Ajker Patrika

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সিরিয়ার প্রতি ট্রাম্পের আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ১৮: ৫১
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ বুধবার সৌদি আরবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তিনি সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শত্রু ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আহ্বান জানিয়েছেন শারার প্রতি। এর আগের দিন অর্থাৎ গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প সৌদি আরবে উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্মেলনের আগে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করেন। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) উপস্থিতিতে ট্রাম্প ও শারার করমর্দন করছেন।

তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ভার্চুয়ালি ওই বৈঠকে যুক্ত ছিলেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সামাজিকমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে জানান, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত আব্রাহাম চুক্তির অধীনে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককারী দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কোর সঙ্গে যোগ দিতে শারার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্র চায় সৌদি আরবও ওই চুক্তিতে যোগ দিক। তবে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এই আলোচনাগুলো স্থগিত হয়ে যায়। সৌদি আরব বলছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দিলে কোনো স্বাভাবিকীকরণ হবে না। ট্রাম্প গতকাল বলেছেন, সৌদি আরব ‘নিজের সময়মতো’ আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের ভেতরে সিরিয়ার নেতাদের আল-কায়েদার সঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ ছিল। তারপরও রিয়াদে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প জানান, তিনি সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছেন। এটি যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন। তিনি আরও জানান, আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এসেছে এমন এক সময়ে, যখন শারার প্রশাসনের প্রতি ইসরায়েলের গভীর সন্দেহ রয়েছে। শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তারও একই উদ্বেগ ছিল। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এখনো শারাকে ‘জিহাদি’ বলেই অভিহিত করেন। যদিও তিনি ২০১৬ সালে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর থেকে পুরো দেশ দামেস্কের সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন শারা। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার তাঁর জন্য বড় ধরনের সুবিধা বয়ে আনবে। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে সিরিয়া বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার বাইরে ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় দেশটিতে মানবিক সহায়তা সংস্থাগুলোর কাজ আরও সহজ হবে। একই সঙ্গে বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য।

যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল বরাবরই সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিরোধিতা করেছে। বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ইসলামপন্থীদের উপস্থিতি সহ্য না করার ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল সেখানে সামরিক অভিযান জোরদার করেছে। ইসরায়েল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশ দখলও করেছে। সিরিয়ার সরকারকে ওই এলাকায় সেনা মোতায়েন না করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। এ ছাড়া বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর ভারী অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত