আসআদ শাহীন
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক অভিযাত্রায় মানবজাতির ইতিহাসে এমন কিছু মুহূর্ত থাকে, যেগুলো কেবল একটি ঘটনার বর্ণনা নয়, বরং হয়ে ওঠে এক চিরন্তন আদর্শের স্মারকচিহ্ন। ১০ হিজরির বিদায় হজ তেমনই এক মহিমান্বিত অধ্যায়। এটি ছিল আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের প্রথম এবং শেষ হজ, যা শুধু একটি ইবাদতের আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং ছিল একটি আধ্যাত্মিক বিপ্লব, মানবতার সর্বোচ্চ আহ্বান এবং চূড়ান্ত নবুয়তের অবিনাশী বার্তা। (আস-সিরাতুল হালবিয়্যাহ: ৩ / ২৯৩)
যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) হজের সংকল্প করলেন, তখন তাঁর মধ্যে প্রতীয়মান হয়েছিল এক অনাবিল সংবেদনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধ। মদিনা শহরে তিনি কয়েকটি উট ও দুটি ভেড়া কোরবানি করেন—এই ছিল ত্যাগের এক প্রতীকী সূচনা। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসতে লাগল মানুষ—তৃষ্ণার্ত হৃদয়গুলো ছুটল আল্লাহর প্রিয় রাসুল (সা.)-এর পিছু পিছু। একজন নবীর নেতৃত্বে পবিত্র হজ পালন করবে—এ ভাবনাই যেন ছিল তাদের হৃদয়ের পরম আকাঙ্ক্ষা। বর্ণনা অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার সাহাবি এই হজে অংশ নেন। তাঁর পূতপবিত্র ৯ জন সহধর্মিণীও ছিলেন এই আধ্যাত্মিক অভিযাত্রার সঙ্গী। (সিরাতে ইবনে হিশাম: ২ / ১০২৪)
হজযাত্রার দিন ধার্য হয় ২৪ জিলকদ, বৃহস্পতিবার, ১০ হিজরি, যেটি খ্রিষ্টীয় হিসাবে ১২ ফেব্রুয়ারি ৬৩২ সাল। জোহরের নামাজ শেষে রাসুলুল্লাহ (সা.) চড়েন তাঁর প্রিয় উট ‘কাসওয়া’র পিঠে। মদিনা শহরের প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পিত হয় হজরত আবু দুজানা আস-সাইদির (বা অন্য বর্ণনায় হজরত সিবা ইবনে উরফাতা আনসারি) হাতে। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দরবারে হাত তোলেন, চোখ যেন ভিজে ওঠে আলোকিত জ্যোতির বন্যায়। তাঁর দোয়া ছিল—‘হে আল্লাহ, এই হজকে তুমি রিয়া ও দম্ভমুক্ত করো। যেন এতে কোনো অহংকার না থাকে, শুধু তোমার সন্তুষ্টির জন্যই হয়।’ (সুবুলুল হুদা ওয়াল রাশাদ: ৮ / ৪৫১)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের সেই ঐতিহাসিক হজ যে নামে সর্বাধিক পরিচিত, তা হলো হাজ্জাতুল বিদা অর্থাৎ ‘বিদায় হজ।’ কারণ, এটি ছিল নবী করিম (সা.)-এর জীবনের শেষ হজ। এই সফরে তিনি লক্ষাধিক সাহাবিকে একত্র করে তাঁদের উদ্দেশে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন এবং ঘোষণা করেন, ‘তোমরা আমার থেকে তোমাদের হজের আমল-পদ্ধতি শিখে নাও। এ হজের পর হয়তো আর কখনো তোমাদের সঙ্গে হজে একত্র হতে পারব না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১২৯৭)
এ ছাড়া এই হজকে হাজ্জাতুল বালাগ অর্থাৎ ‘বার্তাবহ হজ’ বলা হয়। কেননা এই হজের খুতবায় প্রিয় নবী (সা.) দ্বীনের মৌলিক নীতিমালা, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক ন্যায়নীতির এক মহাসনদ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন, তাঁরা যেন অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণী পৌঁছে দেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৪৬১)। এই খুতবায় তিনি নারীর সম্মান, রক্তের পবিত্রতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, অন্যায়-জুলুম এবং গোত্রভিত্তিক অহংকারের অবসানের ঘোষণা দেন। (শারহে বুলুগিল মারাম: ১২ /৬)
হজ শেষে নবীজি (সা.) মদিনায় ফিরে যান। এরপর আর তিনি কোনো হজ করতে পারেননি। এ হজের মাধ্যমেই তিনি তাঁর নবুয়তের দায়িত্ব শেষ করেন এবং উম্মতের জন্য রেখে যান চিরন্তন দিকনির্দেশনা।
লেখক: শিক্ষক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক অভিযাত্রায় মানবজাতির ইতিহাসে এমন কিছু মুহূর্ত থাকে, যেগুলো কেবল একটি ঘটনার বর্ণনা নয়, বরং হয়ে ওঠে এক চিরন্তন আদর্শের স্মারকচিহ্ন। ১০ হিজরির বিদায় হজ তেমনই এক মহিমান্বিত অধ্যায়। এটি ছিল আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের প্রথম এবং শেষ হজ, যা শুধু একটি ইবাদতের আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং ছিল একটি আধ্যাত্মিক বিপ্লব, মানবতার সর্বোচ্চ আহ্বান এবং চূড়ান্ত নবুয়তের অবিনাশী বার্তা। (আস-সিরাতুল হালবিয়্যাহ: ৩ / ২৯৩)
যখন রাসুলুল্লাহ (সা.) হজের সংকল্প করলেন, তখন তাঁর মধ্যে প্রতীয়মান হয়েছিল এক অনাবিল সংবেদনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধ। মদিনা শহরে তিনি কয়েকটি উট ও দুটি ভেড়া কোরবানি করেন—এই ছিল ত্যাগের এক প্রতীকী সূচনা। দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসতে লাগল মানুষ—তৃষ্ণার্ত হৃদয়গুলো ছুটল আল্লাহর প্রিয় রাসুল (সা.)-এর পিছু পিছু। একজন নবীর নেতৃত্বে পবিত্র হজ পালন করবে—এ ভাবনাই যেন ছিল তাদের হৃদয়ের পরম আকাঙ্ক্ষা। বর্ণনা অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার সাহাবি এই হজে অংশ নেন। তাঁর পূতপবিত্র ৯ জন সহধর্মিণীও ছিলেন এই আধ্যাত্মিক অভিযাত্রার সঙ্গী। (সিরাতে ইবনে হিশাম: ২ / ১০২৪)
হজযাত্রার দিন ধার্য হয় ২৪ জিলকদ, বৃহস্পতিবার, ১০ হিজরি, যেটি খ্রিষ্টীয় হিসাবে ১২ ফেব্রুয়ারি ৬৩২ সাল। জোহরের নামাজ শেষে রাসুলুল্লাহ (সা.) চড়েন তাঁর প্রিয় উট ‘কাসওয়া’র পিঠে। মদিনা শহরের প্রশাসনিক দায়িত্ব অর্পিত হয় হজরত আবু দুজানা আস-সাইদির (বা অন্য বর্ণনায় হজরত সিবা ইবনে উরফাতা আনসারি) হাতে। রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর দরবারে হাত তোলেন, চোখ যেন ভিজে ওঠে আলোকিত জ্যোতির বন্যায়। তাঁর দোয়া ছিল—‘হে আল্লাহ, এই হজকে তুমি রিয়া ও দম্ভমুক্ত করো। যেন এতে কোনো অহংকার না থাকে, শুধু তোমার সন্তুষ্টির জন্যই হয়।’ (সুবুলুল হুদা ওয়াল রাশাদ: ৮ / ৪৫১)
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের সেই ঐতিহাসিক হজ যে নামে সর্বাধিক পরিচিত, তা হলো হাজ্জাতুল বিদা অর্থাৎ ‘বিদায় হজ।’ কারণ, এটি ছিল নবী করিম (সা.)-এর জীবনের শেষ হজ। এই সফরে তিনি লক্ষাধিক সাহাবিকে একত্র করে তাঁদের উদ্দেশে এক ঐতিহাসিক ভাষণ দেন এবং ঘোষণা করেন, ‘তোমরা আমার থেকে তোমাদের হজের আমল-পদ্ধতি শিখে নাও। এ হজের পর হয়তো আর কখনো তোমাদের সঙ্গে হজে একত্র হতে পারব না।’ (সহিহ্ মুসলিম: ১২৯৭)
এ ছাড়া এই হজকে হাজ্জাতুল বালাগ অর্থাৎ ‘বার্তাবহ হজ’ বলা হয়। কেননা এই হজের খুতবায় প্রিয় নবী (সা.) দ্বীনের মৌলিক নীতিমালা, মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক ন্যায়নীতির এক মহাসনদ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন, তাঁরা যেন অনুপস্থিতদের কাছে আমার বাণী পৌঁছে দেন।’ (সহিহ্ বুখারি: ৩৪৬১)। এই খুতবায় তিনি নারীর সম্মান, রক্তের পবিত্রতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, অন্যায়-জুলুম এবং গোত্রভিত্তিক অহংকারের অবসানের ঘোষণা দেন। (শারহে বুলুগিল মারাম: ১২ /৬)
হজ শেষে নবীজি (সা.) মদিনায় ফিরে যান। এরপর আর তিনি কোনো হজ করতে পারেননি। এ হজের মাধ্যমেই তিনি তাঁর নবুয়তের দায়িত্ব শেষ করেন এবং উম্মতের জন্য রেখে যান চিরন্তন দিকনির্দেশনা।
লেখক: শিক্ষক, গবেষক ও প্রাবন্ধিক
মানুষ মানুষের জন্য। একজনের বিপদে আরেকজন এগিয়ে আসা মানবতার পরিচয়। অসুস্থতা, দুর্ঘটনা বা অন্য কোনো কারণে কখনো কারও রক্তের প্রয়োজন হয়। মানবতার জায়গা থেকে তখন এগিয়ে আসে অনেকে। একজনের সহযোগিতায় আরেকজনের বিপদ দূর হয়। এটিই সমাজের সৌন্দর্য।
১ ঘণ্টা আগেদেখতে অনেকটা গুইসাপের মতো, মরুভূমিতে বসবাস করা প্রাণীটি দেশে সান্ডা নামে পরিচিতি পেয়েছে। আরবদের কাছে এই সরীসৃপের মাংস উপাদেয় খাবার হিসেবে সমাদৃত। আমাদের দেশে যেহেতু সান্ডা পাওয়া যায় না—তাই তা খাওয়ার প্রচলনও নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়—মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানরা সান্ডা...
১৭ ঘণ্টা আগেপৃথিবী এখন হাতের মুঠোয়। হাওয়াই জাহাজে চড়ে বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাওয়া যায় অল্প সময়ের ব্যবধানে। হজের উদ্দেশে মক্কায় যাওয়া যায় কয়েক ঘণ্টায়। বাংলাদেশে ফজরের নামাজ আদায় করে বিমানে উঠলে পবিত্র কাবায় গিয়ে জোহরের নামাজ আদায় করা সম্ভব।
১ দিন আগেজোহরের নামাজের সুন্নতের নিয়ত করছি। একজন এসে বাধা দিয়ে বললেন, সুন্নতের সময় নেই। আমি বলি, সমস্যা নেই। এবং সুন্নত আদায় করে জামাতের দ্বিতীয় রাকাতে শামিল হই। নামাজ শেষে তিনি আমাকে বলেন, এটা জামাতের প্রতি অবজ্ঞা।
১ দিন আগে