Ajker Patrika

যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অর্ধেক শুল্ক ফেরত দিতে হবে’, কিন্তু কেন ও কখন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫২
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট যদি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত ‘পাল্টাপাল্টি শুল্ক’ বাতিল করেন, তাহলে মার্কিন সরকারকে ‘রিবেট’ বা ফেরত দিতে হবে। ওয়াশিংটন যেসব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে, তা নিয়ে মার্কিন আপিল আদালত যে রায় দিয়েছেন—তার পরপরই এই মন্তব্য করলেন বেসেন্ট।

গতকাল রোববার এনবিসি নিউজের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘আমাদের প্রায় অর্ধেক শুল্ক ফেরত দিতে হবে, যা ট্রেজারির জন্য ভয়াবহ হবে...তবে যদি কোর্ট বলেন, আমাদের সেটা করতেই হবে।’ তবে বিস্তারিত কিছু না জানালেও মার্কিন অর্থমন্ত্রী জানান, শুল্ক আরোপের আরও ‘বিভিন্ন পথ’ রয়েছে, তবে এগুলো ট্রাম্পের আলোচনার অবস্থানকে ‘দুর্বল করে দেবে’।

এর আগে, সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক কেভিন হাসেট বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প প্রশাসনের বিপক্ষে রায় দিলেও শুল্ক আরোপের ‘অন্যান্য আইনগত কর্তৃত্ব’ আছে। তাঁর মতে, ‘সেকশন ২৩২’ তদন্ত—যা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপে ব্যবহার করা হয়েছিল—সেগুলোও সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে।

গত সপ্তাহে ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহ্বান জানান, নিম্ন আদালতের রায় দ্রুত বাতিলের জন্য। এর আগে, গত ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের ফেডারেল সার্কিট ৭–৪ ভোটে রায় দেন যে ট্রাম্প জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের আওতায় শুল্ক আরোপ করেন, তাঁর জন্য নির্ধারিত ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, শুল্ক আরোপ করা মূলত কংগ্রেসের একান্ত ক্ষমতা।

এরও আগে, মে মাসে নিউইয়র্কভিত্তিক কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড শুল্কগুলোকে বেআইনি ঘোষণা করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা নথিতে বলা হয়, ‘রায় ঘোষণায় ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত দেরি হলে তত দিনে ৭৫০ বিলিয়ন থেকে এক ট্রিলিয়ন ডলারের শুল্ক আদায় হয়ে যাবে, যা ফেরত দিতে হলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে।’ গত বুধবার রাতে দাখিল করা নথিতে সলিসিটার জেনারেল জন সাওয়ার বলেন, ‘এই মামলার গুরুত্ব অপরিসীম।’

মার্কিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত শুল্ক বাবদ ২১০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে, যা মার্কিন আদালত বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন। যদি সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে, তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে শুল্ক বাবদ আদায়কৃত অর্থ ফেরত দিতে হতে পারে।

ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের আওতায় গত এপ্রিলে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। তিনি দাবি করেন, বাণিজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এরপরই তিনি বৈদেশিক অংশীদারদের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেন। তবে আপিল আদালত তাঁর রায়ের কার্যকারিতা ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন, যাতে ট্রাম্পের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সুযোগ থাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলা উপকূলে ট্রাম্পের রণসাজ: বি-২ যুদ্ধবিমানসহ মোতায়েন ১৬ যুদ্ধজাহাজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ১১
ট্রাম্প যখন এশিয়ায় শান্তির বার্তা ছড়াচ্ছেন, তখন তাঁর প্রশাসন লাতিনে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
ট্রাম্প যখন এশিয়ায় শান্তির বার্তা ছড়াচ্ছেন, তখন তাঁর প্রশাসন লাতিনে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সামরিক উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সেখানে অভিযান আরও বিস্তারের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে এবং ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রথম হামলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর আটটি যুদ্ধজাহাজ, একটি বিশেষ অভিযান জাহাজ এবং একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত আক্রমণকারী সাবমেরিন। আগামী সপ্তাহে বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড সেখানে পৌঁছাবে। এর সঙ্গে আরও তিনটি যুদ্ধজাহাজ এবং চার হাজারের বেশি অতিরিক্ত সেনা যুক্ত হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, এর ফলে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের মোতায়েন করা জনবল হবে ১৬ হাজারের মতো। যার মধ্যে ১০ হাজার সেনা এবং ৬ হাজার নাবিক। জেরাল্ড আর ফোর্ডের সঙ্গে পাঁচটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার—ইউএসএস মাহান, উইনস্টন এস চার্চিল, বেইন্ডরিজ, মিশার এবং ইউএসএস ফরেস্ট শেরম্যানও সেখানে যোগ দিচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে শুক্রবার সাংবাদিকেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি কি ভেনেজুয়েলার ভেতরে সামরিক হামলার কথা ভাবছেন, তখন ট্রাম্প বলেন, ‘না।’

নৌবাহিনীর এই শক্তি প্রদর্শনের পাশাপাশি, পেন্টাগন ভেনেজুয়েলার উপকূলের ওপর দিয়ে বোমারু বিমান উড়িয়ে শক্তি প্রদর্শন করেছে। এ ছাড়া, তারা ওই অঞ্চলের যুক্তরাষ্ট্র ঘাঁটিগুলোতে সামরিক সরঞ্জাম সরিয়ে নিচ্ছে। ওয়াশিংটন পোস্টের স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পুয়ের্তো রিকোর একটি ঘাঁটিতে এখন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানও রাখা হয়েছে। কেবল তা-ই নয়, ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন প্রশাসন বি-১ ল্যান্সার, বি-৫২ বোমারু বিমান, এমকিউ-৯ রিপার আনম্যানড ভেহিকলসহ বিমানবাহিনীর কৌশলগত বিভিন্ন যানও মোতায়েন করেছে।

জেরাল্ড ফোর্ড বিমানবাহী রণতরির সঙ্গে আসা পাঁচটি গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ছাড়াও আগে থেকেই ক্যারিবীয় অঞ্চলে মোতায়েন করার জন্য পাঠানো হয়েছে আরও পাঁচটি একই ধরনের যুদ্ধজাহাজ। সেগুলো হলো—ইউএসএস জ্যাসন ডানহাম, স্টকডেল, গ্রেভলি, লেক এইরি এবং ইউএসএস গেটিসবার্গ। এর বাইরে, উভচর আক্রমণে ব্যবহৃত ইউএসএস আইও জিমা এবং ইউএসএস সান আন্তোনি—এই অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পারমাণবিক শক্তিচালিত অ্যাটাক সাবমেরিন ইউএসএস নিউপোর্ট নিউজও মোতায়েন করা হয়েছে ক্যারিবীয় অঞ্চলে।

ভেনেজুয়েলা উপকূলে মার্কিন সামরিক অবস্থানের বিষয়ে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আমেরিকা প্রোগ্রামের পরিচালক রায়ান বার্গ বলেন, ‘শুরু থেকেই ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতি স্বাভাবিক মাদকবিরোধী অভিযানের চেয়েও অনেক বেশি ছিল। এতে বোঝা যায়, এই মিশন শুরু থেকেই আরও বড় পরিসরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল।’

বার্গ আরও বলেন, বিমানবাহী রণতরির সংযোজন সম্ভবত ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এই সম্প্রসারিত অভিযান এখন প্রায় প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের জাহাজের কাছ থেকে চাওয়াটা অনেক। কারণ, মাত্র তিনটি এমন জাহাজই মোতায়েন থাকে।’ ফোর্ড আগামী সপ্তাহে ক্যারিবিয়ান সাগরে পৌঁছালে ‘একধরনের সময়সীমা শুরু হবে—ট্রাম্পের হাতে তখন থাকবে প্রায় এক মাস, ওই সময়ের মধ্যেই তাঁকে বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নইলে জাহাজটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে’।

এদিকে, ওয়াশিংটনে ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা বলছেন, এসব অভিযানের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে তাঁরা ক্রমেই বিরক্ত হয়ে উঠছেন। কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভাব্য হামলার আইনি ভিত্তি সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করছে না।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারপ্রধান ভেনেজুয়েলা উপকূলে তথাকথিত মাদকবাহী নৌযানে মার্কিন হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এসব আক্রমণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং ‘বিচারবহির্ভূত হত্যার’ শামিল। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসন এখনো কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি যে ‘লক্ষ্যবস্তু করা নৌকাগুলোর লোকজন অন্যের জীবনের জন্য তাৎক্ষণিক হুমকি ছিল’।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ: নিহত ২০, নুড়িপাথরে চাপা পড়া মানুষের আর্তনাদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পড়া নুড়িপাথরের নিচে চাপা পড়েন অনেক যাত্রী। ছবি: সংগৃহীত
পড়া নুড়িপাথরের নিচে চাপা পড়েন অনেক যাত্রী। ছবি: সংগৃহীত

ভারতে হায়দরাবাদ-বিজাপুর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও বহু যাত্রী। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে আজ সোমবার সকালে তেলেঙ্গানা রাজ্যের রাঙ্গারেড্ডি জেলায়।

তেলেঙ্গানা স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (টিএসআরটিসি)-এর একটি যাত্রীবাহী বাস তাণ্ডুর থেকে ভিকারাবাদ জেলা হয়ে হায়দরাবাদ অভিমুখে যাচ্ছিল। বাসটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানা যায়। পথেই নির্মাণ সামগ্রী (নুড়িপাথর) বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে বাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

ট্রাকে বোঝাই করা নুড়িপাথর বাসের ভেতরে ছিটকে এসে পড়ে। নুড়ির স্তূপের নিচে চাপা পড়ে বহু যাত্রী ঘটনাস্থলেই মারা যান।

নিহতদের মধ্যে ১০ জন নারী, ১০ মাস বয়সী একটি শিশু এবং দুর্ঘটনা কবলিত দুই গাড়ির (বাস ও ট্রাক) চালকও রয়েছেন। বাসের চালকের আসন এবং ঠিক তাঁর পেছনের ছয়টি সারির যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এই অংশেই বেশি প্রাণহানি ঘটেছে।

স্থানীয় পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। ধ্বংসস্তূপ এবং নুড়ির নিচে চাপা পড়া মানুষের আর্তচিৎকারে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। নুড়ির স্তূপ এবং বাসের ভেঙে যাওয়া কাঠামোর জন্য আহত ও মৃতদেহ উদ্ধারে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়। পরে গাসকাটার দিয়ে বাসের অংশ কেটে অনেক মৃতদেহ উদ্ধার করতে হয়।

আহত যাত্রীদের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দুর্ঘটনার খবরে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী এ রেভান্থ রেড্ডি। তিনি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

পরিবহন মন্ত্রী পন্নম প্রভাকর এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কারণ জানতে টিএসআরটিসি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াই নাগিরেড্ডির সঙ্গে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে তিনি রাঙ্গারেড্ডি জেলার কালেক্টরকে আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

তেলেঙ্গানার প্রধান বিরোধী দল ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস)-এর কার্যকরী সভাপতি কেটি রামা রাও এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি সরকারের কাছে নিহতদের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি এই ভয়ানক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তুলেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার দুদিন পরই নারীকেই পিটিয়ে হত্যা করেছে ভবঘুরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ১৯
ভিক্টোরিয়া অ্যাডামস ও আপাপলে অ্যাডোম
ভিক্টোরিয়া অ্যাডামস ও আপাপলে অ্যাডোম

দয়াপরবশ হয়ে এক ভবঘুরেকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া অ্যাডামস (৩৭)। কিন্তু সেই ভবঘুরে দুই দিন পরই অ্যাডামসকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

যুক্তরাজ্যের পশ্চিম লন্ডনের হ্যামারস্মিথের ঘটনা এটি। সম্প্রতি অভিযুক্ত ৩৯ বছর বয়সী আপাপলে অ্যাডোমকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।

আদালতের নথির বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ভিক্টোরিয়া অ্যাডামসের ফ্ল্যাট থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ ভাঙচুর ও জোর করে প্রবেশের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল। জানা যায়, ভিক্টোরিয়া অ্যাডামসকে নির্মমভাবে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়।

ওল্ড বেইলির বিচারপতি নাইজেল লিকলি অ্যাডোমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এবং কমপক্ষে ২১ বছর জেলে ভরে রাখার নির্দেশ দেন। বিচারপতি বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া অ্যাডামসের দয়া এবং ভালো স্বভাবের সুযোগ নিয়ে অ্যাডোম তাঁর বিশ্বাসের চরম অবমাননা করেছে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভিক্টোরিয়া যখন অ্যাডোমকে চলে যেতে বলেন, তখনই সে এই ‘বর্বর ও হিংস্র’ আক্রমণটি চালায়। বিচার শুরুর আগেই অ্যাডোম হত্যার অভিযোগ স্বীকার করেছিল।

ভিক্টোরিয়া অ্যাডামস ছিলেন চার সন্তানের মা। আদালতের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তাঁর খালা ক্যাথি অ্যাডামস বলেন, ‘ভিকি সহজেই মানুষকে বিশ্বাস করত, সে ছিল উদার মনের মানুষ। অন্যদের কাছ থেকে তিনি যে দয়া পেয়েছিলেন, সেটি নিজেও ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলেন—আর এর জন্য তাঁকে নিজের জীবন দিয়ে দিতে হলো।’

ভিক্টোরিয়ার ছোট বোন সোফি লাফ তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, ‘একজনকে সাহায্য করার চেষ্টা করতে গিয়ে, প্রায় অচেনা এক ব্যক্তির হাতে নিজের বাড়িতে খুন হলেন তিনি।’

প্রসিকিউটর আদালতকে জানান, অ্যাডোম গত ৬ ফেব্রুয়ারি একটি ভবঘুরে আশ্রয়কেন্দ্রে ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়। এর দু’দিন পরেই সে ভিক্টোরিয়াকে নির্মমভাবে আক্রমণ করে। প্রসিকিউটর আরও জানান, অভিযুক্তের আগেও সহিংসতার ইতিহাস রয়েছে এবং গ্রেপ্তারের সময় তার কাছে দুটি ছুরি এবং একটি স্ক্রুড্রাইভার পাওয়া যায়।

জানা যায়, ভিক্টোরিয়া কেবল অ্যাডোমকে সাহায্য করতেই চেয়েছিলেন এমন নয়। স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীরা তাঁকে বারবার হুমকি দিচ্ছিল। নিজের নিরাপত্তার জন্য তিনি অ্যাডোমকে বাড়িতে আনেন। তবে প্রসিকিউটর মন্তব্য করেন, তিনি হয়তো পরে অনুতপ্ত হয়েছিলেন। কারণ অ্যাডোম হঠাৎ করেই হিংস্র হয়ে ওঠেন। ভিক্টোরিয়া সম্ভবত অ্যাডোমকে ভয় পেতে শুরু করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাদুরোকে সরাতে ভেনেজুয়েলায় মার্কিন সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে নোবেলজয়ী মাচাদো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: সংগৃহীত
ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলা উপকূলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি দেশটিতে সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই রাজনীতিক জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে সরাতে সহায়তা করলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপকেও স্বাগত জানাবেন।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচাদো এই কথা বলেছেন। তিনি এমন এক সময়ে এই অবস্থান ব্যক্ত করলেন, যখন কোনো প্রমাণ ছাড়াই ওয়াশিংটন মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছে। তাঁকে বলা হচ্ছে ‘নার্কোটেররিস্ট’ বা মাদক-সন্ত্রাসী। চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পশ্চিম ক্যারিবীয় সাগরে এক নৌবহর মোতায়েন করেন। সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী ভেনেজুয়েলার উপকূলে কথিত মাদকবাহী জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ওই এলাকায় নৌবাহিনীর উপস্থিতি আরও বাড়াচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই অভিযানের লক্ষ্য মাদকবিরোধী অভিযানের বাইরেও বিস্তৃত হতে পারে। যদিও ট্রাম্প বলেছেন, ভেনেজুয়েলার ভেতরে সরাসরি হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই, তবু তিনি সম্ভাব্য টার্গেটের তালিকা পর্যালোচনা করেছেন বলে জানা গেছে।

ব্লুমবার্গের দ্য মিশাল হোসেন শোতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাচাদোকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপকে সমর্থন করেন? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, এখন যে উত্তেজনা তৈরি হচ্ছে, সেটাই একমাত্র উপায় মাদুরোকে বুঝিয়ে দেওয়ার যে, তার এখন চলে যাওয়ার সময় এসেছে।’

মাচাদো দাবি করেন, মাদুরো গত বছরের নির্বাচনে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছেন। সেই নির্বাচনে মাচাদো নিজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি। তিনি আরও বলেন, ওই নির্বাচনে বিরোধীদলীয় প্রার্থী এডমুন্ডো গনসালেজ উররুতিয়া জয়ী হয়েছিলেন। মাচাদোর ভাষায়, মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানো ‘প্রচলিত অর্থে সরকার পরিবর্তন নয়’, কারণ ‘তিনি বৈধ প্রেসিডেন্ট নন, বরং এক মাদক-সন্ত্রাসী কাঠামোর প্রধান।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটা কোনো রেজিম পরিবর্তন নয়, এটা ভেনেজুয়েলার জনগণের ইচ্ছা কার্যকর করার প্রক্রিয়া।’

অন্যদিকে মাদুরো অভিযোগ করেছেন, মাচাদো যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করছেন। তাঁর মতে, মাচাদো আসলে ওয়াশিংটনের হয়ে কাজ করছেন এবং ভেনেজুয়েলায় হস্তক্ষেপের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন। দীর্ঘদিন ধরেই মাচাদোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৫ সালে তিনি তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

মাচাদোকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়, মাদুরোকে সরাতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি কি একমাত্র পথ, তিনি বলেন, ‘শুধু হুমকিটাই যথেষ্ট হতে পারে। একটি বিশ্বাসযোগ্য হুমকি থাকা ছিল একেবারে অপরিহার্য।’

তিনি আরও দাবি করেন, ভেনেজুয়েলার বিরোধী শিবির ‘সরকার পরিচালনার জন্য প্রস্তুত।’ তাদের পাশে রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর বড় অংশ। মাচাদোর ভাষায়, ‘তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি এই পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত এবং পরিস্থিতি শুরু হলেই তারা শৃঙ্খলাপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে অংশ নেবে।’

মাদুরো যুক্তরাষ্ট্রের মাদক পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ট্রাম্প ‘এক নতুন অনন্ত যুদ্ধ তৈরি করছেন।’ কারাকাস যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযানকে দেশটির সার্বভৌমত্বের ওপর হামলা ও এক ধরনের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছে। ভেনেজুয়েলা ইতিমধ্যে রাশিয়া, চীন ও ইরানের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা জোরদারে সহযোগিতা চেয়েছে।

রাশিয়া সোমবার ভেনেজুয়েলার সঙ্গে একটি কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি অনুমোদন করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত