Ajker Patrika

মহানবী (সা.)-এর প্রিয় ১৫ খাবার

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২২, ২১: ৫৯
মহানবী (সা.)-এর প্রিয় ১৫ খাবার

মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ভোজনরসিক ছিলেন না। খুব কমই খেতেন; অন্যদেরও পেট পুরে করে খেতে নিরুৎসাহিত করতেন। সপ্তাহে দু-এক দিন রোজা রাখতেন। কখনো কখনো দিনের পর দিন তাঁর বাড়িতে চুলা জ্বলত না। তবে তিনি যখন খেতেন, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যসম্মত খাবারই খেতেন। তিনি যেসব খাবার খেতে পছন্দ করতেন, তা মানবদেহের জন্য খুবই উপকারী প্রমাণিত হয়েছে। নিচে মহানবী (সা.)–এর পছন্দের কিছু খাবারের আলোচনা পেশ করা হলো। 

মাখন
মাখনবুসরের দুই ছেলে থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বলেন, ‘একবার আমাদের ঘরে রাসুল (সা.) আগমন করেন। আমরা তাঁর সম্মুখে মাখন ও খেজুর পরিবেশন করি। তিনি মাখন ও খেজুর পছন্দ করতেন।’ (তিরমিজি: ১৮৪৩) 

মিষ্টি ও মধু
মধুহজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.) মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন।’ (বুখারি, ৫১১৫; মুসলিম: ২৬৯৫)। আরেক হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, মধু হলো উত্তম ওষুধ। (বুখারি: ৫৩৫৯) 

খেজুর
খেজুরহজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে বার্লির এক টুকরো রুটির ওপর একটি খেজুর রাখতে দেখেছি। এরপর তিনি বলেছেন, ‘এটিই সালন-মসলা।’ (আবু দাউদ: ৩৮৩০)। অন্য হাদিসে আছে, প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, ‘যে বাড়িতে খেজুর নেই, সে বাড়িতে কোনো খাবার নেই।’ এমনকি সন্তান প্রসবের পর প্রসূতিকেও প্রিয় নবী (স.) খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। 

কিশমিশ
কিশমিশইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর জন্য কিশমিশ ভিজিয়ে রাখা হতো এবং তিনি সেগুলো পান করতেন।’ (মুসলিম) 

পনির
পনিরহজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তাবুকের যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর কাছে কিছু পনির উপস্থাপন করা হয়। রাসুল (সা.) বিসমিল্লাহ পড়ে একটি চাকু দিয়ে সেগুলো কাটেন এবং কিছু আহার করেন। (আবু দাউদ: ৩৮১৯) 

দুধ
দুধহজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, মিরাজের রাতে বায়তুল মাকদিসে আমি দুই রাকাত নামাজ পড়ে বের হলে জিবরাইল (আ.) আমার সম্মুখে শরাব ও দুধের আলাদা দুটি পাত্র রাখেন। আমি দুধের পাত্রটি নির্বাচন করি। জিবরাইল (আ.) বললেন, ‘আপনি প্রকৃত ও স্বভাবজাত জিনিস নির্বাচন করেছেন।’ (বুখারি: ৩১৬৪, তিরমিজি: ২১৩) 

ঘি মাখা রুটি
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) একদিন বলেন, ‘যদি আমাদের কাছে বাদামি গমে তৈরি ও ঘিয়ে সিক্ত সাদা রুটি থাকত, তাহলে সেগুলো আহার করতাম।’ আনসারি এক সাহাবি এই কথা শুনে এ ধরনের রুটি নিয়ে আসেন...। (ইবনে মাজাহ: ৩৩৪০) 

জয়তুন
জয়তুলরাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা জয়তুন খাও এবং জয়তুনের তেল গায়ে মাখো। কেননা এটি একটি পবিত্র বৃক্ষ থেকে তৈরি।’ (ইবনে মাজাহ: ১০০৩, তিরমিজি: ১৮৫১) 

সারিদ
সারিদ হলো গোশতের ঝোলে ভেজানো টুকরো টুকরো রুটি দিয়ে তৈরি বিশেষ খাদ্য। আর হায়স হলো—মাখন, ঘি ও খেজুর দিয়ে বানানো খাবার। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (সা.)-এর কাছে রুটির সারিদ ও হায়সের সারিদ অত্যন্ত প্রিয় ছিল।’ (আবু দাউদ: ৩৭৮৩) 

সিরকা
হজরত জাবের (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) তাঁর পরিবারের কাছে সালন কামনা করেন। তাঁরা বলেন, আমাদের কাছে তো সিরকা ছাড়া আর কিছু নেই। মহানবী (সা.)-এর কাছে সেগুলো নিয়ে আসা হলে তিনি তা থেকে খেতে শুরু করে বললেন, ‘সিরকা কতই না উত্তম সালন! সিরকা কতই না উত্তম সালন!’ হজরত জাবের (রা.) বলেন, ‘সেদিন থেকে আমি সিরকা পছন্দ করতে শুরু করি।’ (মুসলিম: ২০৫১) 

লাউ
লাউহজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার একজন দরজি রাসুল (সা.)-কে খাওয়ার দাওয়াত করেন। আমিও মহানবী (সা.)-এর সঙ্গে সেই দাওয়াতে অংশ নিই। রাসুল (সা.)-এর সামনে বার্লির রুটি এবং গোশতের টুকরা ও কদু (লাউ) মেশানো ঝোল পরিবেশন করা হয়। আমি দেখেছি, রাসুল (সা.) প্লেট থেকে খুঁজে খুঁজে কদু নিয়ে খাচ্ছেন। আর আমিও সেদিন থেকে কদুর প্রতি আসক্ত হয়ে উঠি। (মুসলিম: ২০৬১; বুখারি: ৫০৬৪) 

তরমুজ
তরমুজহজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) তরমুজের সঙ্গে ‘রাতাব’ (পাকা-তাজা) খেজুর খেতেন। (বুখারি: ৫১৩৪, তিরমিজি: ১৮৪৪) 

শসা
শসাহজরত আবদুল্লাহ ইবনে জাফর (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে শসার সঙ্গে ‘রাতাব’ খেতে দেখেছি। (মুসলিম: ৩৮০৬) 

খাসির পায়া
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা ছোট খাসির পায়া রান্না করতাম। রাসুল (সা.) কোরবানির ১৫ দিন পরও সেগুলো খেতেন।’ (বুখারি: ৫১২২) 

মোরগ
হজরত জাহদাম (রা.) থেকে বর্ণিত, একদিন আবু মুসা একটি মোরগ নিয়ে আসেন। ফলে উপস্থিত একজন গলার স্বর ভিন্ন করে আওয়াজ করল। হজরত আবু মুসা জিজ্ঞেস করলেন, কী হলো তোমার? লোকটি বলল, মোরগকে আমি বিভিন্ন খাবার খেতে দেখে আমার অপছন্দ হওয়ায় শপথ করেছি, কোনো দিন মোরগ খাব না। হজরত আবু মুসা তাঁকে বললেন, ‘কাছে আসো। খাওয়ায় অংশগ্রহণ করো। কারণ আমি রাসুল (সা.)-কে মোরগ খেতে দেখেছি। আর তুমি তোমার শপথ ভঙ্গের কাফফারা আদায় করে দেবে। (বুখারি: ৫১৯৮,৪৬৬২; মুসলিম: ১৬৪৯) 

সামুদ্রিক মাছ
ছবি: পিক্সাবে ডটকমমহানবী (সা.) সামুদ্রিক মাছ পছন্দ করতেন। এ বিষয়ে আবু উবায়দা ইবনুল জাররাহ (রা.)-এর একটি দীর্ঘ হাদিস রয়েছে। হাদিসের শেষাংশে মাছ খাওয়ার বৈধতা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘খাও। এটি তোমাদের জন্য রিজিক, আল্লাহ পাঠিয়েছেন। আর তোমাদের কাছে কিছু অবশিষ্ট থাকলে আমাদেরও খাওয়াও। মাছটির কিছু অংশ নবী (সা.)-কে এনে দেওয়া হলো। তিনি তা খেলেন।’ (বুখারি: ৪৩৬২)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ফ্লাইট থেকে সরানো হলো দুই কেবিন ক্রু

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর সহজ উপায় জানালেন বিজ্ঞানীরা

প্রাথমিকে আবার চালু হচ্ছে বৃত্তি পরীক্ষা: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

নারী কমিশন তৈরির জন্য জুলাই বিপ্লবে কেউ জীবন দেয়নি: মাহমুদুর রহমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত