আমজাদ ইউনুস
হজরত ওমর (রা.) বাজার-পরিস্থিতির শুদ্ধতা, বাজারের লেনদেনে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সব ধরনের আইন প্রণয়ন করেন। অসুস্থ লেনদেন, মজুতদারি, কালোবাজারি বা অন্য সব ধরনের হারাম পদ্ধতি থেকে বাজার ও ব্যবসায়ীদের দূরে রাখার জন্য তিনি একটি ফরমান জারি করেছিলেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে বেশ সচেতন ছিলেন তিনি। লাঠি হাতে বাজারে ঘুরে বেড়াতেন। কাউকে সংশোধনের দরকার পড়লে লাঠিটি কাজে লাগাতেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি ওমরকে চৌদ্দ তালিবিশিষ্ট কোমরবন্ধনী পরতে দেখেছি। কোনো কোনো তালি ছিল চামড়ার। তাঁর শরীরে জামা বা আলখাল্লাও থাকত না। পাগড়ি মাথায়, লাঠি হাতে মদিনার বাজারে হাঁটতেন।’ (আত তাবকাতুল কুবরা)
ওমর (রা.)-এর শাসনামলে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসায় হালাল-হারাম সম্পর্কিত বিধান জানা বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যবসার কায়দাকানুন না জেনে তা করতে গেলে তিনি লাঠিপেটা করতেন। বলতেন, ‘সুদ কী তা না জেনে কেউ যেন বাজারে ব্যবসা করতে না আসে।’ তিনি বাজারে টহল দিতেন আর ব্যবসায়ীদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে বলতেন, ‘ইসলামি আইন সম্পর্কে যারা অজ্ঞ, তারা আমাদের বাজারে ব্যবসা করতে আসবে না। কারণ এতে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সে সুদ খেয়ে বসবে।’
ব্যবসায়ীদের ওপর তিনি কড়া নজর রাখতেন। পুরোপুরিভাবে শরিয়তসম্মত ব্যবসা-বাণিজ্য করার প্রতি জোর দিতেন। এগুলো তদারকির জন্য আলাদা করে লোক নিয়োগ দিয়েছিলেন। মদিনার বাজারের জন্য আস-সাইব ইবনে ইয়াজিদ (রা.)-সহ আব্দুল্লাহ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ এবং আরও কয়েকজনকে নিয়োগ দেন।
বাজারকে পূর্ণ সুদের লেনদেন থেকে মুক্ত রাখতে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মালেক ইবনে আউস ইবনে হাদাসান বলেন, কারও কাছে ভাঙতি দিরহাম হবে কি—এই প্রশ্ন করতে করতে আমি বাজারে ঘুরছিলাম। সেখানে ওমর ইবনে খাত্তাবের সঙ্গে তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রা.) ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আপনার স্বর্ণমুদ্রা দিন। পরে এসে আমাদের খাদেমের কাছ থেকে রুপার মুদ্রা নিয়ে যাবেন।’ তাঁর কথা শুনে ওমর বললেন, ‘না, আল্লাহর কসম, আপনি তার রুপার মুদ্রা এখনই দিয়ে দিন, নয়তো তার স্বর্ণ ফেরত দিন। কারণ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হাতে হাতে যদি রুপার বদলে রুপা বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি স্বর্ণের বদলে স্বর্ণ বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি গমের বদলে গম বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি বার্লির বদলে বার্লি বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি খেজুরের বদলে খেজুর বদল না হয়, তবে তা সুদ।’ (সহিহ মুসলিম)
ব্যবসায়ীদের পণ্য মজুত করার প্রবণতা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন হজরত ওমর (রা.)। তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমাদের বাজারে কেউ যেন পণ্য মজুত করে না রাখে। যাদের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আছে, তারা যেন বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সব খাদ্যশস্য কিনে তা মজুত করে না রাখে। যে ব্যক্তি শীত-গ্রীষ্মের কষ্ট সহ্য করে আমাদের দেশে খাদ্যশস্য নিয়ে আসে, সে ওমরের মেহমান। অতএব সে তার আমদানি করা খাদ্যশস্য যে পরিমাণে ইচ্ছা বিক্রি করতে পারবে, আর যে পরিমাণে ইচ্ছা রেখে দিতে পারবে।’ (মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
ব্যবসায়ী ও ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণেও পূর্ণ মনোযোগ দেন তিনি। জরুরি নিত্যপণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণের জন্যও তাগাদা দিতেন। একবার এক ব্যবসায়ী জয়তুন তেল কিনে এনে তা বিক্রি করতে গিয়ে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দাম চেয়ে বসেন। ওমর (রা.) তাঁকে বললেন, ‘স্বাভাবিক দামে বিক্রি করো, নয়তো আমাদের বাজার থেকে বের হয়ে যাও। কারণ আমরা এই দামে বিক্রি করতে দেব না।’ তিনি লোকটিকে চলে যেতে বাধ্য করেন। (তারিখুল মদিনা আল মুনাওয়ারা)
হজরত ওমর (রা.) বাজার-পরিস্থিতির শুদ্ধতা, বাজারের লেনদেনে স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য সব ধরনের আইন প্রণয়ন করেন। অসুস্থ লেনদেন, মজুতদারি, কালোবাজারি বা অন্য সব ধরনের হারাম পদ্ধতি থেকে বাজার ও ব্যবসায়ীদের দূরে রাখার জন্য তিনি একটি ফরমান জারি করেছিলেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে বেশ সচেতন ছিলেন তিনি। লাঠি হাতে বাজারে ঘুরে বেড়াতেন। কাউকে সংশোধনের দরকার পড়লে লাঠিটি কাজে লাগাতেন। আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘আমি ওমরকে চৌদ্দ তালিবিশিষ্ট কোমরবন্ধনী পরতে দেখেছি। কোনো কোনো তালি ছিল চামড়ার। তাঁর শরীরে জামা বা আলখাল্লাও থাকত না। পাগড়ি মাথায়, লাঠি হাতে মদিনার বাজারে হাঁটতেন।’ (আত তাবকাতুল কুবরা)
ওমর (রা.)-এর শাসনামলে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসায় হালাল-হারাম সম্পর্কিত বিধান জানা বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যবসার কায়দাকানুন না জেনে তা করতে গেলে তিনি লাঠিপেটা করতেন। বলতেন, ‘সুদ কী তা না জেনে কেউ যেন বাজারে ব্যবসা করতে না আসে।’ তিনি বাজারে টহল দিতেন আর ব্যবসায়ীদের লাঠি দিয়ে আঘাত করে বলতেন, ‘ইসলামি আইন সম্পর্কে যারা অজ্ঞ, তারা আমাদের বাজারে ব্যবসা করতে আসবে না। কারণ এতে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় সে সুদ খেয়ে বসবে।’
ব্যবসায়ীদের ওপর তিনি কড়া নজর রাখতেন। পুরোপুরিভাবে শরিয়তসম্মত ব্যবসা-বাণিজ্য করার প্রতি জোর দিতেন। এগুলো তদারকির জন্য আলাদা করে লোক নিয়োগ দিয়েছিলেন। মদিনার বাজারের জন্য আস-সাইব ইবনে ইয়াজিদ (রা.)-সহ আব্দুল্লাহ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ এবং আরও কয়েকজনকে নিয়োগ দেন।
বাজারকে পূর্ণ সুদের লেনদেন থেকে মুক্ত রাখতে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। মালেক ইবনে আউস ইবনে হাদাসান বলেন, কারও কাছে ভাঙতি দিরহাম হবে কি—এই প্রশ্ন করতে করতে আমি বাজারে ঘুরছিলাম। সেখানে ওমর ইবনে খাত্তাবের সঙ্গে তালহা ইবনে ওবায়দুল্লাহ (রা.) ছিলেন। তিনি বললেন, ‘আপনার স্বর্ণমুদ্রা দিন। পরে এসে আমাদের খাদেমের কাছ থেকে রুপার মুদ্রা নিয়ে যাবেন।’ তাঁর কথা শুনে ওমর বললেন, ‘না, আল্লাহর কসম, আপনি তার রুপার মুদ্রা এখনই দিয়ে দিন, নয়তো তার স্বর্ণ ফেরত দিন। কারণ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হাতে হাতে যদি রুপার বদলে রুপা বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি স্বর্ণের বদলে স্বর্ণ বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি গমের বদলে গম বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি বার্লির বদলে বার্লি বদল না হয়, তবে তা সুদ, হাতে হাতে যদি খেজুরের বদলে খেজুর বদল না হয়, তবে তা সুদ।’ (সহিহ মুসলিম)
ব্যবসায়ীদের পণ্য মজুত করার প্রবণতা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন হজরত ওমর (রা.)। তিনি ঘোষণা করেন, ‘আমাদের বাজারে কেউ যেন পণ্য মজুত করে না রাখে। যাদের হাতে অতিরিক্ত অর্থ আছে, তারা যেন বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সব খাদ্যশস্য কিনে তা মজুত করে না রাখে। যে ব্যক্তি শীত-গ্রীষ্মের কষ্ট সহ্য করে আমাদের দেশে খাদ্যশস্য নিয়ে আসে, সে ওমরের মেহমান। অতএব সে তার আমদানি করা খাদ্যশস্য যে পরিমাণে ইচ্ছা বিক্রি করতে পারবে, আর যে পরিমাণে ইচ্ছা রেখে দিতে পারবে।’ (মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
ব্যবসায়ী ও ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণেও পূর্ণ মনোযোগ দেন তিনি। জরুরি নিত্যপণ্যের ন্যায্য দাম নির্ধারণের জন্যও তাগাদা দিতেন। একবার এক ব্যবসায়ী জয়তুন তেল কিনে এনে তা বিক্রি করতে গিয়ে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দাম চেয়ে বসেন। ওমর (রা.) তাঁকে বললেন, ‘স্বাভাবিক দামে বিক্রি করো, নয়তো আমাদের বাজার থেকে বের হয়ে যাও। কারণ আমরা এই দামে বিক্রি করতে দেব না।’ তিনি লোকটিকে চলে যেতে বাধ্য করেন। (তারিখুল মদিনা আল মুনাওয়ারা)
একটা লোক বলল, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাদের মধ্য থেকে কোনো লোক তার ভাইয়ের সঙ্গে কিংবা তার বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তার সামনে কি মাথা নত করবে?’ তিনি বললেন, ‘না।’ সে বলল, ‘তাহলে কি তাকে জড়িয়ে ধরে চুমা দেবে?’ তিনি বললেন, ‘না।’ সে বলল, ‘তাহলে কি তার হাত ধরে তার সঙ্গে মুসাফাহা করবে?’ তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ।’
৪ ঘণ্টা আগেদরুদ পাঠ অফুরন্ত বরকতের উৎস। এই ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত লাভ হয় এবং জীবনে বরকত নেমে আসে। এতে আল্লাহর প্রিয় হাবিব হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও আনুগত্য প্রকাশ পায়। দরুদ পাঠের মাধ্যমে অন্তর হয় প্রশান্ত, মুখ হয় পবিত্র, আর আমলনামা হয় ভারী।
৯ ঘণ্টা আগেইমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপনের অব্যর্থ উপায় এটি। নামাজ জীবন সাজিয়ে তোলে। যাপিত জীবনকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে। কোরআন-হাদিসে নামাজ আদায়কারীর জন্য অনেক পুরস্কারের ঘোষণা প্রদান করা হয়েছে। সেখান থেকে নির্বাচিত ৬টি পুরস্কারের গল্প শুনুন।
১ দিন আগেজাহাজ নির্মাণ শিল্পে আরব মুসলিমরা পূর্ণ পারদর্শিতা অর্জন করেছিল। জাহাজ নির্মাণ কারখানাকে তারা ‘দারুস সানাআ’ বলত। আরবদের বদৌলতেই আজ বিশ্ববাসী নৌশিল্পে এত উৎকর্ষ সাধন করতে সক্ষম হয়েছে। আধুনিক রণপোত শিল্প আরবরাই পত্তন করেছিল। ইউরোপের অধিবাসীরা স্পেন, সিসিলি এবং আফ্রিকায় আরবদের কাছ থেকে এই বিদ্যা...
১ দিন আগে