সেই স্বপ্নময় জগৎটি আপনার কর্মক্ষেত্রে এসে পড়তে পারে। কাজের মাঝে হঠাৎ কল্পনায় ডুবে যাবেন এবং বসকে ভুল করে অন্য কারও নাম ধরে ডেকে ফেলতে পারেন। প্রেমের ক্ষেত্রে আবেগপ্রবণতা আজ অতিরিক্ত বাড়বে। নিজের হাতে লেখা একটি কবিতা বা চিঠি প্রিয়জনকে দিলে তারা হয়তো হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়বে। কারণ, আবেগ দেখানোর জন্য আপনার শব্দচয়ন হয়তো আজ খুব একটা সিরিয়াস হবে না। তবে মনে রাখবেন, হাসিই সম্পর্কের সেরা মসলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতকালে কলা খাবেন কি না

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। ছবি: ফ্রিপিক
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে কলা খাওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কারণ আমাদের দেশে বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, কলা একটি ঠান্ডা ফল। এটি খেলা সর্দি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া শীতকালে কলা খেলে ‘বুক দেবে যাওয়া’র মতো ঘটনা ঘটতে পারে। অর্থাৎ কফ বসে যেতে পারে। এ জন্য শীতকালে আমাদের দেশে সাধারণত কলা খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।

কিন্তু এ বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। সেগুলোতে শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তাই বলাই যায়, শীতকালে কলা খাওয়া নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, খাবার খাওয়া এবং তা থেকে শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে ব্যক্তিগত সংবেদনশীলতা থেকে। যেসব খাবারে অ্যালার্জি আছে, সেসব খাবার না খাওয়া ভালো। তাতে শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ কলাকে স্বাস্থ্যকর ফল হিসেবে সব ঋতুতে খাওয়ার সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দিনে কলাসহ ৪০০ গ্রাম ফল ও সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

কিছু প্রচলিত ভুল ধারণা এবং তার সঠিক বৈজ্ঞানিক তথ্য জেনে নিন।

শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়

এ ধারণা ঠিক নয়। কলার পুষ্টিগুণ অর্থাৎ পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, আঁশ ইত্যাদি ঋতুভেদে একই থাকে। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন কলাকে একটি পুষ্টিকর স্ন্যাক্স বা হালকা নাশতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়, এ ধারণা ঠিক নয়। ছবি: ফ্রিপিক
শীতে কলার পুষ্টিগুণ বদলে যায়, এ ধারণা ঠিক নয়। ছবি: ফ্রিপিক

হজমে সমস্যা ও সর্দি-কাশি

আমাদের দেশেই শুধু নয়, পৃথিবীতে এমন বহু মানুষ আছেন যাঁরা বিশ্বাস করেন, কলা ঠান্ডা প্রকৃতির বলে শীতকালে খেলে সর্দি-কাশি বা হজমে সমস্যা করতে পারে। এটি আজ পর্যন্ত বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। স্বাভাবিকভাবে যেকোনো ব্যক্তি শীতকালে কলা খেতে পারেন। বরং কলা দ্রুত শক্তি দেয় বলে শীতকালে এটি শরীরের উষ্ণতা বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে। তবে কলায় কারও অ্যালার্জি থাকলে খাওয়া ঠিক হবে না।

আয়ুর্বেদিক ধারণা

আয়ুর্বেদের মতো কিছু প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি কলাকে ‘শীতল’ প্রকৃতির বলে বিবেচনা করে। সে জন্য রাতে বা শীতে বেশি পরিমাণে না খাওয়ার পরামর্শ দেয়। তবে এ পরামর্শ সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

বিশেষ পরিস্থিতিতে সতর্কতা

অ্যালার্জি ও কফ: যাঁদের কলায় অ্যালার্জি আছে এবং যাঁদের শীতকালে কফ জমে থাকা বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কলায় কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নেই। তবে যাঁদের আগে থেকে অ্যালার্জি বা অ্যাজমার সমস্যা আছে, তাঁদের অত্যধিক মিউকাস উৎপাদনে এটি কিছু ভূমিকা রাখতে পারে। সে জন্য যাঁদের আগে থেকে এসব সমস্যা আছে, তাঁদের শীতকালে কলা খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

ডায়াবেটিস: কলায় প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এটি পরিমিত খাওয়া উচিত।

কলা কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার ও ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পরিচিত। ছবি: ফ্রিপিক
কলা কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার ও ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে পরিচিত। ছবি: ফ্রিপিক

শীতকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা

কলা প্রাকৃতিক এনার্জি বার: কলায় থাকে ফ্রুকটোজ ও গ্লুকোজের মতো প্রাকৃতিক চিনি। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে, যা শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ইমিউনিটি বুস্টার: ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘বি৬’ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় কলা। এতে শীতকালীন সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

সেরোটোনিন উৎপাদন: কলায় ট্রিপটোফ্যান নামে একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন (মুড-রেগুলেটর) উৎপাদনে সাহায্য করে, শীতকালীন বিষণ্নতা মোকাবিলায় সহায়ক।

শীতকালে কলা খাওয়ার টিপস

রাতের বদলে সকাল বা দুপুরে খাওয়া ভালো। এ ছাড়া কলা বিভিন্ন জিনিসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। যেমন ওটমিল ও দারুচিনির সঙ্গে কলা মিশিয়ে খেলে উষ্ণতা বাড়বে। কলার স্মুদির সঙ্গে আদা ও কাঁচা হলুদ যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। সম্পূর্ণ পাকা কলায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এ ধরনের কলা দিনে ১ থেকে ২টি খান।

শীতকালে কলা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর, যদি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য অবস্থা ও পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়। তাই নিয়মিত কলা খেতে কোনো বৈজ্ঞানিক নিষেধ নেই। তবে অ্যাজমা, দীর্ঘস্থায়ী কফ, কিডনি রোগী ইত্যাদি সংবেদনশীল গ্রুপের মানুষেরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কলা খাবেন। এ ছাড়া কলাকে শীতের খাদ্যতালিকার একটি উপাদান হিসেবে দেখুন, একমাত্র উৎস হিসেবে নয়। অন্যান্য শীতকালীন ফলের সঙ্গে এর ভারসাম্য বজায় রাখুন।

তথ্যসূত্র

  • ইউএসডিএ জাতীয় পুষ্টি ডেটাবেইস: কলার পুষ্টি উপাদানের প্রামাণিক তথ্য
  • জার্নাল অব মেডিকেল ফুড (২০১৬)
  • আয়ুর্বেদিক ফারমাকোপিয়া অব ইন্ডিয়া (ভোল.১)
  • অন্যান্য
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন

ফিচার ডেস্ক, ঢাকা 
আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৩৬
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন। আর আয়োজনে ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন। আর আয়োজনে ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। ছবি: সংগৃহীত

সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের বিভিন্ন আন্দোলন আছে ঢাকা শহরে। আছে তাদের নিয়মিত ইভেন্ট। এ ইতিহাসে যুক্ত হলো ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে’ ম্যারাথন। এর আয়োজক ছিল ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান ট্রায়াথলন ড্রিমার্স। আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রথম এআইএমএস সার্টিফায়েড ৩০ কিলোমিটার ম্যারাথন।

গতকাল ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর হাতিরঝিলে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে নামের এই ম্যারাথনটি। ‘এক শহর, এক দৌড়, এক ইতিহাস’ স্লোগানে আয়োজিত এ আন্তর্জাতিক রোড রেসে অংশ নেন হাজারো দৌড়বিদ। এদের মধ্যে ছিলেন দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ রানার ও শৌখিন অ্যাথলেটরা।

৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার হাতিরঝিল অ্যাম্ফিথিয়েটার থেকে ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে ৩০ কিলোমিটার ক্যাটাগির এ ম্যারাথনের উদ্বোধন করা হয়। এ ছাড়া ১৫ এবং ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রেসের উদ্বোধন হয় ভোর ৫টা। অংশগ্রহণকারী দৌড়বিদেরা হাতিরঝিলের চারপাশে বিস্তৃত একটি চ্যালেঞ্জিং ও মনোরম ট্র্যাকে তাঁদের দৌড় সম্পন্ন করেন।

আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এ ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত ছিল চারটি প্রতিযোগিতা ক্যাটাগরি। এগুলো হলো,

  • ৩০ কিলোমিটার রান
  • ১৫ কিলোমিটার রান
  • ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার রান
  • ১ কিলোমিটার কিডস রান

৩০ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মামুন আহম্মেদ। দৌড়ের পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ১ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন হামিদা আক্তার জেবা। তিনি শেষ করতে সময় নিয়েছে ২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।

এদিকে ১৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন পলাশ শেখ। এ পথ শেষ করতে তিনি সময় নেন ৫৩ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাজিয়া হেপ্পি। তিনি দৌড় শেষ করতে সময় নেন ১ ঘণ্টা ২১ মিনিট ৭ সেকেন্ড।

ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একজন। ছবি: সংগৃহীত
ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারীদের একজন। ছবি: সংগৃহীত

৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার ম্যারাথনে ছেলেদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন মোস্তাক আহমেদ আভিন। দৌড় শেষ করতে তিনি সময় নেন ২৬ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড। একই ইভেন্টে মেয়েদের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হন সাবরিনা আক্তার স্বর্ণা। তিনি ৭ দশমিক ৫ কিলোমিটার দৌড় শেষ করতে সময় নিয়েছেন ৪৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড।

এ ছাড়া এক কিলোমিটার ওভারল চ্যাম্পিয়ন হয় সাইফান ওময়ের।

দৌড়বিদদের সুবিধার্থে ইভেন্ট এরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছিল মেডিকেল সাপোর্ট সিস্টেম, একাধিক হাইড্রেশন ও কুলিং জোন, লাইভ টাইমিং সুবিধা। ইভেন্ট নিরাপদ করতে ছিল শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ইভেন্টে কাজ করেন শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিবিড় সহযোগিতায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা ছিল অত্যন্ত সমন্বিত।

ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারী তরুণদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত
ম্যারাথনে অংশগ্রহণকারী তরুণদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে ম্যারাথন রেস ডিরেক্টর মো. আল-আমীন বলেন, ‘ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে শুধু একটি রেস নয়, এটি একটি সুস্থ, সচেতন ও সক্রিয় নগরজীবন গঠনের আন্দোলন। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে, দৌড়ের পাশাপাশি আমরা চাই ঢাকাকে একটি প্রাণবন্ত ও ইতিবাচক শহরে রূপান্তরিত করতে।’

আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন, বিশাল অংশগ্রহণ, পেশাদার ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ আয়োজন, সব মিলিয়ে ঢাকা ড্যাশ ৩০-কে আজ বাংলাদেশের দৌড় ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মানসিক সমস্যার কারণে চুলকানি হলে কী করবেন

ফারিয়া রহমান খান 
দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপে থাকলে শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস
দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপে থাকলে শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। ফলে সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হতে পারে। প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

আমাদের শরীর ও মন পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। আমরা যখন দুশ্চিন্তা করি বা মানসিক চাপে থাকি, তখন শরীরে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়; যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এবং এর ফলে অনেক সময় শরীরে চুলকানি বা জ্বালাপোড়ার মতো হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলে ‘অ্যাংজাইটি ইচিং’ বা উদ্বেগজনিত চুলকানি।

অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকে হওয়া ‘সোমাটিক সিম্পটম’ বা শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাংজাইটি ইচিং বা সাইকোজেনিক চুলকানি। উদ্বিগ্নতার তীব্রতা বেশি হলে করটিসল হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়। এর কারণে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি সেরোটোনিন বা ডোপামিনের মতো নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতার ফলেও অনেক সময় চুলকানি শুরু হয়। এই সমস্যা সাধারণত মাথার তালু, মুখ বা পিঠের উপরিভাগে বেশি দেখা যায়। তাই মানসিক চাপের কারণ খুঁজে বের করে চিকিৎসকের সহায়তা নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা ছাড়া মেডিটেশন বা ইয়োগা করা যেতে পারে; পাশাপাশি চুলকানি কমাতে ভালো মানের ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করতে হবে, পর্যাপ্ত পানি পান করাসহ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম পানি দিয়ে গোসল এড়াতে হবে। ডা. তাহরিয়াত আহমেদ শরীফ, সহকারী রেজিস্ট্রার, মেডিসিন বিভাগ, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, ঢাকা

মানসিক চাপের কারণে চুলকানি কেন হয়

উদ্বেগ ও চুলকানি আপাতদৃষ্টে সম্পর্কহীন মনে হলেও এই দুটি একে অপরের সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে জড়িত। মানসিক চাপের প্রভাবে শরীরে কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যেগুলোর ফলে চুলকানি হয়। যেমন—

স্ট্রেস হাইভস: মানসিক চাপের কারণে অনেক সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থার প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। ফলে শরীরে চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

ঘামাচি বা র‍্যাশ: উদ্বেগের ফলে ঘাম বেড়ে যায়। ফলে শরীরে ঘামাচি বা র‍্যাশ দেখা দেয়। এগুলো খুবই চুলকায় এবং ২ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

বিদ্যমান রোগ বাড়িয়ে দেওয়া: যাদের আগে থেকে একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যা আছে, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তাদের এই রোগগুলো আরও বাড়িয়ে দেয়। ফলে চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়।

চুলকানির তীব্রতা বৃদ্ধি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ সামান্য চুলকানির তীব্রতাও বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়, যা রোগীর কাছে অসহনীয় মনে হতে পারে।

অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণের কিছু উপায়

অ্যাংজাইটি ইচিং নিয়ন্ত্রণ করতে হলে প্রথমে মানসিক চাপের কারণ বের করে তার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। সেগুলো হলো—

  • পরিষ্কার থাকুন। পোশাক, বাড়িঘর ও চারপাশ সব সময় পরিষ্কার রাখুন। চুলকানি থেকে সংক্রমণ কমাতে সব সময় নখ ছোট করে কেটে রাখুন।
  • চুলকানির জায়গায় ক্যালামাইন লোশন বা ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কর্টিকোস্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে আরাম পাওয়া যায়।
  • রুক্ষ পোশাকের বদলে সুতির নরম পোশাক পরুন। অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল করবেন না এবং সূর্যের তাপ এড়িয়ে চলুন।
  • ত্বক আর্দ্র রাখতে নিয়মিত সুগন্ধিবিহীন ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করুন। তা ছাড়া ঘরের বাতাসে আর্দ্রতা বাড়াতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন।
  • মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গভীর শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান ও যোগব্যায়াম করুন।
  • সুষম খাদ্য খাওয়া, পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত শরীর চর্চা মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। নিয়মিত এগুলো করার চেষ্টা করুন।

কীভাবে অ্যাংজাইটি ইচিং নির্ণয় করা হয়

প্রথমে চিকিৎসক চুলকানির শারীরিক কারণ; যেমন পোকামাকড়ের কামড়, ত্বকের শুষ্কতা, একজিমা বা অ্যালার্জি আছে কি না, তা নির্ণয় করা হয়। তারপর ডায়াবেটিস, অ্যানিমিয়া বা থাইরয়েডের মতো রোগগুলোও খতিয়ে দেখা হয়। সঠিক সিদ্ধান্তে আসার জন্য রোগীর মানসিক স্বাস্থ্যসহ সম্পূর্ণ রোগের সব তথ্য চিকিৎসককে জানাতে হবে। এর ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিশ্চিত হবেন, চুলকানি মানসিক চাপের জন্য হচ্ছে, নাকি অন্য কোনো কারণে। মানসিক চাপের জন্য চুলকানি হচ্ছে নিশ্চিত হলে সেই অনুযায়ী চিকিৎসক উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন।

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন

কারণ ছাড়া অতিরিক্ত চুলকানি অনেক সময় কোনো অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। মূল কারণ জানা এবং সঠিক চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অ্যাংজাইটি ইচিং যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রা ব্যাহত করে, ত্বকে সংক্রমণ বা গুরুতর ক্ষতি করে বা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ঘরোয়া চিকিৎসায়ও না কমে, তবে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া চুলকানির সঙ্গে জ্বর, রাতে ঘাম হওয়া বা অস্বাভাবিক হারে ওজন কমার মতো লক্ষণ থাকলেও দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমেই অ্যাংজাইটি ইচিংয়ের মতো সমস্যা কার্যকরভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব।

সূত্র: স্টাইলক্রেজ ও অন্যান্য

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার বন্ধ ঘোষণা

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬ শান্তিরক্ষী নিহত, যুদ্ধ চলমান: আইএসপিআর

আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বিএনপির প্রার্থীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

উত্তরায় জুলাই রেভেলসের দুই সদস্যকে কুপিয়ে জখম

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: তিন দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত