Ajker Patrika

ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মধ্যেই ইসরায়েলের তীব্র হামলা গাজায়, নিহত অন্তত ৫০

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ মে ২০২৫, ১৯: ৩২
ইসরায়েলের হামলার পর ঘটনাস্থল। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলের হামলার পর ঘটনাস্থল। ছবি: রয়টার্স

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরের মধ্যেই মঙ্গলবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বুধবার ব্যাপক বোমাবর্ষণ চালিয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এদিন অন্তত ৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

আজ বুধবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়ির ওপর চালানো বিমান হামলায় অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই বিষয়ে তৎক্ষণাৎ কোনো মন্তব্য না করলেও তারা জানিয়েছে, ঘটনাটির তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মঙ্গলবার খান ইউনুসের ইউরোপিয়ান হাসপাতালের নিচে একটি কমান্ড ও কন্ট্রোল বাংকারে হামলা চালানো হয়। এই হামলায় হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে ইসরায়েলি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ধারণা করছেন। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কিংবা হামাস, কেউই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু নিশ্চিত করেনি। মোহাম্মাদ সিনওয়ার সম্প্রতি নিহত হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ভাই।

এদিকে আজ বুধবার প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ইউরোপিয়ান হাসপাতালের কাছে একটি বুলডোজার লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে হামাসঘনিষ্ঠ ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক জিহাদ ইসরায়েলের দিকে তাক করে রকেট নিক্ষেপ করেছিল। এর কিছুক্ষণ পরই জাবালিয়া ও এর আশপাশের এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এবং শুরু হয় পাল্টা হামলা।

এই হামলার সময় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আশাবাদ ছিল, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সফর হয়তো সংঘর্ষ প্রশমনে কিছুটা চাপ সৃষ্টি করতে পারে। ট্রাম্পের সফরের আগেই হামাস গত সোমবার আমেরিকার সর্বশেষ জীবিত জিম্মি এডান আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেয়।

মঙ্গলবার রিয়াদে এক বক্তৃতায় ট্রাম্প বলেন, আলেকজান্ডারের পর আরও জিম্মি মুক্তি পাবে এবং গাজার মানুষের আরও ভালো ভবিষ্যৎ প্রাপ্য।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। আলেকজান্ডারকে মুক্ত করার প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেছে হামাস। এদিকে ইসরায়েল নতুন এক দফা আলোচনার জন্য একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে কাতারের দোহায়।

যুক্তরাষ্ট্র গাজায় বেসরকারি ঠিকাদারদের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার একটি পরিকল্পনা দিয়েছে। গাজার ওপর পূর্ণ অবরোধ আরোপ করে রাখা ইসরায়েলও এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেছে। তবে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। এই পরিকল্পনার অর্থায়ন ও দাতাদের বিষয়ে এখনো স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলের বাসিন্দাদের ওপর চালানো হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে অপহরণ করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় গাজা অভিযানে নামে ইসরায়েল।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের অভিযানে গাজায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৯০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সাহায্যকারীরা জানিয়েছে, প্রায় ২৩ লাখ মানুষের ছোট এই উপত্যকা এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত