Ajker Patrika

চায়ের সঙ্গে বেলা বিস্কুট

মহিউদ্দীন জুয়েল, চট্টগ্রাম
চায়ের সঙ্গে বেলা বিস্কুট

ধোঁয়া ওঠা প্রিয় চায়ের সঙ্গে কুড়মুড়ে বিস্কুটের মেলবন্ধন সময়কে রাঙিয়ে দিতে পারে এক লহমায়। এ চায়ের আয়োজনে যদি থাকে ঐতিহ্যের ছোঁয়া, তাহলে সোনায় সোহাগা। নিজের পছন্দের চা আয়োজনে রাখতে পারেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট।

বিলুপ্তপ্রায় মাটির তন্দুরে তৈরি চট্টগ্রাম বা চাটগাঁর বেলা বিস্কুটের স্বাদ এখনো সঙ্গী হয়ে আছে চাটগাঁর বহু পরিবারে! অনেকেই বলে থাকেন, বেলা বিস্কুট এ অঞ্চলের অনেক পুরোনো বিস্কুট। গল্পটা আবদুল গণি সওদাগরের। কিংবদন্তি অনুসারে, পর্তুগিজদের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চট্টগ্রামে প্রথম এ বিস্কুটের প্রচলন ঘটান তিনি। অবশ্য চট্টগ্রামের আর একজন লেখক, আবুল ফজল  ১৯৬৬ সালে লেখা তাঁর ‘রেখাচিত্র’ নামে বইয়ে চন্দনপুরার জনৈক বেলায়েত আলী নামের এক বিস্কুট বিক্রেতার কথা বলেছেন। তাঁর নামেই নাকি হয়েছে বেলা বিস্কুটের নাম। নাম যেখান থেকেই আসুক, এখন আবদুল গণি সওদাগরের বংশধরেরাই বেলা বিস্কুট তৈরি করেন।

১৮৭৮ সালে বেলা বিস্কুট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন আবদুল গণি সওদাগর। তাঁর নামেই চট্টগ্রামের গণি বেকারি। এই ব্যক্তির পূর্ব পুরুষ লাল খাঁ সুবেদারের বংশধর বলে জানা যায়। ১৯৭৩ সালে গণি সওদাগর মারা গেলে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন তাঁর ভাইয়ের ছেলে দানু মিঞা সওদাগর। তিনি মারা যাওয়ার পর বংশপরম্পরায় আবদুল্লাহ মোহাম্মদ এহতেশাম এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেলা বিস্কুট ব্যবসায়।

বেলা বিস্কুট তৈরি হতো মাটির তন্দুরে। কালের বিবর্তনে অন্য কোথাও মাটির তন্দুর এখন না থাকলেও গণি বেকারিতে সেটি আছে। এ বেকারির কারিগরেরা সেই তন্দুরে তৈরি করেন মজাদার বেলা বিস্কুট। পুরোনো নিয়ম একটুও বদলাননি।

সময়ের সঙ্গে স্বাদ ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ আছে। তবে অবাক হতে হয়, গুণগত মানের সঙ্গে বেলা বিস্কুটের মালিকেরা কোনো আপস করেননি ভেবে। এখনো প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার পিছ বেলা বিস্কুট তৈরি হয় গণি বেকারিতে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত